নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আল মামুনুর রশীদ

আল মামুনুর রশীদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেঘ ও মেঘালয় (১ম পর্ব)

১৬ ই জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৪:২৭

ঢাকা থেকে ৩০০ কি.মি. পথ পাড়ি দিয়ে যখন তামাবিল সীমান্তে পৌছলাম তখন সকাল ৭.১৫ মিনিট। একটা রোদে ভরা সুন্দর সকাল। অফিসিয়াল পাসপোর্টে বিদেশে আমার প্রথম সফর। আমার এবারের সফর ভারতের মেঘালয়ে। ঈদের পরের দিন তাই ইমিগ্রেশনে প্রচন্ড ভীড়। আমার আগে আরো ২০/২২ জন। আমার ডাক পড়ল প্রায় ৩০ মিনিট পর। এস.আই রনু মিয়া জি.ও নিয়ে একটা জ্ঞানগর্ভ বক্তব্য দিলেন। ‘‘জি.ও টা ফটোকপি মনে হচ্ছে, সাইনিং কর্তৃপক্ষের মোবাইল নম্বর জি.ও তে থাকা উচিত ছিল ইত্যাদি ........................। তারপর অবশ্য পাসপোর্টে বহিঃ গমন সীল মেরে আমাকে বিদায় করলেন। এরপর কাস্টমস্ ও বি.জি.বি পর্ব শেষ করে যখন নাে-ম্যানস্ ল্যান্ডে দাঁড়িয়ে নিজ দেশকে বিদায় জানাচ্ছি তখন ১০ টা ছুঁই ছুঁই।

নো-ম্যানস্ ল্যান্ড পার হতেই বি.এস.এফ তার দেশে স্বাগত জানালেন। বিশুদ্ধ বাংলায় আমার পাসপোর্ট চাইলেন। নম্বর এন্ট্রি করে আমাকে সর্বোচ্চ এক মিনিটে বিদায় করলেন। কয়েক কদম হাঁটার পর ডাউকী ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস্ অফিস। ভিতরে প্রবেশ করার উপায় নেই। কােন রকম ভীড় ঠেলে ফরমপূরণ করে পাসপোর্ট জমা দিলাম। ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার টেবিলে পাসপোর্টের স্তুপ। অফিসিয়াল পাসপোর্ট বিধায় আলাদা রেজিষ্টারে এন্ট্রি করে তিন মিনিটে এবং কাস্টমস এ দুই মিনিট মােট পাঁচ মিনিটে সম্পূর্ণ কার্যক্রম শেষ করে আমার সহযাত্রীদের ইমিগ্রেশন পর্ব শেষ না হওয়ায় সিঁড়িতে বসে রইলাম। মনে মনে ভাবছি কেমন বাংলাদেশ ইমিগ্রেশনের সেবা আর কেমন ভারতের?
সহযাত্রীদের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষ হতে ১১ টা বেজে গেল। এবার শিলং যাবার পালা। ইমিগ্রেশন অফিসের সামনে থেকে ট্যাক্সি নিয়ে শিলং যাওয়া যায়। তবে আমার মতে, কিছুদূর হেটে গিয়ে ডাউকী বাজার থেকে ট্যাক্সি/টাটা সুমোতে যাওয়াই ভাল। বাজারের একটু আগে ও পরে ডানদিকে ২টি মনোরম ঝর্না দেখা যাবে। যা আমার কাছে বর্ষাকালীন ঝর্না বলে মনে হয়েছে। এবারে পাহাড়ী আঁকাবাঁকা রাস্তা ধরে কিছুদূর গেলে পড়বে ডাউকী ব্রীজ। নীচে পিয়াইন নদী। স্বচ্ছ জল নিয়ে যা বাংলাদেশে বয়ে গেছে। বাংলাদেশের জাফলং থেকে যে ব্রীজটি আমরা দেখে থাকি। ব্রীজটি বর্তমানে ঝুকিপূর্ণ। ডাউকী থেকে মাওরিয়াং গ্রাম পর্যন্ত ৬ কি.মি. রাস্তা সরু ও ভাঁঙ্গা। এ পথের দুপাশে সুপারির বাগান। তারপরে শিলং পর্যন্ত ৭৬ কি.মি. রাস্তা প্রসস্থ ও ভাল। এখানে একটা কথা না বললেই নয়, ডাউকী থেকে শিলংয়ে যাবার জন্য গাড়ী ভাড়া করার সময় অবশ্যই ড্রাইভারকে Living Root Bridge ও Mawlynnong ঘুরে যেতে বলবেন। কেননা স্পট দুটো শিলংয়ে যাবার পথে।
ডাউকী থেকে শিলংয়ের দূরুত্ব ৮২ কি.মি.। গাড়ীতে শিলংয়ের পথে ২০ কি.মি. আসার পরে পনতুং নামক স্থানে এসে বামদিকে টার্ন নিয়ে ১৬ কি.মি. ভিতরে গেলে Riwai Village . অর্থাৎ শিলং থেকে ৭৮ কি.মি. এবং ডাউকী থেকে ৩৬ কি.মি. দূরে Riwai Village এর Living Root Bridge । ব্রীজ দেখতে জনপ্রতি ১০ রুপি ও ক্যামেরার জন্য ১০ রুপি টিকেট কেটে পাহাড়ী পাথুরে সিঁডি দিয়ে প্রায় ১৫০০ ফুট নিচে নেমে Living Root Bridge এ উঠতে হয়। ব্রীজের নিচ দিয়ে বয়ে গেছে পাহাড়ী নদী। এ মূহুর্তে নদীর নামটি মনে পড়ছে না। ব্রীজ পেড়িয়ে ওপারে গেলাম। সিঁডি বেয়ে উপরের দিকে ১২০০ ফুটের মতো উঠে পাহাড়ী রাস্তা ধরে হাটা শুরু করলাম। পথ নির্দেশিকায় Riwai Village এর অপর অংশে যেতে সময় লাগে ১০ মিনিট। কিন্তু প্রায় ২৫ মিনিট হেটে গ্রামে পৌছলাম। গ্রামের বাড়ীগুলো অসম্ভব রকমের সুন্দর। প্রতিটি বাড়ীর সামনে আছে ফুলের বাগান। একটা চার্চও দেখতে পেলাম। আরো কিছুক্ষণ হাটার পর বাঁশের তৈরী View Point এর দেখা পেলাম। এখান থেকে সিলেটের অংশ বিশেষ দেখা যায়।
তিতুমীরের বাঁশের কেল্লায় অনুপ্রাণিত হয়ে স্থানীয়রা বাঁশের এ View Point বানিয়েছেন কিনা তা জানি না, তবে পর্যটকদের নিজভূমে আকৃষ্ট করার জন্য, পর্যটনকে এগিয়ে নেবার জন্য তাদের এ প্রচেষ্টা প্রশংসার দাবিদার। গাছের সাথে বাঁশ বেধে স্থানীয় প্রদ্ধতিতে এ টাওয়ার তৈরী করা হয়।
ফেরার পথে আমি ও বিপ্লবদা পথ হারিয়ে ফেলি। গ্রামের সব রাস্তাগুলো একই রকমের হওয়ায় Living Root Bridge এ ফিরে আসতে প্রায় ১ ঘন্টার বেশী সময় লেগে যায়। ব্রীজে পৌছে দেখি বউদি ও বিপ্লবদার একমাত্র সন্তান বিসর্গ কান্নাকাটি করছে।Group এর অন্যান্য সদস্যরাও অনেক মন্তব্য করেছে। সব নীরবে হজম করে ‘সরি’ বলে গাড়ীতে উঠলাম।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:০৩

রিয়াজরানা বলেছেন: সব নীরবে হজম করে ‘সরি’ বলে গাড়ীতে উঠলাম।


....

চলুক :D

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.