নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানব মনের অনাবিষ্কৃত কল্পজগৎ। অনাস্বাদিত। রহস্যময়ী। ভাষার তেলরঙে তা হোক প্রকাশিত।

শূন্যতার প্রাপ্তি

মানব মনের অনাবিষ্কৃত কল্পজগৎ। অনাস্বাদিত। রহস্যময়ী। ভাষার তেলরঙে তা হোক বাঙ্ময়। প্রকাশিত।

শূন্যতার প্রাপ্তি › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুখে থেকো তোমরা।শুভকামনা রইলো।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:১৮


৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩, শুক্রবার।
.
প্রায় প্রতি শুক্রবারেই সে অফিসে যেতো।
সেদিনও গিয়েছিলে। কমার্শিয়ালের ডিপার্টমেন্টের লোকজনের জন্য হয়তো এটাই একরকম নিয়ম।
বিকেল বেলা বাসায় শুয়ে শুয়ে ফেসবুকে একেকজনের প্রপোজের বন্যা বয়ে যাওয়া পোষ্ট দেখছিলাম।
গোলাপের ছবিতে ফেসবুক রক্তাক্ত।
হঠাৎই মনে হয়েছিলো আমাদের ভালোবাসা তো প্রপোজহীন।
কেউ একবার প্রপোজ করলে মন্দ হয়না।
.
ক্ষনিকের জন্য চোখ বন্ধ করে কল্পনার সাগরে গা ভাসালাম।
কতোই তো শুনলাম ভালোবাসি, ভালোবাসি।
কই কেউ তো একটা গোলাপ নিয়ে কখনো সামনে দাঁড়িয়ে ভালোবাসার প্রপোজ করলোনা।
তুমিও করোনি। আমিও করিনি।
ভালোবাসা দিবস নামের চৌদ্দ ফেব্রুয়ারিতে দুজনেই এমন ভাব করেছি যেনো ভ্যালেন্টাইন নামে যে কিছু যে আছে তা হয়তো জানিই না।
অসংখ্য জুটিকে রাস্তায় সারি সারি দেখে যেনো কোন ভাবে তড়িঘরি করে এ দিনটি পার করতে চেয়েছি।
হয়তো আমাদের মাঝে এই নাটকীয়তা গুলোর প্রয়োজন মনে করিনি কখনো।
.
সম্পর্কের তিন বছর পার হয়ে গেছে। তাতে কি।
নতুন করে নাহয় তোমাকে প্রপোজ করবো, ভালোবাসায় রঙ মাখাবো।
নাইবা কোন দিবস কে পালন করলাম।
নতুন কিছু করে নাহয় আজকের দিনটা কাটাবো। স্মরণীয় করে রাখবো।
কোন উপলক্ষ্যে নয়, মনের খুশিতে।
গোলাপ গুলো দিয়ে বলবো "ভালোবাসি তোমাকে"।
ঝটপট উঠে পরে পায়েস বানালাম।
রাজ মার্কেটের নিচের পুষ্পমেলা থেকে দুটো গোলাপ কিনে এনে রাখলাম।
বাসায় এসে কল দিলাম। কেটে দিয়ে মেসেজ দিলো,
- বলো। এমডি আছে পাশে।
- তুমি কোথায়?
- ব্যস্ত।
- ফ্রি হবে কখন?
- জানিনা গো, আজ তো শিপমেন্ট আছে।
- শিপমেন্ট আছে, তুমি কি করবে? তুমি চলে আসো।
- এমডির মেজাজ খারাপ।
- সে থাকবেই, মালিক পক্ষের ছুটির দিনগুলিতে মেজাজ খারাপ থাকেই।নিজেকে দিয়ে বুঝোনা? একসময় তোমার ও এমন হতো।
- খোঁচা দিয়ে বললা?
- আরে নাহ। তুমি চলে আসোনা প্লিজ?
- দেখি, বলতে পারছিনা। তুমি কি করো?
- তেমন কিছুনা, ফেসবুকে ছিলাম।
- হায়রে ফেসবুক। ফেসবুকে না গেলে কি হয়?
- উফফ, ছবি দেইনি তো। আমাকে তো আর কেউ চিনবেনা, শুধু দেখি কে কি পোষ্ট করলো।
- আচ্ছা, ঠিক আছে। একটু ঘুমিয়ে নাও এখন।
- হুম, তুমি তাড়াতাড়ি এসো।
.
কথা শেষ করে কিছুক্ষন শুয়ে থাকলাম। ঘুম তো এলোই না। ছাঁদে গেলাম। অনেকক্ষন বসে থেকে মাগরিবের আজানের আগেই ফিরে এলাম। মেসেজ দিলাম "এখন কোথায়?"
উত্তর নেই।
মেসেজ ডেলিভারেড দেখালো, অথচ কোন উত্তর নেই।
কল দিলাম।
মোবাইল সুইচড অফ।
কিছুক্ষন পর আবার চেষ্টা করলাম।এখনো বন্ধ।
খুব চিন্তায় পড়ে গেলাম।
কোন সমস্যা হলো নাতো? বার বার চেষ্টা করেছিলাম।
ঠান্ডা দিনেও প্রচুর ঘামছিলাম।
বুঝতে পারছিলাম কেনো এমন হলো? কেনো মোবাইল অফ?
মোবাইলে চার্জ নেই? নাহ, এমন তো হবার কথা নয়?
অফিসেও সে চার্জার রাখে। তবে কি অফিসে কোন গন্ডগোল? নাকি সে ফিরছিলো বাসার দিকে? ফিরতি পথে রাস্তায় কোন দূর্ঘটনা হলো না তো?
আজে বাজে দুঃশ্চিন্তায় স্থির থাকতে পারছিলাম না।
.
বাধ্য হয়ে রাত দশটার দিকে তার কলিগকে কল দিয়ে জানতে চাইলাম তার সাথে শেষ কখন কথা হয়েছে? তিনি জানালো সে তো গতোকালই ছুটি নিয়েছে গ্রামের বাড়ি যাবে বলে। সকালের ট্রেনেই গেছে।
আমি স্তব্ধ হয়ে রইলাম কিছুক্ষন।
তার খুব কাছের একজন কে কল দিয়ে জানতে চাইলাম সে কি ঠিকমতো বাড়ি পৌঁছেছে কিনা?
উত্তরে জানতে পারলাম সে দ্বিশল্যার কাছে গিয়েছে।
ঠিক আছে বলে লাইন টা কেটে দিলাম।
ঠিক ঐ মুহুর্তে আমার মানসিক পরিস্থিতি কেমন হয়েছিলো এখন আর তা আঁচ ও করতে পারিনা।
ইচ্ছেও করেনা আর সেসব মনে করতে।
তবে সেদিন প্রপোজ ঠিকই করেছিলাম। কাছে থেকে নয়, দূর থেকে।
স্মরণীয় দিন আমার।শুধু "ভালোবাসি তোমাকে" এর পরিবর্তে লিখেছিলাম "ধন্যবাদ, আমার সাথে আর যোগাযোগ করোনা। সুখে থেকো তোমরা।শুভকামনা রইলো।"

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.