নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

♥ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারো ♥| ✔©verified ……{2010-2013}™

เ ค๓ ҭђє ςคקҭคเภ ﻮคςк รקคгг๏ฬ ....ҭђє ๏гเ๔เภคใ | ҭђє ๏ภใұ ___©

দি ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারো

เ ค๓ ҭђє ςคקҭคเภ ﻮคςк รקคгг๏ฬ ...... .........______ ҭђє ๏гเ๔เภคใ ....... .........______ ҭђє ๏ภใұ.......

দি ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারো › বিস্তারিত পোস্টঃ

•~••বোঝা••~•

২৮ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:৪১

পরের ট্রেনটা কখন

আসবে?” স্টেশন মাস্টার

ধাতস্ত হওার জন্য কিছু

সময় নিল। তারপর বলল

“পাঁচটা বিশে”।

আমি স্টেশন মাস্টার রুমের ঘড়িটার

দিকে তাকালাম।

পাঁচটা তিন বাজে। তার

মানে আমার হাতে আরও

সতের মিনিট সময় আছে।

এখন শীতের শেষ দিকে .........ভোরবেল­

া ............ এখনো মানুষের

কর্মব্যাস্ততা শুরু হয়নি।

মফঃস্বলের বিশেষ

বৈশিষ্ট্য হল এটা গ্রামও

নয় আবার পুরপুরি শহরও নয়।

এখানে কর্মব্যাস্ততা শুরু

হয় শহরের মত...............

পরে, আর শেষ হয় গ্রামের

মত,......... আগে।যেমন এখন

আমি এই

যে ষ্টেশনে দাড়িয়ে আছি আমার

সঙ্গী ষ্টেশনে শুয়ে থাকা কিছু

মানুষ, যারা চটের

বস্তা মুড়ি দিয়ে মৃত

মানুষের মত পরে আছে।

আমি ধীরে স্টেশন

থেকে নেমে রেল লাইন ধরে হাঁটা শুরু করলাম।

কিছুক্ষণের মত

সামনে গেলেই রেল

লাইনটা একটা ঝোপের

ভিতর ঢুকে যাবে।

ওখানে গেলে মানুষ আমার ছিন্ন বিচ্ছিন্ন দেহ

দেখে আতকে উঠবেনা।

অনেকটা নির্জনে আমি আত্মহত্যা করতে পারব।

অনেকটা ঘোরের

মধ্যে আমি আমার

স্বেচ্ছামৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।

“এই যে শুনুন”

আমি এড়িয়ে যাওয়ার

চেষ্টা করলাম।

“হ্যালো............ এই

যে শুনুন” আমি ঘুরে তাকালাম। রেল

ক্রসিঙের পাশে লাল

শালওয়ার কামিজ

পরা একটি মেয়ে দাড়িয়ে আছে।

আমকে দেখে এগিয়ে এসে বলল

“এই বোঝা দুটো কিছুক্ষণের জন্য

নিতে পারবেন?............

প্লীজ......” আমি শুধু

চেয়ে রইলাম। মেয়েটি ওর

হাত দেখিয়ে বলল “আমার

হাত ছিলে গেছে। অবস্থা খুব

খারাপ।............... আমার

বাসা খুব দূরে না। দশ

মিনিট লাগবে যেতে। একটু

সাহায্য করুন প্লীজ”

আমি মেয়েটার দিকে তাকালাম। এক

জোড়া মায়াবি চোখে কষ্টের

ছাপ পরে রয়েছে।

সুশ্রী মুখে খেলা করছে একরাশ

ক্লান্তি। আমি কিছু

না বলে গিয়ে ব্যাগ দুটো হাতে নিলাম।

মেয়েটি অস্ফুটস্বরে বলল

“ধন্যবাদ” আমি মেয়েটার

পিছু পিছু হাটতে লাগলাম।

মেয়েটি যেতে যেতে বলতে থাকল

“রাতের বাসে ঢাকা থেকে রওনা দিয়েছি।

সাড়ে চারটার সময়

এসে পৌঁছে গেছি। পনের

মিনিট রিকশার জন্য

দাড়িয়ে ছিলাম। কিন্তু

একটাও রিকশা পাইনি। পরে এগুলো নিয়ে নিজেই

হাঁটা শুরু করলাম। আর

তাতেই হাতের এই

অবস্থা হয়েছে। ভাগ্য ভাল

যে আপনি এসেছিলেন

নাহলে যে আরও কতক্ষণ

অপেক্ষা করা লাগত............”

আমি চুপচাপ মেয়েটার

পিছু হেঁটে যাচ্ছিলাম।

কিছুক্ষণ পর একটা বাড়ির

সামনে এসে থামলাম।

মেয়েটা আমার দিকে ফিরে বলল “অনেক

ধন্যবাদ” আমি চুপ

করে রইলাম। ও কিছুক্ষণ পর

বলল “আপনি আগামীকাল

এগারোটার দিকে একবার

আসতে পারবেন?............ প্লীজ” আমি কিছু

না বলে উলটা ঘুরে হাটতে লাগলাম।

কিছুদুর যাওয়ার পর পিছন

থেকে শুনতে পেলাম “এই

যে শুনুন” আমি দাঁড়ালাম।

মেয়েটি আমার কাছে এলো। বলল “আপনার

নামটাই

তো জানা হয়নি ............

আমি মোনা...... আর আপনি?”

“ফারহান” বলেই

আমি চলে এলাম। পিছন

থেকে হয়তবা “অদ্ভুত তো” কথাটি বলেছে।

কিন্তু

ট্রেনের

শব্দে আমি ঠিকমতো শুনতে পেলাম

না ও কি বলল। পরদিন ঠিক এগারোটার

সময় আমি মোনার বাসার

সামনে আসলাম। নক করতেই

মোনা দরজা খুলে দিল।

আমি গিয়ে ওদের

ড্রয়িং রুমে বসলাম। ও ওর মাকে ডেকে আনল।

বলল

“মা ইনি আমাকে গতকাল

সাহায্য করেছিলেন”

মোনার মা আমার

দিকে তাকিয়ে বললেন

“ধন্যবাদ বাবা। এই পাগলি মেয়েটার কথা আর

বলনা। দশ দিন পর

বিয়ে আর এখন তার

ঢাকা যাওয়ার কোন

দরকার ছিল!!” আমি একটু

আড়ষ্টভাবে হাসতে চাইলাম। কেমন দেখাল

জানিনা।

অনেকদিন হাসিনাতো। ওর

মা বলল “তোমরা গল্প কর ।

আমি চা করে আনি” ওর

মা যাওয়ার পর

অনন্যা আমার দিকে তাকিয়ে বলল

“আচ্ছা একটা প্রশ্ন

জিজ্ঞেস করি............

আপনি কি ছোটবেলায় এক

কথায় উত্তর অনেক

বেশি পরতেন?” আমি জিজ্ঞেস করলাম

“কেন?” ও বলল

“না আপনাকে কিছু জিজ্ঞেস

করলে তো সব এক কথায়

জবাব দেন তো তাই” বলেই

মোনা খিলখিল করে হাসা শুরু করলাম।

জীবনে প্রথমবারের মত

কাঁচ ভাঙ্গা শব্দের

হাসি উপলব্ধি করতে পারলাম।

ও আমার

দিকে তাকিয়ে বলল “সরি আমি আসলে মেয়েটাই

এমন” বলে আবার হাসা শুরু

করল। আমি কিছুক্ষণ পর

বললাম “আমি তাহলে আসি”

ও বলল চলুন এগিয়ে দেই। ও

আসতে আসতে বলল “আপনি কি প্রত্যেকদিন

সকালে হাঁটেন নাকি?”

আমি বললাম “না”

মোনা জিজ্ঞেস করল

“তাহলে গতকাল

যে হাটতে বের হলেন?” আমি বললাম

“আমি হাটতে বের হইনি”

মোনা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস

করল “তাহলে?”

আমি মোনার চোখে চোখ

রাখলাম। বললাম

“আমি আত্মহত্যা করতে যাচ্ছিলাম”...............

বলে আমি চলে এলাম। আমার

কি হয়েছে জানিনা।

ক্ষণে ক্ষণে আমার

চোখে মোনার

চেহারা ভেসে উঠছে।

প্রত্যেকদিন আমি মোনার

বাসার পিছনে গাছটার আড়ালে দাড়িয়ে থাকি শুধু

কয়েক নজর

মোনাকে দেখার জন্য। আজ

আমি যখন মোনার বাসার

পিছনের আসি তখন

দেখি মোনা গাছটার নিচে বসে বই পড়ছে।

আমি ওকে দেখে পালিয়ে যেতে চাইলাম।

কিন্তু ও আমাকে ডাকল ।

বলল “কেমন আছেন?”

আমি কোনমতে বললাম

“ভাল” ও চোখের সামনে থেকে বই

সরিয়ে বলল

“আচ্ছা একটা প্রশ্ন

করি মাইন্ড

করবেননা প্লিজ............

আপনি আত্মহত্যা করতে যাচ্ছিলেন কেন?”

আমি কিছুক্ষণ চুপ

করে নিজেকে গুছিয়ে নিলাম।

তারপর বললাম “সবার মত

আমার একটা পরিবার ছিল।

আমার বয়স যখন পনের তখন

আমার মা অন্য আমার বাবার এক

বন্ধুকে বিয়ে করে চলে যায়।

তারপর আমার

বাবা আমকে আর আমার ছোট

বোনকে মানুষ করেছেন।

একদিন কলেজে যাওয়ার পথে আমার বোন

অপহৃত হয়।

তিন দিন পর ও যখন লাশ

হয়ে ফিরে আসে,তখন ওর

শরীরের

প্রত্যেকটি জায়গায়

অত্যাচারের দাগ লেগে ছিল। আমার বাবা ওর

লাশ

দেখে সাথে সাথে স্ট্রোক

করেন। আমি যখন

বাবাকে নিয়ে হাসপাতালে যাই

তখন ডাক্তাররা সরি ছাড়া আর

কিছুই বলেনি।............”

আমি একটা নিঃশ্বাস

ছেড়ে আবার বললাম

“সত্যি বলতে কি মানুষের

যখন বেঁচে থাকার কারন থাকে তখন

সে বেচে থাকতে চায়............

আমার বেঁচে থাকার আর

কোন কারণই

নেই............যে বোনটাকে আমি এত

ভালবাসতাম ও আমকে ছাড়ল............

যে বাবা আমাকে মায়ের

অভাব

বুঝতে দেয়নি সে বাবাও

চলে গেল......... তাই

বেচে থাকার আর কোন কারন খুঁজে পাইনি”

আমি অবাক হয়ে দেখলাম

মোনার চোখ

বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে।

আমি কিছু

না বলে উঠে গেলাম। আজ কেমন যেন শূন্য শূন্য

লাগছে। মোনা আমাকে ডাক

দিল। চোখের

পানি মুছে বলল “পাশের

গাছটা থেকে আমার রুম

আরও ভালমত দেখা যায় আর আড়ালও

বেশি পাওয়া যায়”

বলেই

মোনা উল্টা ঘুরে বাসায়

চলে গেল। আজ মোনার বিয়ে। আমি দূর

থেকে মোনাকে দেখলাম।

আজ ওকে বড্ড বেশি সুন্দর

লাগছে। আজ বহুহিন পর

আবার নিজেকে আবার

নিঃস্ব লাগছে । আমি ঘোরের

মধ্যে হাটা শুরু করলাম।

আমার জীবনে দশ দিন আয়ু

বেড়েছিল কষ্ট আরেকটু

বেশি পাওার জন্য।

আমি হাটতে হাটতে ষ্টেশনে চলে এলাম। স্টেশন

মাস্টারকে জিজ্ঞেস

করলাম “পরের

ট্রেনটা কখন আসবে”

স্টেশন মাস্টার আমার

দিকে তাকিয়ে বলল “আটটা পঁচিশে”

আমি স্টেশন মাস্টার

রুমের ঘড়ির

দিকে তাকালাম।

আটটা বার বাজে। তার

মানে আমার হাতে আর তের মিনিট সময় আছে।

রাতের

বেলা। রেল লাইনের

দুপাশে এখন অন্ধকার।

রাতের

নিস্তব্ধতা থেকে বের

হয়ে ঝিঁঝিঁ পোকার আওয়াজ।

আমি ধীরে ধীরে স্টেশন

থেকে নেমে রেল লাইন

ধরে হাঁটা শুরু করলাম।

কিছুক্ষণের মত

সামনে গেলেই রেল

লাইনটা একটা ঝোপের ভিতর ঢুকে যাবে।

ওখানে গেলে মানুষ আমার

ছিন্ন বিচ্ছিন্ন দেহ

দেখে আতকে উঠবেনা।

অনেকটা নির্জনে আমি আত্মহত্যা করতে পারব।

বিধাতা আমকে পুরনো চিত্রনাট্য

ফিরিয়ে দিয়েছে, সম্পূর্ণ

করার জন্য । যা সেদিন

মোনার জন্য সম্পূর্ণ

হতে পারেনি। অনেকটা ঘোরের

মধ্যে আমি আমার

স্বেচ্ছামৃত্যুর

দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। “এই

যে শুনুন” ডাকে আমার ঘোর

ভাঙল। রেল ক্রসিঙের পাশ থেকে লাল

শাড়ি পরা ক্লান্ত

চেহারার মায়াবি চোখের

এক মেয়ে, চোখ ভরা জল

নিয়ে আমার

কাছে এগিয়ে এসে দুহাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল “এই

বোঝা দুটো সারাজীবনের

জন্য

নিতে পারবেন?..............

প্লীজ.........।”

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.