আমার মা কে নিয়ে একটি স্মৃতি

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫১

আমর মা যেমন সাহসী তেমন ধৈর্য্যশীল তেমনি টেকনিক্যাল বুদ্ধি সম্পন্ন ।

আসলে সব মা ই অসীম গুনের অধিকারী ।



আজ আমার সাহসী মায়ের একটি ঘটনা বলবো ।

২০০০ সালের দিকের ঘটনা । আমাদের ঘরের মেঝে তখন ছিলো মাটির আর বেড়া টিনের । মেঝে আর বেড়ার মাঝে চার আঙ্গুলের মত ফাঁকা থাকতো আলো বাতাস আসার জন্য । আমাদের ঘরের পিছনেই ছিলো নিচু ক্ষেত । সেখানে সাপ, বেঁজি, গুইসাপ সবই থাকতো । মা সংসারের প্রয়োজনে হাঁস , মুরগি , কবুতর সবই পালতেন ।

গুইসাপ সাধারণত ঘরে আসতো না । কিন্তু যখন তাদের বাহিরে খাবার কমে যেতো তখন মুরগির ডিম খাবার জন্য ঘরে হানা দিতো । মাটির মঝে খুব সহজেই মাটি খুঁড়ে ঘরে এসে একদিন ডিম খেয়ে যায় ।



গুইসাপ দেখতে ভয়ঙ্কর ধরনের প্রাণী । কুমিরের মত দেখতে প্রাণীটা হেলে দুলে রাজকীয় ভঙ্গিতে চলে ডোন্টকেয়ার ভাবে । ছোট খাটো হিস হিস করলে ভয় পায় না । তাদের গায়ের চামড়া এতো শক্ত আমার মনে হয় বুলেট মারলেও ছিদ্র হবে না । শুনেছি এরা নাকি সাপ ও খেয়ে ফেলে ।



একদিন দুপুর বেলা মা খেয়ে বিছানায় শুয়ে আছে তখন গুইসাপ ঘরে ঢুকে । ডিম খাবার সময় যে শব্দ হয়ে এতে মা`র সন্দেহ হয় । আমার সাহসী মা দরজার কোনা থেকে শাবলটা নিয়ে গুইসাপকে ধাওয়া করে। গুইসাপ যে রাস্তায় এসেছিলো সেই রাস্তায় পালাতে চায় । তার মাথাটা বের করতে পারে কিন্তু এরই মধ্যে মা তার পিঠ বরাবর শাবল দিয়ে মারে একটা পার । গুইসাপের পেছনটা আটকে যায় শাবলের সাথে ।



প্রথমেই বলেছিলাম গুইসাপের চামড়া খুবই শক্ত । এতো জুরে শাবলের আঘাতের পরেও তার চামড়াই ছিদ্র হয় না । কিন্তু মা র শক্ত করে শাবল দিয়ে চেপে ধরার কারনে ছুটেও যেতে পারছে না । মা আমাকে ডাকলেন “আরমান তাড়াতাড়ি এদিকে আয়” আমি টেবিলে বসা ছিলাম । গিয়ে দেখি এই কান্ড । আমি দরজার কোনা থেকে কোচ নিয়ে বের হতে চাইলাম মা বললেন কোচ গুইসাপের গায়ে বিঁধবে না তুই লাঠি নিয়ে যা । মোটা লাঠিটা নিয়ে ছুটলাম ঘরে পিছনে ।



লঠি হাতে আমাকে দেখেই গুইসাপটি কালো জিহ্বা বের করে ফুঁস ফুঁস শব্দ করে আমাকে ভয় দেখাতে লাগলো । কিন্ত এমন সাহসী মায়ের সন্তানতো আর ভিতু হতে পারে না ।



লাঠিটা উঁচু করে মাথা বরাবর মারলাম একটা বাড়ি ! এক বাড়িতেই কাইত !

এমন সাহসী মায়ের গর্ভে জন্ম নিয়ে আমি গর্বিত ।

৫ টি +০/-০