নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সৃজন সমাচার

অনীল সুমন

আমি একজন নাট্য নির্মাতা, এছাড়া আমি কবিতা ও গল্প লিখতে পছন্দ করি

অনীল সুমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

অবশেষে ফাঁস হলো শাকিব খানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের গোপন তথ্য

০৯ ই মে, ২০১৭ রাত ১২:৩৯

শাকিব তো শাকিব ই । আমার আর লেখার দরকার নেই! সম্মানিত সাংবাদিক Fi Dipu কথাগুলো বলেছেন যা নিচে দেয়া হল
প্রসঙ্গ শাকিব খান এবং কিছু প্রশ্ন
গত দুই দিনে গণমাধ্যম এবং ফেসবুকে এফডিসিতে মধ্যরাতে চিত্রনায়ক শাকিব খানের ওপর হামলার প্রসঙ্গ নিয়ে বেশ তোলপাড় চলছে। কিছু কিছু গণমাধ্যম দাবি করেছে শাকিব খান সেদিন রাতে ‘মদ্যপ’ ছিল। আবার কেউ কেউ ঘটনার পেছনের হোতাদের ইঙ্গিত করে বলছেন, এটা ছিল শাকিব খানকে অপমান করার পরিকল্পিত চিত্রনাট্য। ইনবক্সে আমাকে অনেকেই জিজ্ঞেস করছেন আমি কোন পক্ষে? কিংবা এ ঘটনায় আমার অবস্থান কী? ঠিক এ প্রশ্নের উত্তরে আমি সবাইকে বলতে চাই, প্রথমত আমি একজন সংবাদকর্মী। কারও পক্ষ অবলম্বন করা আমার কাজ নয়। আমার কাজ হচ্ছে, ঘটনা এবং তার অন্তরালের খবর সবার সামনে তুলে ধরা। ঠিক এ কাজটিই করার চেষ্টা করছি আমি। তারপরও চলচ্চিত্রের স্বার্থে শাকিব খান প্রসঙ্গে কিছু বিষয় আমি স্পষ্টভাবে সবাইকে বলতে চাই।
যারা বলছেন শাকিব খান সেদিন রাতে ‘মদ্যপ’ ছিলেন, তারা কি সঠিক তথ্যটি তুলে ধরছেন? মদের বিষয়টিকে কেন সামনে তুলে এনে মূল ঘটনাকে ধামাচাপা দেয়া হচ্ছে? কেউ কী ভেবেছেন, মধ্যরাতে শাকিব কেন এফডিসিতে এসেছেন? কারা তাকে ডেকে এনেছেন? ঘটনার পর আমি শাকিব খানের সঙ্গে কথা বলেছি। জিজ্ঞেস করেছিলাম, আপনি এত রাতে কেন এফডিসি গিয়েছিলেন? তার স্পষ্ট উত্তর ছিল, ‌'কিছু লোক তাকে নির্বাচন কারচুপির কথা বলেছেন। ভোট গণনা কক্ষে বিশেষ কারও উপস্থিতি ছিল। বিশেষ করে আপিল বিভাগের ২ জন কর্তাব্যক্তি ছিলেন। যা নির্বাচনী নীতিমালা বিরোধী। নির্বাচনী নীতিমালায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে, ভোট গণনা কেন্দ্রে আপিল বিভাগের কেউ উপস্থিত থাকতে পারবেন না। ফলাফল ঘোষণার পর কেউ যদি অভিযোগ করেন তাহলে আপিল বিভাগের কর্মকর্তাদের কাজ শুরু হবে। তার আগে তারা নিস্ক্রিয় এবং নিরপেক্ষ থাকবেন। কিন্তু সে রাতে ভোট গণনা কেন্দ্রে আপিল বিভাগের ২ ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। আরও কিছু অভিযোগ ছিল। এ বিষয়গুলো স্বচক্ষে দেখার জন্য কয়েকজন প্রার্থীর অভিযোগ এবং অনুরোধে আমি এফডিসি গিয়েছি।'
সে রাতে শাকিব খানের উপস্থিতি এবং ভোট গণনা কেন্দ্রে প্রবেশ করাটা ছিল যৌক্তিক। কারণ সমিতির ক্ষমতা বুঝিয়ে দেয়ার আগ পর্যন্ত অর্থাৎ বর্তমান নির্বাচিত কমিটি শপথ নেয়ার আগ পর্যন্ত শাকিব খানই সমিতির সভাপতি। এ দায়িত্বে থেকে নির্বাচনকালীন কোনো প্রার্থীর অভিযোগ পেলে তিনি সেটা খতিয়ে দেখতে নির্বাচনী কেন্দ্রে প্রবেশ করতেই পারেন। এ প্রবেশে কী দোষ হয়ে গেল সেটা আমার বোধগম্য নয়।
কেউ কেউ বলছেন, শাকিব খান সে রাতে পেছনের দরজা দিয়ে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করেছেন। ঠিক এখানেই খটকা লাগে। ভোট গণনা কক্ষের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। আর শিল্পী সমিতির পেছনের দিকের দরজায় সেদিন কলাপসিবল গেটের রিংয়ে তালা ঝুলতে দেখা গেছে। বাকি রয়েছে সামনের দুটো দরজা। এই দুটো দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। তাহলে শাকিব খানকে ভেতরে ঢোকার জন্য ভেতর থেকেই দরজা খুলে দেয়া হয়েছিল। কে খুলে দিল? কেন খুলে দিল? এটা কী তবে পরিকল্পিত ছিল? একজন জনপ্রিয় চিত্রনায়ককে চূড়ান্ত অপমান করার চিত্রনাট্যের প্রথম দৃশ্য ছিল এটি?
ভেতরে ঢুকে শাকিব খান অবস্থান করছিলেন ১০ মিনিটেরও বেশি সময়। এই দশ মিনিটে শাকিব খান ভেতরে কোনো গোলমাল করেছেন এমন অভিযোগ ভেতরে অবস্থানকারী কেউ করেননি। তাহলে কাদের পরামর্শে এবং কেন তাকে বের করে দিয়ে তার গায়ে হাত তোলা হলো? কেউ কেউ বলছেন, শাকিব খান ভেতরে থাকলে ফলাফল পাল্টে যেতো? এ অভিযোগটি কতটা যৌক্তিক? ভেতরে অবস্থানরত মানুষগুলোর চোখের সামনে ফলাফল বদলে দেয়ার মতো ক্ষমতা কী শাকিব খান রাখেন? যদি না রাখেন তাহলে এটা হবে অপমান করার চিত্রনাট্যের দুই নাম্বার দৃশ্য।
বাইরে বের হওয়ার পর কারা তার গায়ে হাত তুললো? যেখানে দিনের বেলায়ও হাল আমলের অনেক নায়ক-নায়িকাকে দেখা গেছে শাকিব খানের সঙ্গে একটা সেলফি তুলতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন, সেখানে গভীর রাতে আবার তাদের সামনেই দেশ সেরা একজন চিত্রনায়ককে চূড়ান্তভাবে অপমান করা হচ্ছে, অথচ তাদের কোনো বিকার ছিল না। এখনও পর্যন্ত গণমাধ্যমে কোনো বিবৃতি কিংবা ফেসবুকে নিজের ওয়ালে নেই কোনো প্রতিবাদ? উল্টো তাদের কেউ কেউ শাকিবকে হেয় করে স্ট্যাটাসও দিয়েছেন? এটা কী তবে সেই চিত্রনাট্যের তিন নাম্বার দৃশ্য?
পুরো ঘটনার প্রেক্ষাপট পরিবর্তন করতে কেউ কেউ তাকে ‘মদ্যপ’ বলে দাবী করছেন। আমার চলচ্চিত্র সাংবাদিকতার ১৪ বছরের ক্যারিয়ারে মদ খায় না চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট এমন কম মানুষই দেখেছি। তাহলে শাকিব খান মদ খেয়েছেন এমন প্রোগাপান্ডা তৈরি করে কেন তাকে হেয় করা হচ্ছে? বিশেষ করে গণমাধ্যম কর্মীদের কথা বলবো, যারা লিখেছেন ‌'মদ্যপ শাকিব'। এদের অনেককেই আমি মদের টেবিলে দেখেছি। কেউ কেউ তো বমি করে টেবিলও ভাসিয়ে দিয়েছেন। আবার তারাই শাকিব খানের মদ খাওয়ার কথা ফলাও করে লিখছেন। এটা কী তবে সেই চিত্রনাট্যের দৃশ্য নাম্বার চার?
মাঝে সাঝে মদ আমিও খাই। ধর্মীয় বিষয়াদি বাদ দিলে মদ খাওয়া কোন অপরাধের মধ্যে পড়ে, তা আমার বোধগম্য নয়! কিন্তু মনে রাখতে হবে, মদ খেয়ে কী আমি মাতাল হয়ে অন্যের ক্ষতি করছি কী না? শাকিব খান যদি সেদিন মদ খেয়েও থাকেন, তাহলে কারও ক্ষতি তো করেননি। তাহলে কেন তাকে অপমান করা হলো?
সবচেয়ে অবাক করার বিষয় ছিল, নির্বাচনে শাকিব খান যাদের সাপোর্ট দিয়েছেন তারাই সে রাতে তাকে ডেকে এনেছেন। শাকিব খানও অন্ধ বিশ্বাসে একাই এফডিসিতে চলে এসেছেন। কিন্তু তার ওপর যখন হামলা হলো, সে সময় সেইসব লোকদের দুরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। মোটেও শাকিব খানকে নিরাপত্তা দেয়া কিংবা নিরাপদে নিয়ে যাওয়ার জন্য আসেননি। তবে কী এটাও ছিল পরিকল্পিত। এটা কী তবে সেই চিত্রনাট্যের শেষ দৃশ্য?
আচ্ছা, যারা শাকিব খানের দিকে চেয়ার ছুঁড়ে মেরেছেন তারা কী কখনও শাকিব খান হওয়ার যোগ্যতা কিংবা ক্ষমতা রাখেন? কিংবা যারা তার গায়ের জামা ছিঁড়েছেন তারা কী কখনও শাকিব খানের মতো তারকা হতে পারবেন? ঢাকাই সিনেমায় নায়ক তো অনেকেই আছেন, নিয়মিত অনেকের ছবিও মুক্তি পাচ্ছে। কিন্তু শাকিব খান ক’জন হতে পেরেছেন? পেশাগত কারণে প্রায়ই এফডিসি যাওয়া হয়। অনেক নায়ককে দেখি। দাঁড়িয়ে আছেন। একা একা পায়চারি করছেন। কিন্তু শাকিব খান এফডিসি ঢুকলেই পেছনে মানুষের মিছিল দেখা যায়। অন্যদের বেলায় সেটা একেবারেই নগন্য। কিংবা নেইও।
আরও একটি বিষয় উল্লেখ করা দরকার। ঢাকাই ছবির পরিচালক সহ চিত্রসংশ্লিষ্টদের বেকার বলে শাকিব খান যে মন্তব্য করেছিলেন সেটার জেরে পরিচালক সমিতি তাকে বয়কট করেছিল। কারণ হিসেবে তারা লিখিত বক্তব্যে জানিয়েছেন, শাকিব খান তাদের অপমান করেছেন। সেই ঘটনায় শাকিব খান নিজে পরিচালক সমিতিতে এসে তার মন্তব্যের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন। কিন্তু অতি সম্প্রতি সেই পরিচালক সমিতিরই একজন সসদ্য কলকাতার এক নায়িকার সঙ্গে অশোভন আচরন করেছেন। সে ঘটনায় কলকাতার দর্শকরা বাংলাদেশের পরিচালকসহ সিনেমাসংশ্লিষ্ট সবাইকে গালাগাল করছেন। এনিয়ে কলকাতা এবং বাংলাদেশের কয়েকটি গণমাধ্যমে খবরও প্রকাশিত হয়েছে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশী দর্শকরাও পরিচালকদের চরিত্র কিংবা মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বাজে মন্তব্য করছেন ফেসবুকে। অথচ এবার আর পরিচালক সমিতির কোনো গাত্রদাহ নেই। দেশীয় চলচ্চিত্র তথা সম্পূর্ণ দেশ দিয়েই যেখানে ভিন দেশীরা অপমান করে যাচ্ছে, সেখানে পরিচালক সমিতি সেই পরিচালককে নিষিদ্ধ করার কোনো লক্ষন এখনও পর্যন্ত দেখিনি। তবে কী এটাই আমাদের মনে করতে হবে, শুধুমাত্র শাকিব খানকে থামাতেই সেসব ঘটনার জন্ম দেয়া হয়েছিল? সেটা কী তবে ছিল শাকিব হঠাও চিত্রনাট্যের মহড়া?
মনে রাখবেন, নিজ কর্মে স্টার অনেকেই হতে পারেন। কিন্তু সুপারস্টার সৃষ্টিকর্তা স্বয়ং নিজ হাতে তৈরি করেন। এই তকমা সবার কপালে সেটা জোটে না। একজন শাকিব খানকে ইন্ডাস্ট্রি থেকে বিতাড়িত করতে চাইলে এ মুহূর্তে পুরো ইন্ডাস্ট্রিই থমকে যাবে। আর এফডিসির কতিপয় লোক চাইলেই শাকিব খানকে তাড়াতে পারবেন না। কারণ এখনও হল মালিকরা ঈদ, পুজো-পার্বন কিংবা বছরজুড়ে শাকিব খানের ছবির দিকেই চেয়ে থাকে। আগে সেইসব হল মালিকের আস্থা অর্জন করুন। দর্শকদের আস্থা অর্জন করুন। নিজেরা তৈরি হোন। সুপারস্টারের বিকল্প তৈরি করুন। তারপর শাকিব খানকে অপমান কিংবা বিদায় করার কথা ভাবুন। নইলে নিজেরাই বিতাড়িত হয়ে যাবেন একদিন। সময় কথা বলবে। একজন সংবাদকর্মী হিসেবে আমিই সেই বিতাড়নের খবর লিখবো।
ধৈর্য ধরে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.