তুমিও ভুলে যেও আমায়

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:৪৪

নিখিলেশ, আমি আর কখনো বৃষ্টি দেখিনি । ইচ্ছে হয়নি বেইলি রোডে হাটতে । আধ খাওয়া আইস্ক্রিমটা আর খাওয়া হয়নি । একটা চিঠি লিখতেছিলাম,অর্ধেক লেখার পর আর লেখা হয়নি । মেঘের দেশের মেয়েরা বৃষ্টি হয়ে অঝোর ধারায় ঝরেছিল । বুকের ভিতর তিল তিল করে গড়া স্বপ্ন গুলো হঠাত মিশে গেলো । বুকের পাজর গুড়ো করে নিজেকে বিলিয়ে দিলাম । হারিয়ে গেলাম কোথায় যেন । আর ফিরে আসতে পারিনি । টিএসসিতে যাইনি কখনো ,মনে পড়ে যাবার ভয়ে ।

নিখিলেশ,কোন মানুষ যদি হাড়ের ভেতর টের পেয়ে যায় অনিবার্য নিঃসঙ্গতা তার ,রক্তের ভেতরে যদি জেনে যায় অতিরিক্ত সে পৃথিবীর পথে ,স্বপ্নের উপায়হীন মৃত্যু যদি উপলব্ধি করে সমস্ত মজ্জায়,তখন বলতে পারিস কি যুক্তি তার বেচে থাকবার ?
হৃদপিন্ডের সমস্ত উষ্ণতা উপেক্ষা করে জীবনের সমস্ত স্বপ্নকে কবর দিয়ে সামান্য এই বেচে থাকবার নামে আত্বার তীব্র আর্তনাদের নাম যদি জীবন হয় তবে মৃত্যুর পরিনতি কি তুই বলতে পারিস ?
এই জীবনটা টেনে নিতে আর ভাল লাগছেনা ।

নিখিলেশ, শান্ত পুকুরে ঢিল ছুড়লে সে ঢিল ঢেউয়ের সৃস্টি করে ,এরপর শান্ত পুকুর শান্তই হয়ে যায় । আমি হারিয়ে গেলে হয়তো একটু ঢেউ হবে, তারপর আবার সবাই শান্ত । তুই কিংবা বালিকা কেউ মনে রাখবেনা । সময়ের স্রোতে হারিয়ে যাবে বন্ধু বাশখান ।

নিখিলেশ, এই লেখাটি লিখছি হাসপাতালের বেডে শুয়ে । কে যেন বললো জরে গা পুড়ে যাচ্ছে । পেট কেন যেন কিছু নিতে চাচ্ছে না। যা খাই, আবার মুখ দিয়ে বের হয়ে যায় । ডাক্টার এসেছিলো । আমি বোধহয় হেরে যাচ্ছি ।
অনেক কিছু লিখতে চেয়েছিলাম । হাত কাপছে শরীর কাপছে । মোবাইলটা বার বার হাত থেকে পড়ে যাচ্ছে । আর চোখের পানিতে বালিশ ভিজে গিয়েছে । ইচ্ছে করেই পানি খাওয়ার সময় কিছুটা পানি বালিশে ফেলেছি, যেন কেউ বুঝতে না পারে কান্নার পানিতে বালিশ ভিজেছে । চোখটা বার বার অন্ধকার হয়ে যাচ্ছি । আত্বহত্যা পাপ, কিন্তু নিজেকে তিলে তিলে শেষ করলেও কি পাপ হয় ?
কিছু ভাল লাগছেনারে । অথবা অনেক ভাল লাগছে । কাল রাতে ইচ্ছে করে বালিকাকে কষ্ট দিয়েছি । আসলে চেয়েছি তার থেকে দূরে যেতে । আমি দূরে যেতে চাই ।

৫ টি +০/-০