নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি জন্মের প্রয়োজনে ছোট হয়েছিলাম, এখন মৃত্যুর প্রয়োজনে বড় হচ্ছি ।।

অংকনের সাতকাহন

আমি জন্মের প্রয়োজনে ছোট হয়েছিলাম, এখন মৃত্যুর প্রয়োজনে বড় হচ্ছি ।।

অংকনের সাতকাহন › বিস্তারিত পোস্টঃ

র্যা গিং সংস্কৃতির এপিঠ-ওপিঠ

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৯

বর্তমান প্রজন্মের তরুণ তরুণীদের কাছে র্যা গিং একটি অতি পরিচিত শব্দ। কলেজ ভার্সিটি হতে শুরু করে সবত্রই এখন র্যা গিং সংস্কৃতি দারুণভাবে বিস্তৃত। শিক্ষাঙ্গনের নবীন ছোটভাই-বোনদের র্যা গিং করাটা যেন এখন বড় ভাই বেরাদারদের একটা সিনিয়রিটিসূত্রে পাওয়া অধিকারে পরিণত হয়েছে।



আমি র্যা গিংয়ের বিরুদ্ধে নই। র্যা গিং করেছি আমিও, স্বীকারও হয়েছি এর। তবে র্যা গিং আমার কাছে ততক্ষণই গ্রহনযোগ্য যতক্ষণ সেটা নির্মল আনন্দের পর্যায়ে থাকে। কিন্তু যখনই সেটা তার মাত্রা ছাড়িয়ে শারীরিক কিংবা মানসিক অত্যাচারে পরিণত হয় তখন আমি এর আমূল বিরুদ্ধে।



জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক ঘটনাটা আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। এটা কি ধরণের র্যা গিং! কি করে একজন সিনিয়র আপু তার সদ্য আগত জুনিয়রকে বলতে পারেন-

“যাও বড় ভাইদের কাছে তোমার ব্রেস্ট এর মাপ দিয়ে এসো!”

“আজ তো মাংস ধুলাম কেবল, কাল কষাবো!”

এটা কি র্যা গিংয়ের নুতন কোন ধারা? নাকি র্যা গিংয়ের ছদ্মবেশে স্বেচ্ছাচারী যৌনবিকৃতির দৃষ্টান্ত?



একজন পুরুষ হয়তো কামুক হতে পারে, হতে পারে ধর্ষক কিংবা মাংসলোভী হায়েনা, যে তক্কে তক্কে থেকে সুযোগ খোঁজে নারীর সম্মানে থাবা বসানোর। সে ভয়েই সাধারণ মেয়েরা ভরসার আশ্রয়স্হল হিসেবে বেছে নেয় মেয়েদেরই। সেই ভরসার কেন্দ্রবিন্দুই যদি এহেন আচরন করে কবে আশ্রয়প্রার্থী মেয়েটির কি দশা হতে পারে ভেবে দেখুন একবার। সে বিশ্বাস করবে কাকে? তার পদে পদে ভয় হবে যে, যেকোন সময় যেকোন কেউ হোক না সে ছেলে কিংবা মেয়ে, তার সম্মানকে নিলামে তুলতে পারে। এই ভয়ই চূড়ান্ত পর্যায়ের মানসিক চাপ সৃষ্টি করবে সেই অসহায় মেয়েটির ওপর্। আর এ থেকেই মেয়েটি হয়ে পড়বে নিজ দুনিয়ার ঘেরাটোপে বন্দী।

এর জন্য দায়ী কে?



শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা লাভের আশায় দূর-সুদূরে যায় ভাল কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তার প্রয়োজনীয় শিক্ষার্জন করে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে। যে মেয়েটি সারাজীবন লালিত পালিত হয়েছে বাবা মায়ের কোলে পিঠে চড়ে, মানুষ হয়েছে আদর আর সৌহার্দ্যের ছায়ায় তাকেও সব ফেলে পাড়ি দিতে হয় হোস্টেলের অজানা অচেনা অনিশ্চিত জীবনের দিকে। হয়তো কোনদিন সে মায়ের আদরে কোন কাজ নিজে করতে হয়নি হাতে গড়িয়ে। সে মেয়েকে যখন হোস্টেলে একা একাই সব করতে হয়, সবার সাথে চলতে হয় সে এমনিতেই থাকে নার্ভাস। এ যেন বিয়ের আগেই পিতা মাতা ছেড়ে এক অচেনা শ্বশুরালয়ে গমন। নুতন বৌ যেমন তার নুতন পৃথিবীতে স্বামী, শ্বশুর শ্বাশুড়ি, ননদ-দেবরদের কাছ থেকে অনুকূল ব্যবহার আমা করে ঠিক তেমনি এই মেয়েটিও আশা করে যাদের সাতে সে এই হোস্টেলের প্রবাস জীবন অকিবাহিত করবে তারাও তাকে ঠিক একইভাবে অনুকূল সাপোর্ট দিক। সেটা তো সে পাচ্ছেই না, বরং হচ্ছে এমনমাপের হেয় যাতে সে আর প্রয়োজনীয় মনোবলটুকুই সঞ্চয় করতে পারে না এই প্রতিকূল সাগরে সাঁতরাবার।



কে এই অগ্রজ সিনিয়রেরা?

এরা হচ্ছে প্রভাবশালী নেতা কিংবা বড় ভাই বেরাদারের মদদপ্রাপ্ত কিছু নারী যারা নিজেদের আগেই দিয়েছে বিকিয়ে, এখন চেষ্টায় আছে এই নবীন কুসুমদেরকেও তাদের পথানুসারী বানানোর। নুতন মেয়েদের বড়ভাইদের মনোরঞ্জনের লেটেস্ট খোরাক বানানোর মহাপরিকল্পনায় রত এরা। কোমলমতি জুনিয়র মেয়েদের মানসিক অত্যাচার ও হেয় করে নেতার বিছানায় তুলে দেয়াটাই এদের পরোক্ষ উদ্দেশ্য।



ফার্স্ট ইয়ারের মেয়ে মাত্রই এখন ছেলেদের কাছে মনোরঞ্জনের বিষয়। অনেকবার শুনেছি এমনকি নিজের বন্ধুদের ভিড়েও কেউ কেউ হাসিমুখে বলেছে, নুতন ফার্স্ট ইয়ার ব্যাচ এসেছে। কিছুদিন মাঞ্জা মেরে চলতে হবে। কোনমতে একটাকে বাগে আনতে পারলেই এই বছরটা আরামসে কেটে যাবে। পরের বছর তো নুতন ব্যাচ আসছেই!



মেয়েরা যেন পুরনো কাপড়ের মতই। ফ্যাশন পালটালেই ফেলনা। যারা ক্ষমতাবান তারা জোর করে চায়, যারা সুযোগ পায় বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ধীরেসুস্হে লক্ষ্যের দিকে এগোয়, কারো ওই পরিমান ধৈর্য্য না থাকলে চেষ্টা চালায় ধর্ষণের, আবার কেউ ভালো নাম্বার, প্রতিপত্তি, টাকা কিংবা ক্লাসনোটস, পরীক্ষার আগেই সে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র, হোস্টেলে ভালো রুম ইত্যাদি নানা প্রকার সুবিধার লোভ দেখিয়ে করে ব্ল্যাকমেইল! কেউ সুন্দর চেহারা ভাঙিয়ে করে যায় একটার পর একটা রাসলীলা। এ যেন মহোৎসব! সব যেন ওৎ পেতে আছে অসহায় জুনিয়র মেয়েগুলোর দিকে। শরীরটাই যেন কাল ওদের। যে করেই হোক, যে প্রকারেই হোক এ দেহের স্বাদ দিতেই হবে ওই মাংশাসী পশুদের। নয়তো শান্তিতে সম্মান নিয়ে বাঁচার গ্যারান্টি দিতে পারবে না কেউই!



মেয়েদেরও যে দোষ কিছুমাত্র নেই তাও বলছি না। সংযম ও সহনশীলতা, নিজের প্রতি বিশ্বাস ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চারতা, টাকা পয়সা ক্লাসনোট কিংবা পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের প্রতি মোহত্যাগ, অকারণে না জেনে ছেলেদের সাথে বন্ধুত্বের স্বভাব প্রত্যাহার, অসময়ে একা বা বান্ধবীদের সাথে এখানে সেখানে ঘোরাঘুরি ত্যাগ, চরিত্র না জেনে শুধুমাত্র বাহ্যিক সৌন্দর্য দেখে ছেলেদের প্রতি আসক্তি এগুলো এড়িয়ে চলতে পারলে ঝুঁকি অনেকাংশেই কমানো সম্ভব।



মনে রাখবেন যে ছেলে আপনার সামনে ভাল খোকাবাবুটি সাজছে সে যে বন্ধুদের সাথে আড্ডায় আপনার শরীরের রগরগে বর্ণণা করছে না তার কোন নিশ্চয়তা নেই।

তাই সাবধান হোন, সোচ্চার হোন।

র্যা গিংয়ের নামে চলতে থাকা অনৈতিক যৌন নিপীড়নকে সন্মিলিতভাবে না বলুন।



আপনার প্রিয় শিক্ষাকেন্দ্রকে বিশ্ববিদ্যালয়ই রাখুন, বেশ্যাবিদ্যালয় নয়।



।।সা।ত।কা।হ।ন।।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৮

তাসজিদ বলেছেন: Ragging এর মাঝে আমি ত ভাল কিছু খুজে পাই না। প্রথম বর্ষের স্টুডেন্ট দের সাথে কুকুরের মত আচরণ করা হয়।


৪ বছর তার এ মানুসিক নিপীড়ন থেকে মুক্তি পায় না। যে raggingএর স্বীকার হয়েছে, সে senior হলে আরও ভয়ঙ্কর ragging করে। অনেকটা প্রতিশোধ নেয়ার মত। ফলে এটা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে।


এক মুহূর্তে আইন করে এতা বন্ধ/নিয়ত্রন করা উছিত। তা না হলে অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।



আর যে মেয়ে এ ধরণের কথা বলতে পার সে স্টুডেন্ট নয় street bitch।


আর আপনারা যে ragging শুরু করেছিলেন তার আপডেট ভার্সন এখন সবাই দেখছি। কারণ একদিনে ragging এ অবস্থায় যাইনি। তাই, আপনেও আর দায় এড়াতে পারেন না।

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:২২

অংকনের সাতকাহন বলেছেন: তা আমি স্বীকার করি। তবে আমাদের সময় তা ছিল একটু গেয়ে দেখাও বা নেচে দেখাও টাইপস মজায় সীমাবদ্ধ, তাও ছেলেদের। এতটাও উচ্চমার্গীয় না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.