![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মেয়েটা এভাবে হুট করে চলে আসবে ভাবতেও পারেনি শুভ্র। সকালে ঘুম থেকে উঠেই হতচকিত ভাবে বিছানার পার্শ্বস্হ বেতের চেয়ারে ম্যাগাজিন হাতে অনামিকাকে দেখে তাই একটা হার্টবিট মিস হয় ওর। কোনমতে সামলে নিয়ে কিছু বলতে গিয়েও মুখটা মরা মাছের মত খাবি খেল দুবার, আর টের পেল সে বলার মত কিছুই খুঁজে পাচ্ছেনা। একগাদা প্রশ্ন জড়াজড়ি করে একযোগে বেরিয়ে আসতে গিয়ে সব তালগোল পাকিয়ে গলায় আটকে গেছে ওর।
অনামিকা হাত ইশারায় দরজার পাশটায় কি যেন দেখাতে চাইল ওকে। চোখ ওদিকটায় ঘোরাতেই মাঝারি সাইজের একটা লাগেজ চোখের সাথে ওর মাথা এবং মাথার যাবতীয় স্ক্রু গুলোও একযোগে ঘুরিয়ে দিল। বুঝতে যদিও কিছুই বাকি ছিলনা, তবু কাঁপা হাতে অনামিকার হাত থেকে সোনালী কাজ করা কার্ডটা আলগোছে তুলে নিল ও। বরের নামটা বেশ ভারিক্কী টাইপসের। নিশ্চয়ই বেশ বড় মাপের কোন আমলা বা নিদেনপক্ষে খানদানি ব্যবসায়ী হবেনই। নয়তো অনামিকার জাঁদরেল বাপ নিশ্চয়ই তারই গলায় ঘন্টা বাঁধতে ছুটতেন না।
চা সাধতেই মাথা নেড়ে সম্মতি জানায় অনামিকা। তবে হাঁক ডাক করেও শুভ্রর মেস পার্টনার দেবুর লেজেরও দেখা পাওয়া যায়না। সে অনামিকাকে দরজা খুলে দিয়েই সৌজন্যের আতিশয্যে সেই যে বিদেয় হয়েছে, কিছু সময়ের মধ্যে যে তার দেখা পাওয়ার আশা নেই সেটা বলাই বাহুল্য। তাই শুভ্র নিজেই শার্ট গায়ে চড়িয়ে বের হল মোড়ের হোটেলের উদ্দেশ্যে। বের হওয়ার আগ মূহূর্তে সে একবার মাথা ঘোরালেই দেখতে পেত অনামিকার চোখের কোণে এক ফোঁটা জল!
মোড়ের দোকানটা পার হয়েও শুভ্র পাদুটো থামলনা একবারও। হেঁটে আরও কিছুটা গিয়ে একটা চলন্ত বাসে এতলাফে হ্যান্ডেল ধরে ঝুলে পড়ে ও। শহরের জীবনযাত্রার গ্যাঁড়াকলে পড়ে এসব সার্কাসবাজি আজকাল মানুষকে নিজ দায়িত্বেই ঠেকায় পড়ে শিখতে হয়। শরীর মুচড়ে ঠিকই সে একসময় ঢুকে পড়ে বাসের ভেতর আর একটু খালি হতেই জানালার পাশের একটা সিট ধরে টুপ করে বসে পড়ে ও। জানালার বাইরে একটা মোবাইল ফোনের বিজ্ঞাপনী সাইনবোর্ডের দিকে তাকিয়ে ওর হঠাৎই খেয়াল হয় এতক্ষণেও ওর মোবাইলে অনামিকার একটাও ফোন আসেনি!
শুভ্র বেরিয়ে যেতেই অনামিকার চোখ ফেটে এতক্ষণের জমানো জল ঝরঝর করে নেমে আসে। সে চোখ মুছে ধীর পায়ে দরজার কাছে এসে ব্যাগটা তুলে নেয়।
সে জানে শুভ্র আর ফিরবে না কখনোই।
।
।
।
।।ক।ল্প।ক।থা।য়।সা।ত।কা।হ।ন।। ~ ০৩
©somewhere in net ltd.