নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি জন্মের প্রয়োজনে ছোট হয়েছিলাম, এখন মৃত্যুর প্রয়োজনে বড় হচ্ছি ।।

অংকনের সাতকাহন

আমি জন্মের প্রয়োজনে ছোট হয়েছিলাম, এখন মৃত্যুর প্রয়োজনে বড় হচ্ছি ।।

অংকনের সাতকাহন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাতকাহনীয় ক্যাচাল‬ ~ ১৮ এপ্রিল,২০১৩

১৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:২২

চুইংগাম প্রথমদিকে চিবাইতে বেশ মজাই লাগে। কেমন যেন একটা রসালো রসালো টাইপসের ভাব হয় মুখে। এখন আবার বিভিন্ন ফ্লেভার দিয়া সেই ভাবটারে একপ্রকার আধ্যাত্মিক পর্যায়ে তুলিয়া ফেলা হইসে। অবশ্য আমি যে সেই ভাবখানার জন্যই চুইংগাম চিবাই সেইটা কিন্তু না। এই যেমন এখন যেইটা চিবাইতেসি সেইটার চিবানোর মেয়াদকাল এই নিয়া প্রায় ঘন্টাচারেক হইল। এখন সেইটা থেইকা কোন ফ্লেভার তো বাইর হইতেসেই না, বরং কেমন যেন জুতা চিবাইতেসি টাইপসের একটা ভাব হইতেসে। তবু আমি সেটাই চালাইয়া যাইতেসি অনবরত, একখানা বিশেষ উদ্দেশ্যে; উদ্দেশ্যখানা আর কিছুই নয়, স্রেফ বউয়ের বিরক্তি উৎপাদন। বউ ক্যান জানি আমার এই কাজখানা মোটেই সাপোর্ট করিতে পারেনা, বরং আমারে উলটা যা তা- কিছু না কিছু শুনাইয়াই দেয়। তবু আমি প্রতিবারই অবধারিত ভাবেই কাজখানা করি। এখনও বউ ভুরু কুঁচকাইয়া আমার দিকে তাকাইয়া আছে, বেশ বুঝিতেসি মনে মনে কিছু পাকাইতেসে। তাই আগ বাড়াইয়া আমিই শুরু করিলাম-



: কিছু বলবা? (চিবানো চলিতেসে)



: কখন শেষ হইবে? (চোখেমুখে দারুণ বিরক্তির ভাব ফুটাইয়া)



: কি শেষ হইবে। (বুঝিয়াও ছ্যাবলামি করিতেসি)



: এই যে তোমার বিখ্যাত জাবর কাটা। গরু ছাগলেও তো মনে হয় এত মনোযোগ সহকারে ঘাস চিবায় না। (বড়সড় ধাক্কা খাইলাম, আক্রমণটা বেশ জোরেশোরেই হইসে! বড়ই অপমানজনক)



: আরে মোটে তো শুরুই হইল, আইজ আবার সেলিব্রেশনের দিন কিনা… (চুইংগামটারে জিভ দিয়া ঠেইলা মুখের ডান পাশ থেইকা বাম পাশে নিলাম)



: সেলিব্রেশন! কিসের!!



: ওমা, জাননা তুমি? অবশেষে আইজ এত্তদিন পর আমাগো জামাতীগুলার শুভমতি হইসে।



: ওমা! কুত্তার ল্যাজ আবার সোজা হয় ক্যামনে!



: কুত্তা আইল কোত্থেইকা!



: ওই হইল, ওগো ডিফারেন্স আর তেমন কি? (বইয়ের চোখেমুখে স্পষ্ট বিরক্তি)



: যাই হোক, আইজকার কামডা অন্ততঃ সেইরকম হইসে। (চুইংগাম বাম থেকে ডান, ডান থেকে বামে ঘুরতাসে, চিবানো অফ)



: কোনটার কথা কও?



: ওমা, শুনো নাই! আইজ রথযাত্রা উপলক্ষে ওরা দুইঘন্টা হরতাল অফ দিসে।



: ও এই কথা! (বউ হতাশ স্বরে একখানা দীর্ঘশ্বাস ছাড়িল! হেতু পরিষ্কার হইল না)



: ভাল হয় নাই কামডা? (চুইংগামটায় একটা কামড় দিলাম, এখন তিতা লাগতেসে ওইডা, কথা শেষ কইরাই ফালাই দিমু)



: এই তো তোমাগো প্রবলেম, খালি ওপরেই দেখ। ভেতরে আর দেখ না। (বউ দেখি ক্ষেপসে!)



: … (চুপ করিয়া থাকাই এই মূহূর্তে জ্ঞানীর কাজ)



: আরে যদি হিন্দুদের অনুষ্ঠানের কথাই চিন্তা করিবে তো দুইঘন্টা ক্যান, আজকের দিনটারেই ছাড় দেয় নাই ক্যান? রথযাত্রার অনুষ্ঠান তো আর দুই ঘন্টার না! আচ্ছা ওইটাও বাদ দাও, এই যে রোজার মাসে টানা চারদিন হরতালের কারণে যাদের রুটি রুজি বন্ধ হইল এই হরতাল ডাকা পাবলিকগুলা কি একবারও ভাবসে এই দিন আইনা দিন খাওয়া মানুষগুলা সারাদিনের রোজার পর ইফতারের টাকা পাইব কই? যারা নিজের ধর্মের মাইনষের পরোয়াই করে না হেরা ভাববো পরের ধর্ম নিয়া!

আরে হেরা বুঝসে যে সামনে নির্বাচন, এখন একটু তেল-ঘি মালিশ দিলে একটু জনসমর্থন, আর কয়টা ভোট বেশি পাওয়া যাইবো; আর এমনিতেও হরতাল তো যা করার করা হইসেই, দুইঘন্টা না করলে কিইবা হইবো! তারচে জনসেবাও হইল চাইরদিন খাটনির পর কর্মীগুলাও একটু ঘরে গিয়া ইফতার করিতে পারিল। একঢিলে সবপাখি খালাস। এই চাল বাঙালি মাথায় ক্যান যে ঢুকেনা, এখন তো বাঙালির মাথায় যে কেউ হাত বুলাইলেই বাঙালি তাতেই লেজ নাড়ে !!!



মাননীয় আদালত, আমি যে স্পীকার হইলাম সেকথা আর বলিয়া লাভ নাই। শুধু বলি এরই ফাঁকে জুতার স্বাদসমেত চুইংগামখানা কখন যে আমার হাঁ হইয়া যাওয়া মুখ বাইয়া গলায় নামিয়া গেসে টেরও পাই নাই !!!



অংকনের সাতকাহন

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:২৮

আমিনুর রহমান বলেছেন:


ভাবী চমৎকার কথা বলেছেন +++

১৯ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:০০

অংকনের সাতকাহন বলেছেন: :) :) :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.