নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভালোই আছি মন্দ না চালুই আছি বন্ধ না

অনুভব আন্জুম

ঘরের খাইয়া বনের মোষ তাড়ানোই আমার প্রথম প্রাধান্য ক্ষেত্রেবিশেষে মোষ তাড়াইতে যাইয়া উল্টা মোষের গুতা খাই তবু এইকাজে আমি অক্লান্ত

অনুভব আন্জুম › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের সাবমেরিন,ভারতের দুশ্চিন্তা এবং আজাইরা প্যাচালনামা

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২৪

হাইস্কুলের ইংরেজি বইয়ের একটা ছোটগল্পের বঙ্গানুবাদ দিয়ে শুরু করি।গল্পটা ছিলো এমনঃ

দেহের সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিদ্রোহ করেছে পাকস্থলির বিরুদ্ধে।তাদের দাবী, তারা সারাদিন পরিশ্রম করে আর পাকস্থলি শুধু বসে বসে খায়।পাকস্থলি ব্যাটাকে একটা শিক্ষা দেয়া দরকার।যেই ভাবা সেই কাজ।তারা সবাই একসাথে কাজ করা বন্ধ করে দিলো যেন পাকস্থলি ব্যাটা বসে বসে খেতে না পারে।কিছুদিন পর দেখা গেলো খাবারের অভাবে পুরো দেহ ক্লান্ত শ্রান্ত হয়ে পড়েছে।হাতে পেশী পায়ের পেশী কেউ কাজ করার শক্তি পাচ্ছে না।এহেন দুরবস্থা দেখে পাকস্থলি সবাইকে ডেকে বোঝালো, “তোমরা বৃথাই আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছো।আমার বিরুদ্ধে জেদ করে কাজ কর্ম বন্ধ রাখলে তোমাদেরই ক্ষতি। আমি প্রতিদিন যে খাবার খাই ত থেকেই দেহের শক্তি আসে যার দ্বারা তোমরা কাজ করতে পারো।আমি খাবার না পেলে তোমরাও দুর্বল হয়ে পড়বে।আমাদের সবসময় একত্রে কাজ করতে হবে।”



এবার আসি প্রাইমারী স্কুলের পাটিগনিতে।ঐকিক নিয়মের একটা সহজ অংক করে উত্তর বের করুন তোঃ অবরোধের ৭ দিনে যদি বাংলাদেশে পত্রিকার হিসাবে ৪১ জন মারা যায় তাহলে ডিসেম্বর,জানুয়ারী,ফেব্রুয়ারী(যথাক্রমে ৩১,৩১ এবং ২৮ দিন) এই তিনমাস টানা অবরোধ চললে পত্রিকার হিসাবে কত লোক প্রান হারাতে পারে? কি উত্তর পেয়েছেন? খুব কম সংখ্যাটা তাই না?



আজাইরা প্যাচাল অনেক পারলাম এবার কাজের কথায় আসি।সকালে দৈনিক পত্রিকার সূত্রে জানতে পারলাম, বাংলাদেশ নাকি চায়নার কাছ থেকে দুটি নতুন সাবমেরিন কিনেছে যা প্রতিবেশী দেশ ভারতের নৌবাহিনীর জনৈক কর্মকর্তার গাত্রদাহের কারন হয়ে উঠেছে।সংবাদের সত্যতা যাচাই করিনি কিন্তু পড়ার পর গায়ের চামড়ায় এসিড পড়ার মত অনুভূতি হচ্ছিল।আমরা চায়না থেকে সাবমেরিন কিনবো না আমেরিকা থেকে অ্যাটম বোম কিনবো তাতে ভারতের কি?তার উদ্বেগের কারন নাকি, তিনি বুঝতে পারছেন না বাংলাদেশের মত দেশ সাবমেরিন দিয়ে কি করবে।সেটাতেই বা তাদের কি? সবার তো সবকিছু বোঝার দরকার নাই।পরে ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে দেখলাম লোকটা একেবারে খারাপ বলে নাই।আমাদের দেশের মত একটা দেশ(গরীব, ক্ষুদ্র, সামরিকভাবে অক্ষম অর্থে বোঝাচ্ছি না,পরের কথাগুলো পড়লে বুঝতে পারবেন) সাবমেরিন দিয়ে কি করবে? আমাদের দেশে তো শুধু হাত-পা বনাম পাকস্থলি লড়াই-ই হয় না বরঞ্চ ডান হাত-বাম হাত,ডান পা-বাম পা,ডান চোখ-বাম চোখ এমনকি হৃৎপিণ্ডের ডান অলিন্দ-বাম অলিন্দ পর্যন্ত সর্বসময় লড়াইয়ে মেতে থাকে।দেশের প্রধান দুই জোটের কথা সরিয়ে রাখলেও বাকি চুনোপুঁটি কারও সাথে কারও সদ্ভাব নেই।এমনকি এই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী তাদের ঊর্ধ্বতন সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের উপর গনহত্যা চালায়।সাবমেরিন কেনার সংবাদে খুশি হওয়ার পরিবর্তে এমতাবস্থায় সাবমেরিন ব্যাবহারের সুযোগ পাওয়া পর্যন্ত এই দেশ টিকে থাকবে কিনা সেটা নিয়েই সংশয় দেখা দিচ্ছে।তারচেয়ে টাকাগুলো সুইস ব্যাংকের ব্যাক্তিগত অ্যাকাউন্টে রেখে দিলে সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে নিশ্চিত হতে পারতেন আমাদের এমপি-মন্ত্রীরা।একরাশ দুঃখ আর আফসোস নিয়েই কথাগুলো বলতে হচ্ছে।

সংবাদ সূত্রঃ প্রথম আলো



পরিশেষে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের প্রতি এই অধমের অনুরোধ যদিও তারা এই লেখা কোনোদিন দেখবেন সে আশা করি না। নাশকতা যেহেতু বন্ধ করতে চান না বা পারছেন না, চেষ্টা করে দেখুন নাশকতায় হতাহতদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের চিকিৎসার সমস্ত খরচ বহন করে গরু মেরে জুতা দানের মত প্রতিদান দিতে পারেন কিনা।যতদূর জানি আপনাদের টাকা-পয়সার কোনও অভাব নেই (শুধু নির্বাচনী প্রচারনা চালাতেই এক এক প্রার্থী কোটি টাকা খরচ করে)।দেশের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় আপনাদেরই নাম সবার আগে।বলা যায় না এই চির হতভাগা দেশের আমজনতা আপনাদের এতটুকু বদন্যতায় মুগ্ধ হয়ে আগামী পাঁচ বছরের শোষণের দায়িত্বটা আপনাদের উপর অর্পণ করতে পারে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.