নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বেশি যদি পেতে চাও, বোকা থেকো তবে।

বেসিক দাদা

মানুষ আমি, আমার আবার পাখির মত মন

বেসিক দাদা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুখে এক, অন্তরে আরেক

১৪ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৯

আমি গতকালের বিসিবি কন্সার্টটা দেখি নি। সশরীরে তো নয়ই, টিভিতেও না। কিন্তু সকাল থেকে ফেসবুকে অনেকের চেতনাধারী স্ট্যাটাস, শেয়ারকৃত স্ট্যাটাস দেখে নিজের দৃষ্টিকোণ শেয়ার না করে পারলাম না।



প্রথম কথা হলো, এই কন্সার্ট-টা আসলে কেন করা হলো? আদৌ কী কোন দরকার ছিলো? মানলাম যে, এটা বিশ্বকাপের এক ধরণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান কিন্তু দেশে হয়ে যাওয়া সাম্প্রতিক বিশ্বকাপেও হয়েছিলো। তখন কিন্তু সমালোচনা এত হয় নি। কারণ তখন দেশীয় সংস্কৃতি অনেক হাইলাইট করা হয়েছিলো। দেশের শিল্পীরাও যথাসময়ে অসাধারণ পারফর্ম করেছিলেন। কিন্তু গতকালের কন্সার্টে নাকি বাংলাদেশী শিল্পীরা ভালো লাইটিং ও সাইন্ড সিস্টেমে পারফর্ম করার সুযোগই পান নি? উনারা কি এটা ডিসার্ভ করেন না? উনারা কি এতই খারাপ? তাহলে তো কন্সার্টটা শাহরুখের হয়ে যাওয়া কন্সার্টের চেয়ে ভিন্ন হয় নি, এমনকি একন আসার পরেও না (শুনলাম সে নিজেও নাকি “ছাম্মাক ছাল্লো” গেয়েছে গতকাল)।



আমার আপত্তি হচ্ছে কন্সার্টে হিন্দী গান ও নাচের আধিক্য নিয়ে মানুষের দ্বিমুখী মনোভাবের বহিপ্রকাশ দেখে। আরে ভাই এতদিনেও যদি আপনি বাঙ্গালী জাতটারে চিনেন নাই তাইলে তো আপনি এখনো অপ্রাপ্তবয়স্ক। এতই যখন হিন্দী গান-নাচের প্রতি বিতৃষ্ণা তাহলে টিকেট কেটে এটা দেখতে গেলেন কেনো? অনেকে আবার লিখেছে, টিভিতে এটা দেখে নিজের ২০০০ টাকা (টিকিটের দাম নাকি ৭৫০০০ পর্যন্ত ছিলো!) বাঁচালাম। আপনি এখানে ২০০০ টাকা বাঁচিয়ে আত্নতৃপ্তিতে ভুগছেন, কন্সার্টটা টিভিতে দেখতে কিন্তু ভুলেন নাই। এখন আবার বলছেন কেনো যে, এসবের কোনো মানে হয় না? আমার মনে হয়, বাংলাদেশে এমন মানুষ হাতে গোনা যাদের মোবাইলে বা পিসিতে হিন্দী গান/ মুভি একটাও নাই, কখনো নিজের মনে হিন্দী গান গুনগুন করে গেয়ে উঠে নাই, একটা হিন্দী মুভিও দেখেন নাই। বরং এমন মানুষের সংখ্যাই বেশি যাদের মোবাইলে বা পিসি তে ইংরেজী বা বাংলা গানের থেকে হিন্দী গানের বা মুভির সংখ্যাই বেশি। আর স্টার প্লাস বা স্টার জলসার কথা না-ই বললাম। সো, মুখে এক, অন্তরে আরেক- এই ব্যাপারটা আমাদের ছাড়তে হবে।



যে দেশে নোবেলজয়ী ডক্টর ইউনূস-কে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয় সেখানে আসলে আমার-আপনার এসব কন্সার্ট নিয়ে সমালোচনা সাজে না। আমার বিশ্বাস, এ আর রহমান এর চেয়েও বাংলাদেশের মিউজিসিয়ানরা অনেক ভালো পারফর্ম করতে পারেন। কিন্তু আসলে আমরা নিজের দেশের গুণীদের কদর করতে শিখি নাই, উন্নত সুযোগ দেয়া তো দূরের কথা। ক'জন শুনেছেন নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী-র কথা? অ্যামেরিকা, ইংল্যান্ডেও কিন্তু বড় ইন্ডিয়ান কন্সার্ট হয়, তারপরেও ওদের দেশের গান টপচার্টেই থাকে। "চেতনা"- এই একটি শব্দ নিয়ে সবাই মুখে ফেনা তুলে ফেলছি, কিন্তু আমার মত অনেকেই হয়তো বুঝেই না এই চেতনা শব্দটার মানে কী। শব্দটার মানে এতো গভীর যে এটা অন্তরে একবার যদি গাথতে পারি কেবল তখন-ই এই বাংলাদেশ, সোনার বাংলাদেশ হতে পারবে। এক্ষেত্রে আবার সেই পার্শ্ববর্তী "হিন্দুস্তান"-ই কিন্তু একটি ভালো উদাহরণ। এ আর রহমানের নাম অস্কার পাওয়ার আগেও আমরা ভালো মত জানতাম। কেন? কারণ, ওর দেশ তখনই ওকে প্রাপ্য সুযোগ দিয়েছিলো, দিয়েছিলো এক্সপোজার। আমরা কি আমাদের শিল্পীদের সেরকম কোনো সুযোগ দিয়েছি? আরেহ আমরা তো ভারতেই এখনো পর্যন্ত আমাদের দেশীয় চ্যানেলগুলোই প্রচার করতে পারি নি, এক্সপোজার দেবো কি। শেম অন আস। আমার সাফ কথা, যেই দেশে আমার টিভি চ্যানেল দেখানো হয় না, সেই দেশের চ্যানেল আমার দেশে দেখানো যাবে না (এজ সিম্পল এজ দ্যাট)।



নিজেদেরকে বিশ্বের কাছে চেনানো পরে, আসেন আগে নিজেদেরকে ভালোমতো চিনি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.