নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বেশি যদি পেতে চাও, বোকা থেকো তবে।

বেসিক দাদা

মানুষ আমি, আমার আবার পাখির মত মন

বেসিক দাদা › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার মধুচাঁদ (প্রথম পর্ব)

২৫ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:৩২

মার্চের মাঝামাঝি সময়ে আমি আর আমার স্ত্রী দুজনে মিলে ঘুরে এসেছিলাম সেন্টমার্টিনে। বিয়ের পরে ঘুরতে যাওয়া যেটাকে সোজা ভাষায় বলে “হানিমুন”। তো যাই হউক, দুজনে কীভাবে যাবো, কোথায় কোথায় ঘুরবো, কী করবো- এই নিয়ে খুউব এক্সাইটেড। আমি বরাবরই একটু গুগল প্রিয়। বাংলায় সেন্টমার্টিন ভ্রমণ নিয়ে সার্চ দিতেই গুগলবাবা আমার সামনে সামহোয়্যারের কিছু পোস্ট এনে হাজির করে দিলো। তো যা-ই হোক, পড়ে ভালই জ্ঞান আহরণ করলাম। প্রথমে ভেবেছিলাম কক্সবাজারের মারমেইড ইকো/ বীচ রিসোর্টে যাবো (তখন একটা অফার চলছিলো), পরে সামনে আরো ভালো অফার পাবো ভেবে আর ওখানে যাওয়া হয় নাই। আসলে জায়গাটা কক্সবাজার থেকে একটু দূরে তাই ভাব্লাম, যদি প্যাকেজেই যাই তবে শুধু বেশি খরচ দিয়ে ওখানে থাকা-ই হবে, অন্য কোথাও যেতে মন চাইবে না। এই জন্যে যারা আগে কখনোই কক্সবাজার বা সেন্টমার্টিন ঘুরেন নি, আমি বলবো কোনো প্যাকেজেই না যেতে, নিজে নিজে এক্সপ্লোর করুন। এটা যে কোনো নতুন শহরের ক্ষেত্রেই করতে পারেন। আমি আগে অবশ্য একবার সেন্টমার্টিন গিয়েছিলাম, কিন্তু আমার বউ কখনো সমুদ্রে গিয়েছিলো কিনা মনে করতে পারে না, তাই আমার প্ল্যান ছিলো যেভাবেই হউক বউকে সমুদ্র তো দেখাবোই কিন্তু সেটা হবে সেন্টমার্টিনের অপরুপ দৃশ্যসহ। শেষমেশ অনেক খুজে রিভিউ পড়ে জানলাম “সীমানা পেরিয়ে”- নামক একটি রিসোর্টের কথা। ওদের ওয়েবসাইট অনেক ঘাটাঘাটি করলাম। কিন্তু রিসোর্টটি একটি অনাধুনিক জায়গাতে অবস্থিত কিনা, এই জন্যেই বোধহয় ওদের ওয়েবসাইটটিও অনাধুনিক, মানে তেমন কোনো তথ্য নেই। যাই হউক ওখানকার পরিচালক মিঃ রানার ফোন নাম্বার জোগাড় করে গেলাম ওনার অফিসে; ভালো লোক, যাকে বলে পড়াশোনা জানা ভদ্রলোক, ঢাকা থেকেই বুকিং মানি পে করে বুকিং দিয়ে দিলাম “স্যুট ভিলা”। সাথে কক্সবাজার থেকে টেকনাফ হয়ে সেন্টমার্টিন যাওয়ার জন্যে কেয়ারী সিন্দবাদের টিকেটও কেটে ফেললাম ওখান থেকেই। সবমিলে দেয়া লাগলো ৫৮০০ টাকা। যেহেতু আমার স্ত্রী-ও চাকুরী করেন সেহেতু আমাদেরকে উইকেন্ডেই যেতে হয়েছিলো, তাই বাসের সীট পেতে যথারীতি গলদঘর্ম হয়েছিলাম। ৩০০০টাকা দিয়ে পেলাম গ্রীন লাইনের ঠিক পেছনের আগের সারির দুটো সীট। যাত্রার দিন (আসলে রাতের বাস) টার্মিনালে গিয়ে দেখি যে কর্তৃপক্ষ দুঃখিত, বাস আসতে দেরী হবে। কি আর করা, বসে বসে বাকী লোকদের কর্মকাণ্ড দেখতে লাগলাম। সমস্যা হলো, টার্মিনালটা এমন এক জায়গায় আপনি যদি কিছু কিনতে (এমনকি সিগারেটও) চান, তাহলে আপনাকে ভালো পথ হেঁটে কিনতে হবে। অবশেষে রাত ১১টার বাস ছাড়লো সাড়ে ১২টায়, আর কক্সবাজারে পৌঁছুল দিনের ১১টায়। পথিমধ্যে দুবার থেমেছিলো ২০ মিনিট করে, কিন্তু শেষবারের সময়ে থামে চকোরিয়ার একটি রেস্তোরাঁয় (নাম মনে নেই)। ভাই রে, সকাল বেলা, একটু হাল্কা হওয়ার দরকার থাকাটা স্বাভাবিক। কিন্তু গিয়ে দেখলাম প্রতিটা টয়লেটের সামনে ৫-৬ জনের লাইন, মানে লাইন ধরে হালকা হতে হবে। দেখে মনে হলো, স্টেডিয়ামে কোনো হাই ভোল্টেজ ম্যাচের বিরতির সময়ে টয়লেটের লাইন (যারা স্টেডিয়ামে খেলা দেখেন তারাই জানেন)। যাই হউক, ওই জায়গায় কতক্ষণ লাগলো, কেনো লাগলো সে বর্ণণায় আর না-ই গেলাম, কিন্তু একসময় খুবই বিরক্ত লাগছিলো বাসে বসে থাকতে (কখন পৌছাবো এই জন্যে)। আর তার উপরে এসি বাস, না পারে জোরে টানতে, না পারে ওভারটেকিং করতে। সম্ভবত আমার স্ত্রী আমার থেকেও বেশি এক্সাইটেড ছিলো যে কখন পৌঁছে সমুদ্রে ঝাঁপিয়ে পড়বে, ওরও তর সইছিলো না।

অবশেষে পৌঁছে আগে থেকেই ঠিক করে রাখা একটি হোটেলে উঠে পড়লাম। এখানে আমি ভালো গাধামি করে ফেলেছিলাম। যখন বাসের টিকেট পাচ্ছিলাম না সুবিধামতো, তখন একটা শঙ্কা কাজ করছিলো এই জন্যে যে কক্সবাজারে গিয়ে হয়তো হোটেলের রুম না-ও পেতে পারি। এজন্যে ইন্টারনেট ঘেঁটে একটি রিজনেবল প্রাইসের হোটেলে ফোন দিয়ে বুকিং করে রেখেছিলাম। পরে গিয়ে দেখি খ্যাতের থেকে মোটামুটি ভালো রুমই পেয়েছিলাম (ওটা নাকি ওদের হানিমুন স্যুট)। আসলে আমাদের প্ল্যান ছিলো সেন্টমার্টিনেই ভালো কোথাও থাকার, তাই আমরা ওশান প্যারাডাইস বা সীগালের মত হোটেলগুলো শুরুতেই প্ল্যানে রাখি নি। আসলে কক্সবাজারে গেলে হোটেল বুকিং না দেয়াটাই ভালো, পৌঁছে আস্তে ধীরে খুঁজে ভালো হোটেল পাওয়া যায়, যদি সাথে মানুষ দুই একটা বেশি থাকে। আমরা শুধু দুইজন ছিলাম, সাথে সারারাতের ক্লান্তি তাই আসলে একরকম উপায়ান্তর না দেখেই বুকিং করা হোটেলে উঠে গিয়েছিলাম।

তো ফ্রেশ-টেশ হয়ে বের হয়ে পড়লাম খাবারের সন্ধানে, দুপুরের খাবার। বলে রাখি এসব ক্ষেত্রে আমার স্ত্রী সবসময় এক কদম এগিয়ে, মানে নতুন জায়গায় ভালোমতো বিশ্রাম না নিয়েই বেরিয়ে পড়া। আমি যেহেতু কক্সবাজারে ২-৩ বার এসেছিলাম তখনই জানতাম এইখানে ভালো খাবার পাওয়া যায় “পউষী” আর “ঝাউবন” রেস্তোরাঁয়। তাই বাছবিচার না করে সরাসরি চলে এলাম “পউষী”তে। এখানে একটা ভর্তার আইটেম পাওয়া যায় যেটাতে প্রায় সব আইটেমের ভর্তা থাকে (অসাধারণ!) কিন্তু দাম মাত্র ১৫০টাকা। এটা দিয়ে আমি খেয়ে ফেললাম এক প্লেট। আমার স্ত্রী অবশ্য গতানুগতিক খাবারই নিতে আগ্রহী ছিলো। এর পর ডেসার্ট হিসেবে খেলাম কাস্টার্ড আর পুডিং, আহ! ভাবছেন, ব্যাডা জিন্দেগীতেও এইগুলা খাস নাই, ওইখানে গিয়া খায়া কইতাসস আহ! আসলে নিজের শহরের বাইরে এই ধরণের ডেজার্ট পেলে এমনেই খেতে ভাল্লাগে তা যত খারাপই হউক।



[আজ এ পর্যন্তই। ইলেক্ট্রিসিটি চলে আসছে। আরেকদিন লোডশেডিং-এর সময়ে পরের পর্ব লিখবো। ইন্টারেস্টিং কিছু না, নিজের কাহিনী লিখা আর কি!]

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৪

কামরুল ইসলাম রুবেল বলেছেন: ভালো লাগলো, ছবিসহ পরের পর্বের অপেক্ষায়। প্রিয়তে নিলাম।

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১১:৩২

বেসিক দাদা বলেছেন: ধন্যবাদ। জেনারেল হওয়ার পর এটা আমার প্রথম ব্লগ পোস্ট। আর আপনি এটা প্রিয়তে নিয়েছেন বলে বিশেষভাবে ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.