নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লেখালেখি করি স্কুল বয়স হতে। এখন যেহেতু মানুষ ভুলেই গেছে খাতায় লেখা, তাই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আমিও গা ভাসিয়েছি স্রোতের অনুকুলে। ব্লগে লিখালিখি তেমন কখনো করিনি। ফেইসবুকেই সকল কিছু লিখে থাকি। চিন্তা করলাম এখন থেকে ব্লগেও কিছু লিখি। যেই ভাবা সেই কাজ।

আরেফিন কাজী

তেমন বিশেষ কোন পরিচয় নেই। আমি মানুষ এইটাই আমার বড় পরিচয় বলে মনে করি।

আরেফিন কাজী › বিস্তারিত পোস্টঃ

রোজনামচা-৪

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:১০

-আচ্ছা, কখনো শব্দকে ভালবেসেছো?
-যেমন?
-রোজনামচা।
-মানে?
-দিনলিপি।
-বাহ! সুন্দর শব্দতো। আমারো আছে অবশ্য একটা?
-শুনি।
-প্রিয়তমেষু।
-আচ্ছা শোন, কাল চলো কার্জনে যাই। অনেক দিন সবুজ ঘাসে পা ছড়িয়ে বসা হয় না।
-কটায় বেরুবো?
-আজতো আর অফিসে বলতে পারবে না, ব্যক্তিগত কাজ আছে। আজ ৫ টায় বেরোও। আমি থাকবো আজ তোমার অপেক্ষায়।
-শোন।
-কি?
-আজ কি শাড়ি পড়তে পারবে?
-আজও? আচ্ছা, কোনটা?
-ওই যে, কলাপাতা রঙের। সাথে ছোট্ট একটা সবুজ টিপ।
-চুড়ি পরবোনা?
-সেটা বলতে হয় না।

মামা, ভাড়াটা দেন। শাহবাগতো চলে আসলো। ভাড়াটা মিটিয়ে সে নেমে পড়লো বারডেমের সামনে। রাস্তা পার হয়ে ফুলের দোকান হতে আজও একটা বেলি ফুল কিনে নিল। ব্যাগের পকেটে পুরে রাখতে ভুললো না। আজ সে হেটে যাবে। ছবির হাটের সামনে এসে একটু থমকে দাড়ালো। মনে হলো কেও বোধয় ডাকলো পেছন হতে। ফিরে তাকিয়ে দেখলো, ডাকার মত তেমন কেও নেই। আবার পরক্ষণে হাটতে শুরু করলো। চারুকলার সামনে খালারা ডালি বিছিয়ে চুড়ি বিক্রি করছে। রাস্তা পেরিয়ে গিয়ে, এক ডজন কলাপাতা রঙের চুড়ি কিনলো। আজ অফিসের কাজে যখন দুপুরে গুলশানের দিকে গেলো, ফেরার পথে বনানী ব্রিজের পাশে কদম ফুলের গাছটায় দেখলো, থোকা থোকা কদম ফুল ফুটে আছে। চারুকলার ভেতরে ঢুকে পুকুরের দিকে গেলো। সেখানে একটা কদম ফুলের গাছ রয়েছে। সে গুনে গুনে মোট চারটা পারলো। ব্যাগের ভেতরে পুরে রওনা দিল কার্জনের দিকে। কার্জনে কাটগোলাপ গাছটার নিচে গিয়ে বসলো। অনেকক্ষণ চুপচাপ বসে থাকার পর হঠাত গতকালের চকলেট বিক্রি করা মেয়েটা এলো। আজ এসে মিষ্টি একটা হাসি দিল। ডাকার পর কাছে এসে বসল। ব্যাগ হতে বেলিফুল, এক ডজন ছোট চুড়ি আর কদম ফুল গুলো বের করে ওকে দিল। মেয়েটা আজও কোন কথা না বলে ছোট্ট একটা হাসি দিয়ে চলে গেল গতকালের মত। গৌধুলীর ঠিক আগে আগে, শহীদুল্লাহ হলের পুকুড়পাড়ে গিয়ে বসলো। আজ কেন যেন পুকুরের পানি শান্ত। একটুকুন নড়চড়ও নেই। তাপমাত্রার পারদ আজও কমেনি। শহরটা কেমন যেন গুমোট হয়ে আছে। এই বুঝি এখুনি বিকট শব্দে কিছু একটা বলে উঠবে।

-বেরুলে?
-তুমি কদ্দুর?
-চারুকলার সামনে।
-আমিও প্রায় চলে এসেছি। নামবো খানিক পরে। তুমি গিয়ে না হয় কার্জনের কাঠগোলাপ গাছটার নিচে বসো।
-না, তুমি আসো চারুকলা। আমাকে চুড়ি কিনে দিবে। কলাপাতা রঙের।
-আচ্ছা।
-আরেকটা কাজ করতে হবে।
-কি?
-চারটি কদম ফুল পেড়ে দিতে হবে চারুকলার গাছটি হতে।
-আচ্ছা। আসছি।
ফোনের রিংটোনে হঠাত সম্ভিত ফিরে এলো। রিসিভ করে বললো, “কোথায় তুই? আমি টিএসসিতে আছি, রুবেলের দোকানে।” আসছি বলে ফোনটা কেটে দিল।

ঘাসের উপর দিয়ে হেটে হেটে যেতে যেতে হঠাত মনে হলো, আচ্ছা এই স্বপ্ন দেখা যদি হুট করে বন্ধ হয়ে যায়? কিইবা আর হবে। স্বপ্নরা বাস্তবে এলো তো তা আর স্বপ্ন হতো না। গেইট হতে একটা রিকশা নিল। বললো শহীদ মিনার হয়ে টিএসসি যাবেন। বাড়িয়ে দিব ভাড়া। অনেকদিনের পরিচিত জায়গাটিকে দেখা হয় না বহুদিন। পুরোনো স্মৃতির স্বপ্ন সে দেখতে চায়। কানে হেডফোন দিয়ে এই বিদায়ে ছাড়লো।
“তোমার অনেক ফেলে আসা ধূসর ধুলো জমা সময়ে
নীরব চেয়ে থাকা চোখের আলো ঘিরে থাকবে যেন তোমাকে
যা কিছু ছিলো থেমে থাকা আবার থামবে এই বিদায়ে
আমার অপার সীমানাতে তোমার চিহ্ন তবু রবে বেঁচে”

(৩০ মে ২০১৮)

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:১৯

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: বেশ।

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২৭

আরেফিন কাজী বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৩

এ.এস বাশার বলেছেন: সুন্দর......++

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪০

আরেফিন কাজী বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সরল কথা বার্তা ।

৪| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৮

দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: ++ B:-/

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.