নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্যক্তিগত ব্লগসাইট : www.akterRhossain.blogspot.com \n \nফেসবুক আইডি : Akter R Hossain \n\n\nফেসবুক আইডি লিংক: www.facebook.com/ARH100

আকতার আর হোসাইন

খেলাধুলো করতে ও বই পড়তে প্রচন্ড ভালবাসি। আর মাঝেমধ্যে শখের বসে লেখার ক্ষুদ্র চেষ্টা করি।

আকতার আর হোসাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্মের বয়ানে ঘৃণা ঝাড়া বাঙ্গালী ও একজন কিশোর কুমার দাস

১০ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:৩৯




অনেক দিন আগের কথা। কিছু ভাই ব্রাদার নিয়ে একটা সংগঠন ক্রিয়েট করি। আমি সংগঠনের নামটা দেই "সেবানন্দ"। অর্থাৎ সেবার মাধ্যমে আনন্দ অর্জন। এই নাম দেখেই অনেকে ক্ষুদ্ধ হয়। চারিদিক হতে মন্তব্য আসতে থাকে, নামটাতে কেমন জানি হিন্দু হিন্দু ভাব আছে।৷ মুসলমানদের সংগঠনের হইয়া এই নাম! নাম বদলাতে হবে এই রকম একটা রব উঠে। আমরা সংগঠনের সেবকরা মন্তব্যকারীদের নামের অর্থ বুঝাতে চেষ্টা করি। মানুষ বুঝল কি বুঝল না তা আমরা বুঝিনি। তবে এই সাম্প্রদায়িক মন্তব্য সেবারের মত থেমেছিল।

সংগঠন খোলার কিছুদিন পরেই ভুল বুঝাবুঝি হয়। আমি সরে আসি দায়িত্ব ছেড়ে। সংগঠনের চ্যাট গ্রুপে মাঝে মাঝে অন্যান্য সেবকদের আলোচনা নিরবে দেখে যেতাম। একদিন দেখি সংগঠনে যিনি সভাপতির দায়িত্বে তিনি সংগঠনের 'সেবানন্দ' নামটা বদলানোর প্রস্তাব রাখলেন। যিনি বলেছিলেন সেবানন্দ নামটি অনেক সুন্দর, নামটির জন্য যিনি নিজে আমাকে একটা উপহার দিয়েছিলেন তিনি কেন নাম বদলানোর প্রস্তাব দিলেন? ব্যাপারটা মাথায় ধরলো না আমার। ওনার সাথে আমার ভুল বুঝাবুঝি ছিল বলে আমার দেয়া নামটা রাখতে চাননি। নাকি সেই পুরনো 'পাছে লোকে কিছু বলে'র কথা ধরে। মানে নামটা তে যে হিন্দু হিন্দু ভাব আছে সেই কারণে?

অতঃপর ভাবতে থাকি বিদ্যানন্দ সংগঠন নিয়ে। এই বিষয়ে সংগঠনটিই ছিল আমাদের আদর্শ। সেবানন্দ নামটির দিকে তাকালেই সেটি বুঝতে পারা যায়। এমনকি লোগোটিও তাঁদেত অনুসরণ করে তৈরি করি আমরা। লোগোর জন্যেও অনেক কথা সইতে হয়েছিল আমাদের। নামাজ হবে না এই অজুহাতে একটা লোক তো টি শার্টের লোগো নখ দিয়ে ঘষে উঠিয়ে ফেলেছিল। ভাবা যায়!

আমার এলাকাতেই এই ধর্মান্ধরা বাস করে না। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া সারা দেশ জুড়েই এরা আছে৷ যে নাম অনুসরণ করে যাদের লোগো অনুসরণ করে সেবানন্দ ক্রিয়েট করি, সংগঠনের দিক থেকে যাদের আমরা আদর্শ হিসেবে মানি সেই হিন্দু হিন্দু গন্ধের 'বিদ্যানন্দ' নামক সংগঠনটি কেমনে ঠিকে রইল? তারা কি এহেন মন্তব্য শোনে না? ভাবনাগুলো মাথায় জড়ো হয়।

সেবানন্দের প্রতিটি কাজ ও প্রোজেক্ট নিয়েই বাজে বাজে সমালোচনা ও অপপ্রচার হয়। পান থেকে চুন খসলেই শুরু হয় চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করা হয় যা এখনো চলমান। একশ মানুষকে ত্রান-সাহায্য দিয়ে যদি ফেবুতে দুটো ছবি দেই কিংবা কাউকে রক্তদান করে যদি ছবি তাহলেই একদল মানুষ তাদের হিংসা-বিদ্বেষ, ঘৃণা ও হীনতা ঝাড়ে ইসলামের বয়ানে, ঈমানের বয়ানে। ওসব সেবা লোক দেখানো। এতে ফায়দা নেই। ঈমান থাকবে না হেন থেন......

তখম প্রশ্ন করি নিজেকে, বিদ্যানন্দের একটাও সমালোচনা হয় না কেন?। ভাবি এরা গ্রেট। এদের সুষম বন্ঠন, গঠনতন্ত্র এবং নির্ভুল নিয়মাবলির কারণে ওরা সেবানন্দসহ আর সব সংগঠন থেকেই আলাদা। এজন্য এদের সমালোচনা হয় না। আমরা ভুল বলেই আমাদের সমালোচনা হয়। এই ভেবে নিজেকে দেই সস্তা স্বান্ত্বনা!!

এতকিছু বলার উদ্দেশ্য হল প্রিয় বিদ্যানন্দ সংগঠনটিরও এখন প্রচুর বাজে সমালোচনা হচ্ছে। কাজী নজরুল লিখেছিলেন,

"মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান"

কবির এমন অমর বাণী অমর রয় কিন্ত সবাই মর্মকথা হৃদয়ে ধারণ করতে জানে না। সবাই মানুষ হতে পারে না। মানুষ রুপে কিছু প্রাণী পশুও হয়।

আরো জানতাম না,

ধর্মান্ধরা একদিন না একদিন ফুলের মধ্যেও দুর্গন্ধ খুঁজে বেড়াবে। আজ কিশোর কুমার দাস পদত্যাগ করেছেন? তার দোষ তিনি হিন্দু। 'তিনি হিন্দু' এই একটা কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে আমরা ওনাকে পদচ্যুত করেছি৷ আমরা স্বাধীন হয়েছি কথা সত্য। কিন্তু মুক্ত হইনি। মুক্তচিন্তা করতে জানিনা। হ্যাঁ, চিন্তাগুলো এখনো বন্দী রয়ে গেছে ধর্মীয় বেড়াজালে। (আমার ধর্মের বেড়াজাল নাই, মানুষ কিয়দংশ কথা ধরে বাকি সব ছেড়ে দেয় স্বার্থে পরে। দোষটা মানুষের, ধর্মের নয়) যার ফলে পরম ধর্ম মানবতার চাষ করতে জানি না। জানি ধর্মের দোহাই দিয়ে মানবতাকে গলা টিপে হত্যা করতে, দাঙ্গা হাঙ্গামা সৃষ্টি করতে, রক্তপাত ঝরাতে।

খুব সম্ভবত, ২০১৫ সাল থেকে বিদ্যানন্দ সংগঠনটিকে চিনি। অথচ বিদ্যানন্দের প্রতিষ্ঠাতা কিশোর কুমার দাসকে চিনলাম সেদিন মাত্র। তাঁকে না চেনার কারণ, তিনি আত্মপ্রচার করেন না। অথচ এই মানুষটাকেই এদেশের মানুষ সাম্প্রদায়িক প্রশ্নে পদচ্যুত করতে চায়.....

এত সব দেখে আপনিই মনে আসে বিশ্ব কবির সেই অপ্রিয় কথাটি,

",সাড়ে সাত কোটি বাঙ্গালীর হে মুগ্ধ জননী
রেখেছো বাঙ্গালী করে, মানুষ করোনি"

কি বলব বুঝতে পারছি না। ব্যাপারটায় অনেক কষ্ট পেলাম। ।

প্রিয় কিশোর কুমার দাস দাদা আপনি আমাদের ভালবাসা জানবেন। জানবেন, সবাই মীর জাফর হয় না। সবাই বেঈমান হয় না। স্যালুট আপনার প্রতি আগে যেমন ছিল এখনো তেমনিই আছে।

আরো জানবেন,

আপনার দেখানো পথ ধরেই স্বপ্নবাজ তরুণরা মানবতার সেবায় এগিয়ে যাবে দুর্বার গতিতে। ধর্মের অপব্যাখ্যায় সৃষ্ট দেয়াল ওদের কখনো রুখতে পারবে না।

-------- আকতার আর হোসাইন [০৭ মে ২০]২০

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই মে, ২০২০ বিকাল ৪:২২

নতুন বলেছেন: মূখদের কথায় তার পদত্যাগ করা উচিত হয় নাই। এতে এখন সংঘটনটা্ ঝিমিয়ে যাবে।

আর মূখ`রা তো নিজে কিছু করবেনা। তারা পারবে মানুষের সমালোচনা করতে। :(

১০ ই মে, ২০২০ বিকাল ৪:৩৫

আকতার আর হোসাইন বলেছেন: এটা ঠিক বলেছে। নিন্দুকদের নিন্দায় ওর পদত্যাগ করা ঠিক হয়নি। বঙ্গবন্ধুবিহীন বাংলাদেশ কিভাবে চলেছে তা সবাই দেখেছে৷ কিশোর বিহীন বিদ্যানন্দ কতটুকু ঠিকে সেটিও দেখার বিষয়। তবে আশার কথা হচ্ছে তিনি চেয়ারম্যানপদ থেকে সরে দাড়ালেও পরিচালনা পর্ষদ কমিটিতে আছেন।

২| ১০ ই মে, ২০২০ বিকাল ৫:২১

রাজীব নুর বলেছেন: দেশের সমস্ত্ ধর্ম ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ধর্মটা ছিনিয়ে নিতে পারলে ধর্ম ব্যবসায়ীরা অসহায় হয়ে পড়বেন।

৩| ১০ ই মে, ২০২০ রাত ৮:৩০

সুপারডুপার বলেছেন:



ব্লগ দেখেই বোঝা যায় দেশে উগ্রবাদীদের উৎপাত কেমন বাড়ছে। যেহেতু এরা প্রকৃতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। প্রকৃতিই একদিন এদের ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করবে।

যতদিন বাংলাদেশের মানুষরা সিভিতে ধর্ম লিখবে ততদিন এই সমস্যা থাকবেই । এখন থেকেই সরকার , অফিস আদালত সব জায়গায় সিভিতে ধর্ম লিখতে নিরুৎসাহিত করা উচিত।

=========================================================================
সুস্থ দেহ প্রশান্ত মন কর্মব্যস্ত সুখী জীবন-এই অপূর্ব ছন্দে একাত্ন হয়ে সুখ-সাফল্যের পথে এগিয়ে যাবেন এই শুভকামনা করি।

৪| ১০ ই মে, ২০২০ রাত ৯:১৬

আহমেদ জী এস বলেছেন: আকতার আর হোসাইন,




একটা প্রবাদ আছে - "ভাত দেবার মুরোদ নাই, কিল মারার গোঁসাই"। আমরা হচ্ছি সেই গোঁসাইয়ের দলে।

আপনার কথাটিই আবার কিশোর কুমার দাসকে বলছি -
"আপনার দেখানো পথ ধরেই স্বপ্নবাজ তরুণরা মানবতার সেবায় এগিয়ে যাবে দুর্বার গতিতে। ধর্মের অপব্যাখ্যায় সৃষ্ট দেয়াল ওদের কখনো রুখতে পারবে না।"

৫| ১১ ই মে, ২০২০ রাত ১২:২৮

আলআমিন১২৩ বলেছেন: মুক্তিযুদ্ধ করে পাওয়া এ দেশে অসভ্য ইতর দের স্থান থাকা উচিৎ নয়। এদেরকে যেখানে পাবেন গনপিটুনি দিয়ে ল্যাংড়া করে দিন।এদেরকে অসভ্যদের ভাগাড়ে নির্বাসন দিন।বিদ্যানন্দ আছে-বিদ্যানন্দ থাকবে।

৬| ১১ ই মে, ২০২০ রাত ১:১৪

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: বাংলাদেশের জনগণের এক বিশাল অংশের চরম নৈতিক স্খলন হয়েছে । এরা ক্ষমতা, অর্থ ও অন্যান্য বৈষয়িক বিষয়াদির প্রতি চরম লোভের কারণে সব কিছুই করতে পারে । এই সকল প্যারাসাইটগুলো এদের ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে যে কোনো রাজনৈতিক অথবা ধর্মীয় সংগঠনের ডেডিকেটেড সদস্যেরও রূপ ধারণ করতে পারে । এরাই সমাজের সর্বস্তরে চরম হিংসা ও ঘৃণা ছড়িয়ে দিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে আর কিছু সংখ্যক বেকুব কিছু না বুঝে ছাগলের তিন নম্বর ছানার মতোই এদের অনুসরণ এবং সমরথন করে থাকে ।যে সকল ধর্মান্ধ এই বিষয় নিয়ে লম্ফো ঝোম্ফো করছে এদের ব্যাকগ্রাউন্ড খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে এদের মধ্যে সততার বা নৈতিকতার ছিটাফোটাও নেই ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.