![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কি লিখবো? যা লিখবো তা আমাকে বুঝানোর জন্য কমই হবে।আমায় চিনতে হলে আমার সাথে মিশতেই হবে... ;)
লেখালেখির অভ্যাস একসময় খুব ছিল। মাঝখানে ব্যাস্ততার কারণে নেশা নামক এই পেশাটি কোথায় উধাও হয়ে যায় আমিও নিজেও তা টের পাইনা। কিন্তু না লিখার একটি যন্ত্রণা আমায় তারা করে যখন ব্লগার আবীর চৌধুরীর(https://www.facebook.com/abir33) লিখা পড়ি তখন। গত ২রা ফেব্রুয়ারী চট্টগ্রাম শহরের ব্যাস্ততম এলাকা জি.ই.সি. এর মোড়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডায় কথা প্রসঙ্গে বন্ধু ব্লগার আবীর চৌধুরী কে বলি, "এত যে লিখিস তোরা, লাভ কি হয়?" কথায় কথা বাড়ে, কিন্তু সমাধান আসে না। তখন আরেক বন্ধু শাহেদ বলে উঠে, "আরে ভাই, লিখে তো লিখতে দেনা, আর কেউ তো লাভের জন্য লিখে না, মনের শান্তির জন্য লিখে ওরা।" আজ সেই কথার সত্যতার গন্ধ পাচ্ছি আমার এই লিখার আগ্রহ দেখে। প্রখ্যাত কুখ্যাত জামায়াত নেতা শ্রী কাদের মোল্লা রাজাকার সাহেব(!) এর আতি মানবীয়(!) রায় দেখে সারাক্ষণ টিকে থাকলেও, এই রাতে আর না লিখে পারছিনা।
এখন আসি কথা প্রসঙ্গে। আমি খুব বড় মাপের রাজনীতিবিদ,বিশ্লেষক টাইপস এর কেউ না। তারপরেও লিখছি, কিছুটা বিশ্লেষকের মত করে।
আজ লিখছি প্রখ্যাত কুখ্যাত জামায়াত নেতা শ্রী কাদের মোল্লা রাজাকার সাহেব(!) এর রায় নিয়ে। খুবই সংক্ষেপে লিখার চেষ্টা করছি। এই পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বিচার ট্রাইবুনাল দুই জন রাজাকার এর বিচার এর রায় দিল।
* বাচ্চু রাজাকার সাহেব(!)
* প্রখ্যাত কুখ্যাত জামায়াত নেতা শ্রী কাদের মোল্লা রাজাকার সাহেব(!)
প্রথমে বাচ্চু রাজাকার সাহেবকে নিয়ে বলি। ধরি, বাচ্চু রাজাকার সাহেব একজন সত্যিকারের রাজাকার। তিনি কিন্তু পলাতক। আসলে পলাতক নয়, আমাদের (অ)মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মখা আলমগীর(পি.এইচ.ডি.) সাহেব ব্যতীত বাকি সকলের কাছে পলাতক তিনি, এমন ভাবে পলাতক যে, (অ)মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মখা আলমগীর(পি.এইচ.ডি.) সাহেব ব্যতীত আর দ্বিতীয় কোন ব্যক্তির কাছে তার বর্তমান অবস্থান সম্বন্ধে কোন ধারণা নেই। ট্রাইবুনাল তাকে বীর বাহাদুরের মত তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড এর রায় দেন। মারহাবা... মারহাবা। কিন্তু আজ প্রখ্যাত কুখ্যাত জামায়াত নেতা শ্রী কাদের মোল্লা রাজাকার সাহেব(!) কে ট্রাইবুনাল কেন জানি অতি দয়াপরবশ হয়ে মৃত্যুদন্ড না দিয়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিল। এখন আসি কিছু প্রশ্নেঃ
* বাচ্চু রাজাকার সাহেবকে ট্রাইবুনাল মৃত্যুদন্ড দিতে পারলে কাদের মোল্লা রাজাকার সাহেব(!) কে কেন মৃত্যুদন্ড দিলনা? এক্ষেত্রে বহুশ্রবনীয় আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল এর হাকিম কি আদালতে রায় ফিক্সিং করলেন না তো? নাকি তিনি নিজ মৃত্যুদন্ড এর ভয়ে তাকে মৃত্যুদন্ড দিলনা? নাকি তিনি আমাদের সেই ভাবসম্প্রসারণ (দন্ডিতের সাথে দন্ডদাতা............সেই বিচার)পড়ে এসে রায় দেন? নাকি তিনি কোন ক্ষমতাবান মহলের হাতের নাচের পুতুলের মত নাচ দেখালেন, যা পূর্ব পরিকল্পিত?? যা সাধারণ জনগণকে শুধু দেখানো??
* বাচ্চু রাজাকার সাহেবকে ট্রাইবুনাল মৃত্যুদন্ড দিতে পারলে কাদের মোল্লা রাজাকার সাহেব(!) কে কেন মৃত্যুদন্ড দিলনা? এক্ষেত্রে কেউ কি বলতে পারবেন,বহুশ্রবনীয় আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল ও কি বলতে বা ব্যাখ্যা দিতে পারবেন যে, বাচ্চু রাজাকার সাহেব এর তুলনায় প্রখ্যাত কুখ্যাত জামায়াত নেতা শ্রী কাদের মোল্লা রাজাকার সাহেব(!) এর অপরাধ কোন অংশে কম বা অপরাধ এর মাপকাঠিতে তিনি কোন অপরাধ টি কম করেছেন যে তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হলনা? এক্ষেত্রে সেই বহুশ্রবনীয় আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালকে কারণ দর্শাও নোটিশ দেয়াই যেতে পারে।
* এত এত রাজাকার থাকতে কেন বাচ্চু রাজাকার সাহেবকে প্রথম বলির পাঠা বানানো হল? কাদের মোল্লা রাজাকার সাহেব(!) কে দিয়েও তো বিচার কাজ শুরু করা যেতে পারত? কেন লোকদেখানো নাটক রচনা করা হছে? যে ব্যক্তির বর্তমান অবস্থানের ব্যাপারে বিন্দু মাত্র খবর নেই, আদৌ খবর হবে কিনা তার গ্যারান্টি(মন্ত্রী সাহেব ব্যাতীত) নাই, তাকে কেন প্রথমে বিচারের আওতায় এনে তপ্ত গ্রীষ্মের পর বর্ষার হটাৎ বৃষ্টির মত বাচ্চু রাজাকার সাহেবকে প্রথম বলির পাঠা বানানো হল? নাকি এক্ষেত্রেও সরকার কোন প্ল্যান করছে?
* আচ্ছা, আমাদের সরকারদলের কোন গেইম নয়তো এটা? আমার যে কারণে এটা মনে হচ্ছে, বাচ্চু রাজাকার সাহেব(!) কে দিয়ে বিচার শুরু করা, তার মৃত্যুদন্ড দেয়া, পরে কাদের মোল্লা রাজাকার(!) সাহেব এর বিচার ও তাকে সাধারণ যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া!! অবাক করার মত!!
এখন আমি আমার শেশের চিন্তার একটু বিশ্লেষন করব। প্রথমত বলে রাখি আমি জামায়াত বা বি.এন.পি. এর সমর্থক নই। বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই চরম পর্যায়ের ছাত্রলীগ করি ও এই কারণে হল বহিস্কার ও হই। কিন্তু নিজ সরকারদলের বিরুদ্ধে বলছি আসলে নিজের কাছে নিজে পরিস্কার হতে পারছিনা বলে ও বিবেকের তাড়নায়। এই সরকার এসেই প্রথম যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করে। তাই এই পদক্ষেপ বাহবা’র দাবিদার। কিন্তু তাদের শেষ সময়ে এসে তারা রায় দেয়া শুরু করল। তাও ভাল। কারণ এটা আমাদের বাঙ্গালীদের দাবি। কথা হল, এত এত রাজাকার থাকতে কেন এমন একজনের রায় দেয়া হল, যার বর্তমান অবস্থানের ব্যাপারে বিন্দু মাত্র কোন খবর নেই, আদৌ খবর হবে কিনা তারও কোন গ্যারান্টি নাই। আর তাকে কেন যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হল না, কারণ যদি তাকে এই শাস্তি দেওয়া হত, তাহলে অন্তত আমারা কিছুটা শান্তি পেতাম। আর, তাকে যেহেতু মৃত্যুদন্ড দেয়া হল, তাহলে কাদের মোল্লা সাহেব(!)কে কেন দেয়া হল না? এই রায় দেয়ার পর সরকার দল কি নিজেদের অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে জনগনের সহমর্মিতা পেতে চাইছেনা তো? আর যদি এটা সরকার দলের প্ল্যানিং না হয়ে থাকে, তবে এটা নিশ্চিত যে, এই তথাকথিত আন্তর্জাতিক বিচার ট্রাইবুনাল নিরপেক্ষ নয় বা তারা ব্যক্তিগত ভাবে ৭১’এর যুদ্ধাপরাধীদের সুষ্ঠ বিচার চায় না।
এখন শুধু অপেক্ষার পালা, প্রখ্যাত কুখ্যাত জামায়াত নেতা শ্রী কাদের মোল্লা রাজাকার সাহেব(!) এর এই রায় এর বিরুদ্ধে সরকার দল কোন আপীল করে কিনা, বা তার এই রায় বলবৎ থাকে কিনা? এবং পরবর্তী রায় কি হয়।
অবশেষে যুদ্ধাপরাধীদের উচিৎ ও দৃষ্টান্তমুলক বিচার তীব্রকন্ঠে দাবি করছি।
ধন্যবাদ সবাইকে যারা ধৈর্য ধরে আমার এই লিখাটি এতক্ষন পড়লেন।
আল্লাহ হাফিয।
©somewhere in net ltd.