![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হলোকাস্টের উপর একটা বিখ্যাত হিস্টোরিকাল ছবি- "দ্য বয় ইন দ্য স্ট্রাইপড পাজামাস"।
জার্মান এস এস অফিসার রেল্ফ প্রমোশন নিয়ে পোলান্ড শহরে আসেন। তাদের আট বছরের একটা ছেলে আছে । নাম ব্রুনো।
যে বাড়িতে তারা থাকে- তার পেছনে বনের ওপাশে একটা এক্সটারমিনেশান/ডেথ ক্যাম্প।
বাড়ির পেছন দিকে গেলে-প্রায়শই পোড়া গন্ধ আসে। ব্রুনোর মা বুঝতে পারেন- এগুলো ডেথ ক্যাম্প থেকে আসা জীবন্ত মানুষ পোড়ানোর গন্ধ।
ব্রুনোর মা এলসা ছেলে ব্রুনোকে বলেন- বাবা ভুল করেও ঐ বাড়ির পেছন দিকে ঐ ক্যাম্পের নিকটে যেও না।
আট বছরের ব্রনো- বাবা-মায়ের অগোচরে খেলতে খেলতে বনের পিছনে যায়। গিয়ে দেখে- কাটা তার দিয়ে আটকানো খুব বড় একটা জায়গা।
মুক্ত জায়গা আর ক্যাম্পের সীমানায় ব্রুনো দেখে ঠিক তার বয়সী একটা ছেলে একাকী নিশ্চুপ বসে আছে। ভীত, বিহ্ববল। তার বয়সও আট বছর। নাম স্যুমেল।
ব্রুনো স্যুমেলের কাছ থেকে জানতে পারে- তাদের পিতামাতা সহ অনেককে ডেথ ক্যাম্পে আনা হয়েছে। তাদের মাঝে নানা কথা বার্তা হয় এবং শিশুতোষ বন্ধত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
ব্রুনো লুকিয়ে স্যুমেলের জন্য খাবার দাবার এটা ওটা নিয়ে যায়।
একদিন ব্রুনো দেখে স্যুমেল তাদের বাসায় কাজ করতে এসেছে। সে কাছে গিয়ে স্যুমেলের সাথে কথা বলে। লুকিয়ে এক টুকরো কেক খেতে দেয়।
কার্ট নামক আরেকজন জার্মান এস এস অফিসার এটা দেখে - স্যুমেলকে খুব মারে।
এরপর দিন ব্রুনো যখন স্যুমেলের সাথে দেখা করার জন্য ক্যাম্পের পাশে আসে- দেখে স্যুমেল সেখানে নেই।
পরদিন আবারো আসে। স্যুমেল আজোও নেই।
এভাবে বেশ কিছুদিন যায়। স্যুমেল আর আসেনা। ব্রুনো বন্ধুর জন্য বিচলিত হয়। কিন্তু কাউকে কিছু বলতে পারেনা।
একদিন স্যুমেল আসে। ব্রুনো দেখে স্যুমেলের পুরো শরীরে ইনজুরির চিহ্ন। ব্রুনো স্যুমেলের কাছে ক্ষমা চায়। স্যুমেল ব্রুনোকে ক্ষমা করে দেয়।
এই ঘটনার কিছুদিন পর ব্রুনো স্যুমেলের কাছে জানতে পারে- তার পিতা মাতাকে অন্য এক ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যেখান থেকে তারা আর ফিরে আসেনি। সে জানেনা তারা কোথায়।
ব্রুনো স্যুমেলকে আশ্বাস দেয়- সে ক্যাম্পে গিয়ে তার বন্ধুর পিতা মাতাকে খুঁজে বের করবে।
কিন্তু প্রিজন ক্যাম্পের ভিতর যেতে হলেতো - প্রিজনারদের ড্রেস লাগবে। স্যুমেল একটা ড্রেস যোগাড় করে- বন্ধুর জন্য নিয়ে আসে।
কাঁটাতারের ভিতর দিয়ে স্যুমেল ড্রেসটা বন্ধুকে দেয়। ব্রুনো সেই ড্রেস পরে।
তারপর, কাঁটাতারের নীচ দিয়ে মাটি খুঁড়ে ব্রুনো স্যুমেলের সাথে ক্যাম্পের ভিতর প্রবেশে করে।
এদিকে ব্রুনোকে না পাওয়ার খবর তাদের বাসায় ছড়িয়ে পড়ে। তারা খোঁজাখুঁজি শুরু করে। বাবা-মা খুঁজতে খুঁজতে ফেন্সের কাছে এসে দেখে- সেখানে তাদের সন্তানের পরনের ড্রেস পড়ে আছে।
ঠিক এমন সময় ডেথ ক্যাম্পের ভিতর সাইরেন বাজে।
প্রিজন গার্ডরা সব বন্দীদের ভেড়ার পাল নিয়ে যাওয়ার মতো করে একটা গ্যাস চেম্বারের দিকে নিয়ে যায়। শত শত বন্ধীদের সাথে ব্রুনো আর স্যুমেল ও গ্যাস চেম্বারের দিকে যেতে থাকে।
বাবা-মা যখন ব্রুনোর খুঁজে ক্যাম্পের ভিতরে আসে- তখন অলরেডি গ্যাস চেম্বারের ভিতর শত শত বন্দীদের প্রবেশ করিয়ে পেস্টিসাইড পেলেটস দিয়ে পুরো গ্যাস চেম্বার ভর্তি করে ফেলা হয়েছে। সেই গ্যাস চেম্বারের ভিতর এস এস অফিসার রেল্ফের পুত্র ব্রুনোও আছে।
সেই গ্যাস চেম্বারের ভিতর ইহুদি পুত্র স্যুমেলও আছে।
দার্শনিক কনফুসিয়াস বলেছিলেন-
হে মানুষজন শত্রু-মিত্র বন্ধু প্রিয়,
অন্যের জন্য কবর খোঁড়ার সময় নিজের কবরটিও খুঁড়ে নিও।
(জার্মানরা ইহুদিদের প্রতি যে আচরণ করেছে। ইসরাইল ও নিষ্পাপ ফিলিস্তনী শিশুদের প্রতি আজ সেই একই আচরণই করছে। প্রচন্ড বাতাসের ঝাপটায় একটি পুষ্পবৃক্ষ থেকে যে পরিমাণ ফুল ঝরে পড়ে- ইসরাইলি সেনার গুলিতে ঠিক সেভাবে প্রতিদিনই ফিলিস্তিনের শুিশুগুলো ঝরে পড়ছে।)
©somewhere in net ltd.