নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যোগ্য একটা লাশ হয়ে মাওলার অন্ধকার কবরে যেতে চাই

মঈনুদ্দিন অারিফ মিরসরায়ী

যোগ্য মানুষ হতে চাই, যোগ্য একটা লাস হতে চাই

মঈনুদ্দিন অারিফ মিরসরায়ী › বিস্তারিত পোস্টঃ

জামাতে ইসলামীয় জানালা বন্ধ করি্য়া দরজা খোলা রাখা মার্কা পর্দার(তথাকথিত মাথায় ত্যানা প্যছানো হিজাব) পোস্টমর্টেম।

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৪৩

মুখ খোলা রেখে হিজাব ব্যবহার, শয়তানের একটি নূরানি ধোঁকাঃ

বর্তমান বিশ্বে হিজাব পশ্চিমা রাজনৈতিক নেতৃত্বের মাথাব্যথার বিষয়। তারা সাংস্কৃতিক আগ্রাসন হিসেবে চিহ্নিত করে হিজাবের প্রসারকে বাধাগ্রস্থ করতে নানা কৌশল ও প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে। অনেক দেশেই হিজাবকে ‘আইনী লড়াই’ এবং নানা রকম বাধা ও প্রতিরোধের মুখে পড়তে হচ্ছে।
এমন প্রেক্ষাপটে পাশ্চাত্য ধারার শিক্ষা ও চিন্তা দ্বারা প্রভাবিত কিছু কিছু ‌ইসলামিক স্কলার বা মুসলিম রাজনীতিক হিজাবের প্রতি গুরুত্ব প্রদান সত্ত্বেও নিকাবকে অস্বীকার কিংবা অপ্রয়োজনীয় বলে দাবী করছেন।
হোসনী মোবারকের আমলে মিশরের ঐতিহ্যবাহী আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শায়খ তানতাবী তো নিকাবকে অস্বীকার করেই বসেছিলেন। তখন এ ঘটনা পুরো মুসলিম বিশ্বে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছিল। এর আগে এবং পরে বর্তমানকাল পর্যন্ত মেয়েদের নিকাব তথা মুখবন্ধনী হিজাব বা পর্দার অন্তর্ভুক্ত কি-না বিষয়টি নিয়ে মাঝে মধ্যে অনেকে, কবরে দাফন হয়ে যাওয়া বিতর্ক নতুন করে চাঙ্গা করতে সচেষ্ট হয়েছেন। সর্বশেষ বাংলাদেশে "দৈনিক যুগান্তরের" ‘ইসলাম ও জীবন’ পাতায় একটি লেখা প্রকাশিত হয়
‘কোরআনের পর্দাকে বোরকায় ঢাকল কারা’
শিরোনামে। লেখাটিতে ইসলামের পর্দা বিধানের দুটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ-‘বোরকা’ ও ‘পরপুরুষের সামনে নারীর চেহারা আবৃত রাখা’র বিষয়ে কিছু অশালীন ও অমার্জিত বাক্য ব্যবহার করা হয়েছে। অস্বীকার করা হয়েছে মুখ ঢাকার আবশ্যকীয়তাকে।
কিন্তু নানা মত ও যুক্তি পর্যালোচনার পর অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত মত ও তাবৎ শরীয়তবিদের সিদ্ধান্ত হলো, হিজাব যেমন অপরিহার্য, ঠিক তেমনি নিকাব তথা মুখ ঢাকাও অত্যাবশ্যক। দু’টিকে পৃথক ভাবার কারণ নেই। কারণ শরীয়তে দু’টো পৃথক কোনো বিষয় নয়। যখন হিজাব শব্দটি আসে তখন তার শর‘ঈ অর্থ এটাই বুঝা যায়, নারী মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢেকে রাখবে। কুরআনে কারীমের সূরা আল-আহযাবে মুসলিম নারীদেরকে স্পষ্টভাবে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে, ঘর থেকে বাইরে বেরুবার সময় যেন তারা নিজেদের শরীরে জিলবাব ঝুলিয়ে নেয়। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন,
"হে নবী, তুমি তোমার স্ত্রীগণকে, কন্যাগণকে ও মু’মিনদের নারীগণকে বল, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের ওপর টেনে দেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজতর হবে, ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না।"
{সূরা আল-আহযাব, আয়াত : ৫৯}
পর্দা বিষয়ে এ আয়াত অত্যন্ত পরিস্কার ও স্পষ্ট। কারণ, এ আয়াত থেকে জানা যায়, পর্দার নির্দেশের মধ্যে মুখমণ্ডলও অন্তর্ভুক্ত। তাছাড়া এ আয়াতে আযওয়াজে মুতাহহারাত (রাসূলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পুতঃপবিত্র সহধর্মীনীগণ) ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কন্যাগণের সঙ্গে মুসলিম মহিলাদেরও সম্বোধন করা হয়েছে। এ আয়াতে ‘জালাবীব’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, যা ‘জিলবাব’ শব্দের বহুবচন। আরবী অভিধানের বিখ্যাত গ্রন্থ ‘লিসানুল ‘আরাব’ –এ লেখা হয়েছে, ‘জিলবাব’ ওই চাদরকে বলা হয় যা মহিলারা নিজেদের মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢাকার জন্য ব্যবহার করে। [১/২৭৩]
অভিধান থেকে সরে গিয়ে মুফাসসিরগণের বক্তব্য দেখলেও জানা যায়, ‘জিলবাব’ এমন কাপড়কে বলে যদ্বারা মহিলারা নিজেদের শরীর ঢাকেন। ‘জিলবাব’ অর্থ বড় চাদর, যা দ্বারা মুখমণ্ডল ও পূর্ণ দেহ আবৃত করা যায়। [কুরতুবী, আল-জামে‘ লিআহকামিল কুরআন : ১৪/২৪৩]
আল্লামা আলূসী রহ. ‘আব্দুল্লাহ ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর বরাত দিয়ে লিখেন, ‘জিলবাব’ সেই চাদরকে বলে যা মহিলারা দেহের ওপর থেকে নীচ পর্যন্ত উড়িয়ে ছেড়ে দেয়। [রুহুল মা‘আনী : ২২/৮৮]
আল্লামা ইবন হাযম রহ. লিখেন, আরবী ভাষায় ‘জিলবাব’ এমন কাপড়কে বলা হয় যা সারা শরীর আচ্ছাদন করে। যে কাপড় সমস্ত শরীর ঢাকে না, সে কাপড়ের ক্ষেত্রে ‘জিলবাব’ শব্দটির প্রয়োগ সঠিক ও শুদ্ধ নয়। [আল-মুহাল্লা : ৩/২১৭]
তাই শত শত বছর যাবৎ মুসলিম বিশ্বের সর্বত্র যে দীনদার নারীগণ নিকাব ও হিজাব পরিধান করে আসছেন তাঁরা এই জিলবাব ধারণের বিধানই পালন করছেন।
রূহুল মা‘আনী গ্রন্থের লেখক এর তফসীরে লিখেছেন, শব্দটি অভিধানে কোনো জিনিস নিকটবর্তী করা অর্থে বলা হয়। এখানে শব্দটি ঝুলানো এবং ফেলে দেওয়া অর্থে এসেছে। কারণ, শব্দটিকে এখানে عَلَيۡ (‘আলা) অব্যয় দ্বারা কর্মবাচক ক্রিয়ায় রূপান্তর করা হয়েছে। [রুহুল মা‘আনী : ২২/৮৮]
কোনো কোনো সাহাবী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, তাঁরা পর্দা হিসেবে ‘জিলবাব’ ব্যবহারের নিয়ম-পদ্ধতিও বর্ণনা করেছেন। ‘আবদুল্লাহ ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু মুখমণ্ডলের ওপর ‘জিলবাব’ ফেলার যে পদ্ধতি বর্ণনা করেছেন তা হলো, ‘মুসলিম মহিলারা নিজেদের চাদর দ্বারা নিজ নিজ মাথা ও মুখমণ্ডল ঢেকে বের হবে। তারা কেবল একটি চোখ খোলা রাখতে পারে’। [শাওকানী, ফাতহুল কাদীর : ৭/৩০৭]
জনৈক ব্যক্তি ‘উবায়দা ইবন সুফইয়ান ইবন হারিছ হাযরামী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর কাছে এর নিয়ম জানতে চান। তিনি নিজের চাদরটি উঠিয়ে এমনভাবে ছড়িয়ে দেন যে, তাঁর মাথা ও কপাল ভ্রূ পর্যন্ত ঢেকে যায়। তারপর চাদরের কিছু অংশ মুখমণ্ডলের ওপর এমনভাবে রাখেন যে, গোটা মুখমণ্ডল ঢেকে যায়, কেবল একটি চোখ খোলা থাকে। [তাফসীরে কুরতুবী : ৪/২৩৪]
সূরা আল-আহযাবের উল্লেখিত আয়াতের তাফসীর করতে গিয়ে সকল মুফাসসির মুখমণ্ডল ঢাকা হিজাবের অত্যাবশ্যক অংশ গণ্য করেছেন। আবূ বকর আর-রাযী ও আল-জাস্সাস আল-হানাফী রহ. বলেন, এ আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয়, যুবতী মহিলারা ঘর থেকে বাইরে বেরোনোর সময় বেগানা পুরুষের দৃষ্টি থেকে তাদের মুখমণ্ডল আবশ্যিকভাবে ঢেকে রাখবে, যাতে দুষ্ট প্রকৃতির লোক তাদেরকে বিরক্ত করতে না পারে। [আহকামুল কুরআন : ৩/৩৭১]
ইমাম নাববী রহ. স্বীয় গ্রন্থ ‘আল-মিনহাজ’-এ লিখেছেন, যদি ফিতনার আশংকা থাকে তাহলে কোনো প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষের জন্য কোনো প্রাপ্ত বয়স্কা নারীর মুখমণ্ডল ও হাত দেখা জায়িয নেই। আল্লামা রামালী রহ. ‘আল-মিনহাজ’ গ্রন্থের ব্যাখ্যায় এই মতের ওপর আলিমগণের ইজমা’র কথা বর্ণনা করেছেন। তিনি এও লিখেছেন, সঠিক মতানুযায়ী ফিতনার আশংকা না থাকলেও প্রাপ্ত বয়স্কা নারীকে দেখা হারাম। এর দ্বারা বুঝা যায়, মুখমণ্ডল খোলা অবস্থায় মহিলাদের বাইরে বের হওয়া জায়িয নেই। কারণ, সে অবস্থায় পুরুষ তাদেরকে দেখবে এবং দেখার মাধ্যমে ফিতনা ও কুপ্রবৃত্তির সৃষ্টি হবে। [নিহায়াতুল মিনহাজ ইলা শারহিল মিনহাজ : ৬/১৮৮]
হিজাবের আয়াত নাযিলের পর আযওয়াজে মুতাহ্হারাত ও অন্যান্য মহিলা সাহাবীদের যে কর্মপদ্ধতি ছিল তা দ্বারাও এটা প্রমাণিত হয় যে, মহিলাদের জন্য মুখমণ্ডল ঢাকা জরুরী। যখন এই আয়াত নাযিল হয় :
‘আর মুমিন নারীদেরকে বল, তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করবে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ করবে না। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই এর ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে, অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে নিজদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন নিজদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।’ {সূরা আন-নূর, আয়াত : ৩১}
তখন মহিলা সাহাবীদের আমল কী ছিল তা আমরা জানতে পারি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রিয়তমা পত্নী আয়িশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার বর্ণনা থেকে। তিনি বলেন
‘আল্লাহ হিজরতকারী অগ্রবর্তী নারীদের ওপর রহমত করুন। যখন তিনি নাযিল করলেন, ‘আর তারা যেন তাদের বক্ষের ওপর ওড়না টেনে দেয়’ তখন তারা তাদের নিম্নাংশের কাপড়ের প্রান্ত ছিঁড়ে ফেলেন এবং তা দিয়ে ওড়না বানিয়ে নেন।’ [বুখারী : ৮৫৭৪]
আলোচ্য বর্ণনায় ‘ইখতামারনা’ শব্দটি এসেছে। সহীহ বুখারীর ব্যাখ্যাকার হাফিয ইবন হাজার ‘আসকালানী রহ. ‘ইখতামারনা’ শব্দের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে লিখেছেন, ‘গাত্তাইনা উজুহাহুন্না’। অর্থাৎ তারা নিজেদের মুখমণ্ডল ঢেকে রাখতেন। [ফাতহুল বারী : ৮/৩৪৭]
শুধু পবিত্র কুরআনের তাফসীর নয় চেহারা আবৃত রাখার বিধান সহীহ হাদীস দ্বারাও প্রমাণিত। আবদুল্লাহ ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
‘আর ইহরাম গ্রহণকারী নারী যেন নিকাব ও হাতমোজা পরিধান না করে।’ [বুখারী : ১৮৩৮] এই হাদীস থেকে বোঝা যায়, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে মেয়েরা তাদের হাত ও চেহারা ঢাকতেন। এ কারণে ইহরামের সময় নেকাব ও দস্তানা না পরার আদেশ করতে হয়েছে।
আয়েশা রাদিআল্লাহু ‘আনহা হজ অবস্থায় মহিলা সাহাবীদের পর্দার যে বিবরণ দিয়েছেন তা থেকে অনুমান করা যায় পর্দা রক্ষায় তাঁরা কতটা আন্তরিক ছিলেন। তাঁরা স্বাভাবিক অবস্থায় তো বটেই ইহরাম অবস্থায় যখন মুখ ঢাকতে নিষেধ করা হয়েছে সেখানেও পরপুরুষের সামনে থেকে নিজেদের চেহারা আড়াল করেছেন। আয়েশা রাদিআল্লাহু ‘আনহা বলেন,
‘আমরা ইহরাম অবস্থায় সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে ছিলাম। তখন আরোহীরা আমাদের সঙ্গে পথ চলছিলেন। যখন তারা আমাদের আড়াআড়ি হন, আমাদের সঙ্গীনীরা তাদের বড় চাদর মাথা থেকে চেহারায় ঝুলিয়ে দেন। তারা আমাদের অতিক্রম করে চলে যাবার পরই আমরা তা উন্মুক্ত করি।’ [আবূ দাঊদ : ৫৩৮১; বাইহাকী : ৩৩৮৮]
আসমা’ বিনত আবী বাকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন, আমরা পুরুষদের থেকে আমাদের চেহারা আবৃত রাখতাম। [মুস্তাদরাক হাকেম : ১৬৬৪]
ফাতিমা বিনতুল মুনযির রহ. বলেন, ‘আমরা আসমা বিনতে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমার সঙ্গে ইহরাম অবস্থায় থাকাকালে আমাদের চেহারা ঢেকে রাখতাম।’ [ইমাম মালেক, মুয়াত্তা : ১/৩২৮; হাকিম, মুসতাদরাক : ১/৪৫৪]
মহিলাদের সারা শরীর ঢাকা থাকবে আর মুখমণ্ডল থাকবে খোলা। অথচ মানুষের প্রথম দৃষ্টিটিই পড়ে মুখের ওপর। তারপর সেখান থেকেই অন্তরে খারাপ বাসনার সৃষ্টি হয়। পবিত্র কুরআনে নারীদের হিজাব এবং তদসংক্রান্ত প্রায় আটটি আয়াত আছে। সেগুলো থেকেও একথা জানা যায়, শরীয়তের দাবী কেবল শরীর ঢাকা নয়, বরং মুখমণ্ডল ঢাকাও জরুরী।
ওইসব আয়াতের সারকথা হলো, নারীরা অতি প্রয়োজন ছাড়া নিজেদের ঘর থেকে বাইরে বের হবে না। যদি তাদের নিতান্ত প্রয়োজনে বাইরে বের হতে হয় তাহলে বড় ও মোটা চাদর দিয়ে নিজেদের শরীর ঢেকে বের হবে। পুরুষ নারীকে দেখবে না এবং নারীও বিনা প্রয়োজনে পুরুষকে দেখবে না। নারীদের কাছে যদি পুরুষদের কোনো জিনিস চাইতে হয় তাহলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। মহিলাদের গায়র মাহরাম (বেগানা) পুরুষের সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন হলে পর্দার আড়াল থেকে বলবে, কণ্ঠস্বর কঠোর রাখবে, সুমিষ্ট মোলায়েম স্বরে নয়। সাধারণ অবস্থায় মাহরাম পুরুষের সামনেও মুখমণ্ডল হাত এবং পা ছাড়া নিজেদের দেহের অন্য কোনো অঙ্গ খোলা রাখবে না। [দেখুন, আল-আহযাবের আয়াতসমূহ-৩২, ৫৩, ৮৯; আন-নূর-২৪, ৩০, ৩১, ৫৮, ৬০]
যারা মুখ না ঢাকার ব্যাপারটি জোর করে সপ্রমাণ করতে চান তারা খেয়াল করেন না যে, তাদের এহেন মত পশ্চিমা ও তাদের ভাব শিষ্যদের অতি পুলকিত করবে। তারা এই রায়কে ব্যবহার করবে হাতিয়ার হিসেবে।
*************** তদুপরি, যারা মুখ খোলার পক্ষে বলেছেন প্রথমত তাদের মতটি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত মত নয় আর দ্বিতীয়ত তাঁরা সবাই এর জন্য #নিরাপদ ও #ফিতনামুক্ত হওয়ার শর্ত জুড়ে দিয়েছেন। আর বলাবাহুল্য যে বর্তমান যুগে ফিতনার বিস্তার সর্বত্র। মানুষের মধ্যে দীনদারী ও আল্লাহভীতি হ্রাস পেয়েছে। লজ্জা ও লজ্জাবনত মানুষের সংখ্যা কমে গেছে। ফিতনার প্রতি আহ্বানকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সাজসজ্জার নানা উপায় ও উপকরণ আবিষ্কৃত হওয়ায় ফিতনার মাত্রা আরও বেড়ে গেছে।
আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সব মুসলিম বোনকে যথাযথভাবে পর্দা করার তাওফীক দান করুন। আমীন।


যেসকল নারীরা তাদের সুন্দর মুখখানা প্রদর্শন করে বেড়াচ্ছেন তাদের উদ্দেশ্যেঃ

নারীরা যাদের সঙ্গে কথা বলতে ও দেখা করতে পারবেনঃ তার বাবা, তার চাচা, তার মামা, তার শশুর, তার দুধ মায়ের স্বামী, তার নিজ ভাই, তার দাদা, তার নানা, তার নাতি, তার দুধ-ভাই, তার ছেলে, তার ভাই-এর ছেলে, তার বোনের ছেলে, তার মেয়ের জামাই এবং তার দুধ ছেলে। (সুত্রঃ সুরা আহজাবঃ ৫৫)
শুধুমাত্র উপরে উল্লেখিত ব্যক্তিরা ছাড়া, যদি নারীরা অন্য কোন পুরুষের সামনে তাদের চেহার প্রদর্শন করে অর্থাৎ বেপর্দায় চলে, পর্দার নামে ফ্যাশন করে, বোরকা পরে কিন্তু মুখ খোলা রাখে, ফেসবুকে তার পূর্ণ ছবি বা মাথায় ওড়না পেঁচিয়ে শুধু মুখের ছবি বা তার হাতের ছবি বা তার পায়ের ছবি আপলোড করে এবং অন্য পুরুষের সঙ্গে সরাসরি বা মোবাইলে কথা বলে ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে সে তার পর্দার খেলাপ করার মাধ্যমে আল্লাহর সঙ্গে বড় নাফারমানি করলো। কারন আল্লাহ শুধুমাত্র উপরে উল্লেখিত ব্যক্তিরা ছাড়া আর অন্য কারও কাছে নারীদের রূপ, যৌবন, কন্ঠ, সৌন্দর্য প্রদর্শন করা হালাল বা বৈধ করেন নি অর্থাৎ হারাম করেছেন। আর আল্লাহর সঙ্গে নাফারমানি করার পরিণাম হচ্ছ ভয়াবহ জাহান্নাম।
আজ আপনি আপনার যেই সুন্দর মুখখানাতে সাজুগুজু করে ফেসুবকে আপনার ছবি আপলোড দিচ্ছেন, যেই মুখ খোলা রেখে পর্দার নামে ফ্যাশন করছেন, কাল কিয়ামতের দিনে সেই মুখের উপর কি হারে শাস্তি হবে- আসুন কোরআন থেকে জেনে নেইঃ
(১) মুখমণ্ডল সেদিন আগুনে দগ্ধ করা হবে, ফলে এই সুন্দর চেহারা হয়ে যাবে বীভৎস, ভয়ঙ্কর। (সুরা মুমিনুনঃ ১০৪)
(২) সেদিন তাদেকে জ্বলন্ত আলকাতরার পোশাক পড়ানো হবে এবং তাদের মুখমন্ডলকে আগুন আচ্ছন্ন করে ফেলবে। (সুরা ইবরাহীমঃ ৫০)। সুতরাং সেদিন কি অবস্থা হবে আপনার এই সুন্দর, আকর্ষণীয় ড্রেস পরিহিত ফিগারের...! আর কিইবা অবস্থা হবে আপনার এই সুন্দর চেহারার...! চিন্তা করে দেখুন...।
(৩) মাছ ভাঁজি করার সময় যেভাবে উলট পালট করা হয়, জাহান্নামেও তেমনি তাদের মুখমণ্ডল আগুনে উলট পালট করা হবে। ফলে তারা আফসোস করতে থাকবেঃ হায় আফসোস আমাদের! আমরা যদি আল্লাহর আনুগত্য করতাম এবং রাসূলের আনুগত্য করতাম, তাহলে আজ আমাদের এই ভয়াবহ কঠিন অবস্থার সম্মুখীন হতে হতো না। (সুত্রঃ সূরা আহযাবঃ ৬৬)
(৪) শুধুতাই নয়, আগুনে যখন চামড়া জ্বলে-পুড়ে যাবে, তখন আবার নতুন চামড়া লাগিয়ে দেয়া হবে। (সুত্রঃ সুরা নিসাঃ ৫৬)। এভাবেই তাদের শাস্তি চলতেই থাকবে, চলতেই থাকবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.