নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তবু এই পৃথিবীর সব আলো একদিন নিভে গেলে পরে, পৃথিবীর সব গল্প ফুরাবে যখন, মানুষ রবে না আর , রবে শুধু মানুষের সপ্ন তখন ।

অরিন্দম পাল রিপন

অরিন্দম পাল রিপন › বিস্তারিত পোস্টঃ

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অমিত এর রোড একসিডেন্টের পর ডাক্তারের অবহেলায় মৃত্যু ও আপনাদের কাছে কিছু নৈতিক প্রশ্ন

০৬ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১:২৬

আজ একটি মানবিক আবেদন নিয়ে আপনাদের দরবারে লিখতে বসলাম । আশা করি কেউ বিষয়টি এড়িয়ে যাবেন না ।

প্রসঙ্গটি হল আমাদের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের । গত বুধবার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ১ম বর্ষের ছাত্র অমিত রায় একটা রোড একসিডেন্ট এ মারা যায় । রোড একসিডেন্ট টা ছিল খুলনা নিউ মার্কেটের সামনে । একটা টাউন সার্ভিস এসে কয়েকটা অটোতে ধাক্কা দিলে তাৎক্ষণিক ভাবে কয়েকজন সেখানে মারা যায় । এবং অমিত কে নিয়ে যাওয়া হয় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে । সেখান থেকে তাকে খুলনার গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় বিকাল ৪ টার দিকে । সেখানে তাকে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয় এবং কর্তব্যরত ডাক্তার সেখানে ছিলেন না । তখন জানানো হয় যে অমিতের ব্রেনের ৯৫% ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে । তারপর তার সহপাঠিরা সেখানে উপস্থিত হয় এবং ডাক্তরের খোজ করে । কিন্তু ডাক্তারকে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন তার আসতে দেরী হবে । এই কথা বলে তিনি হাসপাতালে উপস্থিত হন রাত ৮ টায় । ততক্ষণ অমিতের অবস্থার আরও অবনতি হয় । তখন ছাত্ররা ডাক্তারকে তার আসতে দেরী হবার কারণ জিজ্ঞাসা করলে হাসপাতালের কর্মীরা ছাত্রদের উপর চড়াও হয় । তারপর তাকে ঢাকায় পাঠানো হয় এবং ঢাকায় যাবার পথে মাওয়া ঘাটের কাছে তার মৃত্যু হয় রাত ১১ টার দিকে ।

এরপর আমরা সবাই রাত ১২ টার দিকে গাজী মেডিকেলের সামনে গিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাই এবং ওই সময় কর্তব্যরাত ডাক্তারের শাস্তি দাবী করি । কিন্তু , তখন পুলিশ এসে ছাত্রদের উপর চড়াও হয় এবং আমাদের গাজী মেডিকেলের সামনে থেকে চলে আসতে বাধ্য করে । ফলে ডাক্তারের দেখা না পেয়েই আমরা সেখান থেকে বাধ্য হয়ে চলে আসি ।

তারপর দিন আমরা অমিতের বাড়িতে গিয়ে তাকে সমাহিত করে হৃদয়বিদারক পরিবেশের মধ্যে দিয়ে সেখান থেকে নিজেদের কাছ থেকে নিজেরা পালিয়ে চলে আসি । চলে আসার সময় অমিতের মায়ের মুখটা আজও আমার মনে পড়ছে । একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে তিনি পাগলপ্রায় ছিলেন । তার এলাকায় সৃষ্টি হয়েছিল এক মর্মান্তিক পরিবেশ । আমাদের তখন তার মাকে সান্তনা দেবার জন্য কিছুই বলার ছিল না । কারণ , তখন আমরা না পারছি অমিতকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে , আবার তার মৃত্যুর জন্য দায়ী সেই ডাক্তারকেও আমরা আইনের কাঠগড়ায় দাড় করাতে পারলাম না । তখন আমাদরে মনে হচ্ছিল আমরা আমাদের নিজেদের কাছেই চরম ভাবে পরাজিত । আমাদের বন্ধুটির জন্য আমরা কিছুই করতে পারিনি । আর এর জন্য শুধু যে আমরা দায়ী তা নয় ।

গাজী মেডিকেলের মালিক ডা : গাজী মিজান হলেন খুলনার অত্যান্ত প্রভাবশালী আ:লীগের একজন নেতা । ফলে তার পক্ষে রয়েছে খুলনার প্রশাসন , পুলিশ , প্রভাবশালী নেতারা সবাই । ফলে আমরা সবাই তাদের কাছে অসহায় ভাবে আত্মসমর্পিত হলাম । তারপরের দিন ঘটল আরও মজার ঘটনা । খুলনার সব মেডিকেল কলেজ ও প্রাইভেট ক্লিনিকে আমাদের বিচার চেয়ে ব্যানার ঝোলান হয়েছে । সকল পত্রিকায় আমাদের নামে হাসপাতাল ভাংচুরের মিথ্যা অপবাদ দিয়ে রিপোর্ট করা হয়েছে । আমাদের উপর প্রশাসনিক চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে । পুলিশ কেসের ভয় দেখানো হচ্ছে । পত্রিকা , প্রশাসন সবই আমাদের বিপক্ষে । টাকা ও রাজনীতির কাছে বিক্রি । এভাবে আমাদের দেশের আর কত ছাত্র , আমাদের ভাই , বোন রা প্রাণ দেবে ডাক্তারদের অবহেলার কারণে ?



আজ আমরা দেশের ঘৃণ্য রাজনীতির কাছে চরম ভাবে পরাজিত হলাম । খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন রাজনীতি নেই বলে তাদের উপেক্ষা করা হল । আমাদের বন্ধুর মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী তাদের কিছুই করতে পারলাম না আমরা । বরং উল্টে আমাদের ঘাড়ে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হল । এভাবে আর কত দিন আমরা সহ্য করব । কতদিন রাজনীতির বলী হব ? এ প্রশ্ন রইল আপনাদের কাছে ।



আর এই বিষয়ে আপনাদের সবার কাছে নৈতিক সমর্থন দাবী করছি । আশা করি বিষয়টা এড়িয়ে যাবেন না । আপনাদেরনৈতিক সহায়তাই আমাদের এগিয়ে যাবার প্রেরণা দিতে পারে । আমরা আবার ঘুরে দাড়াতে পারি এসব অপশক্তির বিরুদ্ধে ।





মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.