নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ৃআলোকিত তরুন

ৃআলোকিত তরুন › বিস্তারিত পোস্টঃ

যৌন সংস্কৃতির দেশ ও ফেনসিডিল প্রিয় জাতি

০১ লা মে, ২০১১ রাত ৯:৪৮

শিরোনামের প্রথমাংশটুকু ভারত প্রসঙ্গে এবং দ্বিতীয়াংশটি অবশ্যই বাংলাদেশ প্রসঙ্গে। এ থেকে অবশ্য এটা অনুমান করা ঠিক হবে না যে, ভারতের সবাই যৌন সংস্কৃতির অনুসারী বা বাংলাদেশের সবাই ফেনসিডিলখোর। কিন্তু কথায় আছে ‘পাপী মরে দশ ঘর নিয়ে’ এটাও তেমন। দুষ্কর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকে কিছু লোক, দোষ হয় গোটা দেশ বা জাতির।



অবশ্য যৌন সংস্কৃতিরবিকাশ ভারতে অতি প্রাচীনকাল থেকে ধর্মের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে। সুপ্রাচীনকাল থেকে ভারতে মন্দিরে মন্দিরে দেবালয়ে দেবদাসী প্রথার প্রচলন আছে। কামকলা প্রশিক্ষণের জন্য শাস্ত্র তৈরি হয়েছে ভারতে যা বাত্স্যায়নের কামসূত্র নামে পরিচিত। এর ব্যাপক প্রয়োগ একাল পর্যন্ত পরিব্যাপ্ত।



ধর্মাচার এবং যৌনাচারের সহ-অবস্থানের প্রসঙ্গে আসি আগে। ভারতীয় যে কোনো টিভি চ্যানেল খুললেই তার প্রমাণ পাওয়া যাবে। প্রাচীনকালে যেমন যে মন্দিরে দেবতার পূজা চলত, সেই মন্দিরেই দেবদাসীদের দেহদানও (ব্যবসা) চলত যেন ধর্মের অঙ্গ হয়ে। একালেও তেমনি যে টিভি চ্যানেলে অতিশয় অতিরঞ্জিতভাবে যে কোনো নাটকে ধর্মাচারের বাড়াবাড়ি প্রদর্শন চলে, সে চ্যানেলেই বিজ্ঞাপনে বা আইটেমগার্লদের নাচের নামে যৌনাঙ্গের ধস্তাধস্তিতে চলে দেহ ব্যবসা। দেহ প্রদর্শনের বা দেহের নানা কামার্ত ভঙ্গি প্রদর্শনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন এবং পতিতালয়ে দেহদানের নামে অর্থ উপার্জন দুটোকেই দেহব্যবসা বললে অত্যুক্তি হবে না নিশ্চয়। আম এই উপমহাদেশের একটি অতিপ্রিয় ও অতিসুমিষ্ট ফল। সেই আমের জুসের বিজ্ঞাপন দিতে গিয়ে কামসূত্রের অনুকরণে ‘আমসূত্র’ নামকরণ এবং বিজ্ঞাপনে অংশগ্রহণকারী নারীটির (জানি না ‘নারী’ শব্দটির অপমান হলো কিনা) চোখ-মুখের ভঙ্গিতে আম কাতরতা নয়, কামকাতরতা এমনভাবে ফুটে উঠেছে যা সম্ভবত বাত্স্যায়নের কামসূত্র থেকেই শিক্ষা নেয়া।



সম্প্রতি আমার এক তরুণ আত্মীয়কে প্রায়ই দেখি নানা ধরনের বডি স্প্রে সংগ্রহ করতে। ভারতীয় টিভিতে এইসব ব্রান্ডের বডি স্প্রের বিজ্ঞাপন অসংখ্যবার দেখা যায়। দেখা যায় একজন পুরুষ একটি বডি স্প্রে নিজ দেহে ব্যবহার করে হেঁটে যাচ্ছে আর দলে দলে কামার্ত নারী সেদিকে ছুটে যাচ্ছে কিংবা আবেশে বিবশ হয়ে পড়ছে, কেউবা বেহুশ হয়ে কোনো কিছুর সঙ্গে ধাক্কা খাচ্ছে, কেউ নিজের পরিধেয় খুলে ফেলার ভঙ্গি করছে অথবা সুইমিংপুলে প্রায় নগ্ন নারীরা কামার্ত হয়ে নানা অঘটন ঘটিয়ে ফেলছে। ভারতীয় নারীদের পক্ষে অতটা বেহায়া হয়ে ওঠা স্বাভাবিক হলেও হতে পারে; কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটা অতি অবাস্তব। দু’একটি হাতে গোনা বিদেশিনী সাজতে চাওয়া বেহায়া ছাড়া বাংলাদেশের কোনো মেয়েই এতটা শালীনতা বর্জিত যৌনপণ্য যে নয়, আমার তরুণ আত্মীয়টি এতদিনে তা অবশ্য উপলব্ধি করেছে। কিন্তু এরই মধ্যে ভারতীয় বিজ্ঞপিত পণ্যের অনুপ্রবেশ এদেশে ঘটে গিয়েছে। এগুলোই আমাদের পণ্য, আমাদের অর্থনীতির জন্য ভয়ঙ্কর বিপদ। পৃথিবীর কোনো সভ্যদেশে ওষুধের বিজ্ঞাপন হয় না, কিন্তু ভারতে হয় দাদের মলম, বদহজমের বড়ি, হƒতযৌবন ফেরত পাওয়ার দাওয়াই, সর্দি-কাশি-মাথা ধরার বড়ি, গায়ে ব্যথার মালিশ সবকিছুরই বিজ্ঞাপন হয় ভারতীয় টিভিতে। সেখানেও দেহব্যবসা আছে। দেখা যাচ্ছে কোনো নারীর খোলা পিঠ থেকে আনিতম্ব মালিশ করা হচ্ছে। কিংবা কোনো নারী লজ্জা-লজ্জা মুখ করে তার দাম্পত্য জীবনের অসুখী সময়ের কথা বলছে। তারপর বলছে তার স্বামী কোনো ওষুধ ব্যবহারের পর এখন তাদের দাম্পত্য জীবনে সুখই সুখ। বলা বাহুল্য, ওইসব অতি নিম্নমানের ওষুধ এদেশে চোরাই পথে প্রবেশ করছে এবং বিজ্ঞাপনে প্রলুব্ধ এদেশের মানুষ তা কিনে প্রতারিত হচ্ছে। অথচ আমরা জানি, মান বিচারে বাংলাদেশে প্রস্তুতকৃত ওষুধ অনেক উন্নত। ভারতীয় ধর্মীয় আফিম ও যৌনগন্ধী এইসব টিভি চ্যানেলের এদেশে অবাধ প্রচারের ব্যাপারে, জানি না, সরকার কোন রহস্যজনক কারণে নির্লিপ্ত? কেন এদেশের ভারতপন্থী কুবুদ্ধিজীবীরাও এ ব্যাপারে নীরব? না, নীরব নয়, তারা বরং ভারতের অপদ্রব্য, অপসংস্কৃতি আমদানির ব্যাপারে ষড়যন্ত্রকারী সহায়ক শক্তি, বিভীষণ। ভারতীয় অপসংস্কৃতির প্রবল প্রতাপে অতিষ্ঠ হয়ে লিখেছিলাম, ‘আড়ে বাড়ে দে ঘুমাকে’বলে কারা যেন/মাস্তানে খেউড়ে ভাষায়/প্যান্ট খুলে জননাঙ্গ দেখানোর মত/ অশ্লীল চিৎকার করেপবিত্র সবুজ মাঠ বন/ উদিত সূর্যের লাল চিরে দিচ্ছে পাশব ধর্ষণে/আর এদেশের কিছু নপুংশক ল্যাংটা হয়ে শুয়ে/ শরীরের নোংরা পথে অপশব্দের দুর্গন্ধ শুধু/ছড়িয়ে চলেছে জয় ভারত-ভারত।’



আমাদের সীমান্তের ওপারে ভারত অসংখ্য ফেনসিডিল তৈরির কারখানা খুলেছে, যার সবটাই ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের সক্রিয় সহায়তায় পাচার হচ্ছে এপারে। উদ্দেশ্য বাংলাদেশী তারুণ্যকে ধ্বংস করা। এই নেশাগ্রস্ত তরুণদের কাছে ভারতীয় ফেনসিডিল অমৃত। আর ভারত সেই অমৃতদানকারী কামধেনু। অতএব ওই নপুংশক কুবুদ্ধিজীবীদের মতো তারাও ভারত ভারত করতে করতে লেংটা হয়ে যেতে পারে এবং বাংলাদেশ সরকার এসব দেখবেন-শুনবেন কিন্তু ভাব দেখাবেন অন্ধ-বধিরের মতো। আমি শুধু বর্তমান সরকারের কথাই বলছি না, কারণ ভারতীয় ফেনসিডিলের আক্রমণ শুরু হয়েছে আরও আগেই। এখন তা বেড়েছে ব্যাপক হারে।

তবে এ নেশার চেয়েও ভারতীয় টিভি চ্যানেলের অবাধ অনুপ্রবেশ এইডসের অনুপ্রবেশের মতোই ভয়ঙ্কর, যে এইডস ভারতীয় যানবাহনের ফ্রি চলাচলের সুপ্রস্থ পথে বাংলাদেশে প্রবেশ করে মারাত্মক স্বাস্থ্য পরিস্থিতির সৃষ্টি করবেই। কারণ ভারতে এখন এইডস বিপজ্জনক মাত্রায় সংক্রমিত। প্রসঙ্গক্রমে ভারতের শিল্পীদের কোনো কর না দিয়েই অবাধ আশা-যাওয়ার বিষয়ও এসে যায়। যে দেশ বুক চিরে ট্রানজিট দিয়েও কোনো শুল্ক আদায়ের ক্ষমতা রাখে না ভারতের কাছ থেকে, সেই দেশে ভারতীয় শিল্পীরা অপসংস্কৃতির এইডস ছড়িয়ে আয়কর দেয়ার তোয়াক্কা করবে কেন? অতএব হে দেশের জনগণ, এসব অনাচার চিরতরে বন্ধ করতে রুখে দাঁড়াতে হবে আমাদেরই। কারণ সব ক্ষমতাধরই রসুনের কোয়ার মতো এক উেস আবদ্ধ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.