নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পরবাসী চোখ

দেখছি দেশ, ওয়াইড এঙ্গেলে

আশিকুর রহমান সামী

স্বপ্ন আছে, সাধ্য নেই। ইচ্ছা আছে, উপায় নেই।

আশিকুর রহমান সামী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্প ও অনন্ত জলিলের কাছে একটি আবেদন

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ ভোর ৬:০৪

দেশের চলচ্চিত্র দেখা হয়না অনেকদিন। সর্বশেষ যে চলচ্চিত্রটি দেখেছিলাম সেটি ইফতেখার চৌধুরীর 'দেহরক্ষী'। অনেক চেষ্টা করেও দেশের বাইরে থাকার কারনে অনন্ত জলিলের 'নিঃস্বার্থ ভালবাসা' আর ইফতেখার চৌধুরীর 'অগ্নি' দেখার সুযোগ হয়নি। পাইরেসীর বিরুদ্ধে এসব চলচ্চিত্রর জয়ই প্রমাণ করে, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্প ২০০০ উত্তর সময়কার মন্দা থেকে বেড়িয়ে আসছে। মানুষও এখন হলমুখী। এগুলো সব পুরোনো কথা...



আমাদের চলচ্চিত্রে অনন্ত জলিল ডলবি ডিজিটাল প্রযুক্তি এনেছেন যার মানে উনি বলেন ডিজিটাল ছবি। অর্থাৎ বাচ্চাকাল থেকে যে জানতাম ডলবি ডিজিটাল ভিডিওর নয়, অডিওর প্রযুক্তি... সেটা ভুল ছিল। তাও মেনে নিলাম। এনএসইউ বিশ্ববিদ্যালয়ের নব্বই ভাগ ছাত্র-ছাত্রী যার ফ্যান তাঁর ভুল ধরা কি আমাকে সাজে ;)? কিন্তু কথা হলো, তাঁর কাজগুলো যেমন লোকেশন, স্পেশাল ইফেক্টস, কালার গ্রেডিং, ফিল্ম ট্রান্সফারিং ইত্যাদি তো সবই ভারত, থাইল্যান্ড থেকে করে আনা হচ্ছে বিপুল অর্থের বিনিময়ে। নায়ক, নায়িকা আর অন্যান্য অভিনেতা-অভিনেত্রী ছাড়া বাকি কলা-কুশিলবদের অনেকেও দেশের বাইরের। এরপর যে প্রোডাক্ট বের হচ্ছে, তার কতভাগ দেশি থাকে তা বলা কঠিন হয়ে পড়ে।



সেদিক থেকে ইফতেখার চৌধুরী বেশ এগিয়ে আছেন। 'খোঁজ-দ্যা সার্চের' ডিরেকশন, এডিটিং, স্পেশাল ইফেক্টসের কাজ তিনিই করেছিলেন বলে, জলিল সাহেবের প্রথম ছবিটিই তাঁর সবচেয়ে ''বেশি দেশী'' ছবি হবার দাবীদার। ইফতেখার চৌধুরীর পরবর্তী ছবিগুলোতেও বেশ ভালোমানের কাজ হচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে এবং তাঁর কাজের মান সর্বদা উন্নয়নশীল। আমার জানামতে তিনি দেশের বাইরে থেকে ভিজুয়্যাল ইফেক্টসের কাজ করিয়ে থাকেন না। এই নির্মাতা এটাও জানেন, তাঁকে দিয়ে অভিনয় হবেনা তবে তিনি পোস্ট প্রোসেইং এই দেশে বিপ্লব ঘটাবেন। রেস্পেক্ট!!



এফডিসিতে কি বাল-ছাল কাজ হয় সে নিয়ে লেখালেখি করে আমার প্রবন্ধ বড় করার কোন ইচ্ছা নেই। আমি বরং একটু দেশের বাইরে যাই। বেশ কয়বছর আগে থেকেই শুধু বলিউড না, বেশকিছু হলিউড মুভির স্পেশাল ইফেক্ট এর কাজ ভারতের বেঙ্গালোর কিংবা পুনে থেকে আউটসোর্স করা হয়েছে। কদিন আগেই রাকেশ রোশানের ক্রিশ থ্রী ছবি দেখে হাসাহাসি করছিলাম। কিন্তু এক সাক্ষাৎকারে তাঁর একটা কথা বেশ ভালো লাগলো। তিনি গর্বিত যে ছবিতে ব্যবহৃত সকল ভিজুয়াল ইফেক্টস এর কাজ ভারতেই করাতে পেরেছেন।



অনন্ত জলিল প্রায়ই নিজেকে টম ক্রুজের সাথে তুলনা করে থাকেন। তাঁর অগাধ পয়সা। অনেক তাঁর খায়েশ। অতি সত্তর তিনি চলচ্চিত্র শিল্প থেকে বিদায় নেবেন না। তাঁকে বলছি, তো আর কত বাইরে দৌড়াবেন? এবার একটা ফিল্ম ইন্সিটিউট খুলে ফেলুন না... নেটে কয়েকটা ইনস্টিউটের সাইট দেখলাম কিন্তু সেখান থেকে কি কাজ বের হচ্ছে, তা আমাদের জানা নেই, ভাল কাজ হলে তো অবশ্যই জানতাম! বের না হবার কারন হলো, এসব ছাত্রছাত্রীরা প্রত্যক্ষভাবে কোন বিগ বাজেট মুভির সাথে সংযুক্ত হতে পারেনা। অনেক প্রতিভাবান ছেলে-মেয়ে আছে যারা এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে ইচ্ছুক। রানার থেকে শুরু করে VFX, SFX, art ডিরেক্টর - কতজনের কতকিছু হবার স্বপ্ন! শুটিং চলাকালে তাঁদের এপ্রেন্টিস হিসেবে নিয়োগ দিন। কয়েক মাস ভাল প্রশিক্ষন পেলে আপনার পর্ববর্তী চলচ্চিত্রের কাজ আর বাইরে থেকে করিয়ে আনা লাগবে না। এমনকি এই প্রতিষ্ঠানটিই হতে পারে বাংলাদেশে জেমস ক্যামেরন, ক্রিস্টোফার নোলান কিংবা জ্যাক স্নেইডারদের কথা বলার প্ল্যাটফর্ম। এটা কিন্তু একই সাথে আর একটা সাইড বিজনেস আইডিয়া! ভকেশনাল কোর্সএর সার্টিফিকেট ও দিতে পারবেন। মোট কথা, দেশের চলচ্চিত্র শিল্পে কাজ করার যোগ্য একঝাঁক প্রোফেশনাল সৃষ্টি হবে। এরা শুধু চলচ্চিত্র না; উন্নতমানের টিভিসি, নাটক নির্মানেও ভুমিকা রাখতে পারবে। এই একটা কাজের জন্য বাঙ্গালি আজীবন আপনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে। কারো কারো কাছে খারাপ শোনালেও সত্য কথা হলো, আজিজ মার্কেট আর ছবির হাট জেনারেশনের হাত দিয়ে 'টেলিভিশন' এর চেয়ে উন্নতমানের চলচ্চিত্র নির্মান হবেনা। X(



এই লেখাটা অনন্ত জলিল পর্যন্ত পৌঁছাবে কিনা জানিনা, তবে কেউ না কেউ হয়তো ভাববেন, এইটাই চাওয়া!



সবাইকে ধন্যবাদ।



- ৪ এপ্রিল, ২০১৪।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.