![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উনসত্তুরের গন অভ্যুত্থানে আমিও ছিলাম লাখো মানুষের মুখের একজন। আমারও এই হাত থেকে ছোঁড়া ঢিল সেদিন পথের ধারের দোকান আর মোটর গাড়ীর নাম্বার প্লেটের ইংরেজী-উর্দু অক্ষর গুলোকে ঘষে ভেঙ্গে ফেলছিল,প্রায় রাতারাতি সব গাড়ির প্লেট বাংলায় হয়ে গেল,-দোকানের নাম ,তাদের সাইনবোর্ড গুলোতে জ্বলজ্বল করতে থাকলো বাংলা অক্ষরগুলো। জাতীয়তার নিয়মেই নিজের ভাষার প্রতি মমত্ব থেকেই জ্যামিতিক নিয়মেই যেন উর্দুর প্রতি,তার আরবী অক্ষরগুলোর প্রতিও ছিল এক তীব্র ঘৃণা-। তবে এ জন্যেও যে ওই ভাষা ছিল পাকিদের ভাষা, তাকে কেন্দ্র করেই চলতো তাদের শোষণ,সাংস্কৃতিক আগ্রাসন। প্রিয় বাংলাকে প্রতিষ্ঠিত করতে সেদিনের ছোঁড়া ঢিলগুলো ক্রমশ: হলো গ্রেনেড,মিছিলের বাঁশগুলো পরিণত হলো রাইফেলে । আমরা স্বাধীন হলাম-আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি-
স্বাধীনতার প্রায় চল্লিশ বছর পর- বাসের জন্য দাঁড়িয়ে । একটা কাগজের মোড়ক কোত্থেকে উড়ে পায়ের কাছে এলো। পা দিয়ে সরালেম না । শৈশবের সংস্কার বশত:- মা বলতেন পা’ দিয়ে কোন লেখা বই,ছাপা অক্ষর মাড়াতে হয় না ,তাতে বিদ্যা হয় না । তাই পা দিয়ে না ঠেলে হাত দিয়ে সরাতে গিয়ে কি মনে করে তুলে নিলাম। দেখি একটি বিস্কুটের মোড়ক, ‘আল-আমিন বিস্কুট’। বিস্কুটের নামটি যেমন ধর্মীয়,লেখাও সম্পূর্ণই ইংরেজি ও উর্দু অক্ষরে , তাতে একটিও বাংলা অক্ষর নেই। ইংরেজি না হয় বোঝা গেল,আমরা জাতি থেকে আন্তর্জাতিক হচ্ছি ,-কিন্তু ওই উর্দু ? হয়তো বলা হবে ওতো আরবী -আমাদের ধর্মীয় পবিত্র অক্ষর। মধ্যপ্রাচ্যে এক্সপোর্ট করতে হবে না ।তাছাড়া আমরা তো মুসলমানও-কি জানি, হয়তো সবই ঠিক । তবু ভাবতে কষ্ট হচ্ছিল, এইটে বাংলাদেশের কোন পণ্যের মোড়ক। পুরো শরীর শির শির করে উঠলো ।
ফিল্মের মত ফ্ল্যাশব্যাকে ভেসে উঠলো একটা ছবি- এলিফ্যান্ট রোড ,ছাত্র ইউনিয়নের জঙ্গী মিছিল - পথিপার্শ্বে সাইনবোর্ডগুলোর ইংরেজি উর্দু অক্ষরে ঢিল পড়ছে শত শত –দোকানের সাটার গুলো ঝপাঝপ্ পড়ছে -আর আমি ইট দিয়ে প্রাণপনে ঘষে ঘষে তুলছি গাড়ীর ইংরেজি উর্দু অক্ষর গুলো।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১০:৩১
সুদীপ্ত সরদার বলেছেন: আক্ষেপে জ্বলি..