নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিষাদ

আমি জানি আমি জানি না

ব্যতীপাত

স্থপতি

ব্যতীপাত › বিস্তারিত পোস্টঃ

\'পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি কে বা কারা?\' বলছেন যুবাল নোয়াহ হারারি-

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪১




বেশীর ভাগ মানুষ বিশ্বাস করে তারাই পৃথিবীর কেন্দ্রবিন্দু,আর তাদের সংস্কৃতিই মানবেতিহাসের অপরিহার্য্য উপাদান। গ্রীসের বহু মানুষ বিশ্বাস করে যে হোমার,সফোক্লিস এবং প্লেটো থেকেই ইতিহাসের শুরু এবং সব গুরুত্বপূর্ণ মতবাদ ও আবিষ্কার হয়েছে এথেন্স,স্পার্টা,আলেকজান্দ্রিয়া অথবা কনসটান্টিনোপল থেকে। চীনের জাতীয়তাবাদীরা জানিয়ে দেয় যে, ইতিহাসের সত্যিকারে ভ্রমন শুরু তাদের পীত সাম্রাজ্যের ‘যিয়া ও শাও’ রাজবংশ থেকেই এবং যা কিছু পশ্চিম, মুসলিম বা ভারতীয়রা অর্জন করেছে তা সবই চীনা সাফল্যের নকল।

হিন্দু অধিবাসীরা চীনের বড়াইকে উড়িয়ে দিয়ে বলে, এই যে উড়োজাহাজ থেকে আনবিক বোমা দেখছ,সবই ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীন ঋষিদের আবিষ্কার- যা হয়েছে আইনস্টাইন বা রাইট ভাতৃদ্বয়েরও আগে, এমন কি প্লেটো বা কনফুসিয়াসেরও বহু আগে। তোমরা কি জানতে যে মহর্ষি ভরদ্বাজ রকেট ও উড়োজাহাজ আবিষ্কার করেন । বিশ্বামিত্র শুধু মিসাইল আবিষ্কার নয়, তাকে সফলভাবে ব্যবহারও করেছিলেন। আচার্য কণাদ হচ্ছেন আনবিক তত্ত্বের জনক- আর এ সবেরই পূর্ণানুপুঙ্খ বর্ণনা আছে মহাভারতে।

বিশ্বাসী ধর্মনিষ্ঠ মুসলিম মনে করেন, প্রফেট মুহাম্মদের পূর্বের ইতিহাস বেশির ভাগই অপ্রাসঙ্গিক এবং তারা এও মনে করেন কোরান প্রবর্তনের পর সব ইতিহাস মুসলিম উম্মাহকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হচ্ছে। তবে এর ব্যতিক্রম তুর্কী, ইরান ও মিশরীয় জাতীয়তাবাদীরা, যারা যুক্তি দেখায় যে নবীর জন্মেরও আগে তারাই ছিল মানবজাতীর সমস্ত মঙ্গলের আধার এবং উৎসমুখ। কোরান প্রবর্তনের পরও তারাই প্রধানত: ইসলামের বিশুদ্ধতা ধরে রেখেছেন এবং সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিচ্ছে এর মহিমা।

আর এটা তো বলার অপেক্ষাই রাখেনা যে বৃটিশ,ফরাসী,জার্মান,রাশিয়া,জাপান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অগনিত দল আছে যাদের ধারণা যে মানবজাতি এখনও সেই আদিম বর্বর যুগেই বসবাস করতো , যদি না তারা অত্যাশ্চার্য্য সব আবিষ্কার করতো। আবার ইতিহাসের এমনও কিছু জাতি ও মানুষ আছে যারা এখনও বিশ্বাস করেন যে তাদের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও ধর্মপালন ছাড়া পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মও পাল্টে যাবে । যেমন আজটেক(Aztec)রা বিশ্বাস করেন তারা যে প্রতিবছর দেবতার দরবারে যে প্রাণী উৎসর্গ করেন ,তা না করলে সূর্য আর উঠবে না এবং গোটা বিশ্ব ধ্বংস হয়ে যাবে।

এই সব দাবীই মিথ্যা। এসবই হচ্ছে ইতিহাসের স্বেচ্ছাচার এবং প্রচ্ছন্ন বর্ণবাদের প্রকাশ। মানুষ যখন পৃথিবীতে তাদের উপনিবেশ গড়ে তুলছিল,নানা উদ্ভিদ ও প্রাণীদের গৃহপালিত করে বসতি ও প্রথম নগর গড়ে তুলছিল, আবিষ্কার করছিল লিখন পদ্ধতি ও মূদ্রা, তখন এইসব ধর্ম বা জাতীর কোন অস্তিত্বই ছিল না। নৈতিকতা,শিল্প,আধ্যাত্ত্বিকতা এবং সৃষ্টিশীলতা, সবই হচ্ছে এক সার্বজনীন মানবিক ক্ষমতা বা গুনাবলী যা তাদের DNA’র মধ্যেই অনুবিদ্ধ হয়ে আছে । আর এসব কিছুরই সূচণা( genesis) হয় আফ্রিকায়, সেই প্রস্তর যুগে। তাই সেসব দাবীকে নির্বোধের হুঙ্কার ছাড়া আর কি বলা যায় ।তাদের সেসব দাবী অনেক পরের- প্রায় সাম্প্রতিক কালের ঘটনা, তা সে হোক চীনের পীত সাম্রাজ্যের সম্রাট, প্লেটোর সময়ের গ্রীস বা মুহাম্মদের সময়কালের আরব।

এই বক্তব্যগুলো বলছেন যুবাল নোয়াহ হারারি, তার সদ্য-সাম্প্রতিক গ্রন্থ ‘একুশ শতকের একুশ পাঠ’ (21 Lessons for the 21st Century)নামক গ্রন্থে। তিনি বলছেন :
'ব্যক্তিগত ভাবে আমিও এই প্রকার নির্বোধ অহংকারের সাথে পরিচিত। কারন আমার নিজের মানুষজন, যারা ইহুদী, তারাও মনে করে তারা নিজেরা পৃথিবীর সবচাইতে গুরুত্তপূর্ণ জাতি । আপনি যে কোন মানবিক কৃতিত্ব বা আবিষ্কারে কথা বলেন,তারা অতি দ্রুতই তার কৃতিত্ব দাবী করবে। আর তাদের সাথে ঘনিষ্ঠতার কারনে আমি জানি, তারা এটা গভীর ভাবে বিশ্বাস করে। একবার আমি যোগ ব্যায়াম শিখবার জন্য এক শিক্ষকের কাছে যাই। প্রাথমিক নিয়মাবলী ব্যখ্যা করার সময় তিনি বলেন, এই যোগ ব্যায়াম আবিষ্কার করেন আব্রাহাম। এর প্রতিটা অঙ্গবিন্যাস ,ভঙ্গী নেয়া হয়েছে হিব্রু অক্ষর থেকে। যেমন ‘ত্রিকোনাসন’ নেয়া হয় হিব্রু অক্ষর ‘আলেফ, ‘তুলাদন্ডাসন’ হিব্র ‘ডালেড’-ইত্যাদি। আব্রাহাম তার উপপত্নীর সন্তান ইসহাককে এইসব শেখান, যিনি পরবর্তিকালে ভারতে নিয়ে গিয়ে সেখানে তাদের শেখান। আমি যখন তার কাছে এর তথ্য,ভারতে যাবার প্রমান চাইলাম তিনি বাইবেলের এক শ্লোক শোনালেন- ‘তার উপপত্নীর সন্তানদের আব্রাহাম নানা উপহার দিলেন এবং নিজে জীবিত থাকতেই তার এক সন্তান ইসহাকের কাছ থেকে দূরে পূর্বদিকে এক প্রাচ্যদেশে পাঠিয়ে দিলেন।(জেনেসিস-২৫:৬) তার ব্যখ্যা এই প্রাচ্যদেশই হচ্ছে ভারত।
এটা হয়ত একটি বিচ্ছিন্ন উদাহরণ। কিন্তু ইহুদী ধর্মের মূলধারা এমনই বিশ্বাস করেন যে সমস্ত সৃষ্টজগৎ (কসমিক) তৈরি করা হয়েছে যাতে ইহুদী রাব্বীরা সেটি দেখে তাদের পবিত্র শাস্ত্র পড়েন। এবং তারা যদি পড়া বন্ধ করে দেন তাহলে বিশ্বব্রম্মান্ড তার সমস্ত কার্যক্রম থামিয়ে দেবে। ইহুদী ধর্মের এটি একটি কেন্দ্রীয় বিশ্বাস। যে অবিশ্বাস করবে সে এক মহামূর্খ। তবে ধর্মনিরপেক্ষ ইহুদীরা হয়তো এইরকম নয় ,তারা কিছুটা সংশয়ী । কিন্তু তারাও এইটা বিশ্বাস করেন যে ইহুদীরা হচ্ছে পৃথিবীর ইতিহাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র এবং সব প্রকার
নৈতিকতা,আধ্যাত্বিকতা ও শিক্ষার একমাত্র ও চূড়ান্ত ঝর্ণাধারা।---

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৩৮

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: আজটেক(Aztec)রা বিশ্বাস করেন তারা যে প্রতিবছর দেবতার দরবারে যে প্রাণী উৎসর্গ করেন ,তা না করলে সূর্য আর উঠবে না এবং গোটা বিশ্ব ধ্বংস হয়ে যাবে।
যে যেটা বিশ্বাস করে আল্লাহ তাক সেই পথেই পরিচালিত করে।

২| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: পৃথিবীর তাবৎ মহারথীরা বউকে ভয় পায় ।

৩| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


আধুনিক বিশ্বের গোড়া পত্তনে গ্রীকদের ভাবনাচিন্তাই ছিল সবার থেকে প্রগ্রেসিভ

৪| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:০৪

এটম২০০০ বলেছেন: https://www.youtube.com/watch?v=n_4Gt9Z_t9M

৫| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:০৩

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: আমাদেরকে তৈরীই করা হইছে তার এবাদতের জন্য: এই লাইনটা দেখি উল্লেখ করতে ভুলে গেলেন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.