![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আইন আমাদের জন্য, আমরা আইনের জন্য নই। আইন ও তথ্য জানতে চাই, শেয়ার করতে চাই। জীবনের নিরাপত্তা চাই। আইনের দূর্বোধ্য নিষিদ্ধ অন্ধকার জগতকে ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিতে চাই।
সরকারের তিনটি বিভাগ। ১। একজিকিউটিভ বা নির্বাহী বিভাগ ২। লেজিসলেচার বা আইন বিভাগ ৩। জুডিসিয়ারী বা বিচার বিভাগ।
একজিকিউটিভ একটি দেশের শাসনক্ষমতার মূল চালিকাশক্তি। জণগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত সকল জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসন, আমলা সবাই একজিকিউটিভ। একজিকিউটিভ সরকারের সকল পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে। আমরা সাধারণতঃ সরকার বলতে একজিকিউটিভকেই বুঝি।
লেজিসলেচার বা আইন বিভাগ বলতে আইন প্রনয়ণকারী সংস্থাকে বোঝায়। বাংলাদেশে পার্লামেন্ট বা জাতীয় সংসদ হচ্ছে মূল আইন প্রনয়ণকারী সংস্থা। জণগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগণ তথা সংসদ সদস্যগণ, যারা মূলতঃ একজিকিউটিভ, সংসদে লেজিসলেচার হিসেবে আইন প্রনয়ণ করে থাকেন। সংসদে পাশ হওয়া সকল আইনকে বিধিবদ্ধ আইন বা স্ট্যাটিউট বলা হয়। সংসদের বাইরেও স্থানীয় প্রশাসন যেমন সিটি কর্পোরেশন বিভিন্ন রুলস, অর্ডার ইত্যাদি জারী করে। স্বায়ত্বশাসিত সংস্থা যেমন বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজস্ব সিনেটে আইন প্রনয়ণ করে। এসব সংস্থাকে আইন প্রনয়ণের জন্য সংসদ স্বয়ং ক্ষমতা দেয়। সংসদের বাইরে অন্যান্য সংস্থাগুলোর আইন প্রনয়ণ পদ্ধতিকে ডেলিগেটেড লেজিসলেশন বলা হয়।
সরকারের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ হল জুডিসিয়ারী বা বিচার বিভাগ। বিচার বিভাগ একটি আধুনিকতম ধারণা।
বাংলাদেশের বিচার বিভাগ বলতে মূলতঃ সূপ্রীম কোর্ট ও অধস্তন আদালতসমূহকে বোঝায়।
সূপ্রীম কোর্টের আবার দুইটি বিভাগ, যথাঃ ১। আপীল বিভাগ, ২। হাইকোর্ট বিভাগ।
(লক্ষ্যণীয়, ভারতের মতো “হাইকোর্ট” বলতে আমাদের দেশে কোন কোর্ট নেই। আমাদের সর্বোচ্চ কেন্দ্রীয় আদালত একটি, তা হল সূপ্রীম কোর্ট। সূপ্রীম কোর্টের নিম্ন বিভাগ হল হাইকোর্ট বিভাগ।)
আপীল বিভাগ দেশের সর্বোচ্চ বিচার বিভাগীয় সংস্থা। হাইকোর্ট বিভাগের কিছু বিচারকদের নিয়ে আপীল বিভাগ গঠিত। তাঁদের মাঝে একজন হলেন “বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি”, যিনি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হন।
হাইকোর্ট ডিভিশনের বিচারকগণও রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হন। হাইকোর্ট ডিভিশনের বিচারক হওয়ার আইনগত যোগ্যতা হল, অধস্তন আদালতের বিচারক বা বার কাউন্সিল সনদপ্রাপ্ত আইনজীবী হিসেবে দশ বৎসরের অভিজ্ঞতা। দুঃখজনক এই যে, বাংলাদেশে সূপ্রীম কোর্টের বিচারক নিয়োগকালে রাজনৈতিক পরিচয় বা বিবেচনাই মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
(লক্ষণীয়, আমি সূপ্রীম কোর্টের “বিচারক” বলেছি, যাদেরকে আমরা বিচারপতি হিসেবে জানি। সংবিধানে “বিচারক” ব্যবহৃত হয়েছে। শুধু প্রধান বিচারপতিকে “বিচারপতি” বলা হয়েছে।)
সূপ্রীম কোর্টের রায় প্রচলিত আইনের সমপর্যায়ের ক্ষমতাশালী এবং মর্যাদাবান।
অধস্তন আদালত বলতে সূপ্রীম কোর্ট ব্যতীত দেশের সকল আদালতকে বোঝায়। অধস্তন আদালত মূলতঃ দুই ধরণের, ১। দেওয়ানী আদালত বা সিভিল কোর্ট, ২। ফৌজদারী আদালত বা ক্রিমিনাল কোর্ট।
দেওয়ানী আদালত সাধারণতঃ জমি জমা, পদবী, ক্ষতিপূরণ, অধিকার ইত্যাদি সম্পর্কিত মামলা মোকদ্দমা বিচার করে থাকে। বিচার শেষে আদালত জমির উপর কারো অধিকারের ঘোষণা দেয় বা কাউকে ক্ষতিপূরণের আদেশ দেয়। সহকারী জজ আদালত, সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, যুগ্ন জেলা জজ আদালত, অতিরিক্ত জেলা জজ আদালত ও জেলা জজ আদালত –আর্থিক এখতিয়ারভেদে এই পাঁচ ধরণের দেওয়ানী আদালত রয়েছে।
ফৌজদারী আদালত বলতে মূলতঃ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটগণের আদালতকে বোঝায়। এই আদালতগুলো আমাদের শরীর, সম্পত্তি সংক্রান্ত “অপরাধ” যেমন, হত্যা, চুরি-এর বিচার করে। শাস্তি প্রদানের ক্ষমতার ভিত্তিতে ফৌজদারী আদালত ৩য়, ২য়, ১ম শ্রেণীর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট –এই তিন ধরণের হয়। (জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটগণকে মেট্রোপলিটন এলাকায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বলা হয়।) একটি জেলায় জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটগণের প্রধান হিসেবে থাকেন একজন চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। আরও থাকেন একজন অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। তাঁরা দুজনেই অবশ্য ১ম শ্রেণীর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।
যুগ্ন জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা জজ ও জেলা জজ আদালত –এদেরও কিন্তু ফৌজদারী ক্ষমতা রয়েছে। এরা যখন ফৌজদারী অপরাধের বিচার করে তখন এদেরকে বলা হয় দায়রা আদালত, যেমনঃ জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
এছাড়াও আরও ফৌজদারী আদালত রয়েছে, যেমনঃ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, স্পেশাল পাওয়ার এয়াক্ট-এ বর্ণিত অপরাধ বিচারের জন্য স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল ইত্যাদি।
সরকারের তিনটি অংগই গুরুত্বপূর্ণ। এদের কাজ পারষ্পরিক নির্ভরশীল ও পরিপূরক। আইনসভার আইন ও বিচার বিভাগের আদেশগুলো নির্বাহী বিভাগ বাস্তবায়ন করে। বিচার বিভাগ আইনসভা প্রণীত আইন অনুসারে আদেশ দেয়। আইনের উর্ধে কেউ নয়।
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ২:২৭
আর্টিকেল থার্টিওয়ান বলেছেন: আদালতের ভেতর বাহির নিয়ে সামনে বিস্তারিত লিখব আশা করি।