নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মেক ইট আ প্রোডাক্ট, কজ এট দ্যা এন্ড অফ দ্যা টাইম হিউম্যান বিয়িং ইজ গোয়িং টু সেল ইউর সোল টু দ্যা ডেভি্ল।

আসাদ ইকবাল

সন্ধ্যার মেঘমা্লা ...

আসাদ ইকবাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আত্মহত্যার গতিপ্রকৃতি, চিন্তা ও ‘মানব’ অর্থের একমাত্র বিযুক্তির পাঠ।

০৫ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:২৬

বলা হয়ে থাকে পৃথিবীতে প্রাপ্ত এই মানব জীবনই বিশ্বভ্রক্ষ্মাণ্ডের সর্বোত্তম সচেতন বিন্যাস। আর তাইতো বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে মানুষকে সর্বোত্তম সৃষ্টি হিসেবে মর্যাদা দান করা হয়েছে। আর এই মহামূল্যবান জীবন যখন নিজহাতে কেউ সমাপ্তির দিকে ঠেলে দেয় তথা নিজের প্রাণ হরণ করে তখন আসলে ‘মানুষ’ এই শব্দটি সংশয়পূর্ণ হয়ে পড়ে। কেননা কোন সুস্থ, স্বাভাবিক মানুষ নিজ হাতে তার প্রাণ হরণ করবে এটা কখনোই যৌক্তিক কিংবা অর্থবহ হতে পারেনা। তাহলে যদি প্রশ্ন উত্থাপিত হয় মানুষ কেন আত্মহত্যার মত হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যা সামাজিক ভাবে ঘৃণিত শুধু তাই নয় তাবৎ ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষায় যাকে সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই প্রশ্নের সাথে মানুষের কিছু মৌলিক সমস্যা জড়িত যা তাকে জীবন ও পৃথিবীর প্রতি বিতৃষ্ণার জন্ম দেয়। অর্থাৎ যখন কোন ব্যক্তি তৎক্ষণাৎ কোন কারণ কিংবা পারিপার্শ্বিক অবস্থার প্রভাবে পড়ে পৃথিবীর এই সচেতন অবস্থা কে অস্বীকার করে চির প্রশান্তি অথবা চির অনির্দিষ্টতাকেই বেছে নেয়া তার জন্যে কল্যাণকর ভাবে তখন সেই মানসিক অবস্থাই তাকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেয়। মূলত, আত্মহত্যা কে এক প্রকার মানসিক অসুস্থতার চূড়ান্ত অবস্থা বলে ব্যক্ত করা হয়েছে প্রাচীনকাল থেকে।

বিজ্ঞানের এই যুগে একজন মানুষের এতসব সুযোগ সুবিধা তথা মানসিক অবসাদ কিংবা অসুস্থতা দূর করার ব্যবস্থা থাকলেও কেন আত্মহত্যাই জয়ী হয় বারবার! এই বিস্ময় নিয়ে সারা পৃথিবীতে কম গবেষণা সমাপ্ত হয়নি এ পর্যন্ত। সেটা মেডিক্যাল সাইন্স তথা বায়োলজিক্যাল সাইন্স ও সাইকোলজিক্যাল সাইন্স এবং সোশাল সাইন্সের ও গাদা গাদা গবেষণা পত্রের বিষয় হিসেবে স্থান পেয়েছে। কিন্তু এর উত্তরণের সম্ভাব্য কিছু প্রস্তাবনা ব্যতীত জ্ঞানের কোন শাখাই পরিপূর্ণ সিদ্ধান্ত প্রদান করতে পারেনি। তবে আমরা যদি শুধুমাত্র আমাদের দেশের দিকে তাকাই তাইলে দেখি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যক্তিগত মানসিক সমস্যা তথা আরও নির্দিষ্ট করে বললে প্রেমঘটিত অপ্রাপ্তি,পরকীয়া, কিছু কিছু ক্ষেত্রে ধর্ষণ ও বেকারত্ব সমস্যার কারণে আত্মহত্যা সংগঠিত হয়ে থাকে।

এদিকে আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে চলছে আরেক তুঘলকি কাণ্ড, সেখানে শুধু মধ্যভারতের রাজস্থান ও বিহারে গত কয়েকবছরে কয়েক হাজার কৃষক আত্মহত্যা করেছে। আর এইজন্য প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্ট অনাবৃষ্টি ও সরকারী অসহযোগিতাকেই মূল কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে। কেননা এই অবস্থায় দু’ বেলা দু মুঠো আহার যোগানোই প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় কৃষকদের জন্য। তাই এই অঞ্চলে আর্থিক দুরূহতাই একজন কৃষক কে প্ররোচিত করছে আত্মহত্যায়। তবে ভারতের অন্যান্য অঞ্চল সহ যদি গড় হিসাব করা হয় তাহলে দেখি প্রতি এক লক্ষ মানুষের মধ্যে ২১ জন মানুষ আত্মহত্যা করছে প্রতিবছর।

অন্যদিকে উন্নত বিশ্ব তথা ইউরোপ, আমেরিকা এবং বিশ্বের অপরাপর অঞ্চল যেগুলো অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের মাপকাঠিতে বেশ ভালো সূচক নিয়ে অবস্থান করছে সেখানে কি আত্মহত্যা সংগঠিত হয়না! কিংবা যদি হয় তাহলে এইসব অঞ্চল গুলোতে আত্মহত্যার স্বরূপ কী! অর্থাৎ যেখানে তথাকথিত তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে মূলত দারিদ্র ও নারী-পুরুষের যৌন আচরণই আত্মহত্যার মূল প্রভাবক হিসেবে কাজ করে সেখানে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাধীন ও অঢেল বিত্তের মাঝে বসবাস করার পরেও আত্মহত্যাই কেন অনেকের অন্যতম পছন্দ হয়ে দাঁড়ায়। এর জন্য পাশ্চাত্যের সমাজব্যবস্থার অর্থনৈতিক অভীক্ষাই দায়ী। এই ব্যবস্থায়, ভুলভাবে ব্যক্তির পরম চাহিদা নিরূপণ তথা ব্যক্তির চূড়ান্ত পণ্যায়নের ফলে মানুষ তার মানবিক গুণাবলী হারিয়ে পশুবৎ জীবন যাপনে বাধ্য হয়। আর চূড়ান্তভাবে মানবের এই অপমান তার মধ্যে চরম প্রশান্তি ও সুখস্মৃতি তৈরি হতে দেয়না। কেননা, শুধুমাত্র পণ্যায়নের মাধ্যমে তার যে চরিত্র নির্মিত হয় সেখানে মানবের পরম উপযোগ অর্থ তৈরি হওয়ার কোন সুযোগ তো দূরের কথা নতুন অর্থ সৃষ্টির সকল পথ রুদ্ধ করা আছে। এতে নির্দিষ্ট পণ্যের মত একজন মানুষের জীবন যে অর্থে পৃথিবীতে প্রাণ ধারণ করার উপযোগী হয়ে ওঠে তার উপযোগ ফুরোতে বেশিদিন সময় অতিবাহিত হওয়ার প্রয়োজন পড়েনা। কেননা এই পণ্যবৎ বিযুক্ত মানুষ শুধুমাত্র সিস্টেম কতৃক প্রযুক্ত অর্থে নিজেকে গ্রহণ করা ও তাকে যেই অর্থে নির্মাণ করা হয়েছে তাকে ধারণ করতে করতে এক পর্যায়ে মানসিক অবসাদ ও অসুস্থতার দিকেই এগিয়ে যায়। এর ফলে জীবনের কিছুটাকাল অতিক্রান্ত হওয়ার পরেই পাশ্চাত্যের মানুষের মনে এই ভাবনা জাগে আনন্দ কোথায়? এবং মূলত পৃথিবীতে নৈরাশ্য বৈ আর কোন কিছুই তার চোখে ধরা পড়েনা এবং নিয়ত এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি লাভের উদ্দেশ্যে আত্মহত্যাই একমাত্র সমাধান হয়ে পড়ে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.