নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো আমরা পাখিদের কাছ থেকে ইউক্লিডের নতুন পাঠ নেই জীবনানন্দের পাঠ নেই নিউটনের আপেল গাছটি থেকে।

জসীম অসীম

লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।

জসীম অসীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

COMILLA-ও হয়ে যাবে KUMILLA

১৬ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:৪৮

আমি নিজের দোষের কথা লিখি। কিন্তু আমার অনেক সাংবাদিক, লেখক বন্ধু তা লিখেন না। নিজ পেশার লোকদের খারাপির বিরুদ্ধেও না , নিজেদের খারাপির বিরুদ্ধেও না। তাদেরকে ঠিক কী থেরাপি দেওয়া যায়, এখনো আমি বুঝতে পারছি না। অথচ আমি নিশ্চিত যে, এমন একদিন আসবে, যেদিন লেখক-সাংবাদিকগণও নিজেদের দোষের কথা নির্ভয়ে লিখতে পারবেন এবং সেদিনও দূরে নয়। DACCA হয়েছে DHAKA. আর এইতো সেদিন CALLCUTTA হলো KOLKATA. আমার বিশ্বাস জ্যোতিষীর ওপেন চ্যালেঞ্জের মতো চ্যালেঞ্জ নিয়ে পৃথিবীর সব পঙ্গু নাম এক সময় ঠিক হয়ে যাবে। এমনকি আমাদের জেলা COMILLA নামের বানানও ঠিক হয়ে হয়ে যাবেKUMILLA এবং সেদিনও দূরে নয়।
ভন্ড লোক হয়ে সাধুর অভিনয় করলে আমার ভীষণই রাগ ওঠে। যদিও আমিও সাধু নই। দুর্নীতিমুক্ত নই। জেলখানার রক্ষীরাও অনেক ঘুষ খায়। কিন্তু বলতে গেলেই বিপদ। বলা হবে, ‘কী প্রমাণ আছে?’
আমার ঘরের বউ খুব সুন্দরী হলেও প্রায়ই চোখ পড়ে যায় বাইরের অনেক সুন্দরীর দিকেও। আমি স্বীকার করি বলে অনেকে আমাকে ভন্ড বলে দন্ড দিতে চায়, কিন্তু যে ‘শালা’ এমন সত্য বিষয়কে গোপন রাখে মনের ভেতরে, সেও কি সৎ রয়েছে?

আমাদের ঘরের সুন্দরী বউয়েরা কি পরিপূর্ণ নয়? কেন আবার আমরা অন্যের সুন্দরী বউ দেখলে হা করে তাকিয়ে থাকি? এর উত্তর কী হবে!

একদা এক মেয়েকে ভালোবাসতাম আমি। তাকে একদিন পড়তে দিয়েছিলাম ‘কাহলিল জিবরান’। কিন্তু ওই মেয়ে সেই বইয়ের বদলে একগুচ্ছ গোলাপফুলকেই বেশি পছন্দ করেছিল। ভালো একটি বইয়ের বিকল্প কি একগুচ্ছ গোলাপ? ঘরের বউয়ের বিকল্প কি পথে দেখা সুন্দরী কোনো নারী? কেন মানুষ এমন দ্বন্দ্বে ভিতরে-বাইরে স্পষ্টবাদী হতে পারে না?

একজন ‘বদমাশ’কে আমি একবার বলেছিলাম, তুমি কি তোমার স্ত্রীকে তোমার পতিতাবৃত্তির কথা জানাতে পারো? সেই লোক উত্তরে ‘না’ বলেছিল। ঠিক। এটাই বাস্তব। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হলে বর্তমান সময়ে চীন কার পক্ষে যাবে, তা হিসেব করে দ্রুতই বের করা যায়।

কুমিল্লা শহরের একজন যুবতী মেয়ের মা ছিলেন অত্যন্ত ব্যক্তিত্বসম্পন্না মহিলা। তিনি তার মেয়ের সঙ্গে আমার খুব মেশামেশি দেখে একদিন তার মাথায় হাত রেখে আমার মৃত মায়ের নামে শপথ করালেন, আমি যেন তাঁর যুবতী মেয়েটির শারীরিক কোনো ক্ষতিই না করি। মেয়েটি তখন আমাদের সামনে ছিল না। আমি তার মাকে দেয়া কথা রেখেছিলাম।

২০০৩ সাল। আমার কুমিল্লার কান্দিরপাড়ের তিনতলার বাসায় একদিন সেই মেয়েটিই এসে হাজির। সন্ধ্যায়। তখন বাসায় একজন লোকও আর ছিল না। এমন সময় লোডশেডিংয়ের কারণে বিদ্যুৎও চলে গেল। মেয়েটি আমার সঙ্গে একা। চতুর্দিকে যেন শহীদ মিনারের নিস্তব্ধতা। মেয়েটি কেমন যেন ভীত না হয়ে উত্তেজিতই হয়ে পড়লো। কিন্তু আমি আমার মৃত মায়ের নামে করা শপথের কথা মনে করলাম এবং মেয়েটিকে আমার বাসা থেকে চলে যেতে বললাম।
মেয়েটি বললো, অন্ধকারে যেতে তার ভয় লাগছে। তাই বিদ্যুৎ এলেই যাবে। আমি তখন তাকে বললাম, তুমি কি অন্ধকারকে ভয় পাও? আমি কিন্তু অন্ধকারের চেয়েও হিংস্র হয়ে যেতে পারি। সুতরাং চলে যাও। মেয়েটি গেল ঠিকই, কিন্তু আমাকে ‘ভীতু’ মনে করেই গেল। কিন্তু প্রকৃত ব্যাপারটা কী ছিলো? আমি তো আমার মৃত মাকে ‘নিষিদ্ধ পুরনো গাড়ি’ মনে করতে পারি না। শুধু একটি মেয়ের সঙ্গে শুয়ে যাওয়ার জন্যই কি আমি আমার মাকে টাকার মতো অবমূল্যায়ন করতে পারি? না। কিন্তু শুধুমাত্র এই কথাটি রেখেছিলাম বলেই আমি কিন্তু আবার চরিত্রবান নই।
যদি আমি যুবতী মেয়েটির মাকে আমার মৃত মায়ের নামে ‘ওয়াদা’ বা শপথ না দিতাম, তাহলে কি করতাম কিংবা তাহলে কি অন্য কিছু ঘটতো? যদি তা-ই হয়, তাহলে আমি আর চরিত্রবান কোথায়?
১৯৯৮ সালে আমার মা মারা গেলেন কিডনী রোগে। খুব বড় রকম চিকিৎসা সম্ভব হলো না। সুখ আমাদের তখন থেকেই নিষিদ্ধ হয়েছিলো। তারপর অভাব এলো তীব্রভাবেই আমাদের জীবনে। যেন সবার হাতেই ভিক্ষের থালা উঠার বাকি। কিন্তু মায়ের পরামর্শে আমরা সেই অভাবকেও অতিক্রম করতে পেরেছিলাম। জীবদ্দশায় মা আমাদের অনেক পরামর্শই দিয়েছিলেন। তা মেনে চললে আজও আমাদের সমস্যা দূর হতো। মাকে আমি এতটাই শ্রদ্ধা করি যে, আজ পর্যন্ত, তার নামে শপথ করে আমি আর কোনো মিথ্যে কথাই বলতে পারি না।
আমার বাবা বাংলাদেশের অনেক ট্রাফিক পুলিশের মতো ছিলেন না, যেসব ট্রাফিক পুলিশের যানজট দেখলে কোনো মাথাব্যথাই হয় না। তাই আমরা একসময় অনেক কঠিন নিয়মেও বেড়ে উঠেছিলাম। তাই এখন চেষ্টা করেও চোর-বাটপার-টাউট হতে পারছি না। শৈশবে পাওয়া শিক্ষাগুলো কোনোভাবেই জীবন থেকে বাদ দিতে পারি না।

জেনারেল জিয়া বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর বিভিন্ন কারণে খাল খনন কর্মসূচিতে মনোযোগ দেন। অনেক জায়গায় জিয়া নিজেই কোদাল দিয়ে মাটি কেটে খাল খনন কর্মসূচি উদ্বোধন করেন। সেদিন আওয়ামীলীগের এক নেতা এ বিষয়ে বলেন, এই খাল কেটেই নাকি জিয়া বাংলাদেশে কুমীর এনেছিলেন। আমি বললাম, বন্যা প্রতিরোধে এবং সেচ ব্যবস্থায় খালের কিন্তু গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু তিনি শুধু আমাকে কুমীরের ভয়ই দেখালেন। সেই আওয়ামী নেতার নাম বললে আমি আওয়ামী ধোলাই খাবো, অথচ আমি বিএনপি-কেও দু’চোখে দেখতে পারি না। তাই আমার হয়েছে উভয় সঙ্কট।
ডুবুরি যেমন সাগরতলে স্বর্ণ অথবা রত্ন খুঁজে, তেমনি আমিও ভালো মানুষের খোঁজ করি। কিন্তু পাই কি? কখনো যদি নয়নলোভা যুবতী খুঁজে পাই, যার কাছে দেখা গেল স্বর্ণ-রত্ন কোহিনূর সবই আছে, কিন্তু কাছে গিয়ে তার হয়তো দেখা গেল মূলত চরিত্রটাই নেই। তাহলে থাকলো কী আর তবে। এমনও অনেকবার হয়েছে।
ঢাকার বইপাড়ার বাংলাবাজার আর নাটকপাড়ার বেইলীরোডে একদা আমার অনেক সময়ই কেটেছে। প্রিন্সেস ডায়ানার চোখের আয়নার মতো চোখওয়ালী দেবীতুল্য সুন্দরী নারীও দেখেছি অনেক। তাই কি আমি মন্দ হতে পারি না? পারিনা। ইদানীং চেষ্টাও করি। কিন্তু পারিনা। পারিনি। হয়তো পারবোও না কোনোদিন।
এভাবে পারিনি আমি সচিবালয়ে তদবির পার্টির সদস্য হতে। মুক্তিযোদ্ধাকে পঙ্গু করতে। শেরাটন অথবা ক্লিনটন হোটেলে গিয়ে ‘ঘোলা পানি’ খেতে।
আর আমাদের সংস্কৃতির কথা বলে তো লাভই নেই। কোনদিকে যে তার গতি, বলাই মুশকিল। জাতীয় পতাকার লাল-সবুজ কাপড়ে এখন বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা জামাকাপড় বানিয়ে বানিয়ে পরে রাস্তায় হাঁটে, সবাই দেখলেও তা প্রশাসন নাকি দেখে না।
জুতা দোকানের সাজানো জুতার নিচেও কখনো কখনো জাতীয় পতাকা উত্তোলিত হয়, আহারে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা, কে করবে তার তদারকি। এমন ছবি আমি পত্রিকায়ও ছেপেছি।
সেদিন একজন লোকের নাম শুনলাম, আবদুল হাকিম হাক্কু। আরেকজনের নাম কবিরুল ইসলাম কাক্কু। তিনিও এই কুমিল্লা শহরেরই বাসিন্দা। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান মেয়রের ডাকনাম মনিরুল হক সাক্কু। চিন্তিত থাকি কোনো লোক না আবার তার সন্তানের নাম রেখে বসে ‘--- ---চাক্কু’।
দলের নাম ফিলিংস। গানের দল। ব্যান্ডগান। শিল্পীর নাম জেমস। কেন যেন মনে হয় টেমস নদীর তীরে তার বাড়ি। দলের নাম ইংরেজিতে, শিল্পীর নামও ইংরেজিতে। কিন্তু তাকে আবার বলা হচ্ছে বাউল। নগর বাউল।
আরও উদাহরণ রয়েছে। কিন্তু বেশি লিখলে খবর আছে। সব লিখবো না। সব অভিজ্ঞতা লেখার মানে নেই। সব চমৎকার অভিজ্ঞতা আসলে চমৎকার নয়। তবু পৃথিবীটা আমার কাছে বড়ই চমৎকার লাগে। সবাইকে খুব অভিজ্ঞ মনে হয়।
একটি নোটিশ বোর্ডে আমি একবার নিজের বানানো নোটিশ লাগিয়ে ছাত্রজীবনে কিছু লোককে যেমন বিভ্রান্ত করতে পেরেছিলাম, তেমনি ডিজাইনার ‘অমুক’ তার ডিজাইন দ্বারা কিছু মানুষকে নিশ্চয়ই বিভ্রান্তও করছেন। অবশ্য যে অন্যকে বিভ্রান্ত করে, সে নিজেও কখনো কখনো বিভ্রান্ত হয়।
মায়ের বাবা না হলেও ভারতীয় অভিনেতা নানা পাটেকরের নাম শুনেও হঠাৎ কেউ কেউ একটু হলেও বিভ্রাটে পড়েন। কারণ নামের আগেই নানা। যেমন: বাবা জর্দা। খাজা বাবা। পাগলা বাবা। --- --- --- ।
যখন বামপন্থী ছিলাম, তখন একবার আমরা মিছিলে শ্লোগান দিলাম, ‘গোলামের চামড়া, তুলে নেবো আমরা’ বলে। পরদিন দেখলাম সেই মিছিলেরই এক ছেলে তার বাবার সঙ্গে গোলামের এক শিষ্যের বয়ান শুনতে যায়। গোলাম মানে জামাত ইসলামীর গোলাম আযম। জীবন আর পৃথিবী এত বিচিত্র, মাথা ঠিক রাখা কঠিন।
ইয়ে আজাদী ঝুটা হায়, লাখো ইনসান ভুখা হায়। বন্দে মাতরম। ইনকিলাব জিন্দাবাদ। গলাকাটা চলছে চলবেই। কতোভাবে কতো শ্লোগানেই না চলেছে আমাদের জীবন। মানুষ কোথায় এবং কিভাবে স্থির হবে?
একজন প্রভাবশালী মহিলা একবার আমাকে বাঘের চেয়েও বেশি ভয় দেখিয়েছেন। গডফাদার নন তিনি, গডমাদার। শেখ হাসিনার ১৯৯৬-র আমলে তিনি ‘বঙ্গবন্ধু বাতের মালিশ’ বিক্রি করতেন। যে কোনো মুজিবভক্তই সেটা সহ্য করতে পারতেন না। অথচ মূল আওয়ামী লীগ পার্টির সঙ্গে কিন্তু তার তেমন যোগাযোগ ছিল না। একসময় নারায়নগঞ্জের টানবাজারের দিকেও তার নাকি টান কিছুটা ছিল। তিনি ছিলেন আবার রুহানী সব দরবার শরীফেরও ভক্ত। ওসব দরবার থেকেই নাকি তিনি ...শক্তি বাড়ানোর মন্ত্রতন্ত্র পেতেন। তার নামঠিকানাসহ বিস্তারিত লিখলে আমার এ লেখার হাতটাই যেতে পারে।
টাক মাথাওয়ালা রূপবান যারা, অর্থ্যাৎ যাদের টাকা আছে, তিনি তাদের সঙ্গে গভীর রাতে মোবাইল মিতালী করেন। যদি একটা মেয়েকে কয়েকদিন ভাড়ায় খাটানো যায়। তার মুখে মুম্বাইয়ের পতিতালয়ের গল্প শুনলে এক্ষুনি অনেকের মুম্বাইয়ে যেতে ইচ্ছে করবে। তার নাকি খুব ইচ্ছে ছিল কোনো স্বৈরশাসকের সঙ্গে তিনি প্রেম করবেন। সেই তিনি চুলে রঙ লাগিয়ে যে সৌন্দর্য চর্চা করেন, তা আমার কাছে প্রায়ই উদ্ভট সাজসজ্জা বলে মনে হতো। তিনি একবার নিজেকে আন্তর্জাতিকমানের এক নারী বলেও আমার কাছে দাবী করেছিলেন।
প্রাচীন গুহাচিত্র আমার ভীষণই পছন্দ। ‘গুহায় চিত্রচর্চা’র ইচ্ছে হয় আমারও। সৌন্দর্য চর্চায় এই গুহার অবদান অনেক, যেমন অজন্তা। যদিও বোদলেয়ার পড়া ছিলো। কারণ জনকণ্ঠের রিপোর্টার সমুদ্র হকের সমুদ্রের মতো গভীরভাবে লেখা রিপোর্টও আমি পড়েছি, লেখক রমজান আলী খান মজলিসের সঙ্গে মজলিসে বসার সুযোগ না হলেও কবিতা পড়েছি ম.আলী ও আকবর হায়দারের। প্রবন্ধ পড়েছি রাজনীতি বিষয়ে হায়দার আকবর খান রনো’র। ---। ---।
স্কুল ভ্যানের খাঁচায় করে কোথাও যাওয়ার দুর্ভাগ্য আমার কখনোই হয়নি। তাই লেখক আঁদ্রে জিদের মতো রাগ বা জিদও আমার নেই। আমি তাই ভালোই আছি। দেশের অবস্থাও এখন খুবই ভালো। যদি আপনি পাকিস্তান প্রেমিক হোন, ডোন্ট ওরি বি হ্যাপী। দুই বাংলা এক না হলেও ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দুই পাকিস্তান এক হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারেন। কারণ এদেশে এখন সব সম্ভব। ঋত্বিক কুমারের দুই বাংলা এক হওয়ার স্বপ্ন সফল না হলেও যুদ্ধাপরাধীকে দেশপ্রেমিক বানানো সম্ভব। এখানে আপনি প্রয়োজনে আপনি সবই করতে পারেন।

আপনার নাম বড় করতে চান? করুন। বাংলাদেশের একজন বিখ্যাত লোকের নাম: বোরহান উদ্দিন খান জাহাঙ্গীর। দেখুন দু’জনের নাম দিয়ে একজনের নাম রাখা হয়েছে। কিন্তু রেলগাড়ির সমান লম্বা নাম ইতিহাসে অনেক রয়েছে।
দুখু মিয়া কবিতা লিখেছিলেন। পরে কবি নজরুল হয়েছেন তিনি। আমাদের জাতীয় কবি। এখনও দুখু বাঙ্গাল নামে একজন কবিতা লিখেন। নামের মধ্যে মিল পাওয়া যায়।
খাওয়ার নামেও এখানে নাম রাখতে পারেন। যেমন ওমপুরী। ভারতীয় অভিনেতা। ভারতে অবশ্য পুরি নামে খাবার রয়েছে কী না, জানি না। তবে হালিম কিন্তু একইসঙ্গে মানুষের এবং খাবারেরও নাম। এইভাবে আর কতোকাল চলবে? পুরি কিন্তু আমরা রেস্টুরেন্টে খাই। শহীদুল জহির তার গল্পে ডালপুরির বিবরণ দিয়েছেন।
আপনারা বিভূতিভূষণের বাংলা উপন্যাস ‘পথের পাঁচালী’ পড়ে ‘অপু-দুর্গা’র কাহিনী জানেন। অপু কিন্তু ছেলে। কিন্তু বিটিভির অভিনেত্রী অপু হলেন মহিলা। তবে তাঁর পুরো নাম: শিল্পী সরকার অপু।
সালমান রুশদী ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ লিখে এক প্রকার পলাতক। আবু রুশদ দেশেই আছেন। অথচ নামে কতো মিল। একজন মেহেদী কবিতা লিখেন। শফিক আলম মেহেদী। আরেকজন গজল শিল্পী মেহেদী হাসান, কতো বিখ্যাত। অন্যজন মেহেদী হাসান কিন্তু আবৃত্তিকারও।
কে যে শওকত আলী আর কে যে শওকত ওসমান, তা অনেকেই ঠাহর করতে পারেন না। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বে’নজীর ভুট্টো। বাংলাদেশের একজন বেনজীর আহমেদ। আরেকজন খুব কাছ দিয়ে গেছেন। ব’নজীর আহমদ। ধাক্কা লাগার উপক্রম।

আমাদের এক মহান বিজ্ঞানলেখকের নাম আব্দুল্লাহ আল মুতী। মুতী নামটাকে কেমন মনে হয়? শায়েস্তা খান। এমিল জোলা। ‘জোলা’ বলতে আমাদের গ্রামাঞ্চলে বোকাদের বুঝানো হতো। জোলা আর ভূত নিয়ে উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর গল্প রয়েছে।
আকিলা রাব্বী। কুমিল্লার এক পত্রিকা সম্পাদকের মেয়ের নাম। শাকিলা জাফর। সংগীতশিল্পী।
ফুলন দেবী। জীবনে অনেকবার ফুলে ফুঁসে দেখেয়েছেন। আরজ আলী মাতুব্বর। কী নতুন রকম নাম। ফটো সাংবাদিকের নাম রফিকুর রহমান রেকু। মীর আহম্মদ মীরু। ওসব নাম জননন্দিত। কিন্তু অবাক লাগে শুনলে। থমকে দাঁড়াতে হয়।
আমার এক শিক্ষক ছিলেন। গবেষক। আবদুল মান্নান সৈয়দ। এক কবির সঙ্গে ১৯৯২ সালে বাংলা একাডেমির একই মঞ্চে বসে কবিতা পাঠ করে গৌরববোধ করেছিলাম। তিনি সৈয়দ শামসুল হক। তিনি নামের ‘সৈয়দ’ শব্দটি আগেই নিয়ে এসেছেন।
এক কবি সৈয়দ হায়দার। ‘সৈয়দ’ বিশেষ নাম নয়। হায়দারও না। এক প্রকার নামের লেজটেজ। তার মূল নামই যেন নিখোঁজ। যেমন মোহাম্মদ উল্লাহ। আমার বর্তমান শ্বশুর । তারও মূল নামই নিখোঁজ। আরও সৈয়দ আছেন। হায়দারও। সৈয়দ হায়দার। দাউদ হায়দার। রশিদ হায়দার। মাকিদ হায়দার। জহির হায়দার। জাহিদ হায়দার। মোফাজ্জল হায়দার।
পত্রিকার নাম আনন্দবাজার পত্রিকা, বাংলাবাজার পত্রিকা...।
কুমিল্লাতে এখনও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নায়ক হিটলার, চার্চিল, রুজভেল্টরা বেঁচে আছেন। স্টালিনতো কবিই। রেজাউদ্দিন স্টালিন। এসব নামের তাৎপর্য কি সাধারণ মানুষ জানে?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ভাস্কর্য ‘অপরাজেয় বাংলা’র সামনে দাঁড়িয়ে ১৯৯১ সালে এক টোকাইকে বলেছিলাম, তুমি কি এই ভাস্কর্যটির নাম জানো? বললো, জানি। অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কী?
‘পাথ্থর দিয়া মানুষ বানাইছে আর কী, খাইয়া তো কোনো কাম পায় না, কী আর করবো? এই ছিলো তার উত্তর।
ফিরে এসে এ বিষয়ে একটি কবিতাও আমি লিখেছিলাম।
আমি পত্রিকায় লিখি জসীম উদ্দিন অসীম নামে। একদিন দেখলাম প্রত্যয় জসীমের লেখা। কুমিল্লায় ফিরে এসে দেখি, জসীম উদ্দিন চাষীও এখানে রয়েছেন। সাংবাদিক।
এমন আরও অনেক ঘটনা রয়েছে, সব অবশ্য স্মৃতিতেও নেই। কফি খাইনা বহুদিন। কফি খেলে হয়তো মনে থাকতো। কারণ কফি স্মৃতিশক্তি বাড়ায়।
চঞ্চল শাহরিয়ার। গল্প লিখেন। তার চঞ্চলতা আমার চেয়ে বেশি কী না, জানি না।
অনেকে তোতলায়ে কথা বলেও নাম বাঁকা করে ফেলে। আমার ছোটবেলায় গ্রামের প্রাইমারী স্কুলের সহপাঠি বুদারবাড়ির মতিনের ছেলে মোস্তফা যদি বলতো, স্যার আমাকে ছুটি দিয়ে দেন। শোনা যেত, স্যার আমারে ছুইদদা দেন। একে তো আঞ্চলিক ভাষা, তার উপর তখন কিছুদিনের জন্য সে ছিল তোতলা। পরে অবশ্য তার তোতলামিও দূর হয়েছিল।
এমন তোতলা অনেক নামও বদল হয়েছে। কিন্তু বার্মা হয়েছে মায়ানমার, এটা ইতিহাসসমৃদ্ধ হলো না। চীনের রাজধানী পিকিং হয়েছে বেইজিং। কেমন যেন আমাদের দেশের সাপ তাড়ানো প্রাণি বেজি বেজি শোনায়। DACCA হয়েছে DHAKA. আর এইতো কয়েকবছর আগেও CALLCUTTA হলো KOLKATA..আমার বিশ্বাস জ্যোতিষীর ওপেন চ্যালেঞ্জের মতো চ্যালেঞ্জ নিয়েই পৃথিবীর সব মানুষ এবং স্থানের পঙ্গু নামসমূহ এক সময় ঠিক হয়ে যাবে। এমনকি আমাদের জেলা COMILLAও হয়ে যাবে KUMILLA এবং সেদিনও দূরে নয়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.