নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বৃষ্টিতে আমার হাটঁতে ভাল লাগে কারন কেউ দেখেনা আমার চোখের জল।

আশিক হাসান

বৃষ্টিতে হাঁটতে ভাল লাগে আমার কারন কেউ দেখেনা দুচোখের জল ধুয়ে যায় বৃষ্টিধারায়

আশিক হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঘোড়ার মাথায় একটি শিং - তথাকথিত শিক্ষাব্যবস্থা

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ ভোর ৫:১৪



মনে আছে জীবনে প্রথমবার কেজি ওয়ানে ভর্তির জন্য ভয়ে ভয়ে ইন্টারভিউ দেয়ার জন্য লক্ষীবাজারের সেন্ট গ্রেগরী স্কুলে গিয়েছিলাম। স্কুলের ভেতরে প্রথমে ঢুকতেই এক বিশাল হলরুম , দুধারে দেয়ালের অনেক উপরে কিছু সেইন্টের মূর্তি দেখে বেশ ভয়ই পেয়েছিলাম। আর সবার মত আমার বাবা মায়ের স্বপ্ন ছিলো, বাবার মত আমিও এই স্কুলে ভর্তি হব। কিন্ত কে জানত ইন্টারভিউয়ের এক প্রশ্ন সবকিছু গড়বড় করে দিবে। আমাকে এক ফাদার প্রশ্ন করলেন বলত " ঘোড়ার মাথায় কয়টি শিং?" সাথে সাথে কিছুদিন আগে দেখা এক কার্টুনে রুপকথার সেই পন্খীরাজ ঘোড়ার কথা মনে পড়ে গেল যার মাথায় একটি শিং ছিল। আমি চটপট উত্তর দিলাম "একটি শিং" সাথে সাথে আর কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা না করে ফাদার আমাকে চলে যেতে বললেন। আমার আর সেন্ট গ্রেগরী স্কুলে ভর্তি হওয়া হয়নি।



সেই ছোট্ট ৬/৭ বছরের একটি ছেলে কেন যে বলল ঘোড়ার মাথায় একটি শিং থাকে সে উত্তর শোনার গরজ ফাদার সেই দিন করেননি। কিন্ত তার জায়গায় আজ আমি থাকলে হয়ত চেষ্টা করতাম জানার । আজকে যখন একটি শিশু লাল রং এর কুকুরের ছবি আঁকে তখন তাকে বারন করা হয় । তাকে বোঝানো হয় যে বাস্তবে কোন লাল রঙের কুকুর হয়না। আজ শিশুদের ক্লাশে ড্রইং টীচার বোর্ডে প্রজাপ্রতির ছবি এঁকে শিশুদের বলে সবাই বোর্ডেরআমার আঁকা প্রজাপ্রতি দেখে দেখে আঁকো। এর পরিবর্তে যদি সেই ড্রইং টীচার শিশুদের একটা প্রজাপ্রতির ছবি আঁকতে বললে তখন হয়ত একেকটি শিশু একেক রকমের প্রজাপ্রতি আকঁতো তার নিজের কল্পনার রঙে । অথচ সেই শিশুরা এখন কল্পনার দরজায় তালা ঝুলিয়ে আপাতত সবাই টীচারের আঁকা প্রজাপ্রতির নকল করে ছবি আকঁছে। আর এভাবেই আমরা আমাদের মনের অগোচরে আমাদের এই শিশুদের কোমল মনের উপর চাপিয়ে দেই যুক্তি আর বাস্তবতা। এখনি যদি তাকে যুক্তির মার প্যাঁচ দিয়ে বোঝানো হয় লাল রং এর কোন কুকুর হয়না । তাহলে সে হয়ত পরদিন থেকে কুকুরের ছবি আঁকা থামিয়ে দিতে পারে। তাদের স্বপ্ন দেখার রাস্তাগুলো একে একে বন্ধ করে দেই নিজেদের তৈরি কঠিন স্বপ্নগুলো দিয়ে। শিশুদের কল্পনার লাগাম টেনে ধরি সেগুলো আকাশে উড়ার আগেই। আর এভাবেই আমাদের শিশুরা বেড়ে উঠছে সীমিত কল্পনা আর সংকীর্ণ স্বপ্ন নিয়ে।



ছোটবেলায় আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে ঘুড়ি দেখতাম, পাখি দেখতাম, কখনোবা মেঘের আকৃতিতে মনের কল্পনার পরশ বুলিয়ে যা ইচ্ছে করত তাই দেখার চেষ্টা করতাম। আজ সেভাবে অনেক কম বাচ্চারই সময় হয় আকাশ কে দেখার । আর আকাশকে সে দেখবেই বা কিভাবে কারন এখন অট্টালিকার পাহাড়ে, একএকটি দ্বীপের মত ফ্ল্যাট বাড়ীর বারান্দা থেকেও আজকাল আর আকাশ দেখা যায়না। তাইতো আজ শিশুরা সময় কাটায় অবসরে ল্যাপটপে অথবা বাবা মার মোবাইলে চুরি করে গেম খেলে। পৃথিবীকে যারা বদলে দিয়েছে তাদের স্বপ্ন আর উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে তাদের অধিকাংশই কিন্ত স্কুলের মাপকাঠিতে ছিল দূর্বল ছাত্র। তাই বলে আমি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাকে খাটো করে দেখছিনা অবশ্যই এর দরকার আছে। কিন্ত মানুষ বানানোর কারিগরদের সাধারন প্রথা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। একটা মানুষের মন একেক জনের একেক রকম সেটা বুঝতে হবে এবং এটা এত সহজ বিষয় নয় যে কয়েকটা Don't আর Do's এর মধ্যে দিয়ে সবাইকে একই পদ্ধতিতে বের করে আনা যাবে। মানুষ যন্ত্র নয় এই বিষয়টা আমরা অভিভাবক এবং শিক্ষকরা যত দ্রুত বুঝবো জাতির জন্য ততই সেটা বেশী মংগল বয়ে আনবে। আমি দীর্ঘদিন প্রায় আড়াই বছর চাকুরীর অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে একটি তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে পড়া স্কুলের ম্যানেজমেন্টের সাথে জড়িয়ে ছিলাম । এবং সেখানে আমি এবং আমার ম্যানেজমেন্টের সভাপতির দিকনির্দেশনায় এবং স্কুলের বেশ কজন ভাল শিক্ষক মিলে স্কুলটিকে অনেকটা বদলে দিতে পেরেছিলাম। সেই আনন্দ এখনও অনুভব করি নিজের মাঝে ।

আমার এই কথাগুলা বলার উদ্দেশ্য একটাই । আসুন আমরা আমাদের শিশুদের কল্পনা করতে শেখাই , তাদের স্বপ্নগুলোকে কিভাবে রঙীন পেন্সিলের আচঁড়ে ভরে দিতে হয় সেটা শিখাই । একদিন যখন সময় হবে তারা যখন আমার আপনার মত বড় হবে সেদিন তারা নিজেরাই শিখে নেবে যে লাল রঙের কোন কুকুর হয়না। অথবা তারা ড্রইং টীচারের থেকেও সুন্দর একটা প্রজাপ্রতি আঁকা শিখে নিবে। প্রকৃতি, শিশু, রঙীন স্বপ্ন, কল্পনার অসীমতাকে নিয়ে আসুন আমরা সবাই একটা নতুন কিছু করার স্বপ্ন দেখি , আর সেই স্বপ্ন কে আসুন ছড়িয়ে দেই আমাদের কোমলমতি শিশুদের মনে ।

এরপরের পর্ব - ভালো স্কুল কাকে বলে?

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ ভোর ৬:৫৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপাতত উল্লেখযোগ্য কিছু ছিলো না লেখায়!

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৫

আশিক হাসান বলেছেন: ভূমিকাটি দিয়ে শুরু করলাম আপাতত, একটা এক্সপেরিমেন্ট করছি আপাতত নিজের অভিজ্ঞতালদ্ধ জ্ঞান দিয়ে , কারন একজন অভিভাবক হিসেবে আমি রীতিমত আতংকিত আমার বাচ্চাদের পড়াশুনা নিয়ে । আমি একটি স্কুলের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিলাম দীর্ঘদিন। খুব কাছ থেকে দেখার (সৌভাগ্য বা দূর্ভাগ্য যাই বলিনা কেন একে) অভিজ্ঞতা আছে কিভাবে কিছু তথাকথিত শিক্ষকরা দূর্নীতি করে একটি স্কুল তথা বাচ্চাদের ভবিষৎ নষ্ট করছে । কোথায় এবং কোন বিষয়গুলো একটি বিদ্যালয়কে সামগ্রিক ভাবে পরিবর্তন এনে দিতে পারে এবং আমাদের সময়ে আমরা পেরেছিলাম সেই অভিজ্ঞতালদ্ধ জ্ঞানটুকু দিয়ে।এখন চেষ্টা করছি সেই অভিজ্ঞতালদ্ধ জ্ঞানটুকু দিয়ে একটি সামগ্রিক বিষয়কে দাঁড় করাবার । হয়ত লেখায় ভুলভ্রান্তি থাকবে এবং আশা করছি পাঠকদের সমালোচনায় এবং আলোচনায় আরো ভালো অনেক বিষয় আমরা জানতে পারবো।

২| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:৫৯

বেনামি মানুষ বলেছেন: কে জি ওয়ানে ইন্টারভিউ! কেনো?



আপনার ওয়ানের কথা, তা ও কে জি ওয়ানের কথা মনে আছে! আঁতুর ঘরের কথা ও নিশ্চয় মনে আছে? সেদিনগুলোর কথা ও আমাদের বলবেন প্লিজ!

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:০০

আশিক হাসান বলেছেন: বেনামি মানুষ , আপনার কথাগুলো শুনে বেশ মজা পেলাম । তবে আমার কথা শুনে আপনার অবশ্যই আতুঁড় ঘরের কথা মনে পড়তেই পারে সেটা আমি দোষ হিসেবে দেখছিনা। তবে আপনার বেলায় জানিনা আমাদের অনেকের বেলায় যেটা হয়ে থাকে তা হল ছোটবেলার অনেক বিষয় থাকে যা কিনা আমাদের মা বাবা রা মনে রাখেন এবং সেটা প্রায় তারা বলে থাকেন , এবং এভাবেই ছোটবেলার কিছু কিছু স্মৃতি আমাদের মনে থেকে যায়। আর আতুঁর ঘরের ঘটনা আমি কেন আপনিও জিজ্ঞাসা করলে জেনে যাবেন আপনার বেলায় কি হয়েছিলো। কারন সেই ঘটনাগুলোও আমাদের মা রাও আমাদের অনেক সময় শুনিয়ে থাকেন।
কষ্ট করে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

৩| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ। সুন্দর লিখেছেন।
পরের পর্বের অপেক্ষায়।

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:০১

আশিক হাসান বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে সাথে থাকার জন্য।তবে আলোচনায় অংশ নিয়ে আপনার মতামত দিলে সেটা অন্যদেরও উপকারে আসবে।

৪| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:১০

মামদুদুর রহমান বলেছেন: ভাল লিখেছেন!

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:০১

আশিক হাসান বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে সাথে থাকার জন্য।তবে আলোচনায় অংশ নিয়ে আপনার মতামত দিলে সেটা অন্যদেরও উপকারে আসবে।

৫| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৩৯

আখেনাটেন বলেছেন: সুন্দর লেখা।

শিশুদের মনস্তত্ব বুঝার মতো শিক্ষক কি নিয়োগ দেওয়া হয়। অথবা নিয়োগকৃত শিক্ষককে কি শিশুকে কীভাবে পাঠদান করতে হয় তা প্রশিক্ষণ যথাযথভাবে দেওয়া হয়?

আমার মনে হয় এগুলোর উত্তর 'না' হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। ফলে শিশুরা সৃজনশীলতা বা কোনো কিছু সৃষ্টি করার অানন্দটুকু থেকে প্রথম থেকেই বঞ্চিত থাকে। অনেক অভিভাবকও নিজেদের বাচ্চাদের বকাঝকা করতে দেখা যায়। যখন দেখে নিজের বাচ্চা বাসাতে দুষ্টুমির ছলে কোনো এক্সপেরিমেন্ট চালাচ্ছে।

আমরা শিক্ষিত হচ্ছি ঠিকই তবে নিজের উদ্ভাবনী স্বত্তাটা লুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এর জন্যই এদেশে দিনে দিনে অাবিষ্কারকের সংখ্যা কমতেই আছে। সবাই ছোট, মাঝারী, বড় আকারের কেরানী হিসেবে টিকে থাকছি।


২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:০৯

আশিক হাসান বলেছেন: আপনার কথাগুলো পড়ে ভাল লাগলো , আসলে সামগ্রিকভাবে আমাদের অভিভাবক এবং শিক্ষক এই দুই শ্রেনীকে তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রশিক্ষন নিতে হবে কিভাবে আমরা আমাদের বাচ্চাদের গড়বো। সামাজিক জোয়ার বা বিপ্লব একে যে নামেই অভিহিত করিনা কেন , তার সূচনা সবসময় সাধারন মানুষদের মধ্যে থেকে সন্চালিত হয়েছে। আজ একের পর এক এক্সপেরিমেন্টের শিকার হয়ে আমাদের বাচ্চাগুলোর শিক্ষার বারোটা বেজে চলেছে। আমার খুব কষ্ট হয় যখন দেখি আমার কষ্টের রোজগারের টাকা জলের মধ্য শ্রাদ্ধ হচ্ছে এই দূর্নীতিগ্রস্থ শিক্ষা ব্যবস্থার কারনে। তাই যতটুকু পারছি সময়ের ফাঁকে ফাঁকে নিজের বাচ্চাটার প্রতি চেষ্টা করছি এই রাহুর দশা থেকে বাচাঁনোর কিন্ত কাজটি আসলেই খুব কঠিন। তবে আমি হাল ছাড়ছিনা। তবে আমি দেখেছি একটি স্কুলের ম্যানেজমেন্ট বডি যদি ঠিক থাকে এবং অভিভাবকরা যদি এগিয়ে আসেন তাহলে অনেক কিছুই করা সম্ভব । এবং সেটা আমরা অন্তত আমাদের সময় পেরেছিলাম।

৬| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:৪৫

বিজন রয় বলেছেন: বিদায় ২০১৭, স্বাগতম ২০১৮,......... নতুনের শুভেচ্ছা রইল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.