নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ৩০ বছর চাকরি করেছি; অবসর নিয়েছি কর্নেল পদবীতে ২০০৬ সালে। এরপর এযাবৎ প্রিন্সিপাল হিসেবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে; এখন অর্কিড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকা-তে। ‘স্কুল সাইকোলোজি’ নিয়েও কাজ করছি।

আশরাফ আল দীন

কবি, শিক্ষাবিদ ও প্যারেন্টিং এক্সপার্ট

আশরাফ আল দীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আল্লাহর গজব কি কাউকে ছেড়ে দেয়?

০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৫:০৯

#করোনাভাইরাস (#কোভিড-১৯) #মহামারী আকারে দেখা দেয়ার পর থেকে অনেককেই বলতে শোনা যায়, “এটা আল্লাহর #গজব হিসেবে এসেছে এবং পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় মুসলমানদের উপর যারা অত্যাচার করছে তাদের শাস্তি দেয়ার জন্যই এই গজব নাযিল হয়েছে।” মজলুমের হৃদয়ের সান্তনার জন্য এই কথাগুলো অত্যন্ত ফলদায়ক বৈ কি! যারা নানা ভাবে দিনের পর দিন জুলুম-অত্যাচারের শিকার হয়েছে, মুখ বুঁজে সহ্য করেছে নিষ্পেষণ যন্ত্রণা, অসহ্য বেদনা নিয়ে শেষ ভরসাস্থল আল্লাহর সাহায্য চেয়ে হাত তুলেছে আসমানের দিকে, কষ্টে জর্জরিত সমগ্র অস্থিত্ব দিয়ে ফরিয়াদ করেছেঃ ‘হে আল্লাহ! এই অত্যাচারীদের তুমি ধ্বংস করে দাও!’- তাদের কাছে এই সান্তনার গুরুত্ব অপরিসীম।

বুদ্ধিমান প্রাণী ‘মানুষে’র সকল প্রকার বুদ্ধি ও সক্ষমতাকে পরাজিত করে যে সকল মানবিক বিপর্যয়পূর্ণ ঘটনাগুলো পৃথিবীতে ঘটে, সে সব বিষয়গুলোকে, যেমনঃ মহামারি, বন্যা, খরা, অতি-বৃষ্টি, অনাবৃষ্টি ইত্যাদিকে, আল্লাহর গজব হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। এটা স্রষ্টা হিসেবে আল্লাহর বড়ত্ব (বা বলা যায়, ক্যারিশমা) যে, তিনি স্বাভাবিকভাবেই অহঙ্কারী ও গর্বিত মানুষগুলোকে গজব দেন অত্যন্ত তুচ্ছ কিছু উপাদান বা জীব দিয়ে! কিন্তু কী কারণে #গজব এলো এবং যে বিপর্যয়টা এসেছে তা আসলেই গজব কি-না, সেটা একমাত্র আল্লাহই ভাল জানেন। নিশ্চিত হয়ে কিছু জানার উপায় আমাদের নেই, কারণ নবী-রসুলের যুগ শেষ হয়ে গেছে। তাই আমাদের এগোতে হবে সতর্কতার সাথে।

সাম্প্রতিক পৃথিবীতে #করোনাভাইরাস (#কোভিড-১৯) মহামারি আকারে দেখা দিয়েছে। আধুনিক বিজ্ঞানে প্রাগ্রসর রাষ্ট্রগুলোও ‘কোভিড-১৯’ নামক মহামারির কাছে পরাজিত হয়েছে এবং বিশাল সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছে ও অনেক প্রাণহানি ইতোমধ্যে ঘটেছে। আরো বিপুল সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হওয়ার ও অনেকেই নিহত হওয়ার আশঙ্কা মাথায় নিয়ে, এখন তারা এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ও প্রতিষেধক আবিস্কারের প্রণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই #মহামারির ক্রমঃবর্ধমানতার মুখে বাংলাদেশ বা ভারতের মতো জনবহুল, দরিদ্র ও ‘উপায়হীন’ রাষ্ট্রগুলোর ভয়াবহ ভবিষ্যতের কথা এখন প্রায় ‘নিশ্চয়তা’র পর্যায়ে চলে এসেছে!

অনেকে বলছেন, এটা আল্লাহর গজব। কথা হলো, এতে আত্মতৃপ্তির কোন উপায় আছে কি-না? বিশেষতঃ যারা অত্যাচারিত অর্থাৎ যারা মুসলমান তারা কি এই মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্থ হবে না? এই গজব শুধুমাত্র চীনে যারা মুসলমানদের উপর দীর্ঘদিন ধরে অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে, কাশ্মীরে এবং ভারতের অন্যত্র যারা মুসলমানদের অত্যাচার করেছে ও করছে বা প্যালেস্টাইনে যারা অত্যন্ত নিষ্ঠুর ও অমানবিকভাবে মুসলমানদের নির্যাতন করছে শুধু তাদেরকেই ক্ষতিগ্রস্থ করবে, এই ধরনের নিশ্চয়তা কি আছে? না, নেই। মহামারি যখন আসে তা বন্যার মতো সকলকেই, কম বা বেশী, ভাসিয়ে নিয়ে যায় এবং কষ্ট দেয়। এটাই আল্লাহর নিয়ম।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, হযরত আবু ওবায়দা বিন যাররাহ রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু ছিলেন আশারায়ে মুবাশশারা অর্থাৎ পৃথিবীতেই বেহেশতের সুসংবাদ প্রাপ্ত দশ জনের মধ্যে একজন। অথচ তিনি সিরিয়া বিজয়ের কিছুকাল পর সেখানে মহামারী আকারে দেখা দেওয়া #প্লেগ রোগে আক্রান্ত হয়ে সিরিয়ার জাবিয়া এলাকায় ইন্তেকাল করেছিলেন, তখন তার বয়স হয়েছিল ৫৮ বছর। তাঁর সাথে ছিলেন প্রখ্যাত জলিল-কদর সাহাবী হযরত মুআজ বিন জাবাল রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু। সেবারের সেই মহামারীতে আক্রান্ত হয়ে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনেক ক'জন সাহাবীসহ হাজার হাজার মুসলমান প্রাণ হারিয়েছিলেন। তাঁদের প্রায় সকলেই ছিলেন আল্লাহর পথের সৈনিক! বাস্তবতা হচ্ছে, আল্লাহর গজব হিসেবে যে মহামারি (#প্লেগ রোগ) সে সময়ে সেখানে নেমে এসেছিল তা থেকে রসুলের (দঃ) সাহাবীদের মতো কামিল ইনসানরাও রেহাই পান নি!

এর মধ্যে কয়েকজন সাহাবী ছিলেন আল্লাহ রাসুলের(দঃ) অত্যন্ত প্রিয় পাত্র। তাঁদের যোগ্যতা, তাঁদের গুরুত্ব এতটাই বেশি ছিল যে, যে কেউ আবেগের বসে বলতেই পারেঃ তাঁদেরকে আল্লাহ তো বাঁচাতেই পারতেন! কিন্তু সেটা আল্লাহর সুন্নত নয়। হযরত আবু উবাইদার মৃত্যুর পর নেতৃত্বের দায়িত্ব এলো হযরত মুয়াজ বিন জাবালের উপর। তিনি তখন মাত্র ৩৩ বছরের টগবগে যুবক কিন্তু তিনিও কয়েকদিনের মধ্যেই #প্লেগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারালেন, তাঁর স্ত্রী দুই কন্যা এবং দুই পুত্র সহ, সমগ্র পরিবার। ইন্তেকাল করলেন আল্লাহর রাসূলের (দঃ) অত্যন্ত প্রিয় পাত্র আল ফজল বিন আব্বাস (রাঃ)। সেই প্লেগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করলেন প্রখ্যাত যোদ্ধা ও সাহাবী ইয়াজিদ বিন আবু সুফিয়ান (রাঃ) এবং হযরত সোহাইল ইবনু আমর (রাঃ)। মৃত্যুবরণ করেছিলেন হযরত আবু মালেক আশয়ারীর (রাঃ) মতো প্রখ্যাত সাহাবী। হযরত মুয়াজের মৃত্যুর পর নেতৃত্ব আসে হযরত আমর ইবনুল আ'স-এর উপর। তিনি সমগ্র মুসলিম বাহিনীকে ওই এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে গেলেন অপেক্ষাকৃত উচ্চ ভূমির পার্বত্য অঞ্চলের দিকে এবং বিভিন্ন ছোট ছোট দলে বিভক্ত করে তাদেরকে তাঁবু খাটাতে নির্দেশ দেন এবং বলে দেন তারা যেন একদল আরেকদলের সাথে দেখা সাক্ষাৎ বা মেলামেশা না করে। এরপরে, আল্লাহর রহমতে, সেবার আর কেউ প্লেগ রোগে মৃত্যুবরণ করে নি। এই যদি হয় মহামারীর মুখোমুখি হয়ে আল্লাহর রাসূলের(দঃ) সাহাবীদের অবস্থা, আমরা কিভাবে দাবি করতে পারি যে আমাদের পরহেজগারীর জন্য অথবা খোদাভীরুতার জন্য অথবা অন্য যে কোন গুণের জন্য আল্লাহ আমাদেরকে মহামারী থেকে রক্ষা করবেন? আমরা কেবল আল্লাহর কাছে রহমত ভিক্ষা করতে পারি; কোন কিছু দাবি করাটা হবে নিতান্ত বোকামি! এটা ইসলামের সিলসিলা নয়, এবং ইসলামের সঠিক ধারণা না থাকার ফসল।

তবে, প্রশান্তির বিষয় হচ্ছে আল্লাহর গজব যাদের জন্য শাস্তি হিসেবে নেমে আসে তাদের জন্য তো শাস্তি, কিন্তু গজব হিসেবে সকলের উপর আপতিত হওয়া এ ধরনের মহামারী ইত্যাদি ঈমানদার মুসলমানের জন্য শাহাদাতের প্রতিশ্রুতি। পবিত্র হাদীস জানাচ্ছে যে, যে সকল ঈমানদারগণ মহামারীতে প্রাণ হারাবেন তাঁদেরকে আল্লাহ্ জান্নাত দিয়ে পুরস্কৃত করবেন। এটাই আমাদেরকে ঈমানদার হিসেবে দৃঢ়পদ থাকার জন্য উৎসাহ যোগাবে।

এইসব মহামারীর আকার ধারণ করা রোগ মারাত্মকভাবে সংক্রামক ও ছোঁয়াচে বলেই এ থেকে বেঁচে থাকার সুস্পষ্ট নির্দেশ ছিল আল্লাহর রাসূলের(দঃ) পক্ষ থেকে। তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন, যারা এসব রোগাক্রান্ত অঞ্চলে আছে তারা যেন অন্য দিকে পালিয়ে না যায় বা ওই স্থান ত্যাগ না করে। আবার, যারা ওই এলাকার বাইরে আছে তারা যেন ওই এলাকায় প্রবেশ না করে। একারণেই হযরত ওমর (রাঃ) সিরিয়ায় প্রবেশ না করে মদীনায় ফিরে গিয়েছিলেন। এই আদেশের উদ্দেশ্য সুস্পষ্টঃ মহামারীর বিস্তার রোধ করা; অথবা যেটাকে আজকাল বলা হচ্ছে "সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং" সেটা রক্ষা করা, জনসমাগমে যোগ না দেওয়া, নিজেকে যতটা সম্ভব একা ও আলাদা রাখা।
তাই, এটা তো আল্লাহর রাসূলে(দঃ)র সুস্পষ্ট নির্দেশ যে মহামারী দেখা দিলে সকলকেই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। আল্লাহর রাসূলের সাহাবীরাও এই নির্দেশের আওতার বাইরে ছিলেন না। অথচ আজকাল বাংলাদেশের কিছু আলেমকে বলতে শোনা যাচ্ছে যে, "এই গজব এসেছে চীনবাসী এবং ভারতবাসীদের জন্য এবং মুসলমানদের, বিশেষ করে বাংলাদেশের মুসলমানদের, এতে কোন ক্ষতি হবে না।" এটা হাদিস বিরোধী কথা, সুষ্ঠু জ্ঞান এবং যুক্তি বিরোধী কথা, অজ্ঞতাপূর্ণ কথা!

তাই মুসলমান-অমুসলমান নির্বিশেষে প্রত্যেক মানুষের জন্য এই মুহূর্তের কাজ হলো, “করোণা ভাইরাস” নামে যে ছোয়াচে রোগ মহামারী আকারে এখন দুনিয়াব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে তাকে কিভাবে প্রতিহত করা যায় সেটার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

এই প্রতিরক্ষামূলক কাজের সর্বপ্রথম কার্যকরী পদক্ষেপ হলোঃ প্রত্যেককেই জনসমাগমস্থল এড়িয়ে চলতে হবে। ‘জনসমাগমস্থল’ বলতে মসজিদে নামাজের জন্য জমায়েত হওয়া, বিয়ে বাড়িতে খানাপিনায় অংশ নেয়া, এমনকি আল্লাহর কাছে গজব থেকে পানাহ চেয়ে মোনাজাতের জন্য একত্রিত হওয়া যেমন বুঝাবে তেমনি করে হাটবাজারে যাওয়া, ওয়াজ মাহফিল করা, স্কুল কলেজে ছাত্র ছাত্রীদের ক্লাস নেওয়া, অফিস করা, বন্ধু বান্ধব মিলে আড্ডা দেওয়া ইত্যাদিকেও বুঝাবে। গণমানুষের একত্রিত হওয়ার সবকিছুই এর অন্তর্ভুক্ত এবং এই সবগুলোকেই পরিত্যাগ করতে হবে। কারণ, এই মহামারীকে জ্ঞাত বা অজ্ঞাতসারে সংক্রমিত হয়ে অন্যের মৃত্যুর কারণ হতে দেয়া যাবে না। বিশেষতঃ করোণা ভাইরাসের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে, একজন লোক নিজে অসুস্থ হয়ে পড়ার অনেক আগে থেকেই, নিজের অজান্তেই, এই ভাইরাস বহন করে অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারে! বিশেষতঃ জামাতে নামাজ আদায় করার সময় ‘গায়ে গায়ে লেগে দাঁড়ানো’র সুযোগে ভাইরাস যে সংক্রমিত হবে না তার নিশ্চয়তা দেয়া কঠিন। সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য আপাততঃ জামাতে নামাজ স্থগিত রাখাকে কেউ যদি ঈমান-বিরোধী আখ্যা দেন তাতে আমার বলার কিছু নেই। অথচ #দূর্যোগ, যুদ্ধ-বিগ্রহ ও বিপদের সময় রসুল (দঃ) নিজেই মসজিদে জামাতে নামাজ আদায়কে স্থগিত রেখেছেন।

করোণা ভাইরাসের কারণেই বর্তমানে সমগ্র বিশ্বের দেশে দেশে স্কুল-কলেজ অফিস-আদালত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। হাটবাজারে নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ যাচ্ছে না। গণপরিবহনে ভ্রমণ করা হচ্ছে না। অনেক মুসলিম রাষ্ট্রে জুমা এবং ওয়াক্তের নামাজের জামাত আপাতঃ-বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এই সবই করা হয়েছে মহামারীকে সংক্রমিত হতে না দেওয়ার জন্য। এখন কেউ যদি নামাজের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতে গিয়ে এই আইন অমান্য করেন, এবং এই নিয়ম ভঙ্গ করেন তিনি কি ইসলামের নবীর(দঃ) নির্দেশিত পথ থেকে দূরে সরে গেলেন না?

আমাদের কোন কোন আলেমকে আবেগের সাথে বলতে শোনা যাচ্ছে যে, "আল্লাহ গজব দিয়েছেন মানুষকে মসজিদমুখী করার জন্য। সুতরাং মসজিদে যেতে না দেয়াটা সঠিক হবে না।" এভাবে নিজের মন মতো ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষের আবেগকে সম্বল করে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা যাবে না, কারণ তা হবে সুন্নাহ বিরোধী কাজ।

জানতে পারলাম, সম্প্রতি নোয়াখালীতে একটি বিশাল জমায়েত করে আল্লাহর কাছে গজব-মুক্তির প্রার্থনা করা হয়েছে! অথচ এর মধ্যেই সরকারের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে যে কোন রকম গণজমায়েত করা যাবে না। কারণ এর মধ্যেই বিদেশ ফেরত অনেক প্রবাসী বাঙালির কারণে এই রোগ দ্রুত সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ! আবার খবর পেলাম, যদিও আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে এই মহামারী রোগের বিস্তার ঠেকাতে যে কোন ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, সেখানে প্রবাসী মুসলমানদের তাবলীগ জামাতের একটি দল শহরের বাইরে একটি এলাকায় সবাইকে আহ্বান করেছে একত্রিত হয়ে জুমার নামাজ আদায় করার জন্য! এটা কেমন ধরনের ইসলাম আমি বুঝতে পারলাম না! কয়েকদিন আগে এই ধরনের একটি তাবলীগী সমাবেশ থেকে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে মালয়েশিয়াতে এবং পরে দেখা গেছে সেই বিশাল জমায়েতের, একজন মাত্র রোগীর (ব্রুণেই থেকে আগত) কারণেই পরে, শতাধিক লোক এই মহামারীতে আক্রান্ত হয়েছে। হাজার হাজার অংশগ্রহণকারীর মধ্যে আরো কতো জন যে করোণার #জীবানু বহন করে জনগণের মধ্যে ও পরিবারের কাছে ফিরে গেছে সে হিসাব কে দেবে!

প্রশ্নটা যখন দেশব্যাপী, বরং বিশ্বব্যাপী, জীবনঘাতি মহামারির বিস্তার রোধের তখন কেউ ‘বুঝতে পারছে না’ বা ‘বুঝতে চাইছে না’ বলে ‘তাকে মৃত্যুর ঝুঁকি নিতে’ বা ‘অন্যের মৃত্যুর ঝুঁকি সৃষ্টি করতে’ দেয়া যাবে না। বাঁধা দিতে হবে কঠোরভাবে। কারণ তা হবে আত্মহত্যা আর অন্যকে হত্যা করার সমান অপরাধ! ইসলামে আত্মহত্যা ও মানুষ-হত্যাকে হারাম করা হয়েছে। আমরা নিজের ও অন্যের জন্য মৃত্যুর ঝুঁকি সষ্টি করে, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় নিয়ম ভঙ্গ করে ভুলভাবে ইসলামকে উপস্থাপন করতে পারি না। নবীর (দঃ) শেখানো ইসলামেও এটা গ্রহণযোগ্য নয়।

#গজব থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে, দ্বীনকে আঁকড়ে ধরতে হবে সকলে মিলে একসাথে এবং অন্যদের কাছে সঠিকভাবে ইসলামকে তুলে ধরতে হবে। আমাদেরকে এব্যাপারে সাবধান হতে হবে, সচেতন হতে হবে। আমাদের ভুলের জন্য অজ্ঞতার জন্য আমরা যেন গজবের বন্যায় ভেসে না যাই!

মিরপুর, ঢাকা ২১.০৩.২০২০

আশরাফ আল দীন ।। শিক্ষাবিদ, গবেষক, কবি ও অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৫:২০

স্প্যানকড বলেছেন: এহন কার নেতাদের ছেড়ে দেয় মুরুব্বি!ভালো থাকবেন। সেফ থাকবেন ঘরে থাকবেন।

১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৪৭

আশরাফ আল দীন বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৫:৩২

চাঁদগাজী বলেছেন:


মনে হয়, সরকারী চাকুরী করছেন, বা আগে করেছেন! একদিন ৮ ঘন্টা কাজ করে দেখেন, আপনার ভাবনাশক্তি বাড়বে।

১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৫৪

আশরাফ আল দীন বলেছেন: একথা কেন বল্লেন বুঝলাম না! আমার কোন কথায় কি আপনি আহত হয়েছেন?
পরিচয় থাকলে একথা বলতেন না। ত্রিশ বছর তো করেছি দিনমানের চাকরি, সেখানে আট ঘন্টা একেবারেই গৌণ! বেসামরিক জীবনেও আমার কাজ সম্পর্কে যারা জানে তারা আপনার কথা শুনে নিশ্চিত কষ্ট পাবে।
তবু, মন্তব্য করার জন্যে ধন্যবাদ।

৩| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৯

পলাতক মুর্গ বলেছেন: নমরুদের বাহিনীর জন্য ছিল মশা, আবরাহার বাহিনীর জন্য আবাবিল পাখি, আর এখনকার অবাধ্য মানুষের জন্য ভাইরাস। বিজ্ঞান নিয়ে যারা বড়াই করত তাদের আজ বড়ই দুর্দিন। মার্কিন বাহিনী তো মাস্ক ছিনতাই আরম্ভ করেছে। প্যাথেটিক।

১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:১১

আশরাফ আল দীন বলেছেন: আর, আমি বলছি, মহামারি বাধ্য-অবাধ্য কাউকে চেনে না। অবাধ্যদের জন্য সেটা গজব, ছিক আছে। এখন বাধ্যরা কী করবে? আমি বলেছি, হাত-পা ছেড়ে বসে থাকলে হবে না! সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে আত্মরক্ষার জন্যে। তারপরও যদি মৃত্যু হয় আল্লাহর উপর সন্তুষ্ট থাকতে হবে এবং জান্নাতের আশা করবে। এমন কোন বুজুর্গ নেই যিনি বলতে পারবেন, মহামারি তাঁকে স্পর্শ করবে না।
এটাই ইসলামের সঠিক ধারণা বলে আমি শিখেছি।
যদি ভুল বলে থাকি শুদ্ধ করে দিন, নইলে তো আমিও ক্ষতিগ্রস্থ হবো!
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৪| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনার মাঝে অপধারণা কাজ করছে।

১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৫৮

আশরাফ আল দীন বলেছেন: খুব ক্ষেপেছেন, মনে হচ্ছে!
একটু খোলাসা করুন! তা না হলে অনেক পাঠকও ভুল শিক্ষা নিতে পারে! তখোন সে দায় হবে আপনার।

৫| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৬

পলাতক মুর্গ বলেছেন: এইজন্যই গাজী সাহেবকে লোকজন দেখতে পারে না। কোন গঠনমূলক আলোচনা না করেই নেগেটিভ কমেন্ট করা আরম্ভ করেছে।

৬| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৮

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমাদের সমাজের আলেমরা হাওয়া বুঝে চলে। যখন তাদের দিক নির্দেশনা দেয়ার কথা তখন তারা চালাকি করে চুপ করে আছে। কেউ দায়িত্ব নিয়ে কিছু বলছে না। সরকার এখন মসজিদে নামাজ সাধারণ মুসুল্লিদের জন্য নিষেধ করলো। অমনি আলেমরা তা সমর্থন দিলেন। এটাতো তাদের দায়িত্ব ছিল আরও আগেই ঘোষণা দিয়ে বন্ধ করার। ধর্মীয় অনুভুতির জন্য সরকারও অনেক দেরীতে সিদ্ধান্ত নিলো কারণ তারা আলেমদের কাছ থেকে কোনও সহযোগিতা পাচ্ছিলেন না।

১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:১৩

আশরাফ আল দীন বলেছেন: ঠিক বলেছেন।

৭| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: যে আল্লাহ এরকম গজব দেয়, সেই আল্লাহ আমার দরকার নাই।

১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:৩৭

আশরাফ আল দীন বলেছেন: আমি আস্তিক মানুষ। এধরণের নাস্তিকতাপূর্ণ মন্তব্যের সাথে আমি সম্পৃক্ত হতে চাই না।
বহু বছর আগে আমাদের ছাত্র জীবনে দেখেছি, নাস্তিকতাপূর্ণ কথাবার্তা বলাটা ছিল “স্মার্টনেস”! এখন তো জ্ঞানে-বুদ্ধিতে প্রজন্ম অনেকদূর এগিয়ে গেছে, আমার ধারণা ছিল!
করোনা ভাইরাসের এমন ওলট-পালট অবস্থাতেও আল্লাহর ক্ষমতার দাপট আন্দাজ করতে পারলেন না!
এটা যদি আল্লাহর সাথে আপনার অভিমানের অভিব্যক্তি হয় তাহলে তা একান্তই আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। ওটাকে জন-সমক্ষে প্রকাশ না করলেই ভালো হতো।
দোয়া করি, ভালো থাকুন।

৮| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৩৫

সোনালি কাবিন বলেছেন: সোনা ব্লগ বন্ধ :( :(

৯| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:৩০

বিড়ি বলেছেন: করোনার ভ্যাকসিন এর বিষয়ে ইসলামে কিছু নেই?

১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:৪৩

আশরাফ আল দীন বলেছেন: আল্লাহ রোগের সাথে প্রতিকারও দেন, কিন্তু তা বান্দাহকেই গবেষণা করে খুঁজে বের করতে হবে! ইসলামে চিকিৎসাকে উৎসাহিত করা হয়েছে বলেই আমি জানি।

১০| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:১২

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: জ্ঞানার্জন ফরজ করা হয়েছে। অর্থাৎ মূর্খ থাকা যাবে না। জ্ঞানের মাধ্যমে করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে হবে। অসুখ হলে চিকিৎসা করাতে হবে সাথে আল্লাহর উপর ভরসা করতে হবে।

১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:৪৩

আশরাফ আল দীন বলেছেন: সুন্দর বলেছেন। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.