নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একা আমি

ধূসর সন্ধ্যা

ধূসর সন্ধ্যা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইলিশ-কচুর ঝোল

২৯ শে জুন, ২০২৫ দুপুর ১২:১২

"কচু বিশেষত ওল কচুর বাম্পার ফলন হয়েছিলো আকালের বছর চুয়াত্তরে" বলতে বলতে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন আব্বু। "জানিস! ওল কচু খেয়ে কত লোক জীবন বাঁচিয়েছে!"
"প্রথমে দেখা দিলো লবণের অভাব। লবণচোরা আমু সব লবণ স্টক করলে ২৫ পয়সা কেজি লবণের দাম হয়ে যায় ৫০ টা কেজি।" আব্বু বলতে থাকেন। "তারপরে চালের অভাব, কাপড়ের অভাব শুরু হয়। মানুষ মিষ্টি আলু কুচিকুচি করে সিদ্ধ করে ভাতের মত করে খেতো। আর এই সুযোগে ওল কচুর বাম্পার ফলন শুরু হয়।"
"তুমি কবের কথা বলছো আব্বু?" আমি জিজ্ঞাসা করলে আব্বু বলেন, "১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের কথা বলছি রে বাবা।" "তখন না আমরা স্বাধীন দেশ পেয়েছি!" আমি অবাক হয়ে প্রশ্ন করি। আব্বু বলেন, "পরাধীন পাকিস্থান আমলে কখনোই ভাতের কষ্ট করি নাই।"
উনি আবার প্রসংগে ফিরেন। বলেন, "ওল কচুর বাগান এতো এতো বড় হয়েছিলো যে, রাতের বেলা যখন মুজিব বাহিনী ডাকাতি করতে আসতো। সবাই বিশেষত মেয়েরা সব সেই ওল কচুর বাগানে গিয়ে লুকাতো।"
"মুজিব বাহিনী না মুক্তিযুদ্ধ করেছে?" আমি আব্বুকে প্রশ্ন করলে উত্তর দেন- "ছোট ছিলাম অতো কিছু জানি না। শুধু মনে আছে আকালের বছর ঘরে কারো একমুটো চালও ছিলো না। কিন্তু রাতের বেলায় ঠিকই মুজিব বাহিনী ডাকাতি করতে চলে আসতো।"
"মেয়েদের তুলে নিতো। অত্যাচার করে মেরে কচু ক্ষেতে ফেলে রেখে যেতো। কতো লাশ যে পরে থাকতো কচু বাগানে। যুবক, বৃদ্ধ, যুবতি।
কচু খেতে গরুচুরি করে নিয়ে লুকিয়ে রাখতো। চোলাই মদ বানাতো। একদিন একটা লাল শাড়িপরা মেয়ের লাশ দেখে কান্নায় ভেংগে পরেছিলাম। নববিবাহিতা!"
"না খেয়ে অনেক মানুষ মারা গিয়েছিলো নিশ্চয়?" আমি আব্বুকে প্রশ্ন করলে আব্বু উত্তর দিলো, "আরও মারা যেতো। কিন্তু ওল কচু খেয়ে বেচে ছিলো তারা।"
গরীবরা তো ওলকচু খেতো। বড়লোকরা কী খেতো?
আব্বু উত্তর দিলেন, "ইলিশের আর ওল কচুর ঝোল!"


আসল লেখার লিংক

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে জুন, ২০২৫ দুপুর ২:১৮

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: ইলিশ ও কচুর কম্বিনেশন খুবই চমৎকার।

২| ২৯ শে জুন, ২০২৫ বিকাল ৩:৩১

কাঁউটাল বলেছেন: মুজিব বাহিনীর ফাউন্ডিং ফাদারদের একজন ছিল সিরাজুল আলম খান।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.