নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মিম্বারের আহবান

আবু সাঈদ মুহাম্মদ নু’মান

আবু সাঈদ মুহাম্মদ নু’মান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইবাদাত ও সময় : কিছু কথা, কিছু জিজ্ঞাসা

১৬ ই মে, ২০১৮ রাত ২:৪৯


ইবাদাতের সাথে সময়ের সম্পর্ক খুবই নিবিড়। সময়কে বাদ দিয়ে ইবাদাত করাই যায় না। যে কোন ইবাদাত আপনি সম্পাদন করবেন আপনাকে তা সময়ের মধ্যেই করতে হবে। ইবাদাতের ক্ষেত্রে যদি সময়ের প্রতি লক্ষ্য রাখা না হয় তবে ইবাদাত পণ্ড হয়ে যেতে পারে। ইবাদাতের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল নামায। কিন্তু সূর্য উদয়ের মুহূর্তে যদি আদায় করেন, তবে তার কোন মূল্য নেই। নামাযের পর গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত হল রোযা। যার প্রতিদান আল্লাহ নিজ হাতে দিবেন বলে হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু কেউ যদি এই রোযাটা ঈদের দিনও রাখে তবে আপনি তাকে কি বলবেন? তার এই রোযার বিনিময়ে তিনি কি পরিমাণ সওয়াব পাবেন? না, তিনি কোন সওয়াব তো পাবেনই না, বরং তিনি গুনাহগার হবেন। এত মূল্যবান রোযাও সময়ের কারনে গুনাহের কারণ হয়ে গেল।
তাই ইবাদাতের ক্ষেত্রে সময়ের প্রতি খেয়াল রাখা অতীব জরুরী।
সময়ের পরিবর্তনে ইবাদাতের মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। প্রথম রাতের ইবাদাতের তুলনায় শেষ রাতের ইবাদাতের মর্যাদা বেশী। অন্যান্য দিনের তুলনায় শুক্রবারের ইবাদাতের মর্যাদা বেশী। অন্যান্য মাসের তুলনায় রমজানের ইবাদাতের মর্যাদা বেশী। রমজানের অন্যান্য রাতের তুলনায় লাইলাতুল কদরের ইবাদাতের মর্যাদা বেশী। অর্থাৎ একই ইবাদাতে সময়ের ব্যবধানে মর্যাদাগত তারতম্য এসে যায়। এ জন্য ইবাদাতের ক্ষেত্রে সময়ের প্রতি খেয়াল রাখা আবশ্যক। সময়ের কারণে সামান্য ইবাদাতে যেমন অনেক নেকী লাভের আশা থাকে, তেমনি সময়ের কারণেও অনেক দামী ইবাদাত বাতিল হয়ে যেতে পারে।
রমজানে অনেক ব্যস্ত থাকবেন, এই বাহানায় যদি কেউ শাবান মাসেই এডভান্স রমজানের রোযা আদায় করে নেয়, তবে তাতে কি তার রমজানের রোযার ফরজ আদায় হবে? হবে না। কারণ ফরজ আদায় হওয়াটা রমজানের সাথে সংশ্লিষ্ট। আবার তিনি যদি রমজানে রোযা না রেখে শাউয়াল মাসে রাখেন, তবে তাতে হয়ত তার দায়মুক্তি হবে কিন্তু রমজানের ফযিলত পাওয়া যাবেনা।
রমজানের রোজার ক্ষেত্রে যদি কথাটা বুঝে আসে তবে আমাদের সালাফি/ (দাবীদার) আহলে হাদিস/গাইরে মুকাল্লিদ/লা মাযহাবি ভাইরা যে দুই নামায একত্রে পড়েন? তার কি হবে? সফরে বের হবেন বা সফরে আছেন, ব্যাস, তারা পরের ওয়াক্তের নামায আগের ওয়াক্তের সাথে মিলিয়ে আদায় করে নেন? যে নামাযটি তার উপর ফরজই হল না। তার জিম্মায় তখনও আসলনা সেটি আদায় করে নেয়া কতটুকু যুক্তিযুক্ত? কুরআনুল কারিম তো বলছে নামায সময়ের সাথে সংশ্লিষ্ট। সময় আসলে নামায ফরজ হয়। সময়ের আগে কারো উপর নামায ফরজ হয় না। সময় আসার আগে তো তিনি শরীয়তের মুকাল্লাফ ই নন। তবে সে সময়ের আদায় কিভাবে পরবর্তী সময়ের প্রতিবিধান করবে?
ধরুন, একটি মুসলিম শিশু, বয়স তার সাত। বাবা-মায়ের তালিমের কারণে সে নামায পড়তে শুরু করেছে। এবং নিয়মিতই সে নামায আদায় করছে। জামাতের সাথেই আদায় করছে। পনের বছর বয়সে এসে সে বালেগ হল। এখন তার উপর শরীয়তের পক্ষ থেকে নামায ফরজ হল। কিন্তু সে বালেগ হওয়ার পর নামায পড়া বন্ধ করে দিল। তাকে নামায বন্ধ করে দেয়ার কারণ জিজ্ঞেস করা হলে সে যদি বলে যে, আমি তো আট বছরের নামায এডভান্স আদায় কেরে নিয়েছি? তবে আপনি কি মানবেন? সাত বছর বয়স থেকে নিয়ে পনের বছর বয়স পর্যন্ত এই আট বছরের নামায কি সে বালেগ হওয়ার পরবর্তী সময়ের অগ্রিম আদায় হিসেবে উল্লেখ করতে পারবে? এ প্রশ্নের জবাব যদি ‘না’ হয়, অবশ্যই তা হবে না। তবে এক্ষেত্রে আপনার ‘না’ বলার পেছনে যুক্তি কি?
আমি কি আপনার সে যুক্তির নিরিখে এ কথা বলতে পারি না যে, আপনি যে নামায টি সময়ের আগে পড়ে নিলেন তাও হয়নি। আপনার উপর সময় আসার সাথে সাথে যে জিম্মাদিারী আরোপিত হবে তা আপনার উপর অবশিষ্ট রয়ে গেছে।
আপনি হয়ত বলবেন যুক্তি দিয়ে শরীয়ত চলে না। এর জন্য সহিহ হাদিস চাই? তবে আমিও বলব ঠিকই যুক্তি দিয়ে শরিয়ত চলেনা। ওয়াক্ত হওয়ার আগে আপনার নামায আদায় সম্পন্ন হওয়ার পক্ষেও শরীয়তের দলীল লাগবে। দয়া করে কি দলীলটি দেবেন?
আপনি হয়ত নবীজির ওই হাদিসটির কথা বলবেন যেখানে এটা বর্ণিত হয়েছে যে নবীজি সা. যোহর ও আসরের নামায এক সাথে আদায় করেছেন।
কিন্তু হাদিসটিকে দলীল হিসেবে উল্লেখ করার আগে একটু বিবেচনা করে দেখবেন যে হাদিসটির সাথে শরীয়তের অন্য কোন দলীলের বিরোধ আছে কি না?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.