নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবী কাব্যময় । জীবন ও প্রকৃতির সর্বত্রই কবিতা । যে কবিতা বোঝে না, কবিতা শুনতে বা পড়তে ভালবাসে না- কবিতা আছে তার জীবনেও । তাই কবিতাই আমার সাধনা, অনুপ্রেরণা আর ভালো লাগা ।
আজ শোনাব আমার 'পাগল তত্ত্বের' অংশ বিশেষ । চিন্তা সকলের অধিকার । যিনি চিন্তা করেন তিনি জ্ঞানানুরাগী । জ্ঞান বা প্রজ্ঞার প্রতি অনুরাগী যিনি তিনি দার্শনিক । কেউ একজন বলে গেলেন, প্রত্যেক মানুষই দার্শনিক। আমরা বিশ্বাস করলাম,আপনারা বিশ্বাস করলেন। সেই বিশ্বাস মতে আমিও দার্শনিক এবং আপনারাও। মহাগ্রন্থ কোরআন ঘেঁটে দেখুন, এ স্বীকৃতি সেখানেও আছে। চিন্তাশীল মানুষের জন্যই মুক্তি ! শুধু মাত্র মহাগ্রন্থ আল-কোরআনেই নয় অন্যান্য ধর্মগ্রন্থেও এমন বিশ্বাস প্রতিষ্ঠিত । কোরানের মত বাইবেল, ভগবদগীতা বা বেদ-বেদান্তের বঙ্গানুবাদ পড়ে আমার তাই মনে হয়েছে । সে যাই হোক, সেসব বিশদ আলোচনা অন্য সময় করা যাবে । দার্শনিকের কথা দার্শনিক মাত্রই বুঝবেন। আপনারা যেহেতু আমার মতই দার্শনিক তাই 'মানুষ মাত্রই পাগল' আমার এই দর্শন আপনারাও বুঝবেন । বিশ্বাস হলো না ? তাহলে বুঝিয়ে বলছি । আপনার মানসিকতা আপনার আমিত্বকে নির্দেশ করে। আপনার মন মানসিকতার কারিগর। আপনি মনে মনে অনেক কিছু বলেন, এক কর্মে মন দিলেন তো মনে মনে অন্য কিছু চিন্তা করলেন। সুখে বা বিরহে গান গাইলেন আর অজান্তে আপনার মন অন্য কিছু ভাবল। এ সকল ভাবনা চিন্তা বিচিত্র রকমের । আপনি আপনার বস্ কে সহ্য করতে পারেন না, অথচ দেখা হলেই ভাল মানুষের মতো সালাম ঠুকছেন আর মনে মনে বলছেন হারামজাদা হতচ্ছাড়া ইত্যাদি। আপনার মন চেতনে অবচেতনে সব সময় কথা বলে। আপনার মন যে কথা গুলো বলে তার সবই যদি স্বর হয়ে প্রকাশ পেত তাহলে মানুষ আপনাকে নির্ঘাৎ পাগল ভাবত। প্রকাশ হোক বা না হোক, মন যদি মানসিকতা তৈরী করে আর মানসিকতা যদি আপনার আমার আমিত্বের ব্যাপ্তি ঘটায়, তাহলে হলফ করে বলা যায় আমার আমি পাগল, আপনার আপনি পাগল। অর্থাৎ আমি পাগল,আপনি পাগল, আপনার বাপ পাগল, দাদা পাগল, মা পাগল, আপনার চৌদ্দ গুষ্টি পাগল.....
গাছ পাগল, মেয়ে পাগল, বই পাগল, গান পাগল এরকম হাজারো পাগলের বিশেষণ আছে পাগলের দুনিয়ায় । এই সব পাগলের মত মন আছে সব পাগলের, সব মানুষের । মন মনুষ্যত্ব বানানোর মেশিন হলেও পশুত্ব মানসিকতা মন থেকেই উদ্গত । বিভিন্ন মানসিকতার স্রষ্টা হল মন । মন এর সঠিক সংজ্ঞা আজ অব্দি কোন দার্শনিকই দিতে পারেন নি । জড়বাদী দার্শনিকগণ মনে করেন মস্তিস্ক থেকে উদ্ভূত শারীরবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মন গড়ে ওঠে । একথার সাথে আমি পুরোপুরি একমত নই । কেননা মস্তিস্ক উদ্ভূত সব কর্মকাণ্ড শারীরবৃত্তিক নাও হতে পারে । মস্তিস্ক এমন এক আজব যন্ত্র যা একই সাথে একাধিক অনুভূতি ও মানসিকতা তথা চিন্তার উদ্রেগ করতে পারে । প্রার্থনায় রত একজন মানুষ বুঝতে পারে প্রার্থনা কালে মন প্রার্থনা ব্যতীত অন্য কথাও বলে । সেই সব কথা যদি বাকযন্ত্র একই সময়ে প্রকাশ করতে পারত তাহলে তার পাগলামিও প্রকাশ হয়ে যেত । আমি পাগল বলে খুশি হয়েছিলেন ! কিন্তু যখন বললাম আপনি পাগল, আপনার দাদা পাগল, বাপ পাগল, মা পাগল, আপনার চৌদ্দ গুষ্টি পাগল তখন নিশ্চয় খেপে গিয়েছিলেন । আচ্ছা তাহলে আপনি পাগল না, তবে আপনার মন যে পাগল একথা আপনি কিভাবে অস্বীকার করবেন ?
মন ও চেতনা এক নয় । মন থাকলেই চেতনা থাকবে একথা বলা যায় না । স্নেহ, ভালবাসা, প্রেমপ্রীতি বা মমতার মত ধনাত্মক বিষয়গুলো মানব মনে বিকশিত হয় আবার ক্রোধ, হিংসা বা লোভের মত ঋণাত্মক বিষয়গুলোও মনকে অবচেতন করে তোলে । জাগরণে বা নিদ্রায়, চেতনে বা অবচেতনে মন কথা বলবেই । যখন কেউ ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন দেখে তখনো তার মন জাগ্রত থাকে, কথা বলে । এ এক আজব আধ্যাত্ম সত্তা যাকে সব সময় নিয়ন্ত্রণ করা যায় না । মন নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারে আনন্দে-উচ্ছাসে, দুঃখে-কষ্টে, অভাবে-স্বভাবে নানা ভাবে । নিয়ন্ত্রন হারা মন পাগল আবার নিয়ন্ত্রিত মানসিকতাও পাগল হতে পারে ।
পথে সুদর্শন কোন পুরুষকে দেখে কোন নারীর মনে জন্মানো আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ সহজ নয় । সুশ্রী-সুদর্শনা রমণী দেখলে অনেকের মনে ভাবের উদয় হতে পারে, কারো বা রবীন্দ্রনাথের মত গাইতে সাধ জাগতে পারে-
নহ মাতা, নহ কন্যা !
নহ বঁধু সুন্দরী রূপসী !
হে নন্দন বাসিনী উর্বশী !
অথবা নজরুলের মত গাইতে ইচ্ছে হোল-
তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়,
সে কি মোর অপরাধ !
কিন্তু কি আজব মনের কথা মনেই রইল গাওয়া হোল না । হোল না কেন বলছি, মন কিন্তু ঠিকই গাইছে শুধু তার প্রকাশটা হোল না । আমার সহজ কথা, সহজ দর্শনের সহজ যুক্তি হোল, মন তার মনিবের চেতনে-অবচেতনে একই সময়ে নানা বিষয়ে কথা বলে অহরহ । এই সব কথার অধিকাংশই উনুচ্চারিত ও অপ্রকাশিত থেকে যায় । আপনার শব্দ শকট মন যদি সেই সবই স্বরযন্ত্র দিয়ে জনসম্মুখে প্রকাশ করতে পারতো তাহলে মানুষ মাত্রই তাকে পাগল ভাবতে বাধ্য হত । তাহলে আমার কথা মেনে নিন যে, আমার মত আপনিও পাগল, আপনার দাদা পাগল, বাপ পাগল, মা পাগল, আপনার চৌদ্দ গুষ্টি পাগল ! দুনিয়ার তাবৎ মানুষই পাগল ।
(পাগল তত্ত্ব সমাচার)
রুদ্র আতিক, সিরাজগঞ্জ
৩১ ভাদ্র ১৪২৬ বঙ্গাব্দ ।
২| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩২
রাজীব নুর বলেছেন: একজন মানুষ পুরোপুরি খারাপ হতে পারে না। অবশ্যই তার মধ্যে ভালো কিছু আছে। সেই ভালো কিছুকে খুঁজে বের করুন। দেখবেন, পৃথিবীটাকে অনেক ভালো লাগতে শুরু করবে, জীবনটাকে সুন্দর ও ঝামেলামুক্ত লাগবে, বাঁচতে ইচ্ছে করবে।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:২৭
রুদ্র আতিক বলেছেন: রবীন্দ্রনাথের মত আমার কাছে তো সকলই শোভন, সকলই নবীন , সকলই জীবন । পাগল হলেই মানুষ খারাপ হবে কেন ? আপনার ক্ষুদ্র মস্তিস্ক দিয়ে সুগভীর চিন্তা করলে মনে হবে স্বয়ং আপনার স্রষ্টাই একজন মহা-পাগল ! আর বাঁচার কথা বলছেন? তাহলে তো নির্মলেন্দু গুনের মত বলতেই হয়, আমার অতৃপ্তি নেই । ধন্যবাদ
৩| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩৮
জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: 'আমি পাগল, আপনি পাগল, আপনার চৌদ্দগুষ্টি পাগল....' অর্থাৎ আপনার দর্শনে সবাই পাগল। যেহেতু সবাই পাগল এবং পাগল সম্বোধন'টির নেতিবাচক প্রয়োগ'ই বেশি, সেহেতু এটা নিয়ে বিশাল রচনার খুব একটা প্রয়োজন দেখছি না।
মন আর মস্তিস্কের আলাদা অস্তিত্ব টের পাই। তবে শরীরের অন্যান্য পার্টসের মতো মস্তিস্কের সাথে মনের নিবিড় কানেকশন রয়েছে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:৫৪
চাঁদগাজী বলেছেন:
ম্যাঁওপ্যাঁও