![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মদীনার বাজার। পড়ন্ত বিকেলে একজন খদ্দের এসে দাঁড়ালেন এক সাহাবার দোকানে। একটা পণ্যের দাম শুনে কিনতে সম্মত হলেন। কিন্তু তাকে আশ্চর্য করে দিয়ে সাহাবা দূরের একটি দোকান দেখিয়ে বললেন পণ্যটি সেখান থেকে কিনতে। দাম
একই, জিনিসও একই।
আপনি যদি ব্যবসায়ের ছাত্র হন তাহলে লাফিয়ে উঠে বলবেন, এই জন্যই ইহুদিরা সারা দুনিয়া নিয়ন্ত্রণ করে;
মুসলিমরা ব্যবসা বুঝেই না। খদ্দের মানে হাতের লক্ষী। হাতের লক্ষী কেউ পায়ে ঠেলে? আপনি যদি ঝানু ব্যবসায়ী হন তাহলে বলবেন দুই রকম খদ্দেরকে প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে পাঠানো যায়।
১।ক্রেতা যদি বেশি খুঁতখুঁতে হয়।
২। ক্রেতা ঠিক যা চাইছে সেটা আমার কাছে না থাকে। কিন্তু
এছাড়া ক্রেতাকে ফিরিয়ে দেয়া মানে লাল বাতি জ্বলা। যা-ই হোক, আমাদের ঘটনার ক্রেতাও হয়ত এসব সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতে গেলেন অন্য দোকানটায়। পণ্যটা কিনে ফেরত আসলেন প্রথম দোকানে। সাহাবা তখন
অন্য আরেকজন খদ্দেরের সাথে কথা বলছেন। এটাই
আল্লাহর বিধান যত টাকার বিক্রি হওয়ার কথা ছিল, তত
টাকার বিক্রি হবেই। এটা আল্লাহর দেওয়া রিযক্।
যা আসার কথা ছিলো তা আসবেই। মাঝখান থেকে আমাদের পরীক্ষা হবে—সেই
রিযকটা পেতে গিয়ে আমরা কী হালাল থাকলাম নাকি হারামে ডুবে গেলাম।
সাহাবা জিজ্ঞেস করলেন
ক্রেতাকে, ‘পাওনি তোমার জিনিস?’
- পেয়েছি, কিন্তু আমি অন্য একটা জিনিসের জন্য এসেছি।
- কী?
- তুমি যার কাছে আমাকে পাঠিয়েছিলে সে আমার
ধর্মের মানুষ—ইহুদি। আমরা তোমাদের পছন্দ করি না। কিন্তু তুমি একজন ব্যবসায়ী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে আমাকে পাঠালে, মুসলিম হয়ে একজন
ইহুদিকে ব্যবসার সুযোগ করে দিলে কেন?
-কারণ আল্লাহ আমাকে আজকের মত যথেষ্ট
রিযক্ দিয়েছেন। আর ওই বেচারা সকাল থেকে বসে আছে আজ কোন বিক্রিই হয়নি তারও তো পরিবার আছে। একজন খদ্দের পেলেও তার ন্যুনতম চাহিদাটুকু হয়ত মিটবে।
ক্রেতাটি হতবাক হয়ে ভাবতে লাগলো যে ধর্ম
মানুষের কল্যাণের কথা এভাবে মানুষকে ভাবতে শেখায়
সেটা সত্য বই মিথ্যা হতে পারে না। পণ্য
কিনতে এসে ইহুদি ব্যক্তিটি জান্নাত
কিনে নিয়ে চলে গেল। ইসলাম কিন্তু এভাবেই পৃথিবীতে ছড়িয়েছে। তাত্ত্বিক আলোচনার
মাধ্যমে না, জীবনে প্রতিফলনের মাধ্যমে।
সাহাবারা হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের ছাত্র ছিলেন
না, তারা রসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের
মাসজিদে নববীর ছাত্র ছিলেন। তাদের অভিধানে মনোপলি,কম্পিটিটর, গ্রোথ কার্ভের মতো কঠিন সব ধারণা ছিলনা।
তারা এই পৃথিবীতে আল্লাহর দেওয়া রিযক্ বান্দাদের
সাথে ভাগ করে নিতেন। তারা দু’হাত উপুড়
করে মানুষকে দিতেন, কারো কাছে ব্যক্তিগত
প্রয়োজন মেটাতে হাত পেতে ভিক্ষে মাঙতেন না।
শোষণ- লুন্ঠন-প্রবঞ্চন- প্রতারনা তো অনেক দূরের কথা।
©somewhere in net ltd.