নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মো: আওয়াল হোসেন টুটুল

টুটুল

সৎকাজে ১০০% বিশ্বাসী।

টুটুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

পরাণের গহীন ভিতর

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৪০

উৎসর্গ: সৈয়দ শামসুল হক

কে তুমি?
ওখানেই দাঁড়াও!
কী দুঃসাহসে ওদিকে হাত বাড়াও?
তুমি কি সেই প্রাচীন বংশের নিঃস্ব সন্তান ব্যক্তি
যে কিনা অভিযান চালিয়ে বেড়াও
মর্তবাসীকে ছো মেরে কেড়ে নিতে
বসুমাতার বক্ষ থেকে?
কী বিভীষণ মূর্তি তোমার!
কোথা পেলে এই স্পর্ধা
তাঁকে নীল দংশন বসাবার!
সে তুমি নও?
তুমি তাহলে তাকে চেন?
হুঁম, ঠিক বলেছো
বড় ভাল লোক ছিল সে।
আচ্ছা, আচ্ছা... দাঁড়াও...
তুমি কি তবে সেই বন্ধু,
কাননে কাননে তোমারই সন্ধানে
উনি ঘুরে বেড়াতেন!
তোমার তরেই কি তিনি রেখে গেলেন
সেই বৈশাখে রচিত পংক্তিমালা
কিংবা তোমার তরেই অলস কাটাতেন কি
তাঁর শীত বিকেল?
জলেশ্বরীর গল্পগুলো কি
তিনি তোমার জন্যই লিখেছেন!
একদা এক রাজ্যে, রক্তগোলাপ হাতে বসে
বিরতিহীন উৎসব-এর আনন্দে
হৃৎ কলমের টানে যে-গল্পগুলো লিখেছেন,
সে আনন্দের মৃত্যু নেই।
তুমি কি তাহলে সে-ই
যে কিনা সৈয়দ শামসুল হকের প্রেমের গল্প,
কিংবা প্রেমের কবিতা শুনে ভাবতে,
এই হচ্ছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ গল্প, শ্রেষ্ঠ কবিতা।
যখনসীমানা ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়েছিলো তাঁর খ্যাতি
তখনো আমি জন্মগ্রহণ করিনি।
একটু বড় হতেই আমার
নিজস্ব বিষয় হয়ে ওঠলো তাঁর সৃষ্টিকর্ম।
যিনি এক মহিলার ছবি এঁকেই
ঢেকে দিয়েছিলেন এক যুবকের ছায়াপথ ,
যিনি লিখেছিলেন অগ্নি ও জলের কবিতা
গেয়েছেন বেজান শহরের জন্য কোরাস
রচেছেন রাজনৈতিক কবিতা ।
সেই অনুপম দিনগুলো
আজ কোথায় গেলো!
আজ আমরা পথভ্রষ্ট
পান করে চলেছি এক
নিষিদ্ধ লোবান,
রজ্জুপথে চলেছি হেঁটে।
এ পথ নয় স্বপ্ন সংক্রান্ত!
চোরাবালি ঢাকা এ পথ।
বাংলার মাটি বাংলার জল
মিশে আছে আমাদের অস্তিত্বে
তবুও দেশমাতৃকার সাথে
বেঈমানি করে চলেছি আমরা
ইহা মানুষ কি পারে!
একদিন যে-তরবারী তুলে নিয়েছিলাম
জননীকে বাঁচাতে
আজ তুমি সেই তরবারী
তুলে আমারই মায়ের বুকে
আঘাত হানতে চাও!
শুধু কাঁদে এক মুঠো জন্মভূমি আমার।
তবুও ভুলে যেওনা
এখনো হারিয়ে যায়নি আমাদের গণনায়ক।
কান পেতে শোনো
তার পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায় ।
না যেয়ো না আগন্তুক!
শুনে যাও এক আশ্চর্য সংগমের স্মৃতি
আঁধার জগতেআলোর জন্য
রাজার সুন্দরীর
ডুকরে কাঁদার কাহিনী এ নয়,
বালিকার চন্দ্রযান চড়ে অসীম দূরত্ব
পাড়ি দেবার কাহিনীও এ নয়।
ক্ষুধার তাড়নে যে-বনবালা কিছু টাকা ধার নিয়েছিল,
তাকে চিনতে হলোকয়েকটি মানুষের সোনালী যৌবন।
তোরাপের ভাই সে টাকার
শোধ নিয়েছিলো শরীরের ক্ষুধা মিটিয়ে।
তা দেখে অসভ্যরা বলেছিলো
খেলা রাম খেলে যা।
আর সভ্যরা ভেবেছিলো এবার ডুবলো
ধ্বংস্তূপে কবি ও নগর।
কিন্তু না!
তারপর দ্বিতীয় দিনের কাহিনী।
প্রতিবাদে রাজপথে
মুষলধারায় নেমেছিলো
বৃষ্টি ও বিদ্রোহীগণ ।
ভাগ্যের পরিহাসে
জিততে পারেনি তারা।
অচেনা,অপর পুরুষ-এর
সাথে নিষিদ্ধ সঙ্গমের মিথ্যে দায়ে
তাকে হতে হয়েছিলো নির্বাসিতা।
নির্বাক কেনো আগন্তুক?
হয়তো তুমি জানো না
প্রতিবাদীরা হয়ে পড়েছিলো স্তব্ধ।
তোমার চোখের ভাষায় এ কী?
ঈর্ষা নাকি ঘৃণা!
আর আমাদের চিরঞ্জীব কবি
এই স্তব্ধতার অনুবাদ করেছিলেন
বুকঝিম ভালোবাসা দিয়ে,
বিদ্রোহকে করেছিলেন অন্য এক আলিঙ্গন।
মেনে নিতে পারেননি
সমাজপতিদের প্রণীত জীবন
প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন
হড়সনের বন্দুক হাতে,
হয়েছিলেনকালঘর্ম।
আমরা তারই শিষ্য
এখানে এখন কেউ করেনা
মৃগয়ায় কালক্ষেপ
অন্যায়ে প্রতিবাদী হয়ে উঠে নারীগণ
জেগে উঠে শুনে আজো
যে আবাহন ধরে আছে
নুরুলদীনের সারা জীবন।
সে-ও তুমি নও?
ঝেড়ে ফেল অভিনয়
বল তব পরিচয়।
কী নাম বললে?
‘মৃত্যু’!
তাহলে তোমাকে কাটতে হবে
কাঁচ কাটা হীরা দিয়ে।
তবেই তুমি ত্রাহি ত্রাহি
রবে পালাবে।
আমাদের কবি চিরঞ্জীব।
চিরদিন বেঁচে রবে
অন্তরে, অনুভবে।
মৃত্যু, সাধ্য কি আছে তব, ওহে যাযাবর
কেড়ে নিতে তাঁকে, রেখেছি যাহাকে সবে
পরাণের গহীন ভিতর।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.