নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান › বিস্তারিত পোস্টঃ

"বিদায় হজ্জের ভাষণ"

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:১১

আরাফাতের পাহাড় এটি সৌদি আরবে মক্কার পূর্ব দিকে আরাফাতে অবস্থিত একটি পাহাড়। একে জাবালে রহমত অথবারহমতের পাহাড় বলেও উল্লেখ করা হয়। রাসূল মুহাম্মদ (সাঃ) এখানে দাঁড়িয়ে হজযাত্রীদের সামনে বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। এই পাহাড়টি গ্রানাইটে গঠিত এবং উচ্চতা প্রায় ৭০ মিঃ।
জিলহজের ৯ তারিখ আরাফাতের দিন হাজিরা আরাফাতে অবস্থান করেন এবং আল্লাহর কাছে নিজের পাপের কারণে ক্ষমা চান।


বিদায় হজ্জের ভাষণ
বিদায় হজ্জের ভাষণ ১০ম হিজরিতে অর্থাৎ এটি ছিল ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে হজ্জ পালনকালে আরাফাতের ময়দানে রাসুল মুহাম্মাদ (সঃ) কর্তৃক প্রদত্ত খুৎবা বা ভাষণ। হজ্জ্বের দ্বিতীয় দিনে আরাফাতের মাঠে অবস্থানকালে অনুচ্চ জাবাল এ রাহমাত টিলার শীর্ষে দাঁড়িয়ে উপস্থিত সমবেত মুসলমানদের উদ্দেশ্যে তিনি এই ভাষণ দিয়েছিলেন। মুহাম্মাদের জীবিতকালে এটা তার শেষ ভাষণ ছিলো তাই সচরাচর এটিকে বিদায় খুৎবা বলে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। ইসলামের প্রকৃত মূল্যবোধ অনুযায়ী মুসলমানদের করণীয় সম্পর্কে এই ভাষণে চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা ছিলো।
ভাষণটি পূর্ণাঙ্গরূপে সংরক্ষিত হয়নি।তবে বিভিন্ন হাদিস, তাফসির, ইতিহাস এবং জীবনীগ্রন্থে আংশিক বা খণ্ড খণ্ড আকারে তা মুদ্রিত হয়েছে। সকল হাদীসে বিদায় খুৎবার উদ্ধৃতি অন্তর্ভূত আছে। বুখারী শরীফের ভাষণের বিভিন্ন অংশ উদ্ধারণ করা হয়েছে। সহি মুসলিম শরীফে হাদিসে বিদায় খুৎবা বর্ণিত। তিরমিজি শরীফের হাদিসে বিদায় খুৎবার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। বিদায় খুৎবার র্দীর্ঘতম উদ্ধৃতি দিয়েছেন ইমাম আহমদ বিন হাম্বল। তার মসনুদ হাদিসে এই বর্ণনা পাওয়া যাবে।

ভাষন এর তাৎপর্য্য
ইসলাম ধর্ম যে ধাপে ধাপে এবং পর্যায়ক্রমে পূর্ণতা পেয়েছিলো তারই চূড়ান্ত ঘোষণা ছিলো মুহাম্মাদের (সঃ)এই ভাষণ। এই কারণে সেদিন ভাষণ প্রদানকালে কুরআনের সূরা মায়িদাহ'র ৩ নম্বর আয়াত অবতীর্ণ হয়েছিলো ।
আজ আমি তোমাদের ধর্মকে পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহকারীকে সুসম্পন্ন করলাম । আর ইসলামকে তোমাদের ধর্ম হিসেবে মনোনীত করলাম।এই ভাষণে ইসলাম ধর্মের মর্মবাণী সংক্ষেপে বর্ণিত হয়েছিলো। মুসলিম জাতির সাফল্যের ধারা বজায় রাখতে মুসলমানদের করণীয় সম্পর্কে মুহাম্মদ চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। সেই ঐতিহাসিক ভাষণ কেবল উপাসনামূলক অনুশাসন ছিলো না বরং মানবসমাজের জন্য করণীয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট ভাষায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপদেশও তাতে ছিলো। ঈশ্বরের অর্থাৎ আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ও তার সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি, মানবজাতির ঐক্য, আধ্যাত্মিক ভ্রাতৃত্ব, সামাজিক স্বাধীনতা এবং গণতান্ত্রিক সাম্য ইত্যাদি সমাজ বিনির্মাণের অন্যতম সব বিষয়ই এই ভাষণের অন্তর্ভুক্ত ছিলো। এই ভাষণে তাকওয়া বা দায়িত্বনিষ্ঠতার কথা গুরুত্ব দেয়া হয়েছিলো এবং পাপাচারের বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারী দেওয়া হয়েছিলো। আল্লাহর প্রতি দায়িত্ব বা হক্কুল্লাহ এবং মানবসম্প্রদায়ের প্রতি দায়িত্ব বা হক্কুল ইবাদের মধ্যে সীমারেখা টেনে দেওয়া হয়েছিলো। মুহাম্মদ (সঃ) সেই ভাষণে সমাজ ও রাষ্ট্রে অরাজকতা, বিদ্রোহ এবং কুপরামর্শ প্রদানকারী শয়তানদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে বলেছেন। সেই ভাষণে বিভিন্ন ধরণের সুদ প্রথা রহিত করে শোষণমুক্ত সমাজ গঠনের দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়েছিলো। নারীর পূর্ণ নিরাপত্তা, সম্মান এবং অধিকারকে নিশ্চিত করার জন্য মুসলমানদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো সেই ভাষণে। মানুষে মানুষে আত্মীয়তার বন্ধন বিশেষ করে রক্তের সম্পর্কের ওপর সবিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছিলো। সামাজিক কুসংস্কার থেকে মানুষের মুক্তি লাভের ওপর জোর দেওয়া হয়েছিলো। মুহাম্মদ (সঃ)-এর সেই ঐতিহাসিক ভাষণে স্বর্গ মর্তের সকল কিছুর ওপর ঈশ্বরের অর্থাৎ আল্লাহর কর্তৃত্ব সুনিশ্চিত করা হয়েছিলো এবং মানুষকে সেসবকিছুর আমানতদার হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো। ঈশ্বরের অর্থাৎ আল্লাহর মালিকানায় সবার অধিকার স্বীকৃত বলে উত্তরাধিকার আইনের ওপর অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করা হয়েছিলো। আমানতের খেয়ানতকারীর প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছিলো। মানুষের জীবন, সম্পদ এবং সম্ভ্রমের নিরাপত্তা বিধানের জন্য কাজ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছিলো। সাম্য, স্বাধীনতা, ন্যায়পরায়ণতা, ভ্রাতৃত্ব এবং বদান্যতা ও মানবতার পরম ধর্ম হিসেবে ইসলামকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিলো।

হাদিস সাহিত্যে ভাষণের যে বর্ণনা পাওয়া যায়ঃ
সহিহ মুসলিম , তিরমিজি, সুনান আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ, সুনান ইবনে মাজাহ গ্রন্থে উল্লেখিত যাবির ইবনে আবদুল্লাহ বর্ণিত বিদায় হজ্বের ভাষণের নিম্নোক্ত দীর্ঘ বর্ণনা পাওয়া যায়। তাছাড়াও ইবনে ইসহাক এবং আল জাহিজও প্রায় অপরিবর্তিতভাবে একই বর্ণনা প্রদান করেছেন।
উপস্থিত জনমণ্ডলী আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনো। হয়তো আমি আর কখনো এখানে তোমাদের সঙ্গে একত্রিত হতে পারব না।হে জনমণ্ডলী আজকের এই দিন জুম্মার দিন, এই মাস জিলহজ মাস এবং এই শহর মক্কা যেমন পবিত্র তোমাদের জানমাল, ইজ্জত-আবরু, মান-সম্মান কিয়ামত পর্যন্ত এমনই পবিত্র। কারো কাছে যদি কোনো আমানত রক্ষিত থাকে তাহলে সে যেন তা আমানতকারীর কাছে পৌঁছে দেয়। আজ থেকে সব ধরনের সুদ রহিত করা হলো। তোমাদের কেবল মূলধনের ওপর অধিকার রইল। তোমরা অন্যের ওপর অত্যাচার করবে না, নিজেরাও অত্যাচারিত হবে না। সর্বপ্রথম আমি হজরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিবের সুদ রহিত করছি। অন্ধকার যুগের সব কৌলীন্য বিলুপ্ত করা হলো। শুধু কাবাঘরের তত্ত্বাবধান ও হাজিদের পানি পান করানো ছাড়া। আজকের পর তোমাদের ভূখণ্ডে শয়তানের উপাসনার ব্যাপারে সে নিরাশ হয়ে গেছে। কিন্তু কিছু ব্যাপার যেগুলোকে তোমরা বড় পাপ মনেই করো না। তার অনুসরণ করলে শয়তান খুশি হবে। জনমণ্ডলী তোমাদের নিজ স্ত্রীদের ওপর যেমন তোমাদের অধিকার রয়েছে তদ্রূপ তাদেরও তোমাদের ওপর অধিকার রয়েছে। স্ত্রীদের ওপর তোমাদের অধিকার হচ্ছে তারা যেন নিজ স্বামী ছাড়া পরপুরুষের সঙ্গে ভোগে লিপ্ত না হয়। যদি তারা তা করে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তোমাদের তাদের প্রতি কঠোরতা করার অনুমতি দিয়েছেন। এমতাবস্থায় তোমরা তাদের শয্যা পৃথক করে দেবে। এবং মৃদু প্রহার করবে। তাতে তারা বিরত হলে নিয়মমাফিক তাদের ভরণপোষণের প্রতি লক্ষ রাখবে। স্ত্রীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করবে। তারা তোমাদের সাহায্যকারিণী। তোমরা তাদের আল্লাহর নির্ধারিত কালিমা বাক্যের ইজাব কবুল মাধ্যমে নিজেদের জন্য হালাল করেছো। সুতরাং তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করো। জনমণ্ডলী সব মুমিন পরস্পর ভাই ভাই। কারো জন্য অন্যের সম্পদ বৈধ নয়। তবে যদি কেউ স্বেচ্ছায় কাউকে কিছু দেয় তাহলে সেটা স্বতন্ত্র ব্যাপার। আমার পর তোমরা কুফরিতে ফিরে যেও না। পরস্পর খুনাখুনি করো না। আমি তোমাদের মাঝে এমন দুটি জিনিস রেখে গেলাম তোমরা তা দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরলে কখনো বিভ্রান্ত হবে না। তা হচ্ছে_আল্লাহর কিতাব পবিত্র কোরআন ও তাঁর রাসুলের হাদিস। জনমণ্ডলীঃ তোমাদের প্রভু একজন। তোমাদের পিতাও একজন। তোমরা সবাই আদম থেকে আর আদম মাটি থেকে সৃষ্টি। তোমাদের মাঝে যারা সর্বাধিক মুত্তাকি খোদাভীরু তারাই আল্লাহর কাছে সর্বাধিক মর্যাদাবান। তাকওয়া ছাড়া কোনো অনারবের ওপর কোনো আরবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই। জনমণ্ডলীঃ আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক উত্তরাধিকারীর অংশ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। উত্তরাধিকারীর জন্য কোনো ওসিয়ত প্রযোজ্য নয়। অন্যদের জন্য এক তৃতীয়াংশের অধিক ওসিয়ত করা বৈধ নয়। আমাদের কিয়ামত দিবসে জিজ্ঞাসা করা হবে। তোমাদেরও জিজ্ঞাসা করা হবে। তখন তোমরা আমার ব্যাপারে কী বলবে? আমি কি তোমাদের নিকট আল্লাহর দ্বীন পৌছে দিয়েছি? উপস্থিত সাহাবায়েকেরাম উত্তর দিলেন আমরা সাক্ষ্য দেব যে আপনি আপনার দায়িত্ব পৌঁছে দিয়েছেন। হিত কামনা করেছেন। অতঃপর রাসুল (সাঃ) আকাশের দিকে হাত তুলে তিনবার বললেন আল্লাহ আপনি সাক্ষী থাকুন। তারপর বললেন তোমরা এখানে যারা উপস্থিত আছো তারা অনুপস্থিতদের কাছে এই কথাগুলো পৌঁছে দেবে ।

সহিহ মুসলিমে যে বর্ণনাটি পাওয়া যায়ঃ
“হে মানব মন্ডলীঃ
তোমরা হৃদয়ের কর্ণে ও মনোযোগ সহকারে আমার বক্তব্য শ্রবণ কর। আমি জানিনা আগামী বছর এ সময়ে এ স্থানে এ নগরীতে সম্ভবত তোমাদের সাথে আমার সাক্ষাৎ আর হবে কি না। “হে মানব সকল সাবধান! সকল প্রকার জাহেলিয়াতকে আমার দুপায়ের নিচে পিষ্ঠ করে যাচ্ছি। নিরাপরাধ মানুষের রক্তপাত চিরতরে হারাম ঘোষিত হল। প্রথমে আমি আমার বংশের পক্ষ থেকে রবিয়া বিন হারেস বিন আবদুল মোত্তালিবের রক্তের দাবী প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। সে বনি লাইস গোত্রে দুধ পান করেছে হুযাইল তাকে হত্যা করেছে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র থেকে আর এখন থেকে সুদ কে চির দিনের জন্য হারাম ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল। আমি আজ আমার চাচা আব্বাস ইবনে আবদুল মোত্তালিবের যাবতীয় সুদের দাবী প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। হে লোক সকলঃ বল আজ কোন দিন? সকলে বলল “আজ মহান আরাফার দিন, আজ হজ্বের বড় দিন” সাবধানঃ তোমাদের একের জন্য অপরের রক্ত তার মাল সম্পদ, তার ইজ্জত সম্মান আজকের দিনের মত এই মাসের মত, এ সম্মানিত নগরীর মত পবিত্র আমানত। সাবধানঃ মানুষের আমানত প্রকৃত মালিকের নিকট পৌঁছে দেবে। হে মানব সকলঃ নিশ্চয়ই তোমাদের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ একজন, তোমাদের সকলের পিতা হযরত আদম (আঃ)। আরবের উপর অনারবের এবং অনারবের উপর আরবের কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই সাদার উপর কালোর আর কালোর উপর সাদার কোন মর্যাদা নেই। তাকওয়াই শুধু পার্থক্য নির্ণয় করবে। হে লোক সকলঃ পুরুষদেরকে নারী জাতীর উপর নেতৃত্বের মর্যাদা দেয়া হয়েছে। তবে নারীদের বিষয়ে তোমরা আল্লাহ তাআলাকে ভয় কর। নারীদের উপর যেমন পুরুষদের অধিকার রয়েছে তেমনি পুরুষদের উপর রয়েছে নারীদের অধিকার। তোমরা তাদেরকে আল্লাহর জামিনে গ্রহণ করেছ। তাদের উপর তোমাদের অধিকার হচ্ছে নারীরা স্বামীর গৃহে ও তার সতীত্বের মধ্যে অন্য কাউকেও শরিক করবেনা । যদি কোন নারী এই ব্যপারে সীমা লংঘন করে তবে স্বামীদেরকে এই ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে যেঃ তারা স্ত্রীদের থেকে বিছানা আলাদা করবে ও দৈহিক শাস্তি দেবে, তবে তাদের চেহারায় আঘাত করবে না। আর নারীগণ স্বামী থেকে উত্তম ভরণ পোষণের অধিকার লাভ করবে । তোমরা তাদেরকে উপদেশ দেবে ও তাদের সাথে সুন্দর আচরণ করবে। হে উপস্থিতি মুমিনেরা পরষ্পর ভাই আর তারা সকলে মিলে এক অখন্ড মুসলিম ভ্রাতৃ সমাজ। এক ভাইয়ের ধন সম্পদ তার অনুমতি ব্যতিরেকে ভক্ষণ করবে না। তোমরা একে অপরের উপর জুলুম করবেনা। হে মানুষেরাঃ শয়তান আজ নিরাশ হয়ে পড়েছে। বড় বড় বিষয়ে সে তোমাদের পথ ভ্রষ্ট করতে সমর্থ হবে না তবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়ে তোমরা সর্তক থাকবে ও তার অনুসারী হবেনা। তোমরা আল্লাহর বন্দেগী করবে ও দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত প্রতিষ্ঠা করবে । রমজান মাসের সিয়াম পালন করবে যাকাত আদায় করবে ও তোমাদের নেতার আদেশ মেনে চলবে তবেই তোমরা জান্নাত লাভ করবে। সাবধানঃ তোমাদের গোলাম ও অধীনস্তদের বিষয়ে আল্লাহ তাআলাকে ভয় কর। তোমরা যা খাবে তাদেরকে তা খেতে দেবে। তোমরা যা পরবে তাদেরকেও সেভাবে পরতে দেবে। হে লোক সকলঃ আমি কি তোমাদের নিকট আল্লাহ তাআলার পয়গাম পৌছে দিয়েছি? লোকেরা বলল, হ্যা তিনি বললেন “আমার বিষয়ে তোমাদের জিঞ্জাসা করা হবে সে দিন তোমরা কি সাক্ষ্য দিবে? সকলে এক বাক্যে বললেন, আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আপনি আমাদের নিকট রিসালাতের পয়গাম পৌঁছে দিয়েছেন, উম্মতকে সকল বিষয়ে উপদেশ দিয়েছেন, সমস্ত গোমরাহির আবরণ ছিন্ন করে দিয়েছেন, এবং অহীর আমানত পরিপূর্ণ ভাবে পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব পালন করেছেন । অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নিজ শাহাদাত আঙ্গুলি আকাশে তুলে তিনবার বললেন, “হে আল্লাহ তাআলা আপনি সাক্ষী থাকুন, আপনি স্বাক্ষী থাকুন, আপনি সাক্ষী থাকুন”। হে মানুষেরা আল্লাহ তাআলা তোমাদের সম্পদের মিরাস নির্দিষ্টভাবে বন্টন করে দিয়েছেন। তার থেকে কম বেশী করবেনা। সাবধানঃ সম্পদের তিন ভাগের এক অংশের চেয়ে অতিরিক্ত কোন অসিয়ত বৈধ নয়। সন্তান যার বিছনায় জন্ম গ্রহণ করবে সে তারই হবে। ব্যভিচারের শাস্তি হচ্ছে প্রস্তরাঘাত। (অর্থাৎ সন্তানের জন্য শর্ত হলো তা বিবাহিত দম্পতির হতে হবে। ব্যভিচারীর সন্তানের অধিকার নেই)। যে সন্তান আপন পিতা ব্যতীত অন্যকে পিতা এবং যে দাস নিজের মালিক ব্যতীত অন্য কাউকে মালিক বলে স্বীকার করে, তাদের উপর আল্লাহ তাআলা, ফেরেশতাকুল এবং সমগ্র মানব জাতির অভিশাপ এবং তার কোন ফরয ও নফল ইবাদত কবুল হবে না। হে কুরাইশ সম্প্রদায়ের লোকেরা তোমরা দুনিয়ার মানুষের বোঝা নিজেদের ঘাড়ে চাপিয়ে যেন কিয়ামতে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ না কর। কেননা আমি আল্লাহর আযাবের মোকাবিলায় তোমাদের কোন উপকার করতে পারবো না। তোমাদের দেখেই লোকেরা আমল করে থাকবে। মনে রেখ সকলকে একদিন আল্লাহ তাআলার নিকট হাজির হতে হবে। সে দিন তিনি প্রতিটি কর্মের হিসাব গ্রহণ করবেন। তোমরা আমার পরে গোমরাহিতে লিপ্ত হবে না । পরস্পর হানাহানিতে মেতে উঠবনা। আমি আখেরী নবী আমার পরে আর কোন নবী আসবেনা। আমার সাথে অহীর পরিসমাপ্তি হতে যাচ্ছে। হে মানুষেরাঃ আমি নিঃসন্দেহে একজন মানুষ।
আমাকেও আল্লাহ তায়ালার ডাকে সাড়া দিয়ে চলে যেতে হবে। আমি তোমাদের জন্য দুটি বস্তু রেখে যাচ্ছি যতদিন তোমরা এই দুটি বস্তু আঁকড়ে থাকবে ততদিন তোমরা নিঃসন্দেহে পথভ্রষ্ট হবে না। একটি আল্লাহর কিতাব ও অপরটি রাসূলের (সঃ) সুন্নাহ। হে মানব মন্ডলীঃ তোমরা আমির বা নেতার আনুগত্য করো এবং তার কথা শ্রবণ করো যদিও তিনি হন হাবশী ক্রীতদাস। যতদিন পর্যন্ত তিনি আল্লাহর কিতাব অনুসারে তোমাদের পরিচালিত করেন ততদিন অবশ্যই তার কথা শুনবে ও তার নির্দেশ মানবে এবং তাঁর প্রতি আনুগত্য করবে। আর যখন তিনি আল্লাহর কিতাবের বিপরীতে অবস্থান গ্রহণ করবে তখন থেকে তার কথাও শুনবেনা এবং তার আনুগত্যও করা যাবেনা। সাবধানঃ তোমরা দ্বীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি থেকে বিরত থাকবে। জেনে রেখো তোমাদের পূর্ববর্তীগণ এই বাড়াবড়ির কারণেই ধ্বংস হয়ে গেছে। এ নির্দেশনাটি হচ্ছে অমুসলিমদের ক্ষেত্রে অর্থাৎ কোন বিধর্মীকে বাড়াবাড়ি বা জোরজবস্তি করে ইসলামে দীক্ষা দেওয়া যাবে না। তবে একজন মুসলমানকে অবশ্যই পরিপূর্ণ ইসলামী জীন্দেগী অবলম্বন করে জীবন যাপন করতে হবে। এক্ষেত্রে সুবিধাবাদের কোন সুযোগ নেই। আবার বললেন আমি কি তোমাদের নিকট আল্লাহর দ্বীন পৌছে দিয়েছি? সকলে বললেন, নিশ্চয়ই । হে উপস্থিতগণঃ অনুপস্থিতদের নিকট আমার এ পয়গাম পৌঁছে দেবে। হয়তো তাদের মধ্যে কেউ এ নসিহতের উপর তোমাদের চেয়ে বেশী গুরুত্বের সাথে আমল করবে। তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক,, বিদায়।


কিছু তথ্যসূত্র ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ মানুষ মাত্রই ভুল তাই ভুল হলে অবশ্যই ক্ষমা প্রাথী এবং সকলে ক্ষমা করবেন

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:৫৪

অগ্নি কল্লোল বলেছেন: আমিন।।
আল্লাহ আমাদের নাস্তিকদের হাত থেকে রক্ষা করুন।

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:০৫

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: আল্লাহু আমাদের সকলের দোআ কবুল করুন । আমীন ।

২| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:৫৪

অগ্নি কল্লোল বলেছেন: আমিন।।
আল্লাহ আমাদের নাস্তিকদের হাত থেকে রক্ষা করুন।

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:০৬

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: আল্লাহু আমাদের সকলের দোআ কবুল করুন । আমীন ।

৩| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৩১

আমি মিন্টু বলেছেন: ভালো লাগলো আপনা লেখা থেকে অনেক কিছু জানা হলো । :)

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:০৯

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ মিন্টু ভাই ।

৪| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:২৭

কল্লোল পথিক বলেছেন: আমিন।

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:০৯

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: "আল্লাহু আমাদের সকলের দোআ কবুল করুন" । আমীন ।

৫| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৯

কালের সময় বলেছেন: আমিন।

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:১০

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: "আল্লাহু আমাদের সকলের দোআ কবুল করুন" । আমীন ।

৬| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:০৩

আব্দুল্লাহ তুহিন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই, সামনে আর ও এ রকম পোস্ট চাই....

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:১১

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ।"আল্লাহু আমাদের সকলের দোআ কবুল করুন" । আমীন ।

৭| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৫২

মিশু ইমতিয়াজ বলেছেন: THX

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:১১

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.