নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মৃত সাগরের কথা

১৮ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:১৯


জিবুতির আসাল হ্রদের পর এটি বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লবণাক্ত পানির প্রাকৃতিক আধার। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪২০ মিটার ১,৩৭৮ ফিট নিচে এবং এটি পৃথিবীর নিম্নতম স্থলভূমি । এর লবণাক্ততা শতকরা ৩০ ভাগ এবং এটি সমুদ্রের পানির চাইতে ৮.৬ গুণ বেশি লবণাক্ত ।

প্রায় তিন মিলিয়ন বছর পূর্বে বর্তমান জর্দান নদী ও মৃত সাগর এবং ওয়াদি আরাবাহ অঞ্চল লোহিত সাগরএর পানিতে বারবার প্লাবিত হত ।তার ফলে একটি সরু উপসাগরের সৃষ্টি হয় । উপসাগরটি জেজরিল উপত্যকায় একটি সরু সংযোগের মাধ্যমে লোহিত সাগরের সাথে যুক্ত ছিল ।প্রাকৃতিক তত্ত্ব অনুযায়ী প্রায় ২ মিলিয়ন বছর পূর্বে উপত্যকা এবং ভূমধ্যসাগর এর মধ্যবর্তী স্থলভাগ যথেষ্ট উচ্চতা লাভ করে । ফলে মহাসাগরের প্লাবনে এই অঞ্চলে সৃষ্ট উপসাগরটি পরিবেষ্টিত হয়ে হ্রদে পরিণত হয়।প্রায়৭০০০০ বছর পূর্ব থেকে ১২০০০ বছর পূর্ব পর্যন্ত ডেড সির পানির উচ্চতা বর্তমান উচ্চতার চাইতে ১০০ থেকে ২৫০ মিটার বেশি ছিল । ২৬০০০ বছর পূর্বে এটির পানি সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছে ।প্রায় ১০০০০ বছর পূর্বে এর পৃষ্ঠ উচ্চতা নাটকীয় ভাবে হ্রাস পেতে শুরু করে দেয় যা সম্ভবত বর্তমান পৃষ্ঠ উচ্চতার চাইতেও কম ছিল ।গত কয়েক হাজার বছর ধরে এর পানির পৃষ্ঠ উচ্চতা মোটামুটি ৪০০ মিটারের আশেপাশে অবস্থান করছে।

এইন গেদির নিকটবর্তী অঞ্চলের ছবি মৃত সাগর তীরে জমে উঠা লবণ
বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে মহাসাগরের পানির তুলনায় ডেড সির পানিতে মিশে থাকা খনিজ উপাদানগুলোর পার্থক্য আছে । মৃত সাগরের পানিতে মিশে থাকা লবণে ১৪% ক্যালসিয়াল ক্লোরাইড ও ৪% পটাশিয়াম ক্লোরাইড এবং ৫০% ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইড আর ৩০% সোডিয়াম ক্লোরাইড আছে ।অনেকে বিশ্বাস করেন যে ডেড সি এর কাদা অনেক ধরণের রোগ নিরাময়ে সহায়ক ।এর লবণাক্ততা শতকরা ৩০% । তার ফলে পানির ঘনত্ব ১.২৪ কেজি/লিটার ।উচ্চ প্লবতার দরুন যে কেউ মৃত সাগরের পানিতে ভেসে থাকতে পারে । তার অনেকখানী আচরণ যুক্তরাষ্ট্র এর ইউটাহ তে অবস্থিত গ্রেট সল্ট লেক এর মত ।
উচ্চ লবণাক্ততার ফলে সৃষ্ট প্লবতায় মৃত সাগরে ভেসে আছেন একজন পর্যটক

অনেকেই বিশ্বাস করেন ডেড সি এর কাদা অনেক ধরণের রোগ নিরাময়ে সহায়ক তাই একজন রোগী তার শরীরে কাদা মেখে দাঁড়িয়ে আছেন সাগরের কিনারায়
মৃত সাগর অঞ্চলটি এখন বেশ একটি চিকিৎসা শাস্ত্রের গবেষণাস্থল হয়ে উঠেছে । তার মূল কারন হ্রদের পানিতে খনিজ দ্রব্যাদির বিপুল উপস্থিতি পাওয়া যায় তাছাড়াও বাতাসে এলার্জি উৎপাদক দ্রব্য এবং পরাগরেণুর স্বল্পতা ও উচ্চ ভূ-মণ্ডলীয় চাপ এবং সৌর বিকিরণে অতি বেগুনি উপাদানের কম উপস্থিতি । উচ্চ বায়ুমন্ডলীয় চাপ বিশেষ করে শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকা রোগীদের জন্য বেশ উপকারী।
চর্মরোগ সোরিয়াসিস psoriasis তার জন্য দীর্ঘসময় সূর্যস্নান বেশ উপকারী । এই অঞ্চলে অতি বেগুনি রশ্মির স্বল্পতা সূর্যস্নানের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টিতে বেশ সহায়ক ভূমিকা রেখেছে । তাছাড়াও রোগটি নিরাময়ে জন্য মৃত সাগরের লবণও বেশ উপকারী বলে বৈজ্ঞানিকদের গবেষণায় দাবী করা হয়েছে।

জীব এবং উদ্ভিদের বৈচিত্র
এই হ্রদে কোন উদ্ভিদ বা মাছ বাঁচে না বলেই মূলত একে মৃত সাগর বলা হয়ে থাকে । কেবল সামান্য কিছু ব্যাকটেরিয়া এব ছত্রাক অণুজীবের সন্ধান পাওয়া যায় ।মৃত সাগর তীরবর্তী পাহাড়ী অঞ্চলে উট খরগোশ , খেকশিয়াল এমনকি চিতাবাঘ দেখতে পাওয়া যায়। অতীতে জর্দান নদীর বদ্বীপ অঞ্চলে প্যাপিরাস এবং পাম গাছে সমৃদ্ধ বনভূমির অবস্থান ছিল । জোসেফাস তার লেখনীতে জেরিকো কে জুদিয়া অঞ্চলের সবচেয়ে উর্বরভূমি রুপে উল্লেখ করেন । রোমান এবং বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের সময় ইক্ষু , সিকামোর এবং হেনা এ অঞ্চলের উদ্ভিদ বৈচিত্রে সমৃদ্ধি এনে দেয় । জেরিকোতে বালসাম গাছের রস থেকে প্রস্তুত করা হত উন্নত মানের পারফিউম এবং সুগন্ধি । ১৯ শতকের মধ্যে জেরিকোর উর্বরতা অতীত ইতিহাসে পরিণত হয়।

বর্তমানে মানব বসতি
মৃত সাগরের তীরবর্তী এলাকায় একাধিক ক্ষুদ্র জনবসতি রয়েছে। এগুলোর মধ্যেে এইন গেদি নেভে যোহার এবং মিজিলট রিজিওনাল কাউন্সিলের অন্তভূক্ত কালইয়া, মিজপে, শালেম ও আভনাতের ইসরায়েরী জনবসতিগুলো উল্লেখযোগ্য। এইন গেদিতে একটি প্রাকৃতিক সংরক্ষণাগার ও একাধিক হোটেল রয়েছে যেগুলো নেভে যোহারের নিকটবর্তী এইন বোকেক শহরের দক্ষিণপশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত। তাছাড়াও ইসরায়েলের সবচেয়ে দীর্ঘ রাস্তা এবং বিশ্বের সবচেয়ে নিচু হাইওয়ে হাইওয়ে ৯০ ইসরায়লী সীমানার মধ্যে উত্তর-দক্ষিণে মিচুলা শহর থেকে লেবাননের সীমান্ত ঘেঁষে দক্ষিণে অগ্রসর হয়ে ৫৬৫ কি.মি. ৩৫১ মাইল দূরত্ব অতিক্রম করে লোহিত সাগরের তীরবর্তী মিশরের ইলাত বন্দরে গিয়ে শেষ হয়। এটি সমুদ্র সমতল থেকে ৩৯৩ মিটার নিচে অবস্থিত। মৃত সাগরের তীরে জর্ডান অধ্যসিত এলাকায় পোতাস সিটি ও সুয়েইমা সহ বেশ কয়েকটি শহর রয়েছে। জর্ডানের হাইওয়ে ৬৫ উত্তর-দক্ষিন বরাবর জর্ডান সীমানার মাঝে মৃত সাগর পার দিয়ে আকাবা বন্দর পর্যন্ত বিস্তৃত।ইসরায়েলের আরাদ এর নিকটবর্তী অঞ্চলে প্রধান হোটেলগুলোর নির্মাণ শুরু হয় বিশ শতকের ৬০ এর দশক থেকে। সমসাময়িককালে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগের ফলে জর্ডান উপকূলও ব্যাপকভাবে সমৃদ্ধ হচ্ছে।

তথ্যসূত্র ইন্টারনেট ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক কিছু জানা হলৌ :)

প্রকৃতি আসলেই রহস্যের আধার সবসময়ই :)

১৯ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:০১

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ বিদ্রোহী ভৃগু ভাই।সবই শুধু রহস্যের আধারে ঘেরা জাল :)

২| ১৮ ই জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৬

নতুন বিচারক বলেছেন: চমতকার অজানা তথ্য্ দিলেন ।

১৯ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:০২

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই আপনাকে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.