নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছুটির দিন গুলোতে নিজের মনে যে অজানা ভয় বসত করছে

০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৩০

অনেক দিন পর ব্লগে আসলাম,এখন আর আগের মত আসা হয়না । আশা করি সকলেই ভালো আছেন । আসলে এখন আর আগের
মত সময় করে উঠতে পারি না তাই ব্লগেও তেমন আগের মত আসা হয় না ।আজ গত কয়েকদিনের কিছু ভাবনা
চারোদিকে করোনা ভাইরাস নিয়ে গুন গুনানি তার মধ্যে প্রথমে আমার চাকুরি লক আউট হল,মানে আমার চাকুরিটা চলে গেল।
চাকুরি চলে যাওয়ায় কয়েকদিন বাসায় রেষ্টে ছিলাম।চাকুরি চলে যাওয়ায় বাসায় বেকার সময় গুলো বাসায় টিভি সেটের সানে আর
ইন্টারনেটের মধ্যে দিয়ে কেটেছে । বিশেষ করে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর করোনা ভাইরাসে আক্রান্তে মানুষের মৃত্যুর মিছিল
দেখে দেখে মাঝে মধ্যে ওই সকল দেশে থাকা মানুষগুলোর পাশে নিজেকে দাঁড় করিয়ে দেখতাম আর ভাবতাম আসলে কারো
আপজন যদি মরে যায় আর মরে যাওয়ার পরে যদি সেই আপনজনের লাশ, ( যদি মুসলিম হয় ) কোনো গোসল জানাজা ছাড়াই
মাটিতে পুটে ফেলা বা পুরে দিতে হয়,তখন সেই আপনজনের মৃত্যু কতটা কষ্টদায়ক হয় ।লাশ থেকে কম হলেও ২০ফুট দুরে
দাঁড়িয়ে বেঁচে থেকেও যেন মাটির ভাস্কর হয়ে যাওয়ার মত ।

মার্চের দশ তারিখে আবার নতুন অফিসে নতুন করে চাকুরিতে জয়েন্ত করতে হল। অফিস ষ্টাফদের মাঝে মাঝে বলতে শুনতাম,
সামনের দিন গুলো চীন এবং ইতালি মত কি আমাদের দেশেও মৃত্যুর মিছিল হবে ।আর একবার যদি আমাদের দেশে সেরকম
মৃত্যুর মিছিল হয় তাহলে সেই মৃত্যুর মিছিল শেষ গন্তব্য কোথায় ? সে কথা কারো জানা নাই ।তাই আমাদের দেশেও যত দ্রুত
সম্ভব লক আউট করা প্রয়োজন ।তাহলে হয়ত এই মৃত্যুর হার কিছুটা হলেও কম হওয়ার সম্ভবনা আছে ।

যাক মার্চের ২৫ তারিখ থেকে দেশের অনেক অফিস শপিংমল ও বড় বড় মার্কেট এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছুটি দিয়ে দেয়া হল ।
সেই সুবাধে আমাদের অফিসও লক আউট করা হল । অফিস থেকে বস নির্দেশ দিলেন এই লক আউটের সাধারন ছুটিতে
কেউ যেন ঢাকার বাহিরে বা গ্রামের বাড়িতে না যায় ।বস আরো বললেন যদি কোনো ভাবে খবর নিয়ে জানা যায় কোনো
ষ্টাফ এই ছুটিতে ঢাকার বাহিরে যাওয়ার খবর তাহলে সেই ষ্টাফকে লক আউটের পরে অফিস খোলার পর এক মাস অফিসে
ঢুকটে দেয়া হবেনা এবং দুই মাসের বেতন কাটা পরবে ।বসের কথা হল ইতালি সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অনেক
নাগরিক বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পালিয়ে আছে,তাই শহরের চেয়ে গ্রামেই করোনা ছড়ানোর সম্ভবনা বেশি ।আর
ষ্টাফরা যদি এই ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে যায় তাহলে নিশ্চিত তারা করোনায় আক্রান্ত ঢাকায় ফিরবে ।
তাই কিছুটা কৌশল করে বস ছুটির কোনো সময় সীমা দিলেন না । শুধু বললেন এপ্রিলের ৪ তারিখের পর যে কোনো
সময় অফিসে ডাক দেয়া হতে পারে ।

যাইহোক অফিস থেকে নিদিষ্ট কোনো সময় বেঁধে না দিলেও আমি মনে মনে ঠিক ধরতে পেরেছি এই ছুটিটা কম হলেও ১০ থেকে ১৫ দিন হতে পারে,তাই সেদিন বাসায় ফেরার পথে যাতে এক সপ্তাহ আর বাজার করা না লাগে,মোটামুটি এক সপ্তাহের নিত্যপ্রয়োজনীয়
সব কিছু কিনে বাসায় ফিরলাম ।

অফিস ছুটির গত কয়েকদিন বাসায় বসে থাকতে থাকতে মনটা যেমন ফাফর ফাফর লাগছিল,তেমন গত কয়েকদিন বাসা থেকে না বের হতে হতে মনেও একটা কেমন জানি ভয় ভয় লাগছিল,বিশেষ করে অনলাইন নিউজ আর ফেসবুক ও টিভির সংবাদগুলো,বিশ্বের বিভিন্ন
দেশের মৃত্যুর খবর দেখে ! মনে হচ্ছিল এই বুঝি ঘর থেকে বের হলেই করোনা ভাইরাস এসে শরীরে চেপে বসবে ।

অবশেষে সব ভয়ভিতিকে দুরে ঠেলে দিয়ে মনটাকে হালকা করার জন্য আজ বিকেলে একটু বাহিরে বের হয়েছিলাম ।রাস্তায় হাটতে হাটতে হঠাৎ শুনতে পারলাম একজন ভদ্রলোক,রাস্তার পাশে খোলা জায়গায় চেয়ারে বসে থাকা অল্প বয়সের কয়েকজন ছেলেদের
উদ্ধেশ্য করে বললেন,বাবারা তোমরা কোনো কাম কাজ না থাকলে শুধু অযথা বাসার বাহিরে বসে নিজেদের জীবনকে বিপদের দিকে
ঠেলে দিওনা । আসলে তোমরা লক ডাউনকে হাসি খেলনা মনে করোনা । লক ডাউনের গুরুত্বটা যখন লক ডাউন শেষ হয়ে যাবে সব
অফিস,স্কুল,কলেজ খোলা শুরু হবে,আর চোখের সামনে দেখবা,কালবৈশাখী ঝড়ের মত মৃত্যুর,আর করোনা আক্রান্তের ঝর,সেদিন
হয়ত আজকের লক ডাউনের মর্মতা বুঝবে ।এখনত শুধু বিশ্বের অন্যান্য দেশের মৃত্যুর মিছিল দেখতেছ টিভি সংবাদে,হয়ত আল্লা
না করুক এমন মৃত্যুর মিছিল আমাদের দেশেও হতে পারে যদিনা এখন থেকেই আমরা সচেতন না হই ।ভদ্র লোক কথা শেষ করে চলে
গেলেন ।যে ভয়কে ঘুম পারানো গান শুনিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রেখে,সব ভয় মন থেকে ঝেরে ফেলে দিয়ে বাসা থেকে রাস্তা্য় বের হয়ে ছিলাম, কিন্ত ভদ্র লোকের কথা শুনে মনে আবারো অজানা অদেখা সেই ভয় আবারো মনের কুটিরে বাসা বেঁধেছে । আসলেতো এই লক ডাউন
আর কতদিনই বা থাকবে ? দশদিন,পোনেরোদিন ,বা এক মাস তারপর একদিন না একদিন আবারো সব খুলে যাবে বা খুলে দেয়া হবে।
আর তখন পরিস্থিটিটা কি হবে ? সে বিষয়টা কি সরকারি ভাবে কোনো পদক্ষেপ রাখা হয়েছে বা করা হয়েছে ।নাকি সত্যিই আমাদের
দেশের বিশ্বের অন্যান্য দেশ যেমন চীন,ইতালির মত মৃত্যুর মিছিল মিশে যাবে বাংলার আকাশে বাতাসে ।লক ডাউনের পর যে সময়টা আমাদের সামনে আসতেছে সেই সময়টার পরিস্থিটি মোকাবেলায় আমাদের দেশের সরকার কি পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন ?
নাকি আমাদের এমপি মন্ত্রীরা শুধু শুধু মুখের বুলি দিয়েই তাদের দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছেন ?
জানিনা আজ কেন যেন ভদ্রলোকের কথাগুলো শুনে, মনে অদেখা মৃত্যুর মিছিলের ভয় ঢুকে গেল ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৫১

ফয়সাল রকি বলেছেন: খবরে দেখলাম, মৃতদেহে নাকি ভাইরাস ২/৩ ঘন্টার মতো একটিভ থাকে, তারপর নাকি ছড়ায় না।

০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৫৬

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: তাহলে করোনায় আক্রান্ত মৃত ব্যক্তিদের লাশ নিয়ে এত ভয় কেন ? যে ভয়ের কারনে একজন মরে যাওয়া ব্যক্তির ধারে
কাছে কেউ যায়না ।

২| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: কোনো এক বিশেষ কারনে আমাদের দেশে দূর্ঘটণা খুব কম ঘটে।
দেশে যে পরিমান অনিয়নম, সে পরিমান দূর্ঘটণা ঘটে না।
কোনো একটা বিশেষ রহমত আমাদের দেশের উপর আছে।

৩| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:০৪

নেওয়াজ আলি বলেছেন:

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.