অমা । মানুষ

০৬ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১:০৭

আমাদের পাশের পাড়ার অমা এসেছে আমাদের বাড়িতে-হলুদ বাটা নিতে । ও খালামনি ,খালামনি করে ঢাকছিলো -আমি বের হয়ে আসতেই ওর গলার স্বর নিচু হয়ে যায়! আমার দিগে তাকিয়ে মিন মিনিয়ে বলে খালামনি বাসায় নেই? এসেছিলাম হলুদ বাটা নিতে! বাবা বাজার থেকে ভুলে কাচাঁ হলুদ আনেনিতো !, খালাম্মাকে একটু ঢেকে দিন না? হলুদ নিয়ে দ্রুত যাই । খালা নেই, তুমি আমাকে বলো এনেদিই? । অমা কিছুক্ষন নীরব থেকে বললো :-না থাক আমি বরং শ্যামাদের বাড়ি থেকে নিয়ে যাই ।
-কেন? আমাদের বাড়ি থেকে নিলে অসুবিধে কোথায় ? আমাকে বলো-কাচাঁ হলুদ দিননা , দেখো আমি এনে দিই কিনা?
অমা কিছুক্ষন সময় নিয়ে বললো:-একটু কাচাঁ হলুদ বাটা দেবেন? বাবা বাজার করে নিয়ে এলে ফেরত দিয়ে যাবক্ষন ।
এরপর ঘর-দুর খোজেঁ এক কৌটু কাচাঁ হলুদ বাট অমার হাতে দিলুম ।
অমা কাচাঁ হলুদ হাতে নিয়ে বললো- আমি যাই এখন ।
আমি বললাম:-চাঁ খেয়ে যেতে পারো ।
অমা: নাগো । এই তো কিছুক্ষন আগেই চাঁ বাদাম খেয়ে এলুম।
আমি: কি বাদাম? চিনে বাদাম?
অমা: নাগো, ওটা ছিল মটর বাদাম।
আমি: উ, হা তোমাদের মটর ক্ষেত আছে যে ।
অমা: হুম । আছেই তো! তবে এবার ফলন ভালো হয়নি,বাজারে ভালো দর যাচ্ছে না । ৮০ টাকার নিচে নেমে এসেছে দর।
আমি: তুমি কি হিসেব,নিকেস বুঝ অমা?
অমা: বুঝবো না কেন? ওগুলো তো সহজ হিসেব । খাতা-পত্র নিয়ে বসলেই হয়ে যায় ।
আমি: তোমাদের পাটের খবর কি? পাটের চাষ কেমন হলো।
অমা: পাটেরটা একটু ভালোই । গত বছরে একটু খারাপ ছিল ।
আমি: আমার পাট শাক অনেক প্রিয়, কিছু কচি পাট পাতা দিয়ে যেয়ো তো ।
অমা: আচ্ছা নিয়ে আসবোক্ষন । এখন যাই, মা বুঝি আবার পথ চেয়ে রইলো!
আমি হেসে বললাম:- আচ্ছা যাও ।
আমা হলুদ বাটা শুকতে শুকতে চলে গেল । কি জানি হলুদ বাটা বাসি ছিল কিনা?
২
ঐ দেখ দেখ অমিয়া- ঔযে ছোট্ট লোকটা আস্ত সিগারেট টানচ্ছে । দেখতো পাচ্ছিনে সই, ওটা ছোট্টলোক নয় আমাদের চেয়ে কিঞ্চিত বেটে হবে! তাই বলেই ওরকম । সেই যে গত পুর্জাতে ছোটমামা বাড়ি গিয়েছিলাম,পেয়ারা বনে হলুদ টিয়ারা আহ্রলাদের কেচ্ছা শুনিয়েছিল । আমাদের কি হয়েছিল জানিস-রাত্রি অব্দী একাককার হয়ে মিশেছিলাম চাদেঁর সাথে সন্ধি করবো বলে, চাঁদ আর ফুটে উঠেনি ,গাঢ় অন্ধকার দেখিয়েছে পথ । যতদিন পৃথিবীতে ব্যস্তছিলাম শুধু অন্যদের জন্য জানিস! নিজর জন্য কতটুকুই করেছি? তাহলে কি আমার যা সব অন্যর নয়?
৩
দুপুরের ছায়া পড়ে আসে, কড়া রৌদ্রে সেন্ট্রলার হৃদয় থেকে আমি এই মানুষ ! জাগতিক তোমাদের পৃথিবীতে প্রেম ছুটে যায়-জোরাতালি দেয়া মিলনের স্পব্ধন । তোমাকে এক রকম বেধেঁ রেখেই জীবন , তাইতো যতদিন তোমাকে খোজঁতে তোমাদের গলিতে গিয়েছি ,একরাশ বিষাদ পকেটে করে নিয়ে এসেছিলাম ।
আজ-কালতো বাদামী রঙের চোখ খোজঁচ্ছো তুমি, ততদিন আমিও হাফিয়ে বেড়াচ্ছি । আমি শুধু হাফঁ ছেড়ে বাচঁবার জন্য সমুদ্র খোজিঁ! সেই জল আমাকে নিয়ে যাবে কোন-পূর্বদিনের মহাকালে ।

০ টি +০/-০