নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আধাঁরে জীবন

সময়টাকে থামানো যায় না

আধারে জীবন

সাধারন একজন মানুষ.

আধারে জীবন › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনলাইন নীতিমালা এবং আমাদের ব্যর্থতা!

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫১



১২ই সেপ্টেম্বর ২০১২ সাল। অনলাইন গনমাধ্যমগুলোর জন্য এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। ঐদিন বাংলাদেশের অন্যান্য গণমাধ্যমগুলোর মতই এই শ্রেণীর গণমাধ্যমগুলোর গলা চেপে ধরতে চেয়েছিল গুটি কয়েকজন। ঘোষনা করা হয় অনলাইন গণমাধ্যম পরিচালনা (খসড়া) নীতিমালা-২০১২। সেখানে ৫ লক্ষ টাকা লাইসেন্স ফি উল্লেখ করা ছিল। তবে তাদের সে প্রচেষ্টা সফল হয়নি। সোচ্চার হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে থাকা অনলাইন গণমাধ্যমের পিপাসুরা। এর পর থেকেই থমকে যায় তাদের সকল প্রচেষ্টা।

এরই ধারাবাহিকতায় ১৬ই মার্চ ২০১৫-তে পুনরায় একটি খসড়া নীতিমালা মন্ত্রীসভায় অনুমোদনের জন্য স্থান পায়। যেটি ছিল গণবান্ধব।

যে কারণে নীতিমালা প্রয়োজন:

প্রতিটি বিষয়েরই নীতি থাকা উচিত। নীতি ছাড়া এ সমাজে চলা খুব কঠিন। সমাজে একটি শক্তিশালী গণমাধ্যম হিসেবে স্থান করে নিতেই প্রয়োজন এই নীতিমালার। নয়ত এই অনলাইন ব্যবহার করেই সংগঠিত হতে পারে বড় বড় অপরাধ। হতে পারে রাষ্ট্রদ্রোহী কার্যকলাপ।

বাংলাদেশে অনলাইন গণমাধ্যমগুলোর বর্তমান অবস্থান:

বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি অনলাইন নিউজ পোর্টাল রয়েছে। যার বেশিরভাগই ব্যাক্তিমালিকানাধীন। সহজ এবং সাধ্যের মধ্যে থাকায় একটি পোর্টাল চালু করা খুব সহজ বিধায় খুব দ্রুতই অনলাইনের সংখ্যা বাড়ছে। বাংলাদেশের অনলাইন গনমাধ্যমগুলো বর্তমান অবস্থান পর্যালোচনা করলে কতগুলো বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান।
১. নিজস্ব সংবাদদাতা না থাকায় বেশিরভাগ অনলাইনগুলোকেই শীর্ষ স্থানীয় পত্রিকাগুলোর উপর নির্ভর করতে হয়। সে ক্ষেত্রে সংবাদের উপকরণ হল কাট, কপি, পেষ্ট।
২. বেশিরভাগ অনলাইনগুলোতেই যে মালিক সেই সম্পাদক, প্রকাশক, আপলোডার, সাংবাদিক প্রভৃতি।
৩. পাঠক টানতে বেশ কিছু অনলাইনকে অশ্লীলতার আশ্রয় নিতে দেখা গেছে। তারা বিভিন্ন রকম ছবি, ভিডিও এবং যৌন উত্তেজক কন্টেন্ট ব্যবহার করে থাকে।
৪. যে সকল অনলাইনগুলো শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে তার বেশিরভাগই কোন নির্দিষ্ট গোষ্টি, প্রতিষ্ঠান বা ব্যাক্তির অধিনে পরিচালিত হচ্ছে। নিজেদের প্রতিষ্ঠানের কালো টাকাকে সাদা করার ক্ষেত্রেও অনলাইনকে ব্যবহার করছে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান।
৫. বাংলাদেশের অনলাইনগুলোকে এখনও স্বীকৃত কোন গণমাধ্যমে রুপান্তিরত হতে পারেনি। কারণ হল এর মান এবং সরকারের অবহেলা।
৬. বেশিরভাগ অনলাইন পোর্টালগুলোই কয়েক বছর টিকতে পারেনা। এর কারণ হল আর্থিক অসমর্থ।

বর্তমানে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন:

আমরা সাধারণত অনলাইনগুলোকে বিচার করি এলেক্সা র‌্যাকিং এর ভিত্তিতে। এ্যালেক্সা র‍্যাঙ্ক ওয়েবসাইট এর জনপ্রীয়তা পরিমাপক একটি ওয়েবসাইট। এই সাইটের মাধ্যমে আপনি আপনার পছন্দের যে কোন ওয়েবসাইটের জনপ্রীয়তা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য পরিমাপ করা যায়। বিগত ৩ বছরের বিবেচনায় শীর্ষ স্থানীয় অনলাইন গণমাধ্যমগুলো ক্রমান্নয়ে নিম্নরুপ (১৫ই এপ্রিল ২০১৫ প্রর্যন্ত):
১. বিডিনিউজ২৪ (এ্যালেক্সা ৭)
২. বাংলানিউজ২৪ (এ্যালেক্সা ১০)
৩. বাংলামেইল২৪ (এ্যালেক্সা ১৭)
৪. বিডি টুয়েন্টিফোর লাইভ ডট কম (এ্যালেক্সা ২২)
৫. রাইজিং বিডি ২৪ (এ্যালেক্সা ৩২)
৬. ঢাকা টাইমস ২৪ (এ্যালেক্সা ৪৪)
৭. শীর্ষ নিউজ ২৪ (এ্যালেক্সা ৪৭)
৮. আরটিএনএন (এ্যালেক্সা ৬২)
৯. নতুনবার্তা (এ্যালেক্সা ৬৩)
১০. বাসস (এ্যালেক্সা ৮৪)

এছাড়া বিগত এক বছরের মধ্যে বেশ কয়েকটি অনলাইন এ্যালেক্সা র‌্যাংক টপে এসেছে। এ্যালেক্সা যদিও দাবি করে তারা এই র‌্যাংক ভিজিটরের ভিত্তিতে তৈরি করে থাকে। তাদের দাবির পিছনে অনেক সমালোচনাও আছে। সে কারণেই দেখা যাচ্ছে ভিজিটর অনেক কম থাকা সত্ত্বেও নামসর্বস্ব কিছু অনলাইন এ্যালেক্সা র‌্যাংকের অনেক আগে চলে আসে। এগুলোর আবির্ভাব ঘটে কোন প্রতিষ্ঠানের বিশাল অর্থের ভান্ডার নিয়ে। তারা সেই অর্থের ভান্ডার ব্যয় করে এই অনলাইন পোর্টালের এ্যালেক্সা ধরে রাখার জন্য। কোন কোন অনলাইনকে ফেইসবুকে প্রচুর সংখ্যক লাইক কিনতেও দেখা যায়।

অনলাইন গণমাধ্যম টিকে থাকবে যোগ্যতার ভিত্তিতে:

অনলাইন গণমাধ্যম এমন একটি মাধ্যম যা টিকে থাকবে নিজের যোগ্যতার ভিত্তিতে। যোগ্যতা বলতে যা বুঝায় তা হল পাঠকপ্রিয়তা ও গ্রহনযোগ্যতা। এই দুইটি বৈশিষ্ট্য ধরে রাখতে পারলেই একটি পোর্টাল খুব সহযেই টিকে থাকতে পারবে। বাংলাদেশের শীর্ষ স্থানীয় পত্রিকাগুলোর বেশিরভাগই আর্থিক লোকসান দিয়ে পরিচালনা করে। সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রম দুই একটি। যেমন বিডি টুয়েন্টিফোর লাইভ ডট কম, যে পত্রিকাটিকে বাংলাদেশের একমাত্র স্ব-নির্ভর গনমাধ্যম বলা হয়। অনলাইনগুলোকে শুধুমাত্র একটি নীতিমালার মধ্যে এনে ছেড়ে দিলেই হবে। অনলাইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।

অনলাইন গণমাধ্যম হিসেবে স্বীকৃতি প্রয়োজন:

অনলাইন পোর্টালগুলোকে সরকারের অবশ্যই স্বীকৃতি দেয়া প্রয়োজন। কারণ এখনও প্রশাসন অনলাইন গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের মূল্যায়ণ করেনা। যার প্রেক্ষিতে এ খাতে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করেও যদি গণমাধ্যম হিসেবে স্বীকৃতি না পাওয়া যায় তাহলে তা খুবই দুঃজনক। সরকারের উচিত যোগ্যতা অনুযায়ী অনলাইন গণমাধ্যমগুলোকে অন্যান্য সংবাদমাধ্যমগুলোর মত সুযোগ সুবিধা দেওয়া।

একটা কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে এটা একটা সংবাদপত্র। শুধু কাগজে ছাপা হয় না। সংবাদপত্রের জন্য যা যা নীতিমালা রয়েছে, অনলাইনের জন্যও একই নীতিমালা প্রয়োজন। অনলাইন সংবাদপত্র গুলো নিজ অর্থে তাৎক্ষণিকভাবে দেশ এবং বিদেশে সংবাদ পৌঁছে দেবার গুরু দায়িত্ব পালন করলেও এই মাধ্যমের সাথে জড়িতদের তেমন মূল্যায়ণ করা হয় না। অনলাইন সংবাদপত্রের কথা শুনলেই অনেকেই তাচ্ছিল্য করে। তাই এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় ভাবে অনলাইন সংবাদ মাধ্যম ও এর সাথে জড়িতদের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য নীতিমালার কোন বিকল্প নেই।

[লেখাটি আমার নোট থেকে নেয়া]

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.