![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সৈয়দ মাইনুদ্দীন কামাল (বাবু) জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের বোলিং কোচ ইয়ান পন্ট গতকাল (৪ঠা ফেব্রুয়ারী) বাংলাক্রিকেট ফোরামে এসে বিশ্বকাপকে সামনে রেখে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রামী দর্শক-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বিশেষ অনুরোধ জানিয়ে একটি বার্তা পোস্ট করেছেন। একই সাথে তার এই বার্তাটুকু তিনি বাংলায় অনুবাদ করে যত বেশী সম্ভব মানুষের কাছে পৌছে দিতে আহ্ববান জানিয়েছেন সেই ক্রিকেট ফোরামের সকলকে। কোচ ইয়ান পন্টের এই অনুরোধে সারা দিয়ে তার ইংরেজী বার্তাটুকুর ভাবানুবাদ আমি এই ব্লগে পোস্ট করছি। মুল ইংরেজী বার্তাটুকু দেখা যাবে বাংলাক্রিকেট
(banglacricket.com) ফোরামে “এ রিকোয়েস্ট টু ফ্যানস” শিরোনামের থ্রেডে।
বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমী মানুষের কাছে ক্রিকেট যে কি বিশাল এক আবেগের নাম, তা আমরা বুঝি। আমি, ইয়ান পন্ট আর বাংলাদেশ দলে আমার সহকর্মী জুলিয়ান ফাউন্টেইন; আমরা দুজনই ইংল্যান্ডের মানুষ- সেখানে বার্মি-আর্মি নামের ক্রিকেট সমর্থকগোষ্ঠীও অনেকটা একই রকমভাবে মনে প্রানে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলকে সমর্থন করে।
তবে পার্থক্যের জায়গাটা বোধহয় এটুকুই যে, বার্মি-আর্মিরা এ পর্যন্ত কখনোই তাদের নিজের দলের খেলোয়াড়দের অপমানিত করে দুয়োধ্বনি দেয়নি। সব ব্যঙ্গ-তামাশা আর কটুক্তি তারা যেন জমা করে রাখে শুধু প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের জন্য। এই ব্যাপারটা খুব গুরুত্বপুর্ণ; কারন ভক্ত সমর্থকেরা দলেরই একটা অংশ। তাই প্রকৃত সমর্থকেরা শত ব্যর্থতায়ও নিজের দলের খেলোয়াড়দের দুয়োধ্বনি দিয়ে অপমানিত-লাঞ্ছিত করতে পারে না, কখনোই না। এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের প্রতিটি দর্শক-সমর্থক অবিচল ঐক্যে দলের পাশে দাঁড়িয়ে নিজেরাই হয়ে উঠতে পারে বাংলাদেশ দলের এক একজন সহকর্মী কিংবা দ্বাদশ খেলোয়াড়। ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের এই বড় আসরে বাংলাদেশের দর্শক-সমর্থকেরা এভাবেই দলের জন্য রাখতে পারে বিশাল ভুমিকা।
বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ চায় দলের সব কোচ আর খেলোয়াড়েরা নিঃস্বার্থ ভাবে একে অন্যকে সহযোগিতা করুক, দল ও দেশের জন্য নিজেদের সব সামর্থ্য উজাড় করে দিক। এই দেশের প্রতিটি মানুষ চায় দলের বিপদের মুহূর্তে প্রত্যেকে সামর্থ্যের প্রতিটিকণা ঢেলে দিয়ে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত একাট্টা হয়ে লড়াই চালিয়ে যাক।
আমরা চাই বাংলাদেশ দলের সমর্থকেরাও ঠিক একই দৃঢ়তা আর প্রতিজ্ঞা নিয়ে দলের জন্য নিজেদের উজাড় করে দিক।
দেশের ক্রিকেটপ্রেমী মানুষ কি হাতে হাত রেখে বাংলাদেশ দলের পাশে এসে দাঁড়াবে না? এ আমার একান্ত চাওয়াঃ জয়-পরাজয় যাই আসুক, বাংলাদেশ দলের পাশে দাঁড়ান। হৃদয়ের সব আবেগ দিয়ে দুর্বিপাকের মুহুর্তেও দলের পাশে থাকুন। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের আজ এটি এক জাতীয় দায়িত্ব। মনে প্রানে যে দলকে ভালোবাসে, সে কখনোই দলের বিপদের মুহূর্তে তীব্র হতাশায় হাল ছেড়ে দিতে পারে না, পারে না দুয়োধ্বনি দিয়ে নিজ দেশের খেলোয়াড়দের মনোবল চুর্ণ করে মাঠের লড়াইয়ে নিজেদেরকেই পিছিয়ে দিতে।
আমাদের মনে রাখা দরকার মাঠে গালি গালাজ বা কটুক্তি করলে আমরা কেবল আমাদের নিজদের খেলোয়াড়দেরই ক্ষতির কারন হয়ে দাঁড়াবো। বিদেশী খেলোয়াড়েরা আমাদের ভাষা জানেও না, তাই দর্শকদের হতাশা তাদের কোনভাবেই প্রভাবিত করবে না। দর্শকের দুয়োধ্বনিতে যদি কারো পারফর্মেন্সে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, তা পড়বে কেবল আমাদের খেলোয়াড়দেরই উপর।
তাই আসুন জয়-পরাজয়ে, সাফল্য-ব্যর্থতায়, সব সময়ে মনে প্রাণে বাংলাদেশ দলের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা এবারের বিশ্বকাপে সারা পৃথিবীকে দেখিয়ে দিই-দলের সমর্থনে, নিজ দেশের জন্য ভালোভাসায় আমাদের সমতুল্য আর কেউ নেই। দেখিয়ে দেই, আমাদের খেলোয়াড়েরা আমাদের গর্বের ধন। দেখিয়ে দেই বাংলাদেশের ১৪ কোটি মানুষের হৃদয়ে তারা এক একজন সংশপ্তক- শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে যারা এই দেশের সন্মানের জন্য, বিশ্বকাপ জয়ের জন্য প্রানপনে লড়ে যায়।
এটি বিশ্বকাপ- সব খেলোয়াড় কিছুটা হলেও মানসিক চাপ অনুভব করবে, খেলার মাঠে যা জন্ম দিয়ে পারে নানা ভুলের। মানসিকের চাপের মুখে খেলোয়াড়েরা কোন ভুল-ভ্রান্তি করলে দর্শক-সমর্থকদের প্রানঢালা সমর্থনই হয়ে উঠবে তাদের জন্য সবচেয়ে বড় আশার সম্পদ। আমাদের দর্শক-সমর্থকদের শতভাগ সমর্থনই পারবে বিশ্বকাপের বড় আসরে খেলোয়াড়দের মানসিক শক্তি যোগাতে আর সাহায্য করবে সব ভুল কাটিয়ে উঠতে।
আমি কাছ থেকে দেখেছি, নিউজিল্যান্ড দল মিরপুরে আমাদের দর্শকদের বিপুল সমর্থন আর চিৎকারের মুখে কি ভীষন দিশেহারা হয়ে পড়েছিল। দর্শকদের উল্লাস ধ্বনিতে তাদের কান ফেটে যাবার দশা হয়েছিল। বিশ্বকাপে আমি এটাই চাই। দর্শকদের এই প্রবল সমর্থনই আমাদের শক্তি। আমি চাই আমাদের ব্যাটসম্যানদের প্রতিটি রানের পর আনন্দ-হুঙ্কারে ফেটে পড়ুক সমস্ত স্টেডিয়াম। আমাদের বোলারদের প্রতিটি উইকেটের পর দর্শকের উল্লাস ধ্বনি সাত আসমান ছাড়িয়ে যাক। আর প্রতিপক্ষের যে কোন অর্জনকে যেন আমরা স্বাগত জানাই পিন-পতন নিস্তব্ধতায়। এই হুঙ্কার আর নিস্তব্ধতার আলো-ছায়ার খেলা বিচলিত করে দিতে পারে যে কোন প্রবল শক্তিশালী প্রতিপক্ষকেও। আসুন বাংলার মাটিতে খেলতে আসা সব প্রতিপক্ষের পায়ের নিচের মাটি আমরা কাপিয়ে দেই কানফাটানো আওয়াজ আর লাল-সবুজ পতাকায় স্টেডিয়াম ছেয়ে দিয়ে।
দেশের মাটিতে এবারের এই বিশ্বকাপ। এই শিরোপা জয়ের আকাঙ্ক্ষা অন্তরে ধারন করেই আমাদের দল মাঠে নামবে। দলের এই লড়াই তাদের একার নয়, আমাদের প্রতিটি দর্শক-সমর্থক এই লড়াইয়ের অংশীদার। আর অংশীদারিত্বের সাথেই আছে কিছু দায়িত্ব। আমরা আমাদের দেশের সন্তানদের কটুক্তি করবো না, দুয়োধ্বনি তুলবো না। যারা দেশের খেলোয়াড়দের লাঞ্ছিত করে, তারা আমাদের দলের বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নের সারথী হতে পারে না। আসুন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রতিটি খেলোয়াড়ের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা সবাই বিশ্বকাপ জয়ের লড়াইয়ে সামিল হই। বাংলাদেশ দল দেশের মানুষের জন্যই এই লড়াইটুকু করতে চায়। আমরা চাই দেশের সব দর্শক-সমর্থক বিশ্বকাপ উপভোগ করুক। আমরা নিজেরাও চাই এই বিশ্বকাপ উপভোগ করতে আর বিশ্বকাপে আমাদের প্রতিটি সাফল্য বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের সাথে ভাগ করে নিতে।
প্রতিটি খেলায় বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ান—একেবারে শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত।
বিনীত
ইয়ান পন্ট
বোলিং কোচ, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল
২| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ২:০৬
সরল জটিল বলেছেন: প্রতিটি খেলায় বাংলাদেশের পাশে আছি—একেবারে শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত। এগিয়ে যাও বাংলাদেশ।
৩| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ২:১৮
জিকসেস বলেছেন: আপনার ব্লগের লিঙ্ক দিয়ে এখানে নোট আকারে শেয়ার করে দিয়েছি। সবার জানার দরকার আছে।
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ২:২২
বাবুবাংলা বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ।
৪| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ২:২২
রাজ মো, আশরাফুল হক বারামদী বলেছেন: ব্রিটিশে ঠিকই কৈছে। ভারতের মত ক্রিকেট সংস্কৃতি যেন আমাদের মাঝে গেড়ে না বসে। আমাদের ক্রিকেট সংস্কৃতি হোক আরো উন্নতমানের।
৫| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:২২
ওরাকল বলেছেন: জয়-পরাজয় যাই ঘটুক সাথে আছি সবসময় ........।
মি, পন্টকে ধন্যবাদ তার আহ্বানের জন্য।
৬| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:১৪
ঝটিকা বলেছেন: মঈন চৌধুরী বলেছেন: অনেক সুন্দর আর পজেটিভ কথা বলেছেন ইয়ান পন্ট। এজন্য ধন্যবাদ জানাই তাকে। আশা করি সবাই তার কথাগুলোর মমার্থ বুঝতে পারবে। পোস্টের জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ।
"প্রতিটি খেলায় বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ান—একেবারে শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত।"
৭| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ৮:১২
আক্তার হোসেন বলেছেন: আপনার এই পোষ্টটা আমার ফেসবুকের ওয়ালে লিঙ্ক আকারে প্রকাশ করলাম।
৮| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ৮:১৫
ওয়াহিদ০০১ বলেছেন: জয় পরাজয় সবসময়েই দলের পাশে আছি।
৯| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ ভোর ৫:৫৫
আজম বলেছেন: মুগ্ধ হয়ে গেলাম পন্টের কথায়, তার কাজের বাইরে দর্শকদের নিয়েও চিন্তাকরছেন.........হার জিত পরের ব্যাপার, পুরো ক্রিকেট টিমকে এক সুতায় বাধাঁ দেখতে চাই। গর্ডন গ্রিনিজ, এডি বাড়ালো কথা মনে পড়ে গেল..... অনেক ধন্যবাদ আপনাকে লেখাটি অনুবাদ করার জন্য।
১০| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ ভোর ৬:০৭
প্রজন্ম৮৬ বলেছেন: রাজ মো, আশরাফুল হক বারামদী বলেছেন: ব্রিটিশে ঠিকই কৈছে। ভারতের মত ক্রিকেট সংস্কৃতি যেন আমাদের মাঝে গেড়ে না বসে। আমাদের ক্রিকেট সংস্কৃতি হোক আরো উন্নতমানের
আশরাফুলের ব্যাপারে আসলেই এই আশংকা সত্যি হওয়ার চান্স আছে।প্রতিটি বাংলাদেশী দর্শক যেন ব্রিটিশের চেয়ে বেশী বাংলাদেশী আচরন করে।
১১| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ ভোর ৬:১১
দ্যা ডক্টর বলেছেন: হায় হায়, পন্ট চিটাগং এ বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড টেস্টের শেষ বিকেলে আরো ক'টা উইকেট ফেলার ট্রাই না করে অধিনায়ক সুজনের নিজ হাতে বল তুলে নেয়াকে মনে করিয়ে দিল। সেদিন সার্কিট হাউস প্রান্তে তাকে যে দুয়ো দিছিলাম সে মনে হয় আজীবন মনে রাখবে। (২য় সেশনে সুজন প্রচুর পিটা খাইছিল)
সাধারন দর্শক যেটা বুঝে একজন অধিনায়কের রিস্থিতি আরো ভালো রিড করার ক্ষমতা থাকার দরকার না?
১২| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১:১৭
রাজর্ষী বলেছেন:
প্রতিটি খেলায় বাংলাদেশের পাশে আছি—একেবারে শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত।
১৩| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৫:৩৯
ইশতিয়াক আহমেদ বলেছেন: অদ্ভুত চিন্তা...মুগ্ধ হইলাম...সাবশ বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম...আমরা তোমাদের সাথেই আছি...
১৪| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:৩৫
নুভান বলেছেন: স্টিকি করা হোক, সবাইকে জানানো হোক ...।।
১৫| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ৩:৫৭
অপ্রিয় সত্য বলেছেন: খুবই পজেটিভ কথা।
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ২:০০
মঈন চৌধুরী বলেছেন: অনেক সুন্দর আর পজেটিভ কথা বলেছেন ইয়ান পন্ট। এজন্য ধন্যবাদ জানাই তাকে। আশা করি সবাই তার কথাগুলোর মমার্থ বুঝতে পারবে। পোস্টের জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ।
"প্রতিটি খেলায় বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ান—একেবারে শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত।"