নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ami babumohon

বাবু মুহন

বাবু মুহন › বিস্তারিত পোস্টঃ

গোখরা সাঁপ

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৩৪

প্রতিদিনের ন্যায় বিকেল বেলা তমাল বাড়ীর উঠোনে বের হয়েছে । উঠোনের পাশেই কবরস্থান । যেমন তেমন কবরস্থান নয় এটি । অনেক পুরাতন । বেশিরভাগ কবরের পরিচয় জানেনা কেউ । যে জাম গাছটার নিচে প্রতিদিন বসত আজও সেই জায়গায় দাড়িয়ে আছে তমাল। প্রকৃতির সবুজ ঘেরা অসম্ভব সুন্দর সৌন্দর্য উপভোগ করছে আর ভাবছে. . . . . .

কি বিচিত্র আল্লাহর সৃষ্টি! কত সুন্দর করে নিপুন হাতে গড়েছেন এই পৃথিবী। কোথাও কোন বিন্দু মাত্র ভুল নেই । সৃষ্টির কারুকার্য দেখে সেচ্ছায় সৃষ্টিকর্তার কাছে মাথা নত হয় তমালের। একমনে শুধু ভাবছে আর ভাবছে। কবরস্থানের দিকে তাকিয়ে মৃত্যুর কথা মনে পড়ে যায়। কি সম্বল আছে ওপারে যাওয়ার? আমার তো তেমন কোন পুণ্যই নেই। কিভাবে থাকবো ঐ অন্ধকার কবরে। যেখানে একদিন সবাইকেই যেতে হবে ।কি করেছি আমি এই ছোট্ট জীবনে? যেদিকে তাকাই সেদিকেই শুধু পাপাচার আর অনাচার।কেউ কি ভয় করেনা নাকি যে তাদের একদিন মরতে হবে । যেতে হবে সেই অন্ধকার কবরে। নাহ্ আর ভাবতে পারছিনা। আল্লাহর ভয়ে কেমন জানি অন্যরকম লাগছে। কেন জানি হঠাৎ বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো। ঠিক সেই সময় কোথা থেকে যেন সুললিত কন্ঠে কোরআন তেলাওয়াতের আওয়াজ শুনতে পায় তমাল। কান পেতে থাকে কোন দিক থেকে আওয়াজটা আসে। এমন সুমধুর সুরে কোরআন তেলাওয়াত ইতি পূর্বে কখনও শোনেনি। কে তাহলে এত সুন্দর করে তেলাওয়াত করছে ?

এমন সময় চোখ পড়লো তার থেকে ৩-৪ হাত দূরেই একটি গোখরা সাঁপ ফনা তুলে তার দিকে চেয়ে আছে। আর ঐ তেলাওয়াতের সুরটাও সাঁপটার কাছ থেকে আসছে । সাঁপটি মাথা দুলাচ্ছে আর অসম্ভব সুন্দর করে তেলাওয়াত করছে। তমাল ভেবে পায়না এখন তার কি করা উচিত? ভয়ে থরথর করেকাঁপতে লাগলো তমাল। দৌড় দিয়ে পালিয়ে যাওয়ারচিন্তা করে তমাল। কিন্তু তা আর হয়না যেন ।পাঁ টা যেন প্যারালাইজডহয়ে গেছে। কোন এক অদৃশ্য শক্তি যেন আটকে রেখেছে তাকে। সাঁপটি অনবরত তেলাওয়াত করেই যাচ্ছে।
কতক্ষন এভাবে কাটলো বুঝতে পারেনা তমাল। ভয় অনেকটাই কেটে গেছে। ভয় পাওয়ার কি আছে? সাঁপটা তো আর তার কোন ক্ষতি করছেনা। মনে মনে নিজেই নিজেকে সাহস দেয় তমাল। দেখিনা শেষ পর্যন্ত কি হয়। মনে হয় জ্বীন ভুত জাতিও কিছু একটা হবে এটা। শরীর থেকে টপটপ করে ঘাঁম পড়ছে যেন গোসল সেরে আসলো এখনি। কি আর করা, হাঁ করে সাঁপটার দিকে তাকিয়ে শুধু তেলাওয়াত শুনছে তমাল। তমালের মনে হলো সাঁপটা কোন একটা বড় সূরা ধরেছে এবং তা সম্পূর্নটা না শুনিয়ে ছাড়বে না। না শুনতে চেয়ে তো আর লাভ নেই। আর তাছাড়া শুনতে তো ভালোই লাগছে।
ছদাকল্লাহূল আযীম. .. .. ..

যেন জ্ঞান ফিরে পায় তমাল। এখন বোধহয় ছাড় পাবো । নাহ্ পাঁ তো উঠছেনা। আরো কি . .. . . . ?

মুখ ফসকে কথাটা বের হয় তমালের। চেয়ে দেখে সাঁপটার দিকে। হঠাৎ .. .

সাঁপটা তার চেহারা বদলালো। পরিনত হলো একটি মৌমাছিতে। সাইজটাও অন্য সব মৌমাছি থেকে অনেকটা বড়। আরে এতো দেখছি আমার দিকেই উড়ে আসছে। পালাই যদি কামড় মারে। তমালের পাঁ দুটো এবার কিন্তু ফ্রি হলো। এক দৌড়ে আঙিনায় এসে উপস্থিত। আর ঐ মৌমাছিটাও পিছন পিছন উড়ে আসে। এসে বসে আঙিনায় থাকা ঠিক লাউয়ের মাঁচার উপর। আর অদ্ভুত সব ঘটনা ঘটে যেতে লাগলো তখন। নিমিষেই লাউ গাছে ফুল আসলো। পরাগায়ন ঘটলো, লাউয়ের জালি গুলো অতি দ্রূত বড়ও হওয়া শুরু করলো। একি ! অবাক কান্ড। ব্যাপারটাতো মাকে জানানো দরকার, বলেই মা মা মা বলে ডাকতে থাকে তমাল। মা আসতে এত দেরি করছে কেন? জোরে জোরে ডাতে লাগলো মা ও মা ও মা. . .. . . . .

মাথায় কারও যেন পরশ অনুভব করে তমাল। চেয়ে দেখে তার মা। কিরে ঘুমের মধ্যে আমাকে ডাকছিস কেন? কোন স্বপ্ন দেখেছিস?

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:০১

সেলিম৮৩ বলেছেন: ভালো লাগলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.