নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভালো মানুষ হবার প্রচেষ্টায়....

https://www.facebook.com/akmbayezid

বায়েজিদ আহমেদ

বায়েজিদ আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আপনার ব্যাক্তিগত এবং সম্পত্তির নিরাপত্তায় বজ্রনিরোধক স্থাপন করুন।

০৩ রা জুন, ২০২২ রাত ১০:২৫



প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি নদীমাতৃক আমাদের এই বাংলাদেশ। ঋতুবৈচিত্রের কারনে আরামদায়ক পরিবেশ এবং অন্যান্য সুবিদার কারনে বিশ্বের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম একটি আবাসভুমি ষড়ঋতুর এই দেশ। তবে ঋতুবৈচিত্রের সুফলের পাশাপাশি কালবৈশাখী, বন্যা, সাইক্লোন ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাধ্যমে কুফল ও ভোগ করতে হয় দেশবাসীকে। বিগত কয়েক দশকে আরো একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মহামারী আকারে দেখা দিয়েছে তা হল বজ্রপাত(Lightning Strike)। শুধু মাত্র গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যানের দিকে তাকালেই বুঝা যাবে কেন এটাকে মহামারী বলা হচ্ছে। ২০১৬ সালে মে মাসের ২য় সাপ্তাহে প্রায় ৮১ জন লোকের প্রাণহানির ঘটনা পত্রিকায় এসেছে। শুধু তাই নয় বিশ্বে প্রতিবছর গড়ে প্রায় চার হাজার লোকের প্রাণহানির জন্য দায়ী বজ্রপাত। বাংলাদেশে এই সংখ্যা ২০০ থেকে ৩০০ তবে আশঙ্কার কথা হল দিন দিন প্রাণহানির ঘটনা বাড়ছেই।

বজ্রপাত কেন হয় বা ঘটে? এটি নিঃসন্দেহে একটি প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন। সকলের বুঝার সুবিদার্থে এবং লেখার কলেবর সীমিত রাখার জন্য এটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় যাব না। বজ্রপাত এর মূল উৎস হচ্ছে বায়ুমন্ডলে প্রবাহমান মেঘমালা। বাতাসে ভাসতে ভাসতে মেঘ ঘনীভূত হবার পাশাপাশি আয়নিত বা চার্জ(Charge) হতে থাকে। এই প্রকৃয়ায় ধনাত্মক(Positive Charge) চার্জ মেঘের উপরের দিকে এবং ঋনাত্মক চার্জ(Negative Charge) নিচের দিকে জমা হতে থাকে। এভাবে বিশাল মেঘে বিপুল পরিমান বৈদ্যুতিক আয়ন বা চার্জ জমা হয়। মেঘের নিচের দিকে থাকা ঋনাত্মক চার্জ মেঘ বরাবর ভুপৃষ্ঠের ইলেক্ট্রনকে বিকর্ষণ করে ফলে উক্ত অঞ্চল ধনাত্মক আধানে আহিত হয়। বিশাল চার্জের কারনে বাতাস আয়নিত হয়ে ডাই-ইলেক্ট্রিক(Dielectric) আচরণ করে। ফলে মেঘে জমা থাকা চার্জ আয়নিত বাতাসকে পথ হিসেবে ব্যবহার করে ভুপৃষ্ঠে ডিসচার্জ(Discharge) হয়। এই ঘটনাকেই আমরা বজ্রপাত হিসেবে দেখে থাকি।

একেকটি বজ্রপাতে দশ কোটি পর্যন্ত ভিবব শক্তি (Potential Volt)থাকে যার ক্ষমতা ১০০০ গিগা ওয়াট পর্যন্ত। বজ্রপাত থেকে উৎপন্ন এই বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ শক্তিকে ধারণ করে বিভিন্ন কাজে ব্যবহারের উপযোগী করে তুলতে এইবিষয়ে উৎসাহী বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন ধরনের গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এই বিদ্যুৎ ব্যাবহারের চেয়ে এর থেকে নিরাপদ থাকার জন্য বেশি সংখ্যক বিজ্ঞানী প্রযুক্তিবিদ নিয়োজিত রয়েছে। কারন ব্যাপক ধ্বংসক্ষমতা সম্পন্ন একটি বজ্রপাতের কারনে আপনার স্থাপনায় আগুন ধরে যেতে পারে, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম নষ্ট করে দিতে পারে, এমনকি কনক্রিটের স্থাপনায়ও ফাটল ধরিয়ে দিতে পারে। উঁচু খুটি বা গাছের উপর আঘাত হানলে তাতে আগুন ধরে যায়, মানুষ বা পশুর উপর বজ্রাঘাতে (Thunder Protection System ) মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।

বজ্রপাত থেকে নিরাপদ থাকতে করণীয়: মোবাইল ফোনে আবহাওয়া সম্পর্কিত অ্যাপস ব্যাবহার করে বজ্রপাত সম্মপর্কে অগ্রীম ধারনা পেতে পারেন। বজ্রঝড় সাধারণত ৩০-৪৫ মিনিট স্থায়ী হয়। এ সময়টুকু ঘরে অবস্থান করা। গভীর ও উলম্ব মেঘ(Vertical Cloud) দেখা দিলে ঘরের বাইরে বের না হওয়া। বজ্রপাতের সময় খোলা জায়গা বা মাঠ অথবা উঁচু স্থানে না থাকা। বজ্রপাতের আশঙ্কা হলে যত দ্রুত সম্ভব দালান বা কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নেয়া। উঁচু গাছপালা, বৈদ্যুতিক খুঁটি(Electric Pole) ও তার, ধাতব খুঁটি(Metal Pole) ইত্যাদি থেকে নিরাপদ দূরে থাকতে হবে। বজ্রপাতের সময় ধাতব হাতলযুক্ত ছাতা থাকলে তা বন্ধ করে ফেলা। এগুলো আপনাকে বজ্রপাতের কবলে পড়লে তাৎক্ষনিক ভাবে সয়হতা করবে।

বজ্রপাতে ব্যাক্তিগত নিরাপত্তা ছাড়াও স্থাপনা তথা আপনার ঘড় বাড়ি বা দালানকোঠা রক্ষায় অবশ্যই আপনাকে বজ্রপাত নিরোধক ব্যাবস্থা(Lightning Protection System) স্থাপন করতে হবে। বাংলাদেশ ইমারত নির্মাণ বিঁধিমালা ২০০৬(BNBC 2006) অনুযায়ী প্রত্যেক স্থাপনায় ঝুকি সুচক পরিমাপ (Risk Index Calculation) সাপেক্ষ বজ্রনিরোধক ব্যাবস্থা স্থাপন করতে হবে। বিঁধিমালায় ম্যাশ কন্ডাকটর(Mesh Conductor) ব্যাবস্থার কথা সুপারিশ করা আছে যা বিশ্বব্যাপি স্বীকৃত একটি পদ্ধটি। আমেরিকান ন্যাশনাল ফায়ার এসেম্বলি(NFPA), ব্রিটিশ স্ট্যান্ডার্ড(BS) সহ অনেক দেশীয় (e.g. AUS/NZ) এবং আন্তর্জাতিক (e.g. IEEE)স্ট্যান্ডার্ড এ ম্যাশ কন্ডাক্টর ব্যাবস্থার সুপারিশ(recommended) করা হয়েছে। একটি আদর্শ ম্যাশ কন্ডাকটর বজ্রনিরোধক ব্যাবস্থায় বজ্রনিরোধক দন্ড (Lightning Protection System), ম্যাশ কন্ডাকটর (Mesh Conductor), নিম্নগামী পরিবাহী (Down Conductor), গ্রাউন্ড ইলেকট্রড (Ground Electrode) এবং ইকো-পটেনশিয়াল বন্ডিং(Equipotential Bonding) ইত্যাদি থাকে।

এই বজ্রপাত থেকে নিজেকে রক্ষা করবার মত যথেষ্ট প্রযুক্তিগত উন্নয়ন আমরা করতে পেরেছি।যাকে বলা হচ্ছে Lightning Protection System। এর দুটি পদ্ধতি, একটি conventional আরেকটি ESE (Early Streamer Emission)। এগুলো আমাদের মত দুর্যোগ প্রবণ দেশে খুব ই দরকারি। আর সেটা অনুধাবন করেই Protart শুরু থেকেই এসব সিস্টেম বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে। যা আপনি পেয়ে যাচ্ছেন মুহূর্তের মধ্যেই।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জুন, ২০২২ রাত ১:২৯

রাজীব নুর বলেছেন: প্রযুক্তি এখন অনেক এগিয়ে গেছে। মানুষও এখন অনেক সচেতন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.