নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খুবই সাধারন একজন মানুষ । পড়া যার নেশা । পড়ার এবং জানার আশায় ----

মোহামমদ কামরুজজামান

মোহামমদ কামরুজজামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমেরিকান রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সর্বশেষ খবর - "হোয়াইট হাউসের দেরগোড়ায় জো বাইডেন"।(আমেরিকার নির্বাচন পরবর্তী ফলোআপ পোস্ট -২)

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:১২



যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউজের প্রবেশের স্বপ্ন শেষ পর্যন্ত পূরন হতে যাচছে ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেনের। ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ৫৩৮টি ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে চূড়ান্ত হিসেব মতে বাইডেন ৩০৬ টি ইলেক্টোরাল ভোট পেয়েছেন যেখানে ট্রাম্পের আছে ২৩২। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ম্যাজিক ফিগার ২৭০টি ইলেকটোরাল ভোটের দরকার ছিল।শুক্রবারের আগ পর্যন্ত বাইডেনের ইলেকটোরাল ভোট সংখ্যা ছিল ২৭৯ ও ট্রাম্পের ২১৭। গতকাল অ্যারিজোনা, জর্জিয়া ও নর্থ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্যের ফল ঘোষিত হয়।

অ্যারিজোনা ও জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে জো বাইডেন বেশি পপুলার ভোট পাওয়ায় ওই দুই অঙ্গরাজ্যের ২৭ ইলেকটোলার কলেজ ভোট তার ঝুলিতে জমা পড়ে। ফলে তার ভোট সংখ্যা দাঁড়ায় ৩০৬। অন্যদিকে নর্থ ক্যারোলিনার ১৫ ভোট নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মোট ২৩২ ইলেটোরাল ভোট ঘরে তুলতে সক্ষম হন।



এ যেন ২০১৬ সালের নির্বাচনের প্রতি উত্তর । সংখ্যা, ফলাফল ঠিক আছে শুধু দল ও ব্যক্তি পরিবর্তন হয়েছে। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক উল্টো হয়েছে এ বছরের ফলাফল। ওই বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ৩০৬ ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। অন্যদিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট প্রাথী হিলারি ক্লিন্টন পেয়েছিলেন ২৩২ ভোট।

জর্জিয়া রাজ্যে দুই প্রার্থীর ভোট খুব কাছাকাছি থাকায় এর আগে বলা হয়েছিল, সেখানকার ভোট আবার গণনা করা হবে। কিন্তু শুক্রবার রাজ্যের নির্বাচনি কর্মকর্তারা ঘোষণা করেন, আরেকবার গণনা করা হলেও এই পরিসংখ্যানে কোনো পরিবর্তন আসবে না। এই রাজ্যে বাইডেনের জয়ের ফলে ১৯৯২ সালের পর এই প্রথম কোনো ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জর্জিয়ায় বিজয়ী হলেন।

জো বাইডেন এখন পর্যন্ত ৭ কোটি ৮১ লাখেরও বেশি ভোট পেয়েছেন।আর ট্রাম্প এখন পর্যন্ত ৭ কোটি ২৭ লাখের মত ভোট পেয়েছেন।

নির্বাচনের কিছু খুটিনাটি যা জানা দরকার -

১।মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের রীতি ভঙ্গ করে এখন পর্যন্ত বাইডেনকে অভিনন্দন জানাননি ট্রাম্প।
২।জো বাইডেন তার জয়ের জন্য যে সকল শংকা বিদ্যমান ছিল সে সব দূর করে দিয়েছেন অ্যারিজোনায় জয়ের মাধ্যমে ।
৩।নির্বাচনের কর্মকর্তারা ট্রাম্পের ভোটিং সিস্টেমের জালিয়াতির ধারনার বিরুদ্ধে সরাসরি বিরোধিতা করেছেন।
৪। জর্জিয়ার ফলাফল ঘোষনার মাধ্যেমে জো বাইডেনের সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার তথা হোয়াইট হাউস তার নাগালের মধ্যে আসে।
৫।আজীবন ক্যাথলিক অনুসারী জো বাইডেন পোপ ফ্রান্সিসের কাছ থেকে অভিনন্দন গ্রহণ করেছেন।




এদিকে ট্রাম্প যথারীতি এই ফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তার সমর্থকদের রাজপথে বিক্ষোভ দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন।ট্রাম্প এবারের নির্বাচনের আগ থেকেই কারচুপির আশঙ্কা প্রকাশ করে বহুবার বক্তব্য দিয়েছেন এবং ফল ঘোষণা শুরু হওয়ার পর একই অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আছেন। ট্রাম্পের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এক বক্তব্যে দাবি করেছেন,"প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আবার ক্ষমতা গ্রহণ করতে যাচ্ছেন"। কিন্তু শুক্রবারের চূড়ান্ত ফল ঘোষিত হওয়ার পর এখন ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষে একই দাবি করে যাওয়া অসম্ভব হবে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।

বিশ্ব নেতারা যারা এখন পর্যন্ত জো বাইডেনকে তার জয়ের অভিনন্দন জানিয়েছেন,তারা হলেন -কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো,ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন,ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রন,জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মার্কেল,আইরিশ প্রধানমন্ত্রী মিশেল মার্টিন,তুর্কি রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান,সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদ,অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন,দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতি মুন জা-ইন, জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা।

যদিও চীন ও রাশিয়া এখন পর্যন্ত জো বাইডেনকে তার জয়ের অভিনন্দন জানান নি তবে শুক্রবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র তার বক্তব্যে বলেন, "আমরা আমেরিকার মানুষের পছন্দকে সম্মান করি। আমরা বাইডেন ও মিজ হ্যারিসের প্রতি আমাদের অভিনন্দন জ্ঞাপন করছি "।

আর রাশিয়ায় ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেছেন, "আমাদের বিশ্বাস, নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফলাফল না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করাটাই সঠিক কাজ।"

এতোদিন নির্বাচনী ফলাফল মেনে না নিলেও সম্প্রতি অবস্থান বদলানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প। গতকাল শুক্রবার হোয়াইট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।জানা যায়, মার্কিন নির্বাচনের পর থেকে সংবাদমাধ্যমের সামনে আসেননি ট্রাম্প। গতকাল শুক্রবার হোয়াইট হাউজে সংক্ষিপ্ত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সে নীরবতা ভাঙলেন তিনি। সেখানে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। তবে পুনরায় লকডাউন জারি করা হবে না। তবে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বলা যাচ্ছে না। যেকোনো কিছু ঘটতে পারে। পরবর্তিতে কোন প্রশাসন এসে দায়িত্ব নেবে তাও বলা যাচ্ছে না। এর জন্যে আমাদের ধৈর্য্য ধরতে হবে।এএফপি বলছে, ট্রাম্পের এই ইঙ্গিতকে পরাজয় মেনে নেওয়ার আভাস বলে মনে করছেন অনেকেই।

যদিও নির্বাচনের জয় নিশ্চিত হওয়ার পর পরই প্রশাসন গুছানোর কাজ শুরু করে দিয়েছেন জো বাইডেন।অপরদিকে নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে আইনি লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতি এখনো চাপা উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার মধ্যেই আছে।তবে আশা করা যায় খুব শীঘ্রই এ অবস্থার অবসান ঘটবে এবং ট্রাম্প তার পরাজয় মেনে নেবেন

আশা করা যায় ,জানুয়ারি মাসের ২০ তারিখ জো বাইডেন ক্যাপিটাল হিলে লাখ লাখ মানুষের সামনে পাদ্রীর হাতে রাখা বাইবেল ছুঁয়ে শপথ নিবেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে। এই সময়ের মধ্যেই সদ্য সাবেক হওয়া প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হোয়াইট হাউস ছেড়ে যাবেন। আর শপথ গ্রহণের পর নতুন প্রেসিডেন্ট হিসাবে জো বাইডেন সরাসরি হোয়াইট হাউসে উঠবেন সপরিবারে।

পূর্বর্তী নির্বাচনী ফলোআপ পোস্ট ১ - Click This Link

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৪

চাঁদগাজী বলেছেন:



ট্রাম্প ঘোলা জল পান করবে; ট্রাম্পের বর্তমান আচরণের জন্য তাকে শাস্তি পেতে হবে।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৪

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ স্যার, আপনার মন্তব্য এর জন্য। ফাইনালি ট্রাম্প ফলাফল মানবে,এটা আশা করা যায় তবে কিছু ঘাপলা করতে চেস্টা করবে এটা সঠিক। আর আমেরিকার সাংবিধানিক প্রতিসঠান গুলি অনেক শক্তিশালী। তাই ট্রাম্প যা মন চায় তা করতে পারবে বলে মনে হয়না।

২| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: ট্রাম্প এর আচরন বাংলাদেশের রাজনীতিবিদের মতো হয়ে গেছে।

১৫ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:০৫

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রাজিব ভাই, আপনার মন্তব্য এর জন্য।

একজন মিথ্যাবাদী ও নীতি-নৈতিকতা বিবর্জিত মানুষ সমাজ-দেশ-রাষ্ট্রের শত্রু ।তা উন্নয়নশীল কি উন্নত রাষ্ট্র উভয় ক্ষেত্রেই।
আর " বাংলাদেশের কাছ থেকে আমেরিকার অনেক কিছু শেখার আছে " - বাণীতে - সি ই সি ।


তাই ট্রাম্প বাংলাদেশের কাছ থেকে কিছু শেখার এবং তা প্রয়োগ করার চেষ্টা করছেন তার দেশের মানুষের উপর। কারন ট্রাম্প এখন জানেন,একটা মিথ্যা যদি অনেক মিলে বার বার বলে তাহলে সেটাও সাধারন জনগন সত্যি বলে মেনে নিবে।আর তাইত ট্রাম্পের এত চেষ্টা ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.