নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছবি - samakal.com
মহান আল্লাহপাক রাব্বুল আলামীন ফেরেশতা হযরত জীবরাঈল (আঃ) এর কর্তৃক মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর মাধ্যমে পবিত্র হেরা গুহায় কুরআন শরীফ নাযিল করেছিলেন। এখন পর্যন্ত সারা বিশ্বে সর্বাধিক পঠিত গ্রন্থের নাম আল কোরআন।আল কোরআন স্বয়ং আল্লাহ প্রদত্ত এক কিতাব, যেখানে মানবজাতীর জন্য রয়েছে সংবিধান ও পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। এ বানী মানব জাতীর হেদায়েত স্বরুপ এবং জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষের জীবনে যা কিছু প্রয়োজন তার সব কিছুর দিকনির্দেশনা আল কোরআনে রয়েছে।
আমদের প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর ঊপর ফেরেশতা জীবরাঈল (আঃ) এর মাধ্যমে ধাপে-ধাপে ,খণ্ডে-খণ্ডে দীর্ঘ ২৩ বছরে পরিপূর্ণতা পায় কোরআন।প্রথম আয়াত নাজিল হওয়ার পরই স্পষ্ট হয়ে ওঠে এর আকর্ষণী ক্ষমতা। অশিক্ষিত বা জাহেলিয়াতের অন্ধকারে নিমজ্জিত মানুষগুলো পায় আলোর সন্ধান। সেই আলোয় বদলাতে শুরু করে মানুষ এবং তখনকার সমাজ এবং প্রথম আয়াত নাজিল হওয়ার ৫০ বছরের মধ্যে কোরআনের অনুসারীরা তদানীন্তন পরাশক্তি রোমান ও পারস্য সাম্রাজ্যকে নিশ্চিহ্ন করে পরিণত হয় তখনকার একমাত্র পরাশক্তিতে।
ছবি - shadow.com.bd
মানুষের এক জীবনে যা দরকার, তার সবই সাজানো রয়েছে কোরআনের পরতে পরতে। সুস্থ সুন্দর সুখী পরিতৃপ্ত জীবনের জন্যে যা প্রয়োজন, আলকোরআনের পাতায় পাতায় রয়েছে তারই দিক-নির্দেশনা।
সবকিছু মিলিয়েই জীবন। তাই সমস্যা শরীরের হোক বা মনের, যৌন জীবনের জট হোক বা অর্থনৈতিক জটিলতা, পণ্যের আসক্তি হোক বা প্রবৃত্তির দাসত্ব, ব্যক্তির অসততা হোক বা সামাজিক অবিচার, পার্থিব সুখ হোক অথবা পরকালীন পরিত্রাণ, সব একই সূত্রে গাঁথা। আর এ সব কিছুকে একটাকে আরেকটা থেকে আলাদা করা যায় না। কোরআন এই চিরায়ত সত্যকেই প্রকাশ করেছে সুস্পষ্টভাবে।
"পড়ো! তোমার সৃষ্টিকর্তা প্রভুর নামে। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে। পড়ো!আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু, যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। আর শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না"।( সূরা আলাক,আয়াত - ১-৫) এই আয়াত দিয়েই কোরআন নাজিলের সূচনা।
শুরুতেই কোরআন মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছে পড়তে ও জানতে। কোরআন অজ্ঞতাকে অভিহিত করেছে মহাপাপ রূপে। মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে জ্ঞানের পথে, মুক্তবুদ্ধির পথে। এমনকি বিশ্বাসের স্তরে পৌঁছার জন্যেও মানুষের সহজাত বিচারবুদ্ধির প্রয়োগকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে কোরআন। বৈষয়িক ও আত্মিক জীবনকেও একই সূত্রে গেঁথেছে কোরআন। সুস্পষ্টভাবেই বলেছে, আল্লাহর বিধান অনুসরণ করো। দুনিয়া ও আখেরাতে তুমি সম্মানিত হবে।
ছবি - sangbadchorcha.com
কোরআনের প্রথম আয়াত নাজিলের পর ২৩ তম বছরে নাজিল হওয়া সূরা বাকারার আয়াত - ২৮১ আল্লাহ বলেছেন, "তোমরা সেই দিন সম্পর্কে সচেতন হও, যেদিন তোমাদেরকে আল্লাহর কাছে ফিরিয়ে আনা হবে এবং তারপর প্রত্যেককেই তার কর্মফল পুরোপুরি প্রদান করা হবে। কারো ওপর কোনো অন্যায় করা হবে না"।প্রথম আয়াতে যেভাবে মানুষের জন্ম প্রক্রিয়ার নিরহংকার অবস্থার বিবরণ দেয়া হয়েছে, শেষ দিকের আয়াতেও একইভাবে বলা হয়েছে, কর্মের স্বাধীনতা দেয়া হলেও মানুষ জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে নয়। তার কর্মের যথাযথ ফল সে পাবে।
কোরআন নিঃসন্দেহে আল্লাহর কালাম। নাজিল হয়েছে আরবি ভাষায়। এর শব্দবিন্যাস, এর ছন্দ, এর সৌন্দর্য, এর ব্যঞ্জনা, এর অন্তর্নিহিত শক্তি, এর গভীরতা অতুলনীয়। তাই আজ পর্যন্ত এর একটি ছোট্ট সূরার সমকক্ষ সূরা কেউ রচনা করতে পারে নি। কোরআন যেহেতু আল্লাহ সরাসরি আরবি ভাষায় নাজিল করেছেন, তাই অন্য কোনো ভাষায় এর মহিমাকে অক্ষুণ্ন রেখে অনুবাদ করা কোনো মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়।
তবে আন্তরিকতা নিয়ে এর মর্মবাণী অনুধাবন করতে চাইলে যে-কোনো সাধারণ মানুষের পক্ষেই তা সম্ভব। কারণ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের হেদায়েতের জন্যেই কোরআন নাজিল হয়েছে। তাই কোনো বিষয়ে বিশেষজ্ঞ না হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহতে সমর্পিত একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আত্মনিমগ্ন হয়ে ধ্যানের স্তরে তাঁর কালামের মর্মবাণী উপলব্ধি করা খুব কঠিন কোন কাজ নয়।
ছবি - alokitoislam360.blogspot.com
কোরআন শতাব্দীর পর শতাব্দী জীবন ও জগৎ সম্পর্কে কোটি কোটি মানুষের অন্তর্দৃষ্টি খুলে দিয়েছে, বদলে দিয়েছে তাদের ভেতর থেকে, খুলে দিয়েছে তাদের সম্ভাবনার দ্বার, দিয়েছে প্রশান্ত ও পরিতৃপ্ত জীবন। তাই আল্লাহর কালামের মর্মবাণীতে আন্তরিকভাবে নিমগ্ন হলে, বার বার পড়লে, বুঝার চেষ্টা করলে বাক্যের গভীরে,কোরআনই কথা বলবে আমাদের সাথে এবং আমি- আপনিও বদলাতে শুরু করব ভেতর থেকে। ধর্মের মানবিকতার জ্ঞানে জ্ঞানী এক আলোকিত মানুষ হব আমরা । প্রথম যুগের কোরআন অনুসারীদের মতো আমরাও দুনিয়ায় সফল ও সম্মানিত হবো। আর আখেরাতের সম্মান তো শুধু স্রষ্টায় সমর্পিত সৎকর্মশীল মানুষদের জন্যেই। পরম করুণাময়ের করুণায় তারাই থাকবেন অনন্ত আনন্দলোকে।
পবিত্র কোরআনে মানব জীবনের সব দিকনির্দেশনার বর্ণনার পাশাপাশি মানবজাতীর প্রতি উপদেশ স্বরুপ বেশ কিছু আয়াত আছে।আসুন আমরা সেগুলো সম্পর্কে জানি -
আল কোরআনের উপদেশাবলী
১। প্রত্যেক জীবিত বস্তুই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে ।
"প্রত্যেক প্রাণীকে আস্বাদন করতে হবে মৃত্যু। আর তোমরা কিয়ামতের দিন পরিপূর্ণ বদলা প্রাপ্ত হবে। তারপর যাকে দোযখ থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, তার কার্যসিদ্ধি ঘটবে। আর পার্থিব জীবন ধোঁকা ছাড়া অন্য কোন সম্পদ নয়"। (সূরা আল ইমরান ,আয়াত ১৮৫) ।
২।আল্লাহর অনুগ্রহ রোধ করার কেউ নেই ।
"আল্লাহ মানুষের জন্য অনুগ্রহের মধ্য থেকে যা খুলে দেন, তা ফেরাবার কেউ নেই এবং তিনি যা ফিরিয়ে নেন, তা তিনি ব্যতিত কেউ খুলে দিতে পারে না। তিনি মহাপরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়"।(সুরা ফাতির, আয়াত - ২)।
৩।আল্লাহর অনুগ্রহ স্বীকার করো।
"হে মানুষ! তোমরা তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর। আল্লাহ ছাড়া কি কোন স্রষ্টা আছে, যে তোমাদেরকে আসমানসমূহ ও যমীন থেকে রিযিক দান করে? আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য ইলাহ নেই। কাজেই তোমাদেরকে কোথায় ফিরানো হচ্ছে? "(সুরা ফাতির, আয়াত - ৩)।
ছবি - shadow.com.bd
৪।নিশ্চয়ই শয়তান মানুষের শত্রু ।
"নিশ্চয় শয়তান তোমাদের শত্রু; কাজেই তাকে শত্রু হিসেবেই গ্রহণ কর। সে তো তার দলবলকে ডাকে শুধু এজন্যে যে, তারা যেন প্রজ্জলিত আগুনের অধিবাসী হয়"।(সুরা ফাতির, আয়াত - ৬)।
৫। আল্লাহর একত্ববাদের সাক্ষ্য।
"বলো, তিনিই আল্লাহ, একক ও অদ্বিতীয়।আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তার মুখাপেক্ষী। তার কোন সন্তান-সন্ততি নেই, আর তিনিও কারো সন্তান নন এবং তার সমতুল্য কেউই নেই"।(সুরা ইখলাস,আয়াত - ১-৪)।
=========================================
চলবে -
২৫ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:১২
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই, আপনার প্রথম এবং মন্তব্যের জন্য।
আসলে আল কোরআনে জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল কিছুই সহজ সরল ভাষায়ই বলা হয়েছে।আর আল্লাহপাক ও সহজ-সরলতা
পছন্দ করেন।খোলা মন নিয়ে আল কোরআন পড়লে,বুঝতে চেষ্টা করলে তা মানুষের জন্য মুক্তির আলোকবর্তিকা রুপেই ধরা দেয়।
আল্লাহপাক আপনার এ নেক ইচছা পূরণ করুন।
২| ২৫ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:০৮
অগ্নিবেশ বলেছেন: যাদের কাছে পার্থিব জীবন ধোঁকা ছাড়া আর কিছুই নয়, তাদের কাছ থেকে মানব সভ্যতা আর কিইবা আশা করতে পারে? মানব সভ্যতার অগ্রগতির ঠ্যাং এরাই টেনে ধরেছে। আবার লিখেছে মানব জাতির মুক্তি?? কার কাছ থেকে মুক্তি দেবে এরা?? ক্ষুধার থেকে মুক্তি দেবে?? মহামারি থেকে মুক্তি দেবে?? কিতাব পড়ে মানুষের নৈতিকতারও তো কোনো পরিবর্তন হয় না ! জেল খানায় কিতাব রেখে দিলে দলে দলে দরবেশ হয়ে যেত।
২৫ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:২৭
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ অগ্নিবেশ ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।
দুনিয়া আখেরাতের শস্যক্ষেত্র স্বরুপ। এ প্রসংগে আল কোরআনে বলা হয়েছে ,"আর এ দুনিয়ার জীবন খেল-তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয় এবং নিশ্চয় আখিরাতের নিবাসই হলো প্রকৃত জীবন, ঘদি তারা জানত"। (সুরা আল আনকাবুত - ৬৪)।
আপনি -আমি এ আয়াতের ব্যাখ্যা হয়ত এভাবে করতে পারি," শস্য ক্ষেত্রে মানুষ যেরূপ চাষাবাদ করে সেরূপ ফল লাভ করে। যেমন কেউ ধান চাষ করলে ধান লাভ করে আর গম চাষ করলে গম লাভ করে।তেমনি ভালো করে চাষাবাদ করলে ফসল বেশি ভালো হয় আর অলসতার কারণে চাষাবাদ না করলে জমি ফেলে রাখলে সে কিছুই লাভ করে না।
দুনিয়া ও আখিরাতের অবস্থাও ঠিক তেমন। আমরা যদি দুনিয়াতে ভাল কাজ করি, আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলি তাহলে আখেরাতে ভালো ফল লাভ করব।আর যদি নিজ ইচ্ছা মত চলাফেরা করি, অন্যায় ও পাপ কাজ করি তাহলে আমরা পরকালে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হব।সুতরাং পরকালের অনন্ত জীবনের জন্য দুনিয়াতেই আমাদেরকে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
আল কোরআনে মানুষের জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল কিছুই সহজ সরল ভাষায়ই বলা হয়েছে। তা অনুসরন করলে মানব জাতির মুক্তি মিলবে ক্ষুধা থেকে,দারিদ্র্যতা থেকে,জীবনের সব সমস্যা থেকে, পেরেশানী থেকে।সব কিছু মেনে চলার পরেও আল্লাহপাক মানুষকে তার ঈমান পরীক্ষার জন্য তাকে বিপদ-আপদ-বালা-মুসিবত দিয়ে পরীক্ষা করেন।
এব্যাপারে আল্লাহপাক বলেন ,"আমি অবশ্যই তোমাদেরকে কিছু না কিছু দিয়ে পরীক্ষায় ফেলবোই। মাঝে মধ্যে তোমাদেরকে বিপদের আতঙ্ক, ক্ষুধার কষ্ট দিয়ে, সম্পদ, জীবন, পণ্য-ফল-ফসল হারানোর মধ্য দিয়ে। আর যারা কষ্টের মধ্যেও ধৈর্য-নিষ্ঠার সাথে চেষ্টা করে, তাদেরকে সুখবর দাও"। (সুরা আল-বাক্বারাহ,আয়াত - ১৫৫)।
কিতাব রেখে দিলে হবেনা ।আমল করতে হবে যথাযথ তাতেই মিলবে মুক্তি । ফেলে রাখলে লোহায়ও মরিচা ধরে আর মানুষ ত মানুষ।তবে একথা সত্যি যে,খোলা মন নিয়ে আল কোরআন পড়লে,বুঝতে চেষ্টা করলে তা মানুষের জন্য মুক্তির আলোকবর্তিকা রুপেই ধরা দেয় এবং দিবে।
৩| ২৫ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৪:০৫
ওমেরা বলেছেন: অনেক ভালো লাগলো লিখা । ধন্যবাদ নিবেন আর আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন ।
আমাদের হেদায়াতের পথে চলার তৌফিক দান করুন ।
২৫ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৪:৩৬
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ ওমেরা, আপনার মন্তব্যের জন্য।
আপনার ভাল লাগছে জেনে আমারো ভাল লাগল। আল্লাহ আমাকে-আপনাকে-আমাদের সকলকে ভালর সাথে থাকার ,বেশী বেশী ভাল কাজ করার তওফিক দান করুন এবং কুরান ও হাদিসের আলোকে জীবন যাপন করার তওফিক প্রদান করুন।
৪| ২৫ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৪:৪৮
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
পৃথিবীতে কোরআন এর মত নির্ভুল, পঠিত , মুখস্ত ও প্রয়োগকৃত গ্রন্থ আর একটিও নেই।
২৫ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৪:৫৬
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ মোঃ মাইদুল সরকার ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।
সেটাই। আল কোরআন এ দুনিয়ার সবচেয়ে বেশী পঠিত,নির্ভুল এবং মানব জীবনে সবচেয়ে বেশী প্রায়োগিক।আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে আল কোরআনের সাথে, ভালর সাথে থাকার ,বেশী বেশী ভাল কাজ করার তওফিক দান করুন।
৫| ২৫ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৮:২৭
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: কোরান প্রথম পুড়িয়েছিল ওসমান।এইজন্য মুসলমানরা ওসমানকে পিটিয়ে মেরে ফেলে কোরান পোড়ানোর অপরাধে।
২৭ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:৫৭
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: হযরত উসমান রা ছিলেন মুসলমানদের তৃতীয় খলিফা। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের অনেক আগে থেকেই তিনি ছিলেন আরবের অন্যতম ধনী ব্যক্তি৷ উত্তরাধিকার সূত্রে যে বিশাল সম্পত্তি পেয়েছিলেন তা নিজের ব্যবসায়িক প্রজ্ঞা দ্বারা কয়েক গুন বাড়িয়ে নিয়েছিলেন। সেই সাথে ছিলেন সুদর্শন। ধনী আর সুদর্শন হবার পরও চারিত্রিক দিক দিয়ে ছিলেন অত্যন্ত অমায়িক, চরিত্রবান, দানশীল ও ধার্মিক।
তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান (রাঃ) হত্যার অনেকগুলি কারনের মাঝে কোরআন পোড়ানোর অভোযোগ একটি ।তবে এর পিছনে আরো বহুবিদ কারন বিদ্যমান ছিল।উসমান (রাঃ) খলিফা হয়ে নতুন যে সমস্যায় পড়লেন যেটা মহানবী (সাঃ) আবু বকর (রাঃবা উমর (রাঃ পড়েননি। সেটা হল সুবিশাল সম্রাজ্য লিবিয়া থেকে আফগানিস্তানে যেটার বিস্তৃতি তা ঠিকমতো শাসন করা এবং তার উন্নয়ন যেমন রাস্তাঘাট তৈরি ইত্যাদি।এর আগ পর্যন্ত খিলাফতের অর্থনীতি কেন্দ্রীয় ভাবে তেমন সুসংহত ছিলনা৷ যেমন ট্যাক্স বা খরচের নিখুঁত হিসাব রাখা হত না। উসমান (রাঃ) এসব সংশোধন করেন৷ তার সময় অর্থনীতি শক্তিশালী হয়। প্রাপ্ত খাজনা কয়েকগুন বাড়ে। আসলে ব্যবসায়ী হিসেবে তিনি এ কাজের জন্যই যোগ্য ছিলেন এবং অর্থনীতির ব্যাপারে কোন ব্যর্থতা প্রশ্রয় দিতেন না ৷
আর এসব সংশোধনমুলক কাজ করতে গিয়ে তিনি অনেকের বিরাগভাজন হন ।তার সাথে সাথে খিলাফত ধ্বংসের লক্ষ্যে হযরত উসমানের (রাযিঃ) খিলাফত কালে আব্দুল্লাহ বিন সাবা নামক এক ইয়াহুদী মুনাফিক মুসলিম বেশে মুসলমানদের মাঝে অনুপ্রবেশ করে। সে ছিল অত্যন্ত চতুর ও ধূর্ত। সে ইয়ামান হতে মদীনাতে এসে মুসলমানদের সাথে মিশে । এখানে কিছুদিন অবস্থান করে সে মুসলমানদের আভ্যন্তরীণ সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে অবগতি লাভ করে।
হজ্জের মৌসুম যখন নিকটবর্তী এবং সকল এলাকার মুসলমানগণ বিশেষতঃ মদীনাবাসীগণ যখন মক্কা সফরে ব্যস্ত, সুযোগবুঝে তখনই নিঃশব্দে ইবনে সাবার সন্ত্রাসী দল মিশর বসরা ও কুফা তিন দিক হতে মদীনা অভিমুখে রওয়ানা করল। যার দরুন পথিমধ্যে তারা কোথাও কোন বাধার সম্মুখীন হয়নি। মিশরীয় দলটির সাথে স্বয়ং ইবনে সাবাও ছিল। তারা মদীনার নিকটবর্তী স্থানে শিবির স্থাপন করতঃ মদীনাবাসীদের সমর্থন চাইলে হযরত আলী রাযি., তালহা রাযি., ও যুবাইর রাযি. প্রমুখ সাহাবীগণ তাদের তিরষ্কার করে ফিরিয়ে দেন এবং খারেজীদের সম্পর্কে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী এই সন্ত্রাসী দলকে আল্লাহ তা’আলার লা’নতপ্রাপ্ত ও অভিশপ্ত দল বলে আখ্যায়িত করেন। এদিকে সিরিয়া, কুফা ও বসরা হতে খলীফার সাহায্যার্থে মুসলিম বাহিনী রওয়ানা হওয়ার সংবাদ পেয়ে সন্ত্রাসীরা উক্ত বাহিনী সেখানে এসে পৌছার পূর্বেই কাজ সমাধা করার মানসে যিলক্বদ মাসের শেষ দিকে হঠাৎ মদীনা আক্রমণ করে বসে।
মদীনার নিয়ন্ত্রণ দখল করে তারা খলীফা হযরত উসমান রাযি. এর বাস ভবন অবরোধ করে। মদীনার অধিকাংশ মুসলমানই তখন হজ্জে গিয়েছিলেন। তাই মদীনা এক প্রকার জনশূন্যই ছিল। সন্ত্রাসীরা ঘোষণা দিল। আমাদের ব্যাপারে যারা হস্তক্ষেপ না করবে শুধু তারাই জানের নিরাপত্তা পাবে। তাদের মোকাবিলায় তখন উপস্থিত মদীনাবাসীদের শক্তি ছিল একেবারেই অপর্যাপ্ত। তাই তারা নিশ্চুপ থাকলেন।
সন্ত্রাসীরা খলীফার বাসভবন অবরোধ করে খাদ্য ও পানি বন্ধ করে দেয়। হযরত উসমান (রাযিঃ) ভবনের ছাদে আরোহণ করে সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্যে তাদের দাবী ও কার্যাবলীর অযৌক্তিকতা বুঝাতে চেষ্টা করেন। তবুও তারা খলীফার পদত্যাগের দাবীতেই অটল থাকে। কিন্তু হযরত উসমান রাযি. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক তার প্রতি আরোপিত সুস্পষ্ট ও কড়া নির্দেশের কারণে তাদের দাবী প্রত্যাখ্যান করেন। জিলহজ্ব মাসের ১৮ তারিখে কুফা, বসরা ও মিশর হতে আগত সন্ত্রাসী দলের ১৩ জন নেতা, হযরত উসমানের (রাযিঃ) এর গৃহের সামনের দরজায় হযরত হাসান ও হযরত হুসাইন (রাঃ) সহ যুবক সাহাবীদের (রাযিঃ) পাহারা থাকায় তাঁর গৃহের পিছনের দেয়াল টপকে ঘরে প্রবেশ করে। হযরত উসমান (রাযিঃ) তখন নামাযে দাঁড়িয়ে যান। নামায শেষ করে তিনি কুরআন শরীফ তিলাওয়াত আরম্ভ করেন। এ অবস্থাতে সন্ত্রাসীরা তার উপর আক্রমণ চালিয়ে তাঁকে নির্মমভাবে আহত করে ফেলে। একজন সন্ত্রাসী পদাঘাত করে উসমান (রাযিঃ) এর সম্মুখ হতে কুরআন শরীফ সরিয়ে দিতে চাইলেও তা ঘূর্ণয়মানভাবে তার সম্মুখেই আবার পড়ে। অতঃপর মিশরীয় দলের সন্ত্রাসী নেতা সুদান ইবনে হুমরানের তরবারীর আঘাতে ইসলামের তৃতীয় স্তম্ব মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দুই তনয়া হযরত উম্মে কুলসুম (রাযিঃ). ও হযরত রুক্বাইয়া (রাযিঃ). এর স্বামী খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত উসমান (রাযিঃ). শাহাদাত বরণ করেন।
৬| ২৬ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:৩৯
অগ্নিবেশ বলেছেন: উত্তর দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ, জবাবে লিখলেন কিতাব রেখে দিলে হবেনা ।আমল করতে হবে যথাযথ তাতেই মিলবে মুক্তি ।
আবার লিখলেন আল কোরআন এ দুনিয়ার সবচেয়ে বেশী পঠিত,নির্ভুল এবং মানব জীবনে সবচেয়ে বেশী প্রায়োগিক। তাহলে কি কোরান এ দুনিয়ার সবচেয়ে বেশী পড়লেও কেউ আমল করছে না?? মহান আল্লাহর বানী কি তবে সাধারনের বোধগম্য নহে, নাকি খুব কঠিন ভাষায় লেখা আছে?
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
পৃথিবীতে কোরআন এর মত নির্ভুল, পঠিত , মুখস্ত ও প্রয়োগকৃত গ্রন্থ আর একটিও নেই।
আপনি বললেন সেটাই, আপনি আসলে কি বলতে চান?
২৭ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১২:১৮
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আবারো ধন্যবাদ অগ্নিবেশ ভাই, আপনার প্রতিমন্তব্যের জন্য।
ভাই আপনার জবাবটা এভাবে দেয়া যায়, বর্তমানে দুনিয়ায় প্রায় সব রোগের ঔষধ আছে এবং আছে এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার।অসুখে পতিত হওয়ার পর রোগী ডাক্তারের কাছে গেল এবং ডাক্তার তার অর্জিত জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে রোগীকে ঔষধ নির্ধারণ করে দিলেন এবং ঔষধ খাওয়ার নিয়ম-নীতি বাতলে দিলেন। তারপর রোগী ঔষধ কিনে নিয়ে আসলেন তবে সে তার খেয়ালখুশি মত ঔষধ সেবন করলেন ,ডাক্তার নির্দেশীত নিয়ম-নীতি না মেনে। এর ফলে তার রোগ আরোগ্য ত হলোইনা বরং রোগের প্রকোপ আরো বৃদ্ধি পেল।
এখন রোগী বা রোগীর আত্মীয়রা যদি বলে এ ডাক্তার ভালনা তা কি যথার্থ বা সঠিক হবে? তা সঠিক হবেনা। কারন রোগমুক্তির জন্য যেমন ডাক্তারের পরামর্শ জরুরী,তেমন তার সাথে এটাও জরুরী সঠিক সময়ে ,নিয়ম মেনে ঔষধ সেবন করা ।নিয়ম-নীতি যথার্থ ভাবে অনুসরন না করে রুগী রোগ থেকে আরোগ্য লাভ না করার দায় না ঔষধের, না ডাক্তারের।
এখন আল কোরআনে মহান আল্লাহ পাক মানব জীবনের জন্য সর্বরোগের ঔষধ তথা সব কিছুর নিকনির্দেশনা দিয়ে রেখেছেন। এখন কেউ বা সবাই যদি কোরআনে বর্ণিত নিয়ম-নীতি মেনে না চলে এবং মানুষ পাপে পতিত হয় তার দায় কোরআন শরীফের নয়। তার দায় তাদের যারা তা যথাযথ অনুসরন করেনি।কোরআনে সহজ-সরল ভাষায় জীবনের জন্য সবকিছুই রয়েছে তবে মানুষের তা মেনে না চলার দায় কোরআনের নয় মানুষের।
পৃথিবীতে আল কোরআন এর মত নির্ভুল এবং পঠিত গ্রন্থ আর একটিও নেই,এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই এবং যথাযথ ও সঠিক ভাবে অনুসরন করলে আল কোরআনের মাঝেই মানব মুক্তি তথা মানব জীবনের সকল সমস্যার সমাধান আছে।এটাই বলতে চেয়েছি।
৭| ২৭ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:২৭
নতুন বলেছেন: ভাই ধর্ম একটা সময় প্রচন্ড প্রভাবশালী ছিলো। এখনো ধর্মের দরকার আছে কারন অনেক মানুষই ভালো ভাবে শিক্ষিত না।
কিন্তু আধুনিক বিশ্বে বর্তমানে ধর্মের দরকার কমে আসছে।
এখন হিন্দু, বৌদ্ধ বা খৃস্টান ধমালম্বি রাস্ট নেই।
তেমনি ইসলামী খেলাফতও নেই এবং আসার সম্বববনাও নেই। কারন মানুষ এখন ঐ সব ধর্মীয় বই থেকে অনেক বেশি জানে।
আপনি হিন্দু, বৌদ্ধ বা খৃস্টান, ইসলামী পবিত্র গ্রন্হ থেকে বিজ্ঞান বিষয়ের লাইন গুলি এক স্থানে করুন দেখবেন বর্তমানে বিজ্ঞানের অনেক বেশি তথ্য আছে যা এই গ্রন্হেও নেই।
ধর্মের শেষ মুটুমুটি শুরু হয়েছে। এটা বাস্তবতা, মানা কঠিন কিন্তু একটু চারিদিকে তাকালে বুঝতে পারবেন।
২৭ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:০৫
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ নতুন ভাই,আপনার চমতকার মন্তব্যের জন্য।
পৃথিবীতে যার শুরু আছে তার শেষ ও আছে ।এ সৃষ্টির চিরন্তন নিয়ম। আর একদিন এ পৃথিবীতে যা কিছু আছে তার সব কিছুই ধ্বংস হবে তা সবকিছুর অবসান হবে।তার মাঝে ধর্মও আছে।একসময় মানুষের মন থেকে ধর্ম উঠে যাবে বা ধর্মের প্রভাব কমে যাবে ।আর তার পরেই কেয়ামত বা পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী কেয়ামত হচ্ছে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের ধ্বংসের দিন। যেদিন পৃথিবী অসীমের মাঝে বিলীন হয়ে যাবে। সেদিন মহান আল্লাহ ছাড়া আর কোনো কিছুর অস্তিত্ব থাকবেনা। কেয়ামতের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা ইসলাম ধর্মে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
পৃথিবী ধ্বংসের প্রাক্কালে সারা পৃথিবী পাপের অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে যাবে, মানুষ ধর্ম-কর্ম ভুলে আবার জাহেলী যুগে ফিরে যাবে। মানুষের মধ্যে থেকে ঈমান, ভালোবাসা, খোদাভীতি সব উঠে যাবে, এমন এক সময়ে কেয়ামত সংঘটিত হবে।
একদিন সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে।তারপর শেষ বিচারের জন্য কোটি কোটি মানুষকে আবার সৃষ্টি করে ওঠানো হবে এবং তাদের সমস্ত স্মৃতি ফিরিয়ে দেওয়া হবে, তারপর তাদের পুরো জীবনটাকে দেখানো হবে।শেষ বিচার দিন কোনো ঠাট্টা তামাশার বিষয় নয়। এটি সৃষ্টিজগতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা। এই দিন অসহায় অত্যাচারিত মানুষের ন্যায্য বিচার পাওয়ার দিন। জোর খাটিয়ে দুনিয়ায় পার পেয়ে যাওয়া সব অত্যাচারীর পাকড়াওয়ের দিন। এই দিন সর্বোচ্চ আদালতে হাজিরা দেওয়ার দিন। হাজার কোটি মামলার শুনানি এবং ফয়সালার দিন। একইসাথে এই দিন সকল ন্যায়পরায়ন, যোগ্য মানুষের ভালো কাজ এবং ত্যাগের প্রতিদান পাওয়ার দিন। পরম-করুণাময়ের অসীম দয়া উপভোগের দিন।
আর তাই ,ধর্মের শেষ মোটামুটি শুরু হওয়া মানে আমাদের চূড়ান্ত গন্তব্য তথা পৃথিবী ধ্বংসের দিন এগিয়ে আসারই পরিচায়ক।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:৩৯
রাজীব নুর বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন। সহজ সরল সুন্দর সব কথা বার্তা। এজন্য আমি কোরআন পড়া শুরু করেছি। বাংলা অনুবাদসহ। তাফসীর, শানে নুযূল সহ।