নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রস্তাবিত খালের 3D ছবি
ছবি - bbc.com
সম্প্রতি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেব এরদোগান সে দেশের বৃহত্তম শহর ইস্তান্বুলের ইউরোপীয় অংশকে দুটুকরা করে একটি খাল খনন প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন যার লক্ষ্য হচ্ছে করে কৃষ্ণ সাগর এবং মারমার ও ভূমধ্যসাগরের মধ্যে সংযোগ তৈরি করা। "ক্যানাল ইস্তান্বুল" এর প্রকল্পের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, খালটি ওই শহরের ইউরোপীয় অংশের মধ্য দিয়ে খনন করা হবে। ৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই খালের প্রস্থ হবে ৩০০ মিটার। আর গভীরতা হবে ২০.৭৫ মিটার।ইস্তান্বুল শহরের যে অংশটি ইউরোপ মহাদেশের অংশ, সেখান দিয়ে খালটি কৃষ্ণ সাগর এবং মারমার ও ভূমধ্যসাগরের মধ্যে সংযোগ তৈরি করবে।তুর্কী সরকারের বিভিন্ন সময়ে দেয়া হিসেব অনুযায়ী, পুরো প্রকল্পটিতে ব্যয় হবে ১,৫০০ থেকে ২,৫০০ কোটি ডলার।বহু আকাংখিত ও স্বপ্নের এই খালটির উদ্বোধন হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৩ সালে ।আর ওই বছরই তুর্কী প্রজাতন্ত্র স্থাপনের শতবর্ষও পালিত হবে ।
ছবি - bbc.com
একনজরে ইস্তাম্বুল খাল প্রকল্প -
তুরস্কের রাষ্ট্রপতি এরদোগান গত ২৬/০৬/২০২১ শনিবার উদ্বোধন করেছেন ইস্তাম্বুল খাল বা ক্যানাল ইস্তাম্বুল প্রজেক্টের। এটি এমন একটি খাল প্রকল্প যা, সারা বিশ্বে প্রচুর আলোচিত - সমালোচিত। ৩০০ মিটার প্রস্থ, প্রায় ২১ মিটার গভীর আর ৪৫ কিলোমিটার লম্বা এই খাল নিয়ে সারা দুনিয়ায় চলছে তুমুল বিতর্ক। গত কয়েক বছর ধরে তুরস্কের ভিতরে এবং বাইরে এই খালের পক্ষে এবং বিপক্ষে চলছে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা।
- এরদোগান বলছেন, " এই খাল তার স্বপ্নের প্রকল্প "।
-- বিরোধীরা বলছে, "এই প্রকল্প হবে ইস্তাম্বুলের জন্য বিপর্যয়কারী"।
-এরদোয়ান বলছেন, "এই খাল তুরস্কের অর্থনীতিতে গতি নিয়ে আসবে"।
--অন্যদিকে বিরোধীরা বলছে, "তুরস্কের ভঙ্গুর অর্থনীতিকে আরও হুমকির মুখে ফেলে দেবে এই প্রকল্প "।
এরকম নানা প্রশ্ন ও সমালোচনায় জর্জরিত এই প্রকল্প।
তবে সবকিছু উপেক্ষা করে শেষ পর্যন্ত শুরু হলো এই প্রকল্পের কাজ। খাল খননের আগেই এই খালের উপর ব্রিজগুলো তৈরি করা হবে যাতে পরবর্তীতে যানবাহন চলাচলে ব্যাঘাত না ঘটে। আর তারই অংশ হিসেবে জুন ২৬,২০২১ এরদোগান উদ্বোধন করলেন একটি ব্রিজের কাজ। তবে শুধু খাল খননই নয়, বরং কথা রয়েছে যে এই প্রকল্পের আওতায় তৈরি হবে নতুন একটি আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দর, কন্টেইনার টার্মিনাল, কিছু কৃত্রিম দ্বীপ এবং খালের দুই পাশ বরাবর বেশ কয়েকটি আধুনিক শহর।
বসফরাস প্রণালী দিয়ে যাচছে মালবাহী জাহাজ
ছবি - bbc.com
যা সুলতান সুলেমানের ও স্বপ্নের প্রকল্প ছিল
আসলে এই খাল খননটি একটি বহুদিনের স্বপ্নের প্রজেক্ট। এই প্রজেক্টের প্রথম স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন সুলতান সুলায়মান। যাকে আমরা সবাই টিভি সিরিজের "সুলতান সুলেমান" (Magnificent Century - The Ottoman Sultan Suleyman the Magnificent, the longest-reigning Sultan of the Ottoman Empire, and his wife Hurrem Sultan.) মাধ্যমে চিনি।বসফরাসের বিকল্প একটি খাল খনন নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছিল বেশ অনেক আগে - সেই ওসমান বংশীয় সুলতান সুলেমান দ্য ম্যাগনিফিসেন্টের আমলে।তুর্কী পত্রিকা হুরিয়াতের খবর অনুযায়ী, তার আর্কিটেক্ট মিমার সিনান এই পরিকল্পনাটি তৈরি করলেও অজ্ঞাত কারণে তা বাতিল করা হয়। সেই বিখ্যাত সুলতান প্রথম প্রস্তাব করেন একটি খাল খননের যা মারমারা সাগর এবং কৃষ্ণ সাগরকে যুক্ত করবে।অবশ্য তার প্রস্তাবিত সেই খালের রুট ছিল আজকের রুট থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন জায়গায়। এখন ইস্তাম্বুলের ইউরোপিয়ান সাইডে খাল খননের পরিকল্পনা করা হচ্ছে আর তখনকার পরিকল্পনা ছিল ইস্তাম্বুলের এশিয়ান সাইডে। উদ্দেশ্যও ছিল ভিন্ন। কিন্তু ফলাফল একই। মারমারা এবং কৃষ্ণ সাগরকে খাল কেটে যুক্ত করা। পরে অবশ্য তখন সে প্রকল্প আলোর মুখ দেখেনি।
সুলতান সুলায়মানের পরেও অনেকবার আলোচনায় আসে এই খাল খনন।সুলতান তৃতীয় মুরাদের আমলে ১৬৯১ সালের ৬ই মার্চ এই খাল খননের জন্য একটি রাজকীয় ফরমান জারি করা হয়, কিন্তু সেটিও পরে বাদ হয়ে যায়।এভাবে মোট সাতবার খাল খননের উদ্যোগ নেয়া হলেও তা কখনোই বাস্তবে পরিণত হয়নি বলে তুর্কী হুরিয়াত জানাচ্ছে।
১৯৯০ সালে খুব জোড়েশোরেই আবার আলোচনায় আসে এটি। তখনকার জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের একজন কনসালট্যান্ট এ নিয়ে বিশাল বিশাল আর্টিকেল লেখেন।"আমি ইস্তাম্বুল খালের কথা ভাবছি "- শিরোনামের একটি আর্টিকেলটি তখন অনেক জায়গায় ছাপানো হয়। এমনকি তুরস্কের টুবিটাকের অনেক প্রেস্টিজ সম্পন্ন সাইন্স ম্যাগাজিনেও ছাপানো হয় সেটা ।১৯৯৪ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং গণতান্ত্রিক বাম দলের নেতা বুলেন্ত এজেভিত ইস্তাম্বুলের ইউরোপিয়ান সাইডে একটি খাল খননের প্রস্তাব করেন। তার নির্বাচনী ইশতিহারেও এটি ছিল।
এসব আলোচনায় আমরা বুঝতে পারি যে, এই খাল খনন প্রকল্পটি ষোড়শ শতাব্দী থেকেই তুর্কীদের মাথায় ছিল। কখনো আলোচনা হয়েছে। কখনো নির্বাচনে টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, আবার কখনওবা বিস্তারিত ছকও আঁকা হয়েছে। কিন্তু আলোর মুখ দেখেনি। আর কখনো বর্তমানের মত এত সমালোচনার মুখেও পড়েনি তুর্কিদের এই স্বপ্নের প্রজেক্ট। রিসেপ তাইয়্যেব এরদোগানের নেতৃত্বাধীন এ কে পার্টি ক্ষমতায় বসার পর ২০১১ সালে এক জনসভায় তিনি এই খাল খনন করার ঘোষণা করেন।সে সময় অনেকেই একে রাজনীতিক চমক এবং কিছুদিন পর লোকে এর কথা ভুলে যাবে বলে মনে করলেও একেপি সরকার ২০১১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এই খাল খননের সম্ভাব্যতা নিয়ে নানা রকম সমীক্ষা চালায়।
আর এতকিছুর পরে এবং আলোচনা-সমালোচনা সবকিছুকে উপেক্ষা করে রাষ্ট্রপতি এরদোগান শেষ পর্যন্ত শুরু করলেন এই খাল খনন। আর এভাবে হয়ত বলা যায়, ষোড়শ শতকের সুলতান সুলেমানের সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন হতে যাচছে একুশ শতকে রজব তাই্য়্যেব এরদোগানের হাত ধরে।
প্রস্তাবিত খালের বর্তমান অবস্থা
ছবি - bbc.com
বসফরাস প্রণালী থাকার পরেও কেন এই খাল -
তুরস্কের সবচেয়ে বড় শহর ইস্তাম্বুল। দেশটির অর্থনীতির তিনের একভাগ আসে এই শহর থেকে। ইস্তাম্বুলকে বলা হয় তুরস্কের অর্থনীতির প্রাণ। আর ইউরোপ, এশিয়া এবং আফ্রিকার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এই শহরটিকে নেপোলিয়ন বোনাপার্ট বলেছিলেন দুনিয়ার রাজধানী। সেই ইস্তাম্বুলের বুক চিরে কৃত্রিম একটি জলপথ করতে চান এরদোগান। নাম ইস্তাম্বুল খাল। এটা হবে সুয়েজ খাল এবং পানামা খালের মত মানব তৈরি খাল। এটা এরদোগানের ‘ক্রেজি প্রজেক্ট’ হিসেবে পরিচিত।
৪৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের প্রস্তাবিত এই খালটি কৃষ্ণ সাগরকে মারমারা সাগরের সঙ্গে যুক্ত করবে। এটা হবে ইস্তাম্বুলের মধ্য দিয়ে কার্গো জাহাজ চলাচলের দ্বিতীয় পানিপথ। কারণ, ইস্তাম্বুলের মধ্য দিয়ে অলরেডি একটা নৌপথ আছে। যা ব্যবহার হচ্ছে হাজার হাজার বছর ধরে। সেটা হলো বসফরাস প্রণালি। সাত হাজার বছর আগে উপত্যকার জমি ধ্বসের ফলে তৈরি হয় এই জলধারা। কৃষ্ণসাগরের তীর ঘেঁষা দেশগুলোর সমুদ্রপথে বিশ্বের অন্য যেকোনো প্রান্তে যেতে এই বসফরাস প্রণালি ব্যবহার ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। তুরস্ক ছাড়াও, রাশিয়া, ইউক্রেন, জর্জিয়া, বুলগেরিয়া, রোমানিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ জলপথ এই প্রণালি। প্রতিবছর চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ হাজার জাহাজ চলাচল করে এই প্রণালী দিয়ে।অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ১১০ টি থেকে ১৩০ কার্গো শিপ পার হয় এখান থেকে।
বসফরাসের পাড়ে ইস্তাম্বুল শহর
ছবি - bbc.com
এই প্রণালীটিই বিভক্ত করেছে এশিয়া এবং ইউরোপকে। অর্থাৎ এর এক পাশ এশিয়া আরেক পাশ ইউরোপ।এই ক্যানালের ধরে গড়ে উঠেছে নান্দনিক সব বাড়ী, প্রাসাদ, ম্যানশন, সরাইখানা, সরকারি ভবন। প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষের রুটি রোজগারের মাধ্যম এই বসফরাস প্রণালি। এছাড়াও হাজার হাজার পর্যটকের ভিড়ে দিন রাত ২৪ ঘণ্টাই বসফরাস হয়ে উঠে ইস্তাম্বুলের জীবন্ত হৃদয়।সেই বসফরাসের প্যারালালে তৈরি হবে নতুন এই খালটি। বসফরাস থেকে মাত্র ১৫ - ২০ কিলোমিটার পশ্চিমে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে ইস্তাম্বুলে অলরেডি একটা নৌপথ থাকতে একই কাজে আরকটি খাল কেন খনন করতে হবে? সরকার বলছে এই নতুন খাল বসফরাসের উপর কার্গো শিপের চাপ কমাবে। খাল খনন হলে সাধারণ মানুষের জন্য আরও নিরাপদ হবে বসফরাস। কারণ বসফরাস দিয়ে নিরপদ কার্গো পরিবহনের সংখ্যা বছরে ২৫ হাজার কিন্তু এখন পার হচ্ছে বছরে ৪৩ হাজার। অর্থাৎ প্রায় দিগুণ। তাই এই নান্দনিক এবং ঐতিহাসিক প্রণালিটি এখন ঝুঁকির মুখে।
চলবে -
তথ্যসূত্র - বিবিসি এবং আলজাজিরা।
০৪ ঠা জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১৭
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ শায়মা বনি, আপনার চমতকার মন্তব্য এবং ছবির জন্য।
আমারও মনে হয় সুলতান সুলাইমান বেঁচে থাকলে এবং এ ছবি দেখলে খুশি হয়ে বলত, '' রাজকাজ আপাততঃ থাক,আসো শায়মা হয়ে যাক একদান দাবা "।
জয়তু শায়মা বনি,জয়তু সুলতান সুলেমান ।
২| ০৪ ঠা জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫১
জুন বলেছেন: আমাদের পদ্মা ব্রিজ এর মত লাগছে
০৪ ঠা জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৪
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ বোন জুন, আপনার মন্তব্যের জন্য।
এজন্যই ত কবি বলেছেন," এমন দেশটি কোথাও খুজে পাবে নাকো তুমি,সকল দেশের সেরা - সে যে আমার জন্মভূমি"।
আমাদের পদ্মা ব্রিজ দেখেই বা নকল করেই এরদোগান এ খালের নকশা করেছে ,এটা নিশ্চিত।এখানেই আমরা এগিয়ে।বাকীরা যা ভাবে আমরা সেটা আগেই করে ফেলি।
আর তাইতো আমিও বলি ,কেন খালের ছবি এত চেনা চেনা লাগছে ? এটা যখন আমাদের দেশে সফরে এসেছিল এরদোগানের প্রিয়তমা তখনই মনে হয় এই আকামটা করে ফেলছে।
৩| ০৪ ঠা জুলাই, ২০২১ রাত ১০:৫১
কল্পদ্রুম বলেছেন: মন্ট্রেউ কনভেনশন একটা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু এখানে। চলবে যেহেতু। সামনের পর্বে আরো জানতে পারবো নিশ্চয়ই।
০৫ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:৫৯
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ কল্পদ্রুম , আপনার মন্তব্যের জন্য।
" মন্ট্রেউ কনভেনশন " এই জিনিষটা সম্পর্কে আমার সঠিক ধারনা নেই ।যদি একটু বিশদ বলতেন বা একটা পোস্ট দিতেন তাহলে বিশদ জানতে পারতাম (আকাশপথে পরিবহন আইন মন্ট্রিল কনভেনশন - ১৯৯৯ সম্পর্কে কিছুটা জানি) ।
আর এক বা দুই পর্বে শেষ করতে চেষ্টা করব। ধন্যবাদ,সাথে থাকার জন্য।
৪| ০৫ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ৯:০৫
শেরজা তপন বলেছেন: বিরোধীদের বক্তব্যগুলো অসুম্পুর্ন।
এটা কি পরিবেশ ও প্রকৃতির উপরে কোন বিরুপ প্রভাব ফেলবে?
০৫ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১০
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ শেরজা তপন ভাই , আপনার মন্তব্যের জন্য।
প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম অনুসারে যে কোন ব্যাপারেই সবসময় দুইটা পক্ষ বা দল হয়ে যায় ।এতে যে সবাই বুঝে বা লাভের জন্য করে এমনও নয়।কেউ কেউ হয়ত কাউকে সাপোর্ট করে শুধু তাকে ভাল লাগে বলে আবার কেউ কেউ শুধু তাকে ভাল লাগেনা এই জন্য কারো কারো বিরোধীতা করে । আর এটা মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ঠ্য ও বটে।
আমাদের দেশেও যখন বিদ্যুত উৎপাদনের জন্য কাপ্তাই লেকের বাঁধ নির্মাণ করা হয় তখনও অনেকেই এর বিরোধীতা করেছে আবার অনেকেই এর পক্ষেও থেকেছে।আবার এ বাঁধ নির্মাণের ফলে যে শুধু উপকার হয়েছে - এমন ও নয়। এর ফলে মানুষ এবং পরিবেশের ও কিছু ক্ষতি হয়েছে।যেমন - স্থানীয় জনসাধারণ অনেকেই তাদের ভিটা-মাটি এবং চাষের জমি হারিয়েছে এবং অপরদিকে বিশাল এলাকা স্থায়ীভাবে পানির নীচে তলিয়ে গেছে। আবার উপকারের দিক দিয়ে আমরা কম খরছে এবং
পরিবেশ বান্ধব বিদ্যুত উৎপাদন করতে পারছি।
ঠিক সে ভাবেই,এখানেও বিরোধীদের বক্তব্যও একেবারে ফেলে দেওয়ার মতনা আবার সরকারের দাবীও হয়ত শতভাগ সঠিক হবেনা।তবে উন্নয়ন এবং অগ্রগতির স্বার্থে উভয়কেই তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে কিছুটা ছাড় এবং গ্রহনের মানষিকতা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
৫| ০৫ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩৯
সাসুম বলেছেন: আসল খেলা অন্যখানে। চুক্তি অনুযায়ী বসফরাস দিয়ে জাহাজ চললে সেখান থেকে ট্যাক্স বের করতে পারবেনা তুর্কিরা। এই প্রণালী হয়ে গেলে সেখান দিয়ে যেতে হলে ব্লাক সী তে হিউজ ফি দিয়ে যাও। এখন টাইম ও কম লাগবে, কম ডিস্টেন্স পাড়ি দিতে হবে ট্রাফিক জ্যাম ও লাগবেনা। শিপ এর কাছে দুইটা অপ্সান। ফ্রি বস্ফরাস দিয়ে ব্লাক সী তে ঢুকো বা পয়সা দিয়ে কম টাইমে নিউ রাস্তা দিয়ে যাও।
এই বার আসেন, আসল কাহিনী তে। চুক্তি অনুযায়ী বস্ফরাস দিয়ে সামরিক যান বা ভেসেল ঢুক্তে পারবে না। বাট নিউ খাল দিয়ে অসুবিধা নাই। ব্লাক সী পুরাটা কন্ট্রোল করে রাশিয়া। ন্যাটো নাই সেখানে। এইবার খালি এইদিক দিয়া রাস্তা হলেই ন্যাটোর সদস্য দেশ তুর্কিরা আম্রিকা সহ সবার ডেস্ট্রয়ার ঢুক্তে দিবে হিউজ ফি দিয়া। নরমাল ভেসেল এর চেয়ে ডিফেন্স ভেসেলের ফি দিয়াই টাকা উসুল হবে ১০ বছরে পুরা প্রজেক্ট এর। ব্লাক সী তে রাশিয়ার একার আধিপত্য শেষ হতে চলবে। সাথে এরদোয়ান আম্রিকার লগে একটু দর কষাকষি করতে পারবে এফ ৩৫ দেয়ার জন্য।
আসল কাহিনি এটাই।
০৬ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১২
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ সাসুম ভাই, আপনার চমতকার এবং বিশদ মন্তব্যের জন্য।
বিশ্ব রাজনীতি এবং জটিল বিশ্ব ভূরাজনীতি দুটিতেই এপ্রকল্পের ভূমিকা থাকবে বলে মনে হয়।
বিশ্ব রাজনীতিতে এরদোগান এক কুশলী খেলোয়ার হিসাবে ধীরে ধীরে নিজের অবস্থান শক্ত করছে। এর সাথে সাথে আমেরিকার একচেটিয়া আধিপত্য খর্ব এবং দর কষাকষিতে নিজের ও নিজের দেশকে একটা ভাল জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চোখে পড়ার মত।আগে যেমন অন্ধভাবে আমেরিকার অনুসরন করতে হত বা তার আদেশ-নিষেধ মানতে হত সে জায়গা থেকে রাশিয়াকে কিছুটা জায়গা ছেড়ে দিয়ে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে এরদোগান। এখন তার সামনে বিকল্প আছে এবং সে তার ও তার দেশের জন্য যা ভাল সেটাই পছন্দ করতে পারছে।
আর এটাই দেশপ্রেম।এটাই দক্ষ এবং কুশলী রাষ্ট্রনায়কের সফলতা ও প্রকৃতি ।আর এতে তিনি একজন সফল রাষ্ট্রনেতা তা বলাই যায়।
৬| ০৬ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১২:৩৯
কল্পদ্রুম বলেছেন: আমি ভেবেছি আপনিই পরের পর্বে এ বিষয়ে লিখবেন। ৫ নম্বরে +। এই চুক্তিটিই Montreux convention.
আমি জানা মতে, বসফরাস প্রণালী দিয়ে কৃষ্ণ সাগর তীরবর্তী দেশগুলোর যুদ্ধযান যেতে পারে। অন্য কোন দেশের যুদ্ধ যান যেতে গেলে তার সংখ্যা,সক্ষমতা,কতদিন থাকবে এসব জানিয়ে যেতে হয়।
০৬ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২১
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ কল্পদ্রুম ভাই, আপনার প্রতিমন্তব্যের জন্য।
আসলে বিশ্ব রাজনীতি এবং জটিল বিশ্ব ভূরাজনীতিতে যে কত বিষয় একটার সাথে আরেকটা জড়িয়ে থাকে তা সাদা চোখে দেখা যায়না এবং এ ক্ষেত্রে নিবিড় পর্যবেক্ষণ তথা জানার কোন বিকল্প নেই। নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে এই এক প্রকল্পের পিছনের দিক এবং সামনের দিকের তথ্য জানতে গেলে অনেক কিছুই জানা যাবে যা আমি আপনার মন্তব্যের পরে জানতে গিয়ে বুঝতে পেরেছি।
এটা ঠিক বসফরাস থেকে তাদের আয় নেই তবে ইস্তাম্বুল খাল থেকে তাদের জাতীয় আয়ে ভাল একটা সংখ্যা যোগ হবে সাথে সাথে দর কষাকষিতে তথা আমেরিকা-রাশিয়ার সাথে খেলার মত একটা হাতিয়ার হয়ে এখাল অদূর ভবিষ্যতে কোন একসময়।
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:৫৭
শায়মা বলেছেন:
সুলতান সুলাইমান থাকুক তার স্বপ্ন নিয়ে।
আমার দাবা বোর্ডে বসানো সুলতান সুলাইমান আর বিবিসাহেবানকে দেখো।