নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খুবই সাধারন একজন মানুষ । পড়া যার নেশা । পড়ার এবং জানার আশায় ----

মোহামমদ কামরুজজামান

মোহামমদ কামরুজজামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

" তালেবানদের আফগানিস্তান দখল " - কেন এবং কি কারণে আফগান সেনাদের এত দ্রুত পরাজয়? (তালেবানদের কাবুল দখল পরবর্তী ফলোআপ পোস্ট - ২)।

২২ শে আগস্ট, ২০২১ দুপুর ২:৩৪


ছবি - এএফপি

তালেবান যোদ্ধারা গত ১৫/০৮/২০২১, রোববার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখল করেছেন। অন্য দিকে আফগানিস্তান দখল এবং তালেবানের সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ যাবৎকালে যত টাকা খরচ করছে তা দেশটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত অন্য কোনো যুদ্ধাভিযান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকবেলা অথবা জাতীয় উন্নয়নের কোনো একক প্রকল্পে খরচ করেনি। তারা এই যুদ্ধে ইউরোপের সম্মিলিত ন্যাটো বাহিনী ছাড়াও ভারত-পাকিস্তানসহ আরো অনেক বন্ধু রাষ্ট্রের কাছ থেকে সামরিক ও কৌশলগত সহযোগিতা নিয়েছে। কিন্তু এত কিছুর পরও তারা যেভাবে অপমানিত-লাঞ্ছিত হয়ে শোচনীয়ভাবে তালেবানের কাছে পরাজিত হয়ে আফগানিস্তান থেকে যেভাবে লেজগুটিয়ে পালাচ্ছে তার দ্বিতীয় নজির গত এক শত বছরে পৃথিবীর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না।

তালেবানের বিজয়ের পেছনে তাদের বীরত্ব, যুদ্ধ-কৌশল, দেশপ্রেম এবং তাদের ভৌগোলিক সুবিধার (অন্যদের জন্য কাবুলের ভৌগোলিক অবস্থা মৃত্যুফাদ) পাশাপাশি রাশিয়া-ইরান-চীনসহ আরো অনেক দেশের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতা ছিল।তারপরেও পেন্টাগন থেকে এখনও পর্যন্ত যে পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে তাতে, গত ২০ বছরে আফগানিস্তানে যুদ্ধের পিছনে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি ডলার খরচ করেছে আমেরিকা। এর মধ্যে শুধুমাত্র আফগান সেনাকে প্রশিক্ষণ দিতেই খরচ হয়েছে ৮ হাজার ৯০০ কোটি ডলার। ২০২০ সালের একটি রিপোর্টে পেন্টাগন জানায়, সরাসরি যুদ্ধেই তাদের ৮১ হাজার ৫৭০ কোটি ডলার খরচ হয়েছে। আর এসবের বেশীরভাগই আমেরিকা খরচ করেছে আফগানিস্তানে সামরিক খাতে তথা সেনা-পুলিশ গঠনের জন্য এবং তাদের প্রশিক্ষনের জন্য ।আর এসবই করা হয়েছিল আফগানিস্তানের একটি শক্তিশালী সেনা ও পুলিশ বাহিনী গঠনের জন্য যাতে করে তারা নিজেরা নিজেদের দেশের শান্তি - নিরাপত্তা রক্ষা করতে পারে।তবে আমেরিকা পানির মতো টাকা খরচ করলেও গত ২০ বছরে আফগানিস্তানের শান্তি-নিরাপত্তা তথা আইন শৃংখলা পরিস্থিতির তেমন কোনও কাযর্কর পরিবর্তন হয়নি।আর তাইতো যখন আমেরিকা আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তখনই তাদের নিরাপত্তা বিশ্লেষকরাই বলেছিল ,তালেবানরা এক বছরের মধ্যেই কাবুল দখল করতে পারে।আর সকল অনুমান ও ধারনাকে ভূল প্রমাণ করে,আমেরিকানরা চলে যাওয়া শুরু করতেই সেই পরাজিত তালেবানরা আবার অস্ত্রহাতে সংগঠিত হয়ে আফগান সেনাবাহিনীকে নাস্তানাবুদ করে একের পর এক শহর দখল করতে করতে শেষ পর্যন্ত কাবুলের পতন ঘটায় এবং কাবুল দখল করে। তার আগেই রক্তপাতহীন এ অভ্যুত্থানের মুখে দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি অন্য দেশে পালিয়ে যান এবং পদত্যাগ করেন।এখন তালেবানরা দেশে তাদের সরকার গঠন এবং তাদের শাসন কায়েমের পথে ।


ছবি - এএফপি

এখানে একটা প্রশ্ন সারা দুনিয়ার সবার মনে জাগে তা হলো, ২০ বছর পর আমেরিকান সমর্থনপুষ্ট সরকারের পতন এবং তালেবানের বিপুল বিজয়ে আফগানিস্তানের কী ভবিষ্যৎ বা পরিণতি অপেক্ষা করছে ? তালেবানদের কাছে এত দ্রুত গতিতে আফগানিস্তানের ক্ষমতা চলে যাওয়ায় পশ্চিমা দেশগুলোও বিস্মিত হয়েছে। কারণ, কেউই আশা করেনি যে আফগান বাহিনী যুদ্ধ করবে না এবং এত দ্রুত হাওয়ায় মিলেয়ে যাবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সোমবার আমেরিকান জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে তালেবানের ক্ষমতায় আসার বিষয়ে তার বক্তব্য জানিয়েছেন।বাইডেন তার ভাষনে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন এবং তালেবানের অগ্রযাত্রা প্রতিরোধ না করার জন্য আফগান নেতৃত্বকেই দায়ী করেন।বাইডেন বলেন, " সত্য হলো, ঘটনা আমাদের প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুত গতিতে ঘটেছে। তাহলে কী ঘটেছে ? আফগানিস্তানের রাজনীতিবিদেরা হাল ছেড়ে দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। আফগান সামরিক বাহিনী হাল ছেড়ে দিয়েছে, এমনকি কখনো কখনো যুদ্ধ করার চেষ্টাও তারা করেনি"। তিনি আরো বলেন, "যে যুদ্ধে আফগান বাহিনী নিজেদের জন্য যুদ্ধ করতে আগ্রহী নয়, সে যুদ্ধে আমেরিকান সৈন্যরা মারা যাচ্ছে। তারা এমন যুদ্ধ করতে পারে না, করা উচিত নয়"।

যে আফগান সেনাবাহিনী দুই দশক ধরে আমেরিকার প্রশিক্ষণ এবং অস্ত্রে সজ্জিত ছিল, কিভাবে এত দ্রুত তারা তালেবানের কাছে আত্মসমর্পণ করতে পারে? এটা ভেবে এখনো অনেক পর্যবেক্ষক অবাক হচ্ছেন।তালেবানের প্রায় ৮০ হাজারের কাছাকাছি যোদ্ধা রয়েছে, অন্যদিকে আফগান সরকারের সৈন্যসংখ্যা তিন লাখের কাছাকাছি। তবুও মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কি করে পুরো দেশ দখল করে ফেললো তালেবান।আফগান সরকারের তথা সৈন্যদের এই পরাজয় ও তালেবানদের বিজয়ের পিছনে পেছনে নানা কারণ থাকতে পারে।আসুন দেখি কি সেই সব কারন যার জন্য তালেবানরা এত দ্রুত কাবুল দখল করে নিয়েছে।


ছবি - বিবিসি

১। ন্যাটোর বিমান বাহিনীর অনুপস্থিতি -

কাবুলভিত্তিক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ শফিক হামদাম ডয়চে ভেলেকে বলেন," আফগান নিরাপত্তা বাহিনী আর্থিক ও সামরিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল ছিল। সেসব সমর্থন প্রত্যাহার শুরুর পর তারা দুর্বল হয়ে পড়েছিল"।নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ আতিকুল্লাহ ওমরখাইল বলেন, " গত বছর দোহায় মার্কিন-তালেবান চুক্তি এবং এই বছর আফগানিস্তান থেকে ন্যাটো সেনাদের নিঃশর্ত প্রত্যাহার তালেবানের মনোবল বাড়িয়ে দিয়েছে "।তিনি আরো বলেন, " তালেবান নেতারা জানতেন যে আফগান সৈন্যরা যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সহায়তা না পেলে কাবুলে সরকার উৎখাত করা সম্ভব"।

২। আফগান সৈন্যদের দুর্নীতি ও হতাশা -

আমেরিকা আফগান সামরিক বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও অস্ত্রে সুসজ্জিত করা বাবদ প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। আর তাই তালেবানদের মোকাবিলায় সৈন্যদের অন্তত কাগজে-কলমে হলেও যথেষ্ট শক্তিশালী হওয়া উচিত ছিল।তবে কাজের সময় সেনারা কোন ভূমিকাই রাখতে পারেনি।বিশ্লেষকরা আফগান সেনাবাহিনীর পতনের পিছনে দুটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে মনে করেন -সৈন্যদের হতাশা এবং তাদের দুর্নীতিগ্রস্ততাকে।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সাথে ২০২০ সালে কাতারের দোহায় মার্কিন-তালেবান চুক্তি হয়। সেটির পরই আফগানদের কাছে এই বার্তা পৌঁছায় যে ওয়াশিংটন আর আফগানিস্তানে আগ্রহী নয়।এর ফলে আফগান সৈন্যবাহিনী হতাশ হয়ে পড়ে।জানুয়ারিতে যখন ট্রাম্পের জায়গায় জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, তখন আফগান কর্মকর্তারা আশা করেছিলেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে আরো কিছুটা সময় পাবেন।কিন্তু ২০২১ সালের এপ্রিলে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাইডেন দ্বিগুণ গতিতে এগিয়ে নেন। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাটো মিত্ররাও তা অনুসরণ করে।আফগান প্রশাসন এত দ্রুত সৈন্য প্রত্যাহারের জন্য প্রস্তুত ছিল না তা স্পষ্ট। তালেবান দেশব্যাপী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়নি এবং আন্তঃআফগান আলোচনাও ঝুলে ছিল।

ইউএস কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, আফগান সামরিক বাহিনীর " সারা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সেনা চৌকিগুলোতে খাদ্য এবং গোলাবারুদের মতো গুরুত্বপূর্ণ জিনিসও সরবরাহ করার ক্ষমতা ছিল না "।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে," শেষ পর্যন্ত কোনো লাভ হবে না, এটা বুঝতে পেরেই বেশিরভাগ সৈন্য জীবনের ঝুঁকি না নিয়ে তালেবানের সাথে বোঝাপড়া, আত্মসমর্পণ করা বা প্রতিরোধ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে"।

৩। গনি সরকারের দুর্নীতি -

বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান বরাবরই আশরাফ গনি সরকারের ব্যাপক দুর্নীতির খবর প্রকাশ করে আসছে।দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের আফগানিস্তান পেপার্স প্রকল্পের তথ্য অনুসারে, " সেনা ও পুলিশ মিলিয়ে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর ৩ লাখ ৫২ হাজার সদস্য থাকার কথা বললেও সাবেক সরকার কেবল ২ লাখ ৫৪ হাজার সদস্যের পরিচয় নিশ্চিত করতে পেরেছে"।পত্রিকাটি জানায়, " কমান্ডাররা অর্থ লোপাটের জন্য কেবল ‘ভুয়া সৈনিকই' তৈরি করেননি, সৈন্যদের বেতন এবং প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ নিয়েও দুর্নীতি করেছেন"।

যুদ্ধের খরচ পর্যবেক্ষণ করার দায়িত্বপ্রাপ্ত মার্কিন সংস্থা প্রতিবেদন দিয়েছে যে ‘জবাবদিহিতা ছাড়া খরচের সুযোগই এই ধরনের দুর্নীতিকে উসকে দিয়েছে এবং এটি বন্ধ করার চেষ্টাতেও মনোযোগ ছিল না।সংস্থাটির মতে, " এই অর্থ সঠিকভাবে ব্যয় করা হয়েছে কিনা সে প্রশ্নের চূড়ান্ত উত্তর লড়াইয়ের ময়দানে ফল দিয়েই বোঝা সম্ভব হবে"।এই প্রতিবেদনটি এখন কংগ্রেসের মূল্যায়নের অপেক্ষায় আছে।

৪। দেশ প্রেমের অনুপস্থিতি ও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আনুগত্যহীনতা -

আফগান সেনাবাহিনীর পতনের আরেকটি কারণ ছিল দেশ প্রেমের অনুপস্থিতি ও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আনুগত্যহীনতা ।আফগান নাগরিকরা অনেকেরই নিজের গোত্র বা অঞ্চলের প্রতি যতটা আনুগত্য সে তুলনায় কাবুলের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি তাদের আনুগত্য ছিল অনেক কম। অন্যদিকে তালেবানরা ইসলামপন্থী আদর্শে ঐক্যবদ্ধ। ২০০১ সালে যখন আমেরিকা আফগানিস্তান আক্রমণ করে ক্ষমতা থেকে তালেবানকে উৎখাত করে, তখন তালেবানরা বলেছিল, তারা ইসলামী আদর্শ ছাড়বে না এবং আফগানিস্তান থেকে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী এবং হানাদারদের উৎখাত করতে যেকোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

পাকিস্তানী গণমাধ্যমের ভাষ্যকার নাদিম ফারুক পরাচা মনে করেন," কাবুলে সরকারের প্রতি দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা আফগান বাহিনীর আনুগত্য ছিল একেবারেই ভঙ্গুর"।পরাচা আরো উল্লেখ করেন, "১৯৮৯ সালে সোভিয়েত সৈন্য প্রত্যাহারের পর দেশটির সাবেক সমাজতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ নজিবুল্লাহকে ক্ষমতাচ্যুত করতে মুজাহিদিনের তিন বছর লেগেছিল, কিন্তু গনির বাহিনী এক মাসও টিকতে পারেনি"।

আফগানিস্তানে শান্তি স্বস্তি কতদূর, তালেবানরাই কী করতে চাইছে আফগানিস্তানে -

সারা দুনিয়ায় এখন যে প্রশ্নগুলি সবচেয়ে বেশী আলোচিত হচছে তা হলো, আমেরিকাত্তোর আফগানিস্তানে কী হতে যাচ্ছে ? তালেবানরা সেখানে কী ধরনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চলছেন ? তাদের স্বল্প মধ্য বা দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যইবা কী? সারা দুনিয়ার সাথে তাদের সম্পর্কই বা কি রকম হবে ? আবার আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশ, বিশেষত চীন-রাশিয়া-পাকিস্তান-ইরান-তুরস্ক, যেসব দেশ তালেবানের নেতৃত্বাধীন সরকারকে স্বীকৃতি দানের কথা বলছে, তারা আফগানিস্তান থেকে কী প্রত্যাশা করে? এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র ইউরোপ ও ন্যাটোর দেশগুলো, সেই সাথে ভারত আফগানিস্তানের নতুন পরিবর্তনে কী ভূমিকা পালন করতে পারে সেটিও একটি বড় প্রশ্ন।


ছবি - bbc.com

স্বল্প মেয়াদের যে দৃশ্যপট আফগানিস্তানে দেখা যাচ্ছে , তাতে এটা বুঝা যাচছে যে , তালেবানদের নেতৃত্বাধীন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার আফগানিস্তানে খুব শিগগির প্রতিষ্ঠিত হবে। মার্কিন বিশেষ দূত জালমে খালিলজাদ তালেবান প্রতিনিধি এবং আশরাফ গনির সাবেক সরকারের প্রতিনিধিদের সাথে রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য আমেরিকান কূটনীতিকদের একটি দল নিয়ে দোহায় রয়েছেন। মার্কিন সরকারের মতে, তালেবানকে যা করতে হবে, তা হলো একটি সরকার গঠনের চেষ্টা করা যা অন্তর্ভুক্তিমূলক, যা মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, যে সরকার মেয়েদের তাদের পূর্ণ ক্ষমতাকে এগিয়ে নেয়ার অধিকারকে সম্মান করে।

পশ্চিমাঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের সরিয়ে নেয়ার মধ্যেই তালেবান কর্তৃপক্ষ শান্তির বার্তা দিয়েছে। দ্রুত রাজধানী কাবুল ও সমগ্র আফগানিস্তান দখল করার পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে তালেবানের পক্ষ থেকে এ শান্তির বার্তা এসেছে। তালেবানরা ইসলামী নীতি অনুসারে নারী অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। অন্যান্য দেশের সাথে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের কথাও বলেছে তারা। এছাড়া গণমাধ্যমের স্বাধীনতা দেয়ার নিশ্চয়তা আর সাবেক আফগান সরকারের কর্মকর্তাদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছে। এর পরে পশ্চিমা দেশগুলো তাদের সমর্থক ও ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের কাবুল থেকে সরিয়ে নেয়া শুরু করে।

আমেরিকা বা তার মিত্ররা মানুন কিংবা না মানুন, আফগানে আমেরিকান পরবর্তী ভূরাজনীতির একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হবে একাধিক খেলোয়াড়ের উপস্থিতি। বিশ্বব্যাপী যে কোন ঘটনায়,যে কোন দেশে যেখানে একাধিক খেলোয়াড় নিযুক্ত হয় সেখানে ঐতিহাসিকভাবেই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। আর এই ক্ষেত্রে, একাধিক খেলোয়াড় আফগানিস্তানের ভবিষ্যতের ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলবে।এখন আমেরিকা যতই ইরান, রাশিয়া এবং চীন এই তিনটি দেশকে তাদের কমন শত্রু মনে করুক তারা আসলে সবাই ওয়াশিংটনের সাথে আফগানিস্তানের ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।অর্থ্যাৎ তালেবানদের ভবিষ্যত সাফল্য বা ব্যর্থতা আমরিকা থেকে এ তিন দেশের ভূমিকার উপর বেশী নির্ভর করবে।


ছবি - এএফপি

তালেবানরা এখন আগেরবারের থেকে অনেক বেশী পরিণত আচরনের প্রমাণ দিচছে যা থেকে ভাল কিছু আশা করা যায় তাদের নিকট।কাবুলে উপস্থিতির প্রথম দিনেই তালেবানের উপ-প্রধান মোল্লা আবদুল গনি বারাদারের ঘোষণায় বলেন, "তালেবানের মূল লক্ষ্য আফগানিস্তানের স্বাধীনতা অর্জন করা , তবে তারা এখনো আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে বিশ্বাসী"। বারাদার আরো বলেন, "তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করতে চায় না। তালেবান মনে করে, আফগানিস্তানের সব শ্রেণীর মানুষ আইনের দৃষ্টিতে সমান"।তিনি আরো বলেন, "ইসলামী অনুশাসনের আওতায়, সব আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতি, মানবাধিকার, সংখ্যালঘুদের অধিকার, নারী অধিকার এবং বাকস্বাধীনতার প্রতি তালেবান সম্মান প্রদর্শন করে। এ ছাড়া, তালেবান নারীর শিক্ষা, চাকরি, সম্পদের মালিকানা ও ব্যবসা করার অধিকার প্রদান করবে"। তবে এসবই হবে ইসলামী আইন ও জাতীয় স্বার্থের প্রতি লক্ষ্য রেখে।

আর তাই এ কথা বলা যায়,তালেবানদের সাফল্য কিংবা ব্যর্থতা যাই হোক তা দেখার জন্য আমাদের আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে কাবুল দখল পরবর্তী ঘটনা প্রবাহ এবং গত কয়েকদিনের ঘটনাবলি দেখে এটা আশা করা যেতে পারে ভাল একটা কিছুর।

==================================================================
পূববতী পোস্ট -

তালেবানদের কাবুল দখল পরবর্তী ফলোআপ পোস্ট - ১ Click This Link
" আফগানিস্তানে আমেরিকার ২০ বছর " - আমেরিকা কি নিয়ে এবং আফগানিস্তানকে কোথায় রেখে যাচছে ? এ ব্যাপারে বিশ্ব নেতৃবৃন্দদের প্রতিক্রিয়া কি ?


তথ্যসূত্র ও সহযোগীতায় - গালফ নিউজ ,বিবিসি, আল জাজিরা,এএফপি ও ডয়চে ভেলে।

মন্তব্য ১৯ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৩:২৩

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ১। তালেবান ক্ষমতায় থাকার জন্য যে কোন ছাড় দিতে প্রস্তুত। যুক্তরাষ্ট্র তাদের ক্ষমতায় রাখতে চায়। তবে যুক্তরাষ্ট্র পরোক্ষভাবে তালেবানদের বিরোধী পক্ষকে গোপনে সাহায্য করতে পারে ভবিষ্যতে। আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুদ্ধ আর হয়তো করবে না কিন্তু তালেবানদের উপর প্রভাব বিস্তারের জন্য গোপনে পরোক্ষভাবে যুদ্ধ করবে ও যুদ্ধ কৌশল প্রয়োগ করবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র চাইবে আফগানিস্তানে তাদের একটা তাবেদার সরকার থাকুক। তালেবান যুক্তরাষ্ট্রের কথা মত চললে যুক্তরাষ্ট্র কোন ঝামেলা নাও করতে পারে।
২। কেউ যদি যুদ্ধ করাকে চাকরি মনে করে তাহলে তার পক্ষে প্রবলভাবে যুদ্ধ করা সম্ভব হয় না। যুদ্ধের জন্য একটা অনুপ্রেরণা লাগে। আফগানিদের ক্ষেত্রে সেটা ছিল না।
৩। যুক্তরাষ্ট্র কৈয়ের তেলে কৈ ভাজে। তাই তালেবানের পিছনে ব্যয়িত অর্থ অন্য কোনভাবে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তুলে নিয়েছে বা নেবে।
৪। আফগানিস্তানে ভবিষ্যৎ শান্তি বা অশান্তি যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ডের উপর নির্ভর করবে। যুক্তরাষ্ট্র এই এলাকায় তাদের প্রভাব ছাড়তে চাবে না। যদি যুক্তরাষ্ট্র সত্যিই এই অঞ্চলে যুদ্ধ করে ক্লান্ত হয়ে থাকে সেই ক্ষেত্রে শান্তি আসতে পারে। আর যদি তারা এই সৈন্য প্রত্যাহারকে রণ কৌশল হিসাবে মনে করে সেই ক্ষেত্রে তালেবানদের কপালে ভোগান্তি আছে। তবে ঐ অঞ্চলে তালেবানদের বিরুদ্ধে কোন দেশের সামরিক বাহিনীই সফল হতে কখনও পারবে না। তালেবানদের নিয়ন্ত্রণ করতে হলে তাদের অর্থনৈতিক ও অস্ত্রের সচ্ছলতা এবং বহির্বিশ্বে তাদের জনসমর্থনকে ধ্বংস করতে হবে। তালেবানরা ঐক্যবদ্ধ হলেও তাদের বিরোধী আফগানিরা কখনও একতাবদ্ধ হতে পারবে বলে মনে হয় না। তবে বাইরের দেশগুলির উসকানির কারণে ওখানে গৃহযুদ্ধ লেগে থাকতে পারে।

২২ শে আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:০১

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ সাড়ে চুয়াত্তর ভাই,আপনার চমতকার যুক্তিযুক্ত মন্তব্যের জন্য।

আপনি বলেছেন - ১। তালেবান ক্ষমতায় থাকার জন্য যে কোন ছাড় দিতে প্রস্তুত। যুক্তরাষ্ট্র তাদের ক্ষমতায় রাখতে চায়। তবে যুক্তরাষ্ট্র পরোক্ষভাবে তালেবানদের বিরোধী পক্ষকে গোপনে সাহায্য করতে পারে ভবিষ্যতে। আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুদ্ধ আর হয়তো করবে না কিন্তু তালেবানদের উপর প্রভাব বিস্তারের জন্য গোপনে পরোক্ষভাবে যুদ্ধ করবে ও যুদ্ধ কৌশল প্রয়োগ করবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র চাইবে আফগানিস্তানে তাদের একটা তাবেদার সরকার থাকুক। তালেবান যুক্তরাষ্ট্রের কথা মত চললে যুক্তরাষ্ট্র কোন ঝামেলা নাও করতে পারে।

- আমেরিকা এখন তালেবানদের সকল রকম সর্মথন দিবে এটা নিশ্চিত তবে ভবিষ্যতে আমেরিকা তালেবানদের বিরোধী পক্ষকে যে সাহায্য করবেনা এটাও বলা যায়না।কারন, আমেরিকা তালেবানদের ততদিনই সাহায্য করবে যতদিন তারা আমেরিকার কথামত চলবে।

২। কেউ যদি যুদ্ধ করাকে চাকরি মনে করে তাহলে তার পক্ষে প্রবলভাবে যুদ্ধ করা সম্ভব হয় না। যুদ্ধের জন্য একটা অনুপ্রেরণা লাগে। আফগানিদের ক্ষেত্রে সেটা ছিল না।

- আসলে আমার মনে হয় ,একটি দেশের সেনাবাহিনী কখনো দীর্ঘমেয়াদে তার দেশের জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চাইবেনা। আমেরিকা সারা জীবনব্যাপী যে যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছিল আফগানদের উপর তাতে তাদের সৈন্যদের উপর ব্যাপোক মানষিক প্রভাব ফেলে।আর তাই সৈন্যদের নৈতিক অবস্থান ও দূর্বল হয়ে পড়ে কারন,তারা তাবেদার (আমেরিকার) হয়ে যুদ্ধ করত দেশের হয়ে নয়।

৩। যুক্তরাষ্ট্র কৈয়ের তেলে কৈ ভাজে। তাই তালেবানের পিছনে ব্যয়িত অর্থ অন্য কোনভাবে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তুলে নিয়েছে বা নেবে।
- আমেরিকা নিজের লাভ ছাড়া কখনো কিছুই করেনা।আমেরিকার ইতিহাসের দিকে তাকালে এর ভুরিভুরি প্রমাণ মিলে।কাবুলে যা খরছ দেখিয়েছে তার বেশীরভাগেরই সুবিধাভোগী আমেরিকান রাই ।

৪। আফগানিস্তানে ভবিষ্যৎ শান্তি বা অশান্তি যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ডের উপর নির্ভর করবে। যুক্তরাষ্ট্র এই এলাকায় তাদের প্রভাব ছাড়তে চাবে না। যদি যুক্তরাষ্ট্র সত্যিই এই অঞ্চলে যুদ্ধ করে ক্লান্ত হয়ে থাকে সেই ক্ষেত্রে শান্তি আসতে পারে। আর যদি তারা এই সৈন্য প্রত্যাহারকে রণ কৌশল হিসাবে মনে করে সেই ক্ষেত্রে তালেবানদের কপালে ভোগান্তি আছে। তবে ঐ অঞ্চলে তালেবানদের বিরুদ্ধে কোন দেশের সামরিক বাহিনীই সফল হতে কখনও পারবে না। তালেবানদের নিয়ন্ত্রণ করতে হলে তাদের অর্থনৈতিক ও অস্ত্রের সচ্ছলতা এবং বহির্বিশ্বে তাদের জনসমর্থনকে ধ্বংস করতে হবে। তালেবানরা ঐক্যবদ্ধ হলেও তাদের বিরোধী আফগানিরা কখনও একতাবদ্ধ হতে পারবে বলে মনে হয় না। তবে বাইরের দেশগুলির উসকানির কারণে ওখানে গৃহযুদ্ধ লেগে থাকতে পারে।

- আমেরিকা কখনো তার প্রভাব ছাড়তে চাইবেনা এবং সুযোগ পেলেই লাগিয়ে দিবে,লেলিয়ে দিবে তালেবান বিরোধীদের এবং প্রতিনিয়ত যখন নানা রকম ঘটনা-দূর্ঘটনা ঘটতে থাকবে এবং দেশে ও দেশের বাইরে তাদের সর্মথন কমতে থাকবে তখন তালেবানদের পক্ষে শাসন ক্ষমতায় টিকে থাকাই মুশকিল হবে যদিনা চীন-রাশিয়া-ইরান নিঃশর্ত সাপোর্ট ও সহযোগীতা না করে।

২| ২২ শে আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:২৮

চাঁদগাজী বলেছেন:



গরুর রচনায় বলা হয়েছে, "বাইডেন সোমবার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষনে বলেছেন ...।"

-বাইডেন এখনো জাতির উদ্দেশ্যে ভাষন দেননি।

২২ শে আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:৪৭

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ চাঁদগাজী ভাই,আপনার মন্তব্যের জন্য।

ভাই তাইতো হওয়ার কথা বা সোমবারই ভাষন দিয়েছে বলেই খবরে প্রকাশ যা দেখেছে বিশ্ববাসী সাথে সাথে বিবিসি, আল জাজিরা ও রয়টার্সের মত বাঘা বাঘা সব মিডিয়া হাউস ও বলেছে। এখন আপনি বলেছেন,বাইডেন ভাষন দেয়নি !!! ব্যাপোক চিন্তার বিষয় :( ।অবশ্য আপনিত আমেরিকায় আছেন,আপনি ত আর ভূল বলার লোক না । তাহলে ভূল টা কোথায় হল - মিডিয়া,টিভি না আপনার?

*** আফগান পরিস্থিতি নিয়ে কিছুটা দায় নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আর তিনি কিছু দোষ চাপালেন অন্যের ঘাড়ে।আফগানিস্তানে তালেবানের হাতে মার্কিন-সমর্থিত সরকার পতনের প্রেক্ষাপটে অবকাশ কাটছাঁট করে হোয়াইট হাউসে ফিরে স্থানীয় সময় গত সোমবার বিকেলে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন বাইডেন। আফগানিস্তান তালেবানের দখলে যাওয়ার পর বাইডেন এ নিয়ে প্রথম প্রকাশ্যে বক্তৃতা দিলেন। তার আগে কাবুল দূতাবাস থেকে মার্কিন পতাকা নামিয়ে ফেলা হয়। মার্কিন-সমর্থিত আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি দেশ থেকে পালান।

প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন,"আমি আমেরিকার জনগণের কাছে সত্য জানানোর জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সত্য হচ্ছে, আমাদের অনুমানের চেয়ে দ্রুততার সঙ্গে আফগান পরিস্থিতি নাজুক হয়ে উঠেছে"।সবশেষ আফগান পরিস্থিতি নিয়ে নিজ দেশে তোপের মুখে থাকা বাইডেন বলেন, পরিস্থিতি বিশৃঙ্খলার দিকে দ্রুততার সঙ্গে গড়িয়েছে। এমন দ্রুততার সঙ্গে পুরো আফগান পরিস্থিতি নাজুক হয়ে উঠবে বলে তাঁর ধারণা ছিল না। সবশেষ এ পরিস্থিতির জন্য তিনি নিজে কিছুটা দায় গ্রহণ করেন।
কিছুটা দায় স্বীকার করে, কিছুটা দায় অন্যের ওপর চাপিয়ে ও কিছুটা পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে বাইডেন যে বক্তৃতা দিয়েছেন, তা আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করবে না বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রতিনিধি পরিষদের আর্মড সার্ভিস কমিটির প্রভাবশালী রিপাবলিকান সদস্য মাইক রজার্স বলেছেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বক্তৃতার সঙ্গে আফগানিস্তানের বাস্তব পরিস্থিতির কোনো মিলই নেই।

মাইক রজার্স প্রশ্ন রাখেন, " কেন অপ্রত্যাশিত সব বাস্তবতার জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হলো না? এখনো এ নিয়ে কোনো পরিকল্পনা নেই কেন"?

*** খবর বিবিসি, আল জাজিরা ও রয়টার্সের।

২২ শে আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:৫০

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ভাইজান, বাইডেন ভাষন দিয়েছেন কি দেননি বা দিলে কবে দিয়েছেন আর আর না দিয়ে থাকলে আফগান পরিস্থিতি নিয়ে কবে ভাষণ দিবে যদি একটু বিশদ জেনে জানাতেন তাহলে ব্যাপোক ;) খুশি হইতাম।

৩| ২২ শে আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:৫২

রানার ব্লগ বলেছেন: আপনাকে ছোট্ট একটা উধাহারন দেইঃ

ব্রাক বাংলাদেশ উগান্ডায় ধান চাষের সকল যন্ত্রপাতি , বিজ ও পদ্ধতি , অর্থ এবং প্রশিক্ষন উগান্ডার লোকদের দেয় যাতে তাড়া ধান উৎপাদন করে, কিছুদিন পর যখন মনিটরিং করা হলো দেখা গেলো তাড়া খালি জমি ফেলে বসে আছে জিজ্ঞাসা করা হলো কি কারনে চাষ করে নাই তার প্রতি উত্তর দিলো তোমার সবই দিছ ঠিক আছে জমি চাষ করে তো দাও নাই। ব্র্যাক চাষ করে দিলো এর পর কিছুদিন পর আবার তাড়া মনিটরিং করলো সেই একই অবস্থা চাষের জমি পরে আছে তাদের ও একই উত্তর চাষ করলে হবে বিজ লাগাওনি কেনো, ব্রাক বীজ লাগিয়ে দিলো যথারিতি ফসল পাকার সময় এসে দেখা গেলো তাড়া হাত গুটিয়ে বসে আছে তাদের আবার জিজ্ঞাসা করা হলো তাড়া ফসল কেনো কাটছে না উত্তর এলো টাকা না দিলে ফসল কাটবো না।

২২ শে আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৮

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রানার ব্লগ ভাই,আপনার চমতকার এবং বাস্তব মন্তব্যের জন্য।

গ্রামে প্রচলিত একটি কথা আছে," ভাগের গরু বাঘেও খায়না " মানে হল গরু খুব খুব উপকারী হলেও যদি সেটা ভাগের (কয়েকজনের মালিকানায় থাকে ) তাহলে সেটা কোন কাজে লাগেনা।

আর মুফতে (বিনা পয়সায় বা কোন পরিশ্রম ছাড়া যা লাভ হয়) পাওয়া জিনিষের প্রতি মানুষের কোন মায়া থাকেনা।

আফগানিস্তানে আমরিকার সব কিছুই এভাবে তলিয়ে গেছে ভাগের গরু আর মুফতে পাওয়া জিনিষের মত।কারন, দখলদারদের প্রতি সব দেশ-জাতিরই একটা ঘৃণা থাকে আর তারা যতই ভাল করতেই চেষ্টা করুক তা স্থানীয় সম্প্রদায়ের মনে খুব কমই দাগ কাটতে পারে। তারা বাধ্য হয় কিছু করতে কিন্তু মন থেকে সেসব কিছু মেনে নেয়না।

৪| ২৩ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ১২:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্ট টি তৈরি করতে অনেক পরিশ্রম করেছেন। সে জন্য আপনি ধন্যবাদ পেতেই পারেন।

২৩ শে আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১:০১

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই,আপনার মন্তব্যের জন্য।

প্রবাস জীবনে ভাই অফিস সময়ের পর কিছু করার নেই,তাই বাকী সময় টা পড়তে চেষ্টা করি এবং যা পাই তাই পড়ি।আর এই পড়ার সময় যা কিছু ভাল লাগে তাই বাকী সবার সাথে শেয়ার করার জন্যই মাঝে মাঝে ব্লগে পোস্ট প্রসব (লেখা)।আর এতে অনেক ভাল লাগে ও আনন্দ পাই এবং আরো আনন্দ পাই যখন আপনারা কষ্ট করে পড়েন ও মন্তব্য করেন।

আবার ও রাজীব ভাই আপনাকে ধন্যবাদ আপনি যে সময় করে পড়া ও মন্তব্য করার চেষ্টা করেন তার জন্য।

৫| ২৩ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ১:০৭

কুশন বলেছেন: তালেবান সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, ছিলো আছে থাকবে! তালেবানদের যারা সমর্থন করে তারাও দেশ ও পৃথিবির জন্য ক্যান্সার স্বরুপ। এদের মূল কান্ড সব পুড়িয়ে ফেলে পৃথিবীকে সুস্থাতা দেয়া মানুষের নৈতিক কর্তব্য।

২৩ শে আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১:২৪

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ এবং সাদর সম্ভাষণ কুশন (আপনি ভাই কিংবা বোন হন তা আমারা জানা নেই ) আমার ব্লগে এবং আপনার মন্তব্যের জন্য।

আপনি বলেছেন,- তালেবান সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, ছিলো আছে থাকবে! তালেবানদের যারা সমর্থন করে তারাও দেশ ও পৃথিবির জন্য ক্যান্সার স্বরুপ। এদের মূল কান্ড সব পুড়িয়ে ফেলে পৃথিবীকে সুস্থাতা দেয়া মানুষের নৈতিক কর্তব্য।

এটা ঠিক, ক্যান্সারকে সমুলে উৎপাটন না করলে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং সুস্থকোষকেও অসুস্থ করে তোলে। তার জন্য তাকে সমুলে উৎপাটন (বাদ দেয়া) জরুরী, তবে -

- ভাই,রাজনীতিতে নানা দল-মত-মতাদর্শের উপস্থিতি থাকবে এবং সবাই যার যার আলোচ্যসূচি / করণীয় বিষয় জনগনের সামনে তুলে ধরবে।আর জনগন নিজেদের নিজের ইচ্ছায় যা তাদের নিকট ভাল লাগবে তা গ্রহন করবে কিংবা বর্জন করবে।এটাই গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি এবং গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।কাজেই ,মত এবং মতবাদের অমিল অমিল হলেই কাউকে পুড়িয়ে ফেলতে হবে কিংবা তাকে আক্রমণ করা বা সন্ত্রাসী-জংগী এগুলি যেমন গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি সমর্থন করেনা আবার তেমনি কারো উপর জোর করে কোন মতবাদ চাপিয়ে দেয়াও গণতন্ত্রের বৈশিষ্ঠ্য নয়।

আর তাইতো , তালেবান রা যা করেছে তা যেমন গ্রহনযোগ্য নয় তেমনি আমেরিকা জোর করে আফগানদের উপর যে শাসন চাপিয়ে দিয়েছিল তা সেই দেশের জনগনের কাছে গ্রহনযোগ্যতা পায়নি।এ ক্ষেত্রে না উগ্রতা ভাল না অতি নমনীয়তা ভাল । যে কোন ক্ষেত্রে মধ্যপন্থাই (জনগনকে শুনা এবং তাদের মতামতকে গুরুত্ব দেয়া ) সর্বোত্তম পথ এটাই শাসন ক্ষমতায় আসীন কর্তপক্ষ ভূলে যায়।

৬| ২৩ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ২:২৯

জি এইস মেহেদী বলেছেন: তালেবান সত্যিকার অর্থে স্বাধীনতা কামী সংগঠন,, তারাই আফগানিস্তানের অরিজিনাল মুক্তিযোদ্ধা, এ কথার যদি কেউ বিরোধিতা করে, আমি কেন সবাই তাকে মানসিক বিকৃতি মস্তিষ্কের লোক বলাই বাহুল্য,,, যাদের ইসলাম নিয়ে ঙ্গান কম কিন্তু মুসলিম দাবী করে তাদের মুখ থেকে তালেবান জঙ্গি কথা টা বের হবে ,৷ কোন অমুসলিম ভাই যদি তালেবান জঙ্গি কথাটা মনে হয় তাহলে দয়া করে ইসলামের হুকুৃমাত গুলো কি কি,, এই জমীনে আল্লাহর আইন কি কি মানতে হবে কিভাবে মানতে হবে,, সবকিছুই দয়া করে গুগল সার্চ করে পড়ে নিবেন,, পারলে আপনি অমুসলিম আপনার মতো করে একটা দেশ সাজান যা আপনার ধর্মে আছে,, আজাইরা কিচ্ছা কাহিনি সময় মুমিন বান্দাদের নাই,, তারা এক আল্লাহকে ভয় করে এবং তারই আইন চালু করা তাদের ঈমানি দায়িত্ব,, আপনি মরবেন নাকি মারা যাবেন এসব যুক্তি দেখাইয়ে,, নারীদের অধিকারের কথা বলে,, বিবস্ত্র করা ইসলাম শিখায় নি,, সুতরাং আপনি আমার মধ্যে পার্থক্য নামাজ,, মানে মুসলিম আর অমুসলিম(তথা কাফের) এর মধ্যে পাথর্ক্য নামাজ,,, তারপর রোজা, হজ্জ, যাকাত , জিহাদ সবকিছু পর্যায় ক্রমে চলবে,, কালিমা পাঠ ছাড়া ইসলামের সব নিয়ম মানলেও আপনি মুসলিম নয়,,, তালেবান এর উদ্দেশ্য ইসলামি শাসন কায়েম করা যা সরাসরি কোরআন থেকে প্রয়োগ হবে একটাও তাদের বানানো নয়,,, আল্লাহ কবুল করুক আমিন৷।

২৩ শে আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১:৪৩

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ জি এইস মেহেদী ভাই, আপনার আপনার চমতকার মন্তব্যের জন্য।

যদিও বর্তমান দুনিয়ার এ এক করুন ও বেদনাদায়ক ঐতিহ্য যে, কেউ যদি ইসলাম ধর্মের অনুসারী হয় কিংবা কোন শাসকের ইসলামের সাথে নূন্যতম কোন সম্পর্ক থাকে তাহলে তাকে বা তাদেরকে মৌলবাদ-ধর্মান্ধ-উগবাদী-তালেবান-জংগী ইত্যাদি নানা বিশেষনে ভূষিত করে তথাকথিত গণতান্ত্রিক ও উদারনৈতিকতার দাবিদার মানুষেরা।অথচ গণতন্তের মূলই যে হল সহনশীলতা এবং নানা দল-মতের সমষ্ঠি এটাই তারা মানেনা বা মানতে চায়না। এ যেন অনেকটা, বিচার মানি তবে তালগাছটা আমার" টাইপের।

আর সারা দুনিয়ায় প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচছে এবং হবে। এই পরিবর্তন হয় মানুষের জন্য এবং মানুষের ইচছায়।আর এই জন্যই আজে ক্ষমতায় কাল সে ক্ষমতাহীন কিংবা আজ যে মতাদর্শ/মত ভাল কাল তা ভাল নাও থাকতে পারে ।

জনগনের জন্য এবং জনগনের সেবায় যে বা যারা অধিক মনোনিবেশ করবে তারাই জনগনের মাঝে অধিক গ্রহনযোগ্যতা পাবে ।সে ক্ষেত্রে তালেবান কিংবা গণি সরকার বিবেচ্য বিষয় নয়।আর মুসলিম মাত্রই ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলি মেনে চলার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এখন যে মানবে সে সফল হবে আর যে মানবে না এ(ব্যর্থতা)র দায় তার ।

৭| ২৩ শে আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১২:২১

রানার ব্লগ বলেছেন: জি এইস মেহেদী @ তালেবান কারা ? এই প্রশ্নের উত্তর দিন । তালেবানের সাথে ধর্মের কি সম্পর্ক ?

২৩ শে আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৪:৫৭

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: রানার ব্লগ ভাই @ জি এইস মেহেদী ,আমি কি বলব।

তালেবান শব্দের অর্থ - মনোযোগী, বন্ধুত্বপূর্ণ, উদ্বায়ী, আনন্দদায়ক, স্বাভাবিক, আধুনিক, সক্রিয়, ভাগ্যবান, উদার, গুরুতর, উপযুক্ত।তার মানে হলো,যারা চারিত্রিক ও মানষিক ভাবে খুব শক্তিশালী তাদের তালেবান বলে।

তারপরেও, তালিব আরবী শব্দ। তালেবান এসেছে আরবী তালিব শব্দ থেকে। যার অর্থ হল জ্ঞান তলবকারী, শিক্ষার্থী, ছাত্র। আরবী তালিব শব্দের সাথে ফারসী ভাষার বহুবাচনিক উপসর্গ আন/আঁ যুক্ত হয়ে হয়েছে তালিবান বা তালেবান অথবা তালেবাঁ। সুতরাং তালেবান অর্থ শিক্ষার্থীগণ, ছাত্রজনতা। এ দৃষ্টিকোণ থেকে তালেবান শব্দটি আরবী ও ফারসী ভাষার সমন্বিত শব্দ। শোষণমুক্ত আফগান গড়ার লক্ষে যেহেতু সে দেশের ছাত্রজনতা একটি সশস্ত্র আন্দোলন গড়ে তুলেছিল তাই সশস্ত্র সে ছাত্রবাহিনীর নাম হয়েছিল তালেবান।
যেহেতু আফগান মুসলিম প্রধান দেশ এবং এর সাথে বেশীরভাগ মুসলিম জড়িত তাই তালেবান বলতে এখন সারা দুনিায়াতে মুসলিমদেরকে বুঝায় এবং মুসলিমদের যেহেতু ইসলামের সাথে সম্পর্ক এবং তারা যেহেতু ইসলামের আলোকে সমাজ-রাষ্ট্র পরিচালনা করতে চায় , তাই তালেবানদের সাথে ইসলাম ধর্মের বিদ্যমান।

৮| ২৩ শে আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২৯

রানার ব্লগ বলেছেন: হাস্যকর !!! আপনারা ধর্ম কে একটা জঙ্গি গোষ্ঠির সাথে মিলিয়ে ফেলেছেন।

তালেবানদের ভেতর আফগানদের সংখ্যা নগন্য পর্যায়ে তাই তালেবানদের সন্ত্রাসী কার্জক্রম কে যারা বলছে স্বাধীনতার যুদ্ধ তারা তাদের মানুষিক সমস্যার চিকিৎসা করালে ভালো হয়।

আপনার একজন তালেবান কে দেখে মনে হয়েছে এরা সুস্থ, প্রত্যকটা গাজা ও আফিমের নেশায় বুধ হয়ে থাকে এরা এক এক জন হত্যাকারী, যোদ্ধা আর হত্যাকারীর ভেতর বিশাল ফারাক আছে।

আফগানিস্থান একটা দেশ সেই দেশের অধিকর্তা হবে একজন আফগনা তালেবান নামক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী না। এটাই সঠিক ও বাস্তব !!!!!

২৩ শে আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৮

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রানার ব্লগ ভাই @ জি এইস মেহেদী ,আপনার প্রতিমন্তব্যের জন্য।

ভাই, এখানে ধর্মকে কারো সাথে মিলানো হয়নি । এখন যে কেউ যে নামেই চলুক না কেন বা ধর্মের নামে কোন খারাপ কাজ করলে এর দায় ধর্মের নয় ,ব্যক্তির।

এখানে একটি বিষয়,কেউ দাড়ি-টুপি দেখলেই খারাপ চোখে দেখে বা জংগী-কাঠমোল্লা ইত্যাদি নানা বিশেষণে ভূষিত করে এটাও ঠিক না।

আর তালেবানরা যদি আফগানী না হয় তাহলে তার কোথাকার এবং তাদের আফগান শাসনের অধিকার না থাকে তাহলে আমেরিকার বা তার দোসরদের কি সেই অধিকার আছে? এ ব্যাপারে আপনার কি মত?

৯| ২৪ শে আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১২:৩৯

রানার ব্লগ বলেছেন: তালেবান হলো উজবেকিস্থান তুরকিমিনিস্থান চেচনিয়া তাজেকিস্থান এর বিদ্রহী গোষ্ঠীর সংমস্রন কিছু পাকিস্থানী ও আফগানিস্থানী আছে তাও খুবি সীমিত।

২৪ শে আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১২:৫৮

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আবারো ধন্যবাদ রানার ব্লগ ভাই ,আপনার প্রতিমন্তব্যের জন্য।

আপনি বলেছেন - তালেবান হলো উজবেকিস্থান তুরকিমিনিস্থান চেচনিয়া তাজেকিস্থান এর বিদ্রহী গোষ্ঠীর সংমস্রন কিছু পাকিস্থানী ও আফগানিস্থানী আছে তাও খুবি সীমিত।

--- মেনে নিলাম আপনার কথা যেহেতু তাদের জাতিয়তা (নাগরিকতা) প্রমাণের জন্য আমাদের হাতে কোন সুযোগ নেই তবে তারা এখন যখন রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবে-বসবে ,তখন তারা যদি আফগান নাগরিক না হয় তবে তাদের কোন সরকারী দায়িত্ব পাওয়ার সুযোগ থাকবে বলে মনে হয়না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.