নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খুবই সাধারন একজন মানুষ । পড়া যার নেশা । পড়ার এবং জানার আশায় ----

মোহামমদ কামরুজজামান

মোহামমদ কামরুজজামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

সম্পর্কের পরিচর্যা - ১

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ৮:৩৩

উৎসর্গ এবং গল্প লেখার ধারনা - কঙ্কাবতী রাজকন্যা'কে এবং তার লেখা 'যুঁথি' ধারাবাহিক থেকে ।


ছবি - dreamstime.com

বর্তমানে

সন্ধ্যা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত একটানা ঝগড়ার পর সাগর যখন বলল , " নদী - চলো আমরা তালাক নিয়ে ফেলি। প্রতিদিন এইসব ঝগড়া-ঝামেলা আর ভাল লাগছেনা । আমি সত্যিই নিরাশ আমাদের সম্পর্কের ভবিষ্যতের ব্যাপারে"।

সাগরের মুখের দিকে তাকিয়ে নদীও এই প্রথম উপলব্ধি করল,আসলেই - সাগরের প্রতি এখন তারও কোন টান অনুভব হচছেনা।

সাগরের তালাকের কথা বলার পর এ ব্যাপারে নদীরও তেমন কোন কষ্ট হচছেনা,যতটা হওয়া উচিত একজন নারীর সংসার ভাংগা তথা তালাকের কথা শুনে। কারন,নদীও নিজে নিজে অনেকবার ভেবেছে তাদের সম্পর্কের ভবিষ্যতের ব্যাপারে কিন্তু সংসার,স্বামী-স্ত্রী' র এই সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার ব্যাপারে মন থেকে কোন সাড়াই পায়নি। যেখানে মন থেকে সম্পর্কের ব্যাপরে সাড়া মিলেনা সেই মৃত সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ারও কোন মানে হয়না। মানষিক টানা-পোড়নে নদীও প্রতিনিয়ত ক্ষতবিক্ষত হচছে যা এভাবে দীর্ঘদিন চলতে পারেনা । তবে যাই হোক তারপরেও প্রথমে সে সংসার ভাংগা কিংবা তালাকের ব্যাপারে কিছুই বলতে পারেনি তবে এখন সাগর বলার পর এ বিষয়ে নদীও বললো,"আসলেই, এভাবে আর চলা যায়না। আমাদের কিছু একটা করা উচিত। আমিও হতাশ-বিরক্ত আমাদের সম্পর্ক নিয়ে "।

সাগর ভেবেছিল - নদী এ ব্যাপারে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখাবে বা কেঁদে-কেঁটে অস্থির হয়ে যাবে কিন্তু এ ব্যাপারে কোন প্রশ্ন না করে নদী সায় দেয়াতে সাগর কিছুটা অবাক হলেও স্বস্তি পেলো। দুই জনেই মাথা নেড়ে সায় দিল এবং একমত হলো কাল এই ব্যাপারে পরিবারের সবাইকে জানাবে। তবে বাচচাদের ভবিষ্যত নিয়ে কিছুটা চিন্তা উভয়ের মনে আসলেও নিজেদের মাঝের এ অশান্তি দূর হবে ভেবে মনে মনে উভয়েই খুশী হয়ে ঘুমাতে গেল।

ফিরে দেখা -

সাগর-নদীর ১০ বছরের সংসার। যদিও এ্যারেঞ্জ ম্যারেজ তথাপি বিয়ের আগে উভয়ে-উভয়কে জানাশোনার জন্য ৩ মাস সময় নিয়েছিল। বিয়ের পরও ভালোই চলছিল তাদের সংসার। তবে বড় মেয়ে হওয়ার পর থেকে নদী মেয়েকে নিয়ে খুব ব্যস্ত হয়ে পড়ে এতে করে সাগরের সাথে তৈরী হয় মানষিক দূরত্ব। আবার এদিকে - মেয়ে পরিবারে সৌভাগ্য বয়ে আনে এ নীতিতে কিছুটা হলেও বিশ্বাসী সাগর অফিসে প্রমোশন পেয়ে সংসার ছেড়ে অফিসের দিকেই সব সময় দিতে লাগল সাগর। আর তাই যখনই বাসায় ফিরে তখনই তার মেজাজ থাকে গরম। প্রথম প্রথম নদী এ ব্যাপারে চুপ থাকলেও সারাদিন মেয়ের পিছনে ঘুরে ঘুরে পরিবারের বাকীসব কাজ করে নদীও ধীরে ধীরে মেজাজ হারাতে থাকে । আবার এদিকে আরেক ছেলেও হয় তাদের। এসব নিয়েই চলছিল টেনে-হিছড়ে তাদের সংসার। যদিও সংসারে কোন অভাব ছিলনা এবং সাগর সংসারের সব প্রয়োজন পূরণেই সচেষ্ট তবে তাদের নিজেদের মাঝে প্রায়ই কথা কাটা-কাটি ঝগড়া ঝামেলা হয়ে যায় নিত্যদিনের সংগী এবং যখন তারা ঝগড়া শুরু করে তখন থামানো যায়না কাউকেই।

এমন কোন বড় বা বিশাল ব্যাপার নিয়ে তাদের মনোমালিন্য হয় এমন নয়। সামান্য ব্যাপার-বিষয় নিয়েই তারা নিজেদের মাঝে বিশাল ঝামেলা তৈরী করে ফেলে। প্রথমে একজন চুপ থাকলেও পরে ধীরে ধীরে অন্যের কথার খোচায়-বাক্যবাণে দুজনেরই ধৈর্য্যের বাঁধ ভাংগে এবং না চাইতেও জড়িয়ে পড়ে কুৎসিত ঝগড়ায় এবং শুরু করে একে-অন্যকে ব্যক্তিগত আক্রমণ। আবার উভয়েই এমন না যে , তাদের কারো বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্ক আছে তারপরেও নিজেদের মধ্যে,নিজেদের জন্য এখন আর কোন টানই অনুভব করেনা মন থেকে এবং কি করে একে অন্যকে আরও কষ্ট দিবে,অপমান করবে এরকম একটি অলিখিত প্রতিযোগীতায় উভয়ে মেতে উঠে। আর এসব ক্ষেত্রে তারা উভয়েই ভূলে যায় তারা উভয়ে কেউ কারো শত্রু নয় স্বামী-স্ত্রী এবং যাদের দুটি শিশু সন্তান আছে এবং যারা সুখে-দুঃখে একসাথে আমৃত্যু থাকার অংগীকার করেছে। এখন তাদের মাঝের অবস্থা এমন হয়েছে যে তাদের উভয়ের মাঝের সম্পর্ক থেকে এখন বাইরের মানুষ বা কাজের লোকের সাথেও এর থেকে ভাল সম্পর্ক তাদের এবং ধীরে ধীরে তাদের মাঝের এ সমস্যা বেড়ে চলে এমন অবস্থা দাড়িয়েছে যে এখন তারা একসাথে না থাকলেই ভাল থাকে ও একের জন্য অন্যের উপস্থিতি আর কোন বিষয়ই নয় ।

এসব অশান্তি থেকে মুক্তি পেতে ও রাতে শান্তি মত ঘুমানোর জন্য দুইজনের রুম আলাদা হয়ে গেল তথাপি তাদের ঝগড়া থামেনা। আর তাদের মানষিক অশান্তির এ চাপ পড়ে পরিবারের বাকী সদস্য এবং তাদের সন্তানদের উপর। যদিও উভয়েই তারা বুঝতে পারছে, তাদের ঝগড়া দূরত্ব বাড়াচছে পরিবারের বাকী সদস্যদের মাঝে এবং সাথে সাথে সন্তানদের মাঝেও পড়ছে তার খারাপ প্রভাব তবুও তারা তাদের ইগো ও রাগের জন্য কিছুতেই নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেনা। যদিও তারা উভয়েই সবসময় এ ভেবে সান্তনা খুজে যে, এ সমস্যা শুধু আমাদের মাঝেরই নয়, সমাজে আরো অনেক পরিবারেই এ সমস্যা রয়েছে।

চলবে -
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
পূর্বের গল্প -

২। " শাশুড়ি " - ( গল্প ) - লিংক Click This Link
১। " রোযা " (ছোট গল্প) - লিংক Click This Link

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১২:০৪

কঙ্কাবতী রাজকন্যা বলেছেন: ছোট ছোট মনোমালিন্য বা দূর্ব্যবহারগুলো বড় বড় মানসিক আঘাতের সৃষ্টি করে। এই অপমানবোধ থেকে ভালোবাসার মৃত্যু হয়।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৩৯

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ বোন কঙ্কাবতী রাজকন্যা, আপনার গল্প পড়া এবং মন্তব্যের জন্য ।

মানুষের মাঝে মানুষের সম্পর্কগুলি নষ্ঠ হওয়ার পিছনে বড় কোন কারন থাকেনা এবং লাগেনাও। ছোট ছোট ভূল,মনোমালিন্য, দূর্ব্যবহারের সাথে সাথেই একসময় ভালবাসা দূর হয়ে সেখানে স্থান করে নেয় ঘৃণা । আর এসবের পরিণাম হয় ভালবাসার অপমৃত্যু।

২| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ২:০৮

মিরোরডডল বলেছেন:




জামান, গল্পটা খুব বেশী কনভেনশনাল ।
চারপাশের প্রতিনিয়ত দেখা একটি চিত্র ।
গল্পের মাঝে সাস্পেন্স, চার্ম, টুইস্ট কিছুইতো নেই :(

এরকম লিখলে কিভাবে কি হবে :|
সামনের লেখায় এগুলো চাই ।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৪৮

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ বোন মিরোরডডল, আপনার গল্প পড়া এবং মন্তব্যের জন্য ।

প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচছি এবং লজ্জিত আপনার প্রত্যাশা পূরণ করার ব্যর্থতার জন্য।

হ্যা, এটা ঠিক গল্পের ঘটনার পটভূমি/আবহ আমাদের সমাজের প্রতিনিয়ত দেখা একটি চিত্র। আমি হয়ত সঠিক বাক্যবিন্যাস কিংবা যথার্থ শব্দ চয়ন করতে পারিনি যার দরুণ গল্পের মাঝে এখন পর্যন্ত সাস্পেন্স, চার্ম, টুইস্ট কিছুই পরিলক্ষিত হয়নি।

তারপরেও , বোন এতটুকু বলছি - বাকী দুই পর্বে সাথে থাকুন । আশা করি, আপনার প্রত্যাশা কিছুটা হলেও পূরণ হবে।

৩| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ ভোর ৬:১২

চাঁদগাজী বলেছেন:


মিরোরডডল বলেছেন, "জামান, গল্পটা খুব বেশী কনভেনশনাল । চারপাশের প্রতিনিয়ত দেখা একটি চিত্র । গল্পের মাঝে সাস্পেন্স, চার্ম, টুইস্ট কিছুইতো নেই "

-উনি কিছু লিখলে, আমার মনে হয়, উনি ৫ম শ্রেনীর বই দেখে গরুর রচনা লিখেছেন।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৩২

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ চাঁদগাজীভাই , আপনার গল্প পড়া এবং মন্তব্যের জন্য ।

ভাই, আমি তাই করব-বলব যতটুকু আমার যোগ্যতা । কি আর করা ভাই ?

আমি যেই গরুর রচনা লিখি যদি আপনি চান তাহলে সেগুলো এড়িয়ে চলতে পারেন। কারন, এগুলি দেখা-পড়ার জন্য আপনাকে কেউ বলেনা বা জোরও করেনা।

৪| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:০৩

চাঁদগাজী বলেছেন:



লেখক বলেছেন, "..। আমি যেই গরুর রচনা লিখি যদি আপনি চান তাহলে সেগুলো এড়িয়ে চলতে পারেন। কারন, এগুলি দেখা-পড়ার জন্য আপনাকে কেউ বলেনা বা জোরও করেনা। "

আমি দেখি, আপনার গরুর পায়ের সংখ্যা বাড়ছে কিনা!

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:০৭

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: শুকরিয়া ভাই, দেখতে থাকেন -----------------------

৫| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:০৮

রাজীব নুর বলেছেন: মন্তব্য পড়ে হাসতে হাসতে আমি শেষ।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:২৯

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই , আপনার গল্প পড়া এবং মন্তব্যের জন্য ।

কি করা ভাই বলেন , আমার গরুর রচনাই আসে তাই মনের আনন্দে গরু রচনা লিখি । আবার কেউ গরুর পাছা ;) (পাঁ) দেখতে এবং গুনতে অব্যস্ত , তাই সে তাই করে সবসময় ।

আর এজন্যই ভাই পৃথিবীতে মানুষে মানুষে এত বৈচিত্র এবং দুনিয়াও এত :P মনোরম।

৬| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:১৪

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: কয়টা পর্ব হতে পারে? পুরো গল্প না পড়া পর্যন্ত কিছু বলা ঠিক হবে না। তবে গল্পের মধ্যে আবার সাব হেডিং দেয়ার কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। গল্পের মত লিখে গেলেই ভালো হবে মনে হয়। বর্ণনা এখন পর্যন্ত ভালো লেগেছে।

আশা করি পরের পর্বগুলিতে গল্প পরিপূর্ণতা পাবে।

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:১০

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ সাড়ে চুয়াত্তর ভাই , আপনার গল্প পড়া এবং দিক-নির্দেশনামূলক মন্তব্যের জন্য ।

আসলে ভাই, যদিও আমি গল্প পড়তে খুব ভালবাসি তবে গল্প লেখার আমার কোন অভ্যাস নেই। আর তাই হয়ত এরকম । তবে আপনার পরামর্শ মাথায় থাকবে এবং তার জন্য শুকরিয়া।

গল্প ভাল লেগেছে জেনে আমারও ভাল লাগল ভাই। ইত্যবসরে শেষ পর্বও দিয়ে দিয়েছি । তিন পর্বেই শেষ ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.