নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিছু না বলা পছন্দ করি..

আতাউর রহমান দীপু

আতাউর রহমান

আতাউর রহমান দীপু › বিস্তারিত পোস্টঃ

তুহিন মামা...

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:২২

বেলা বে‌ড়ে যাওয়ায় সকা‌লে কিছু না খে‌য়ে ক্লা‌সে রওয়ানা দিলাম । ক্ষুদার জ্বালা পেট আর স‌হেনা । তাই হা‌জিরা দি‌য়েই পি‌ডি‌বি ক্যা‌ন্টি‌নে গেলাম । নয় বছ‌রের তু‌হিন ক্যা‌ন্টি‌নের ভেতর বে‌ঞ্চে তার মাথার উপ‌রে খাচায় ব‌ন্দি এক‌টি টিয়া পা‌খির দি‌কে তা‌কি‌য়ে শু‌য়ে আ‌ছে । মজার মজার বানিয়ে কথা ব‌লত তু‌হিন তাই আমরা বন্ধুরা তা‌কে অ‌নেক ভা‌লো পেতাম । ক্যা‌ন্টি‌নে গি‌য়ে তা‌কে নাস্তা দি‌তে ব‌লি । জবা‌বে তু‌হিন ব‌লে "মামা একটা বিষ‌য়ে চিন্তায় আ‌ছি, তাই শুয়ে আ‌ছি, উ‌ঠে কিছু দি‌তে পারুম না, অন্য দোকা‌নে চইলা যান" । তু‌হি‌নের এ কথা আ‌মি এখ‌নো ভুল‌তে পা‌রি না ।
২০১৫ সা‌লটি আমার জীব‌নে স্মরণীয় হ‌য়ে থাক‌বে । ২০১৫ সা‌লের প্রথম দিন‌টি ছিল চমৎকার এক‌টি দিন। রাত তখন প্রায় সা‌ড়ে ১১টা। প‌ত্রিকার কাছ ‌শেষ ক‌রে রাস্তায় একা একা ঘুর‌তে বের হলাম। থা‌র্টিফাস্ট নাইট‌ উদযাপন কর‌তে অ‌নেক পাড়ায় কনসার্ট আ‌য়োজন । বড় বড় অট্টা‌লিকায় আতশবা‌জি আর ফটকার শব্দে পু‌রো শহরটা‌ একটা আন‌ন্দের নগ‌রি‌তে রূপ নেয় । আ‌মি একা অ‌নেক পথ হাটলাম । প‌থিম‌ধ্যে অ‌নেক বন্ধুর সা‌থে দেখা হ‌লো । তা‌দের সা‌থে অনেক্ষন আড্ডা দিলাম ।
রাত তখন ২টা। আ‌মি বাসায় ফি‌রে এলাম। ফ্রেশ হ‌য়ে মোবাইল হা‌তে নি‌য়ে আমার একমাত্র ভাই‌কে এসএসএম করলাম । তারপর এক‌টি প‌রিবা‌রের সা‌থে তখন আমার "রস‌গোল্লা" সম্পর্ক ছিল, তা‌দের মোবাইল ও স্কাই‌পি‌তে নতুন বছ‌রের শু‌ভেচ্ছা বার্তা পাঠালাম। এর পর এ‌কে এ‌কে ভাই-ব্রাদার, বন্ধুদের শু‌ভেচ্ছা জানালাম ।

২০১৫ সা‌লের শুরুতে ‌কোরাইশমু‌ন্সি বাজার ইয়ুথ ক্লা‌বের উ‌দ্যো‌গে জি‌পিএ-৫ প্রাপ্ত‌দের সংবর্ধনার অনুষ্ঠান আ‌য়োজন কর‌তে গি‌য়ে যে উৎসাহ পে‌য়ে‌ছি তা কোন‌দিনও ভুলার নয়। বি‌শেষ ক‌রে আমা‌দের এলাকার কৃ‌তিসন্তান ও উপ‌জেলা ভাইস চেয়ারম্যান জয়নাল আবে‌দিন মামুন‌ এবং রাজাপুর ক‌লে‌জের অধ্যক্ষ ম‌মিনুল হক স্যা‌রের নিকট আমরা বে‌শি কৃতজ্ঞ।

১০১৫ সাল আমা‌দের পু‌রো প‌রিবারের নিকট অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এ বছ‌রের শুরু‌তেই আমরা হা‌রি‌য়ে‌ছি আমার শ্র‌দ্ধেয় ছোট ফুফু কে। ওনাকে হা‌রি‌য়ে আমা‌দের পু‌রো প‌রিবার শো‌কে স্তব্ধ ছিল । আর আ‌মি ওনা‌কে হা‌রি‌য়ে কী হা‌রি‌য়ে‌ছি তা ব‌লে শেষ করা যা‌বে না । উনি শুধু আমার ফুফু ছিল না, ছিল আমার প্রিয় একজন মানুষ। উ‌নি ছিল আমার মে‌য়ে । ওনার বাবা ডাক আ‌মি এখ‌নো অ‌নেক অনুভব ক‌রি । এখ‌নো উনার কব‌রের পা‌শে গি‌য়ে ওই ডাক শোনার জন্য অ‌পেক্ষা ক‌রি । আল্লাহর কা‌ছে প্রার্থনা ক‌রি আল্লাহ যেন আমার প্রিয় ফুফু‌কে জান্নাতুল ফেরদাউস দান ক‌রে ।

এ বছর আ‌মি আ‌গের প‌ত্রিকা ছে‌ড়ে নতুন প‌ত্রিকা অ‌ফিসে যোগ দিই । নতুন কর্মস্থা‌ন ছিল আমার জন্য চরম অ‌ভিজ্ঞতাময় । প‌ত্রিকার সম্পাদকসহ সক‌লে আমার জন্য খুব আন্ত‌রিক । কিন্তু ঢাকায় চ‌লে যাবো তাই আর সেখা‌নে বে‌শি দিন থাক‌তে পার‌ছি না ব‌লে ওনা‌দের খুব মিস কর‌বো।

এ বছর আমার প্রিয় বন্ধু পলাশ, শিহাব, ফয়সাল বি‌দেশ চ‌লে যায় । তারা চ‌লে যাওয়া‌তে আ‌মি অ‌নেক একা হ‌য়ে গে‌ছি ।
এখন আর আ‌গের মত আড্ডা দিতে পা‌রি না । ‌যেই রকম দিতাম পলা‌শের সা‌থে । মিস ক‌রি শিহা‌বের সুন্দর সুন্দর চ‌য়েজ গু‌লো । ‌মিস ক‌রি ফয়সা‌লের প্র‌তি বছর দুই চারটা বার্থ‌ডের পা‌র্টি।

২০১৫ ছিল আমার জীব‌নে এক‌টি স্মর‌ণিয় বছর । যেমন ছিল আনন্দময় তেম‌নি ছিল বেদনার । এ বছর এক‌টি স্বার্থবাজ প‌রিবা‌রের সা‌থে আমার সম্পর্ক ছিন্ন হ‌য়। যে প‌রিবা‌রের সা‌থে আমার সম্পর্ক ছিল রস‌গোল্লার মত মধুর। রাত ১২ টা কি সকাল ৮টা সব সময় তাদের দরজা ছিল আমার জন্য খোলা। এক সপ্তাহ য‌দি তা‌দের বাসায় না যাইতাম তাহ‌লে আমা‌কে ফোন দি‌য়ে তা‌দের বাসায় যাওয়ার জন্য অনু‌রোধ কর‌তো । তখন তা‌দের সা‌থে এত বে‌শি সখ্যতা ছিল যে তাদের অ‌নেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ আ‌মি ক‌রে দিতাম । তা‌দের সা‌থে আমার সখ্যতার উ‌দ্দেশ্য ছিল আ‌মি ওই প‌রিবা‌রের একজন‌কে অ‌নেক বে‌শি পছন্দ করতাম । শুধু তা‌কে দেখার জন্য আ‌মার ওই বাসায় যাওয়া । আ‌মি তা‌কে এত বে‌শি পছন্দ ক‌রি‌ যে, তাই যে কোন কিছ‌ুর বি‌নিম‌য়ে তা‌দের সা‌থে আমার সম্পর্ক ‌ঠিক রাখার চেষ্টা করতাম । যা তাদের প‌রিবা‌রের সবাই জানত । কিন্তু এসএস‌সি পড়ুয়া ওই পাগ‌লি‌টির সা‌থে ধর্নাঢ্য এক দাদার বি‌য়ে ঠিক হ‌য়ে গে‌ছে । হয়‌তো এসএস‌সির পর বি‌য়ে হ‌বে । এ সময় ওই পাগ‌লির মা আর আমার সা‌থে সম্পর্ক রাখা সমু‌চিত ম‌নে ক‌রে নি। তাই সামান্য ই‌মো‌তে এক‌টি এসএমএস এর অ‌ভি‌যোগ এ‌নে আমার সা‌থে কথা বলা বন্ধ ক‌রে দেয় । আ‌মি কোন ঝা‌মেলায় জড়া‌তে চাইনা তাই তা‌দের থে‌কে শত হাত দূ‌রে থাকার চেষ্টা ক‌রি । আমার বুঝ‌তে বাকি নেই তারা শুধু আমার সা‌থে স্বা‌র্থের জন্য অ‌ভিনয় ক‌রে‌ছে । য‌দিও ওই প‌াগ‌লিটার জন্য এখ‌নো মায়া হয় ।

এ বছর আমার পরীক্ষার ফলাফল দেয়‌ । এ উপল‌ক্ষে দীর্ঘ ৪ বছর পর আ‌মি আমার আ‌ন্টির সা‌থে দেখা কর‌তে উনার স্কু‌লে যাই । আ‌ন্টির বা‌ড়ি আমার বা‌ড়ি পাশাপা‌শি হ‌লেও এক‌টি বিষয় নি‌য়ে আ‌ন্টির ম‌নে কষ্ট দি‌য়েছি তাই আর আ‌ন্টির সাম‌নে যাওয়ার সাহস হ‌তো না । ওই দিন আ‌ন্টিকে জ‌ড়ি‌য়ে ধর‌তে পেরে আ‌মি খুব আন‌ন্দিত । আ‌ন্টি আমার মা । ছোট কা‌লে অ‌ধিকাংশ সময় আ‌মি আ‌ন্টির আদর স্নে‌হে বড় হ‌য়ে‌ছি । আ‌মি শু‌নি নাই, নি‌জের চোখে দে‌খে‌ছি । আ‌মি নানা‌দের বা‌ড়ি থে‌কে নি‌জের বা‌ড়ি আসার সময় আ‌ন্টি খুব কান্না করত আমার জন্য । আ‌ন্টির সা‌থে কথা ব‌লে আমার খুব ভা‌লো লাগ‌লো ।

দেখ‌তে দেখ‌তে নতুন আ‌রেক‌টি বছর চ‌লে এ‌সে‌ছে । ২০১৫ সাল‌টি প্রায় শে‌ষের দি‌কে । শত স্মৃ‌তি জ‌ড়িত এ বছর‌টি স্মরণীয় হ‌য়ে থাক‌বে আমার জীব‌নে । বৈ‌চিত্রময় এ জগ‌তে অ‌পেক্ষায় আ‌রেক‌টি নতুন বছ‌রের ...

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.