নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি বিএনপি করি।তাই কেউ নিরপেক্ষ লেখা আশা করবেন না।

নিউজ

নিউজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিদেশীরাই কি নির্ধারণ করবেন আমাদের ভবিষ্যত সরকার?

২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৩:৫৮

হঠাৎ করেই আমেরিকার বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ভারত সফরে গেলেন!বাংলাদেশে নিযুক্ত আমেরিকার রাষ্ট্রদূতের ভারতে কেন যাবেন?ভারতে কি আমেরিকার কোন রাষ্ট্রদূত নেই।এই যখন আলোচনার বিষয় হওয়ার কথা তখন পত্রিকায় দেখলাম,বাংলাদেশের রাজনীতির ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে তিনি ভারতে গিয়েছেন!

বাংলাদেশের ভাগ্য কি নির্ধারিত হবে ভারতেতে(!) নাকি বাংলাদেশে? বাংলাদেশের রাজনীতি কোন পথে যাবে, সেটি কি নির্ধারণ করবে ভারত(!) নাকি বাংলাদেশ? কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে, নির্বাচনকালে কোন পদ্ধতির সরকার থাকবে, এগুলো কে নির্ধারণ করবে? বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ? নাকি মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং ভারত সরকার? বাংলাদেশের জনগণ গভীর পরিতাপ এবং উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছেন যে, ভারত এবং মার্কিন রাষ্ট্রদূত যৌথভাবে নির্ধারণ করতে যাচ্ছেন আগামীতে কাদেরকে ক্ষমতায় আনা হবে এবং কোন পদ্ধতিতে তাদেরকে ক্ষমতায় আনা হবে!

গত সপ্তাহে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মজিনা বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত পঙ্কজ শরণের সাথে এক বৈঠকে মিলিত হন। এই বৈঠকের পর দিনই তিনি দিল্লী গমন করেন। দিল্লী থেকে এক দিন পর অর্থাৎ শুক্রবার তার ঢাকায় ফেরার কথা ছিল। কিন্তু তার দিল্লী সফর বর্ধিত করে গতকাল শনিবার তিনি ঢাকায় প্রত্যাবর্তন করেন। মানুষ অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করে যে, মজিনার দিল্লী সফরের উদ্দেশ্য হিসেবে বলা হয় যে, দিল্লীর সাউথ ব্লকের (ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশীয় বিষয়) সাথে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা!

বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারতীয় বা মার্কিনীরা আলোচনা করবে কেন? এটি তো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে সরাসরি হস্তক্ষেপ। দ্বিতীয়ত, সেই আলোচনাটিও বাংলাদেশের মাটিতে না হয়ে ভারতের মাটিতে হবে কেন? দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিটি দেশেই ভারত বা আমেরিকার রাষ্ট্রদূত রয়েছে। দিল্লীতেও রয়েছে মার্কিন রাষ্ট্রদূত। ঐ রাষ্ট্রদূত ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সাথে পারস্পারিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করবেন। কিন্তু তিনি তা না করে যখন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত দিল্লী উড়ে যান এবং সেখানে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের সাথে বাংলাদেশ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তখনই সংসয়বাদী হওয়াই স্বাভাবিক।

ভারত বা আমেরিকা আমাদের নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে কথা বলার কে?

শনিবার অনেক গুলো পত্রিকা ও সংবাদ মাধ্যমের খবর হচ্ছে,বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকারের অধীনেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে মত প্রকাশ করেছে ভারত। গত শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনার একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ঐ বৈঠকে এই মত প্রকাশ করা হয়। খবরে জানা যায় যে, মজিনাও নাকি এ ব্যাপারে ভারতীয় কর্মকর্তাদের সাথে এক মত প্রকাশ করেছেন। খবরে আরও বলা হয় যে, দিল্লীর সাউথ ব্লকে গত শুক্রবার ড্যান মজিনা ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিংহ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ ডেস্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব হর্ষ সিংলার সাথে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক বর্তমান পরিস্থিতি এবং আসন্ন সাধারণ নির্বাচন নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে ভারত তাদের নীতি অনুসারে নির্বাচিত সরকারের অধীনেই বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে মত প্রকাশ করেন। সূত্র আরো জানায়, ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যেহেতু তাদের দেশে নির্বাচিত সরকারের অধীনেই নির্বাচন হয়, তাই তারা কোন অনির্বাচিত সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনের পক্ষে মত দিতে পারেন না। আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উত্থাপিত সর্বদলীয় নির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাবকে ইতিবাচক বলে মত প্রকাশ করা হয়!

এখানে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন জাগে,এটা কি সরাসরি একটি স্বাধীন দেশের অভ্যন্তরিন বিষয়ে হস্তক্ষেপ না?আমাদের নানা ব্যাপারে বিদেশ বিরোধী সরকারের কি এই ব্যাপারে প্রশ্ন তুলার সুযোগ ছিল না?নাকি আমাদের পররাষ্ট্র নীতি হলো,ভারত যাই করে তাই ঠিক,অন্য কোন দেশের কথা শুনা হবে না?

এই ব্যাপারে আনন্দ বাজার পত্রিকায় বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের এক সাবেক রাষ্ট্রদূত বলেছেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বাংলাদেশের ক্ষমতা পরিবর্তন হওয়া স্বাভাবিক।তাই তিনি উপদেশ দিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারত সরকারকে আরো মনোযোগী হতে।এর মনে যাতে বাংলাদেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন না হতে পারে তেমন ব্যবস্থা করাই কি বোঝায় না?

এই পর্যন্ত যদি ভারতীয় কর্মকান্ড শেষ হতো, তাহলে দু;খ থাকত না। কিন্তু ঘটনা এখানে শেষ না করে, ভারত সরকার জাতীয় পার্টির প্রধান এরশাদকে ভারতে তলব করেছেন।যদিও বলা হচ্ছে,এরশাদ সাহেবের দিল্লি সফর বলে!হঠাৎ এরশাদ সাহেবের দিল্লিতে কি এমন প্রয়োজন পড়ল,দেশে যখন এমন একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি?এছাড়াও নভেম্বরের ২য় সপ্তাহে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিপু মনিও দিল্লী যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

ড. ইউনূস সম্পর্কে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারী ক্লিনটনের বক্তব্য নিয়ে আওয়ামী সরকার হৈ চৈ বাধিয়েছিল। বলেছিল যে আমেরিকা নাকি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নির্লজ্জভাবে হস্তক্ষেপ করছে। আজ যখন ভারত এবং আমেরিকা যৌথভাবে দিল্লীর মাটিতে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে পরামর্শ করছে তখন আওয়ামী লীগ চুপ কেন? দিল্লীর পরামর্শ তাদের পক্ষে যাচ্ছে সেজন্যই কি তারা নীরব?

আমেরিকার এক সাবেক রাষ্ট্রদূত বলেছিল, আমেরিকা নিজের স্বার্থের বাইরে এক পাও দেয় না।আমেরিকা যদি আওয়ামী লীগ অথবা বিএনপির প্রতি সমর্থন দেয়,তাহলে অবশ্যই তারা আমেরিকাকে নানা সুযোগ সুবিধা দেওয়ার কথা দেওয়াতেই সমর্থন দিবেন।তা দিলে অবশ্যই আমাদের নিজস্ব স্বার্থ জলাঞ্জলী দিয়েই দিতে হবে।সেটা কি দেশের জনগণের সাথে বেইমানী নয়?আর ভবিষ্যতে যে প্রয়োজনে এখন যাকে কাছে টানছে, স্বার্থে ব্যাঘাত লাগলে আমেরিকা ছুড়ে ফেলে দিবে না,তার কি কোন নিশ্চয়তা আছে?আমেরিকার ব্যাপারে বলা হয়,আমেরিকা যার বন্ধু তার শত্রুর প্রয়োজন হয় না।সাদ্দাম হোসেন, আসাদকে তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ হিসেবে আমরা পাই।তাই আমাদের বড় দুই দলকেই বলতে হবে, আমাদের নিজেদের সমস্যার সমাধান আমরাই করব।বিদেশীদের অযাচিত হস্তক্ষেপ আমরা সহ্য করব না।

কিন্তু বাস্তবতা হলো, আমরা ভারতকে ফ্রি ট্রেনজিট দিব,তার বিনিময়ে শুল্ক চাইতে লজ্জ্বা পাব!কেননা,ভারত গত নির্বাচনের সময় অনেক টাকা দিয়েছিল এবং ক্ষমতায় আসতে সাহায্য করেছিল!এই যদি হয় আমাদের আদর্শ,তবে অবশ্যই আমাদের নিয়তি হবে বিদেশে গিয়ে লেবার হওয়া এবং বিদেশী প্রভুদের দ্বারা স্বাধীন হয়েও নির্যাতিত হওয়া।ফালানীরা কাটা তারের বেড়াতে ঝুলবে আর আমরা তার বিচার চাওয়ারও সাহস পাব না।কামরুজ্জামান সর্দারের মতো আরো অসংখ্য লোককে বিএসএফ মেরে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখবে।এবার যেমন প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি,ভবিষ্যতেও পাবে না।

তাই এখনই সময় আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার,আমরা কি বিদেশী প্রভুদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে চলব,নাকি পৃথিবীর বুকে স্বাধীন জাতী হিসেবে মাথা তুলে দাড়াবো।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.