![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গাজীপুর থেকে
শিল্প কারখানার বর্জ্য মেশানো পানি নদীতে ফেলে প্রতিনিয়ত দুষিত করে চলেছে কহর দরিয়াখ্যাত তুরাগ নদীকে। বিপুল সংখ্যক জনসংখ্যার এ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে পর্যাপ্ত স্যানিটেশন ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিদিন গৃহস্থলির আর্বজনা আর নদীর তলদেশ দিয়ে গোপনভাবে ছেড়ে দেয়া শিল্প কারখানার প্রায় ১৫ লাখ ঘনমিটারেরও বেশি অপরিশোধিত তরল বৈর্জ্যে তুরাগের পানিকে যেমন ভাবে করছে দুষন তেমনি কঠিন বৈর্জ্যে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে স্থানীয় জলবায়ু করছে উষœ। টঙ্গীসহ সমগ্র গাজীপুর জুড়ে গড়ে ওঠা সহ¯্রধিক শিল্প-কারখানার কঠিন ও তরল রাসায়নিক বর্জ্যে বিষাক্ত তুরাগ নদী। মিল কারখানার নির্গত রাসায়নিক বর্জ্যের মিশ্রণে সৃষ্টি হয়েছে র্দুগন্ধ আর তলদেশ দিনদিন কঠিন বর্জ্যে ভরাট হয়ে তুরাগনদ পরিনত হয়েছে মরা খালে। এখন পুরো ভরা বর্ষা মৌসুম থাকলেও ফুটে উঠছে না কহরদড়িয়ার পুরোনো সেই রূপ।
তুরাগসহ আশপাশের নদী অবৈধ দখল এবং দূষণমুক্ত করতে গত পাঁচ বছরে কয়েকবার নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। কিন্তু দখল বা দূষণ কোনোটাই বন্ধ হয়নি। কার্যকর হচ্ছে না সঠিক স্থানে সীমানা পিলার স্থাপন ও উচ্ছেদ অভিযান। নদীতীরে গড়ে ওঠা প্রভাবশালীদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিনিয়ত দূষণ ও দখল করা হচ্ছে এসব নদী।
গাজীপুরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া শীতলক্ষ্যা, তুরাগ আর বালু নদীর পাড়ে গড়ে ওঠা ঢাকা ডাইং, জাবের এন্ড জুবায়ের, এসব শিল্প-কারখানা থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টন তরল ও ভারীবর্জ্য, ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য, পয়ঃনিষ্কাশন ও গৃহস্থালি বর্জ্য, ডকইয়ার্ডের লাখ লাখ টন লোহার মরিচা, পোড়া তেল-মবিল নদীতে ফেলার তথ্য প্রমাণ পেয়েছে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স। কয়েক বছরের ব্যবধানে ২২ কিলোমিটার এ দীর্ঘ নদীর প্রায় ১২ কিলোমিটার অবৈধ দখলদারদের হাতে চলে গেছে। শিল্প কারখানাগুলোতে শিল্প বর্জ্য পরিশোধন যন্ত্র ইটিপি না থাকা আর এ যন্ত্রটি থাকলেও তার সঠিক ব্যবহার না করায় আজ যেমন হচ্ছে তুরাগ দুষন আর তেমনি দিন দিন ভরাটও হয়ে যাচ্ছে গাজীপুর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঐতিয্যবাহী এ নদীটি। অপরদিকে তুরাগ নদের ১৫২টি সীমানা পিলারের মধ্যে ৯০টি অবৈধ দখলের কারণে নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। কহর দরিয়াখ্যাত তুরাগের মূল অংশের শতাধিক একর জমি অবৈধ দখলে চলে গেছে। নদী দখল করতে অধিকাংশ এলাকার পিলার তুলে নিয়েছে স্থানীয় একটি চক্র। অবৈধ দখলদার চক্র নদী সংশ্লিষ্ট দফতর ও কর্মকর্তাদের নিয়মিত মাসোয়ারা দিয়ে তুরাগের সীমানার বিশাল অংশ অবৈধভাবে দখল করে বালু উত্তোলন করে ব্যবসা করছে। শিল্পবর্জ্যে ও প্রভাবশালীদের দাপটে এ তুরাগ নদীর অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার পথে। নদীর পাড় থেকে ১৫০ ফুট দূরে স্থায়ী বা অস্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণের হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে নদীর পাড়ে গড়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন শিল্প-কারখানা।
নিজ উদ্যোগে তুরাগ নদের সীমানা পিলার বসানোর ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশ কিছুটা উপেক্ষা করে কিছু এলাকায় সীমানা পিলার বসানো হয়েছে। এতে কহর দরিয়া খ্যাত তুরাগ নদের মূল অংশের ১৯৮ একর জমি দখল হয়ে গেছে। তুরাগ দখল করতে অধিকাংশ এলাকার পিলার তুলে নিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র। নদীসংস্লিষ্ট দফতর ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নিয়মিত মাসোয়ারা দিয়ে চক্রটি তুরাগ নদীর সীমানার বিশাল অংশ ইট, বালু, সুড়কি ও লাকড়ির ব্যবসার ব্যনারে এ ঐতিয্যবাহী তুরাগ নদ অবৈধভাবে দখল করে আছে। এমনটাই জানালেন বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা মোঃ কালিমুল্ল্যাহ ইকবাল।
নদীর ভারসাম্য রক্ষা, তীর রক্ষনাবেক্ষনসহ বনায়ন ও ওয়াকওয়ে নির্মাণ করতে হাইকোর্টের ২০০৯ সালের আদেশ অনুসারে উচ্ছেদ অভিযান চলমান রাখার দাবি স্থানীয় ভুক্তভোগী ক্ষতিগ্রস্ত জনগনের।
©somewhere in net ltd.