নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অন্ত্যজ বাঙালী, আতরাফ মুসলমান ...

বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্‌উক, হে ভগবান।রবীন্দ্রনাথ

ইমন জুবায়ের

জীবন মানে শুধুই যদি প্রাণ রসায়ন/ জোছনা রাতে মুগ্ধ কেন আমার নয়ন। [email protected]

ইমন জুবায়ের › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প: বাংলাদেশ

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৪৩

পাকিস্তানের করাচি শহরের সাদদার টাউন। পুরেনো হাজী ক্যাম্পের পাশের গলিটি জুন মাসের ঝলমলে রোদের ভেসে যাচ্ছিল। দ্রুত পায়ে হাঁটছিল আবিদা। সালিমা চাচির মাথা ধরেছে, ঘরে ট্যাবলেট নেই। ফার্মেসিটা গলির মুখে, এই রোদের ভিতর অতদূর হেঁটে যেতে হবে। গলির মুখেই একটা মোটরসাইকেল থেমে আছে। মোটরসাইকেল ওপর হেলমেট পরে দু’জন আরোহী বসে আছে । আবিদার শরীরের রক্ত সহসা জমে ওঠে। সাত বছর আগে একটা মর্মান্তিক দৃশ্য মনে পড়ে যায় ওর। তখন আবিদারা কোয়েটায় ছিল। শিয়া মসজিদটি ছিল ওদের বাড়ির ঠিক উলটো দিকে। এক শুক্রবার দুপুরে দোতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিল আবিদা। তখন ওর বয়স দশ। নামাজ সেরে মুসল্লীরা বেরুচ্ছিল মসজিদ থেকে। হঠাৎ গুলির শব্দ ... মোটরসাইকেল আরোহী মুসল্লীদের ওপর ব্রাশ ফায়ার করে দ্রুত পালিয়ে যায়। ব্রাশ ফায়ারে ৩৭ জন মারা গিয়েছিল। নিহতদের মধ্যে আবিদার বাবাও ছিল ...

মোটর সাইকেলটা চলে যায়। আবিদা স্বস্তি বোধ করে। ফার্মেসি থেকে ট্যাবলেট কিনে দ্রুত পায়ে হাঁটতে থাকে । আব্বা মারা যাওয়ার পর চাচা হুসেইন আলী ইউসুফীর সঙ্গে থাকে আবিদা । কোয়েটায় শিয়া-সুন্নীর সংঘাত বেড়ে গেলে চাচা হুসেইন আলী ইউসুফীর আর কোয়েটায় থাকতে সাহস হয়নি- করাচি চলে এসেছেন। এখানেও শিয়াদের ওপর প্রতিপক্ষের আক্রমন চলে। আবিদা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। ভাবে-আব্বার কি দোষ ছিল? আব্বাকে ওরা মেরে ফেলল কেন? শিয়া বলে? আবিদারা ধর্মে শিয়া, জাতিতে হাজারা । আব্বার জন্য আবিদার কান্না পায়। আবিদার আব্বা মির্জা হোসেন আহমেদ বলতেন, জানিস মা, আমাদের পূর্বপুরুষ ছিল মঙ্গল। পরে তারা পারস্যে বসতি স্থাপন করে। যে কারণে আমাদের পূর্বপুরুষের ভাষা ফারসি। ‘হাজারা’ শব্দটি এসেছে ফারসি হাজার শব্দ থেকে। এর মানে ১০০০ মঙ্গল সৈন্য। পরে ‘হাজারা’ একটি জাতের নাম হয়ে গেছে। এরা ধর্মে শিয়া। হাজারাদের বসবাস মধ্য আফগানিস্তানেই বেশি। অনেকে আবার পাকিস্তানে এসে বাস করছে। ...আবিদা জানে...পাকিস্তানে মোট ৫ লক্ষ হাজারার বাস। এদের বেশির ভাগই বাস করে কোয়েটা আর করাচি শহরে। হাজারাদের রাজনৈতিক দলের নাম ... এইচ ডি পি বা হাজারা ডেম্যোক্রেটিক পার্টি । আবিদার আব্বা এইচ ডি পি করতেন।

এই কি দোষ?

আবিদা দ্রুত পা চালায়। জুন মাসের গনগনে রোদের ভিতর হাঁটতে হাঁটতে আবিদা ঘেমে যায়। একতলা বাড়ি। বসার ঘরে জাজিমের ওপর সালিমা চাচি শুয়ে ছিলেন। গালিচার ওপর আফ্রা এবং ইশরার বসে আছে। আফ্রার বয়স বার এবং ইশরার এর বয়স আট। মুখ গম্ভীর। স্কুলে যাওয়া বাদ দিয়েছে। পথে বেরুলে কখন বিপদ হয়। কতক্ষনই-বা ঘরে বসে থাকা যায়।

আবিদা চাচিকে ট্যাবলেট দিয়ে পানি আনতে যায়।

দুপুরের আগে আগে হুসেইন আলী ইউসুফী চাচা এলেন।

মাঝবয়েসি দীর্ঘকায় সবল শরীর। সাদা রঙের কাবুলি পোশাক পরা। রোদের ভিতরে হেঁটে এসে ঘেমে গেছেন। গোলাকার ফর্সা মুখে ঘন কাচা দাড়ি। তিনি গালিচারও ওপর বসলেন। মাথার ওপর বনবন করে ফ্যান ঘুরছিল।

আবিদা লাচ্ছি তৈরি করে রেখেছিল। এখন চাচার জন্য নিয়ে এল।

সালিমা চাচির দিকে তাকিয়ে চাচা বললেন, আজ ওয়াকিল-এর সঙ্গে টেলিফোনে কথা হল।

কি বললেন ভাইসাব? সালিমা চাচির কন্ঠে উৎকন্ঠার ছাপ।

চাচা বললেন, ওয়াকিল বলল: বাংলাদেশ সুখশান্তির দেশ। ওখানে শিয়া হাজারিদের ওপর উৎপাত নেই। আমাদেরও যত জলদি সম্ভব বাংলাদেশে চলে যেতে বলল ওয়াকিল।

ওহ্ ।

মুহাম্মদ রেজা ওয়াকিল হুসেইন আলী ইউসুফীর বন্ধু। করাচির সাদদার টাউনের মিল্লাত নগরে থাকত। ব্যবসা করত ... (মিল্লাত নগরেই হুসেইন আলী ইউসুফীর লাইব্রেরি) ...মাস ছয়েক হল এখানকার ব্যাবসাপাতি গুটিয়ে বাংলাদেশে চলে গেছে মুহাম্মদ রেজা ওয়াকিল । আজ তারই সঙ্গে টেলিফোনে কথা হল হুসেইন আলী ইউসুফীর ।

সালিমা চাচি জিজ্ঞেস করলেন, বাংলাদেশে কি যাবেন?

চাচা মাথা নেড়ে বললেন, হ্যাঁ। যাব। আফগানিস্তানে যখন ফেরার উপায় নেই। এ দেশে থেকে গুলি খেয়ে মরব নাকি। দু’দিন পরপর শিয়াদের ওপর হামলা। কাস্টমার খুঁজছি, ভালো দাম পেলে দোকান বিক্রি করে দেব। তারপর বাংলাদেশে চলে যাব। ওয়াকিল তো ভালোই আছে বলল। আমাকেও চলে যেতে বলল। বলতে বলতে হুসেইন আলী ইউসুফীর মুখে দুশ্চিন্তার গভীর ছাপ পড়ে ...তার কারণ আছে। ...সুন্নীপ্রধান পাকিস্তানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নতুন কিছু না। প্রথমে কট্টরপন্থী সুন্নীরা আহমেদীয় সম্প্রদায়ের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ১৯৭৪ সালে হাইকোর্ট আহমেদীয়দের অমুসলিম ঘোষনা করলে সে সংঘাত স্তিমিত হয়ে এলেও একেবারে থেমে যায়নি । এর পর পাকিস্তানে শিয়া-সুন্নীর সংঘাত বেড়ে যায়। শিয়ারা পাকিস্তানে সংখ্যালঘু। দেশটিতে তাদের সংখ্যা প্রায় তিন কোটি। পাকিস্তানে শিয়া সুন্নীর সংঘর্ষের পিছনে রয়েছে ১৯৭৯ সালের ইরানি বিপ্লব। ইরানে শিয়াপন্থী ইসলামী বিপ্লবের পর পাকিস্তানে শিয়া প্রভাব ঠেকাতে সুন্নী সংগঠন গড়ে ওঠে। সেই সঙ্গে উগ্রপন্থী শিয়া দলও গড়ে ওঠে । পরবর্তীকালে এদের পারস্পরিক সংঘাত রক্তাক্ত হয়ে ওঠে। পাকিস্তানের ষষ্ট প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হক এর শাসনামলে ( ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৮) বিরোধ তুঙ্গে উঠেছিল। জিয়াউল হক পাকিস্তানের বিচারবিভাগকে ইসলামীকরণে উদ্যোগ নেন। সেই সময় প্রকাশ্যে মদ বিক্রি এবং নারীপুরুষের অবাধ মেলামেশার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এই সব সিদ্ধান্তে অবশ্য কট্টরপন্থী সিয়া ও সুন্নীরা একমত ছিল। অবশ্য শরীয়ার কিছু ধারার সঙ্গে শিয়ারা একমত হতে পারেনি। এসব ক্ষেত্রে জিয়াউল হক সুন্নী ব্যাখ্যা গ্রহনযোগ্য মনে করলে দক্ষিণ পাঞ্জাব ও করাচিতে শিয়ার সুন্নীর মধ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রবল আকার ধারণ করে। পরে সমগ্র পাকিস্তানে সে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। শিয়া গ্রুপকে অর্থ সাহায্য করে ইরান। সুন্নী গ্রুপকে অর্থ সাহায্য করে সৌদি আরব ভিত্তিক সুন্নী সংগঠন। এভাবে পাকিস্তানে সাম্প্রদায়িক সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করে । ২০০২ সালে শিয়া হাজারা পুলিশ ক্যাডেটদের ওপর গুলি বর্ষন করা হয় ... ২০০৩ সালে কোয়েটায় শিয়াদের প্রধান মসজিদে আক্রমন করে ৫৩ জন্যকে হত্যা করে। শিয়া সম্প্রদায়ের জন্য পাকিস্তান হয়ে ওঠে বিপদজনক রাষ্ট্র ... বিশেষ করে হাজারিদের জন্য ...

হুসেইন আলী ইউসুফী দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলেন।

আবিদা আরেক গ্লাস লাচ্ছি নিয়ে আসে। হুসেইন আলী ইউসুফী হাত বাড়িয়ে গ্লাস নিলেন। আবিদা জিজ্ঞেস করে, চাচা আমরা কি সত্যি সত্যি বাংলাদেশে চলে যাব?

হ্যাঁ, মা। এই জালিমের দেশে আর থাকব না ...বাংলাদেশ চল্লিশ বছর আগে জালিমদের শাসনমুক্ত হয়েছে ...ওই দেশে সবাই থাকতে পারে ...

কথাটা শুনে আবিদার বুক দুলে ওঠে। হাজার হলেও জন্মের পর সতেরোটি বছর পাকিস্তানে কাটিয়েছে । পাকিস্তানই তো ওর মাতৃভূমি ...ছয় বছর বয়েসে মা মারা গিয়েছিল। বাবা বহু কষ্টে মানুষ করছিলেন। সেই বাবাও মারা গেলেন ব্রাশ ফায়ারে ...এখন জন্মভূমিও ছাড়তে হচ্ছে ...

আবিদার নিঃশ্বাস আটকে যায় ...



ঢাকায় মুহাম্মদ রেজা ওয়াকিল এর ভাড়া বাড়িটি মীরপুর কমার্স কলেজের কাছে। পাকিস্তানে থাকাকালীন মুহাম্মদ রেজা ওয়াকিল আকিক পাথরের ব্যবসা করতেন। সে ব্যবসা এক বন্ধুর কাছে বিক্রি করে সে টাকায় একটা কনফেশনারি দিয়েছেন কমার্স কলেজের কাছে। এসব ব্যাপারে তাকে সাহায্য করেছে হাবিব বখত। হাবিব বখত নিজেও শিয়া হাজারা, পাকিস্তান ত্যাগ করে বাংলাদেশে এসেছে বছর পাঁচেক আগে। মোহাম্মপুরের নূরজাহান রোডে থাকে সে । ৩৫ বছরের মতো বয়স হাবিব বখত-এর । চালাক-চতুর আছে। বাংলাদেশে আসা নতুন উদ্বাস্তুদের সাহায্য করে। তাদের বাড়ি ভাড়া, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা, ব্যবসার লোকেশন, ট্রেড লাইসেন্স ইত্যাদি ব্যাপারে সাহায্য করে। যা কমিশন পায়, তাতে আয় মন্দ হয় না। সাদা রঙের রিকন্ডিশন টয়োটা হানড্রেড কিনেছে হাবিব বখত।

মুহাম্মদ রেজা ওয়াকিল নিজেই সকাল-সন্ধ্যা কনফেকশনারিতে বসেন । নতুন পরিস্থিতি দ্রুত সামলে নিয়েছেন। আগে ব্যবসাই করতেন। এখন ব্যবসার ধরণ বদলেছে মাত্র। আল্লা যখন যাকে যে অবস্থায় রাখেন। বাংলাদেশে তো আর উগ্রপন্থী সুন্নীদের গুলিতে মরতে হবে না। যদিও বাংলাদেশ সুন্নীপ্রধান দেশ। তবে বাংলাদেশে উগ্রপন্থীরা যে নেই তা নয়, আছে, বাংলাদেশে উগ্রপন্থীরা আছে- তবে তাদের ওপর বাংলাদেশের ভালো মানুষদের সতর্ক দৃষ্টি আছে।

মুহাম্মদ রেজা ওয়াকিল-এর স্ত্রী ফারিদা গত এক বছরে নতুন পরিবেশে ভালোই অ্যাডজাস্ট করেছেন। ফারিদার এক ছেলে এক মেয়ে। বড় মেয়েটির নাম জামিলা। ছোটটি ছেলে, বয়স আট। নাম মাশরুর। এদের অবশ্য ভাষাগত কারণে পড়ালেখা বন্ধ আছে। ইংলিশ মিডিয়ামে অনেক খরচ। তবে এদের জন্য হাবিব বখত ভাবছে। জামিলার বয়স সতেরো । বছর দুয়েক হল হাবিব বখত-এর স্ত্রী মারা গেছে। তার সাহায্য মনে রেখেছে মুহাম্মদ রেজা ওয়াকিল, কৃতজ্ঞও বোধ করে । হাবিব বখত মাঝেমাঝে বাসায় আসে। হাবিব বখত এর মনের ইচ্ছা টের পান। তবে এখনও জামিলাকে তার হাতে তুলে দেবেন কিনা সে ব্যাপারে এখনও মনস্থির করতে পারেননি মুহাম্মদ রেজা ওয়াকিল ।

মুহাম্মদ রেজা ওয়াকিল-এর বাড়িউলি সেতারা বেগম। কালো, বেঁটে, মোটা, থলথলে চশমা পরা মাঝবয়েসি মহিলা। সেতারা বেগম বিধবা। স্বামী মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারি বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব বিভাগে চাকরি করতেন। চাঁদপুরে বাড়ি। হাউসবিল্ডিং কর্পোরেশন-এর ঋণে চারতলা বাড়ি করেছেন। কিডনীতে সমস্যা ছিল পাটোয়ারি সাহেবের । অবশ্য মারা যাওয়ার আগে বাড়ির কাজ শেষ হয়ে গিয়েছিল। নীচতলায় রডসিমেন্টেন দোকান। সেতারা বেগমের বড় ছেলে জাহাঙ্গির সে দোকানে বসে। সেতারা বেগমের একটাই মেয়ে। শিউলিমালা। এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে শিউলিমালার। বিয়ের কথাবার্তা চলছে তার। অবশ্য শিউলিমালা এখুনি বিয়ে করতে চায় না। বিয়ের আগে পড়াশোনা শেষ করতে চায়। সেতারা বেগম মেয়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পান না। ইন্টারমিডিয়েট-এ দুর্দান্ত রেজাল্ট করেছে শিউলিমালা-এটা এক কারণ। জাহাঙ্গীরও ছোট বোনকে ভালোবাসে। সেও এ বিষয়ে নীরব থাকে ।

সেতারা বেগম অবশ্য হাজারা শিয়া এসব বোঝেন না। তার কাছে দোতলার নতুন ভাড়াটেরা হল ‘বিহারী’ এবং ‘বিহারী’ ভাড়াটের সঙ্গে এরই মধ্যে বেশ ভাব জমে উঠেছে সেতারা বেগমের। তিনি নিয়মিত ফারিদার সঙ্গে গপসপ করেন। সেতারা বেগম বিহারী ভাড়াটের ভাষাও ঠিক মতো বোঝেন না-না বুঝলেও সমস্যা নেই। তিনি বেশুমার পান খান এবং ফারিদাও পান খান। কাজেই দুপক্ষের কিছু মিলও আছে।

সেদিন ফারিদা বললেন, পাকিস্তান থেকে আমার এক বোন আসবে।

তাই নাকি?

হ্যাঁ। থাকবে কিছুদিন।

ভালো। সেতারা বেগম মাথা নাড়েন।

ফারিদা জিজ্ঞেস করল, শুনলাম আপনার চারতলার ফ্ল্যাট নাকি খালি হচ্ছে?

হ্যাঁ। লোকমান সাহেবরা চলে যাচ্ছেন, শ্যামলীতে ওনাদের ফ্ল্যাট রেডি।

আমার বোনকে থাকতে দিন না।

থাকুক। সমস্যা কি। সেতারা বেগম বললেন। বিহারীদের ভালোই লাগে তার। এদের রান্নাবান্না অন্যরকম। ঠিক বাঙালিদের মতো না। মাছ তেমন খায় না। রুটি খায়, সবজী খায়, হালুয়া খায়, লাচ্ছি খায়। এদের বড় মেয়ে জামিলার রান্না ভালো। চমৎকার গাজরের হালুয়া বানায় জামিলা। সেতারা বেগম মেঘনা পাড়ের মানুষ। ইলিশ মাছ ছাড়া চলে না। সর্ষে ইলিশ রেঁধে পাঠিয়েছেন বেশ কয়েকবার। তবে ভাড়াটের তেমন প্রশংসা না পেয়ে মনে মনে অন্য বুদ্ধি এঁটেছেন। পুরনো ঢাকা থেকে বুন্দিয়া আর বাখরখানি আনিয়ে জামিলাদের খাইয়েছেন। জিনিসটা ওদের বেশ পছন্দ হয়েছে। বিশেষ করে মাশরুর-এর খুব পছন্দ হয়েছে। মাশরুর কে মোটরসাইকেলে চাপিয়ে সপ্তাহে একবার পুরনো ঢাকায় নিয়ে যায় সেতারা বেগমের ছেলে জাহাঙ্গীর ।

শিউলিমালার সঙ্গে জামিলার বেশ ভাব। দুপক্ষ কারও ভাষা ঠিক বোঝে না। না বুঝক। তাতে ভাব বিনিময়ে বাধে না।



হুসেইন আলী ইউসুফীর পরিবারটি জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে গালফ এয়ারে ঢাকায় এসে পৌঁছল।

এয়ারপোর্টে ওদের অভ্যর্থনা করলেন মুহাম্মদ রেজা ওয়াকিল।

আবিদাকে দেখে শিউলিমালা বলল, ওমাঃ, তুমি খুব সুইট!

তা কথাটা মিথ্যে নয়। ঈষৎ লালচে চুল, ফরসা মুখ, বাদামী ভ্রুঁ আর কটা চোখ আবিদার।

আবিদাও শিউলিমালার শ্যামলা রূপে মুগ্ধ হল।

দুদিন পরেই সেতারা বেগম তাদের দাওয়াত দিলেন। হাজার হলেও ফারিদার বোন। তাছাড়া, মহিলার রান্নাও ভালো। বিরিয়ানির গন্ধ ছড়াল ফ্ল্যাটে । হুসেইন আলী ইউসুফী সদ্য পরিচিত একটি পরিবারের আন্তরিক আপ্যায়নে মুগ্ধ হলেন। বহুদিন পর সালিমার মুখও ঝলমল করছিল। বারবার তিনি বিরিয়ানির প্রশংসা করলেন। আফ্রা পছন্দ করল চমচম । ইশরার পছন্দ করল দই । সেতারা বেগম বললেন, একদিন চাঁদপুরের সেউ আর ম্যাড়া পিঠা বানিয়ে খাওয়াবেন।

বহুদিন পর একটি সংখ্যালঘু হাজারা পরিবার এক বাঙালি পরিবারের সান্নিধ্যে আতিথেয়তায় মৃত্যুভীতি কাটিয়ে উঠল ।

খেতে খেতে মুহাম্মদ রেজা ওয়াকিল ইশারা করলেন-কি বলছিলাম না বাংলাদেশ সুখশান্তির দেশ।

হুসেইন আলী ইউসুফী মাথা নাড়েন।

হুসেইন আলী ইউসুফী একটা সেলুন দেওয়ার কথা ভাবছেন। মিরপুরে ভালো বিহারী নাপিত আছে। হাবিব বখত সব ব্যবস্থা করে দেবে জানাল।

পয়লা ফাল্গুন শিউলিমালা আবিদাদের নিয়ে ঘুরতে বেরুল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিউলিমালার বন্ধুরা অপেক্ষা করছে। শিউলিমালা ও জামিলা শাড়ি পরেছে। আফ্রা ও আবিদা সালোয়ার-কামিজ । ওরা শাড়িতে এখনও ঠিক অভ্যস্ত হয়ে ওঠেনি।

সুমি, সাদিয়া, হৈমন্তী, রাজীব ও রাহাত টিএসসির সামনে অপেক্ষা করছিল।

সি এন জি থেকে নামতেই ওরা হইহই করে উঠল।

শিউলিমালা আবিদা ও আফ্রার সঙ্গে ওদের পরিচয় করিয়ে দিল। চারুকলায় গত পৌষ উৎসবে জামিলার সঙ্গে পরিচয় আগেই হয়েছে।

কাছেই একটি মঞ্চ থেকে গান ভেসে আসে-



ফাগুন, হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান

তোমার হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান

আমার আপনহারা প্রাণ আমার বাঁধন-ছেঁড়া প্রাণ।।



আবিদা কে গানের সুর টানে। তবে ওর গানের কথা ঠিক বোঝার কথা না। ও জানে না গানটা রবীন্দ্রনাথ নামে এক কবির লেখা । তবে ওর উজ্জ্বল আলো আর বর্ণালী রং ভালো লাগছিল। গানের সুরে কি এক অনাবিল আনন্দ আছে। সে অনাবিল আনন্দ আবিদা কে স্পর্শ করে। কাল রাতে ভয়ঙ্কর এক দুঃস্বপ্ন দেখেছিল ও। ... নামাজ সেরে মুসল্লীরা মসজিদ থেকে বেরুচ্ছে। মোটরসাইকেল আরোহী ব্রাশ ফায়ার করে ... এখন সে দৃশ্য মিথ্যে মনে হল। গানের সুরের জন্যেই হয়তো। কাল রাতের স্বপ্নে আব্বাকে মৃত মনে হয়নি। যেন তিনি জীবিত, জীবিত আর আনন্দিত ...



গান ভেসে আসে-



পূর্ণিমাসন্ধ্যায় তোমার রজনীগন্ধায়

রূপসাগরের পারের পানে উদাসী মন ধায়।



দুপুরে নীলক্ষেতে একটা রেস্টুরেন্টে খাওয়াল রাজীব । তেহারি। আফ্রা ও আবিদা রান্নার তারিফ করল। শিউলিমালা সামান্য উদ্বেগ বোধ করছিল। পাকিস্তানিদের সামনে তেহারি কি বিরিয়ানি পরিবেশন করার সময় কেমন অস্বস্তি হয়। আসলে তো এসব রান্নায় ওরাই শ্রেষ্ঠ। তবে জামিলা পুরনো ঢাকার হাজীর বিরিয়ানি পছন্দ করে।

দুপুরের পর বইমেলার দিকে গেল ওরা।

জামিলা বাংলা শিখছে। সুমি ওকে কয়েকটা বই কিনে দিল। আফ্রাকে হুমায়ূন আজাদ-এর ‘লাল নীল দীপাবলি’ বইটি কিনে দিল সাদিয়া । সেই বইয়ের প্রথম পৃষ্ঠায় সাদিয়া লিখল-আশা করি একদিন আফ্রামনি বইটি পড়তে পারবে এবং বাঙালিকে চিনতে পারবে ...

ফেরার পথে গান বাজছিল-



তোমার প্রজাপতির পাখা

আমার আকাশ-চাওয়া মুগ্ধ চোখের রঙিন-স্বপন-মাখা।

তোমার চাঁদের আলোয়

মিলায় আমার দুঃখসুখের সকল অবসান।।



আবিদা গানের কথাগুলি প্রাণপন বুঝতে চাইছল। কিন্তু কে ওকে বুঝিয়ে দেবে? তবে কে যেন আবিদার কানের কাছে ফিসফিস করে বলছিল: এই মাটিতে এই গান রচিত হয়েছে তোমার সুখের জন্য তোমার মুক্তির জন্য তোমার নৃত্যের জন্য ... এই দেশের নাম বাংলাদেশ ...এই দেশই পৃথিবীতে স্বর্গের সবচে কাছে ...

সারাদিন ঘুরেটুরে সন্ধ্যার আগে আগে বাড়ি ফিরে এল ওরা।

আবিদার ১৭ বছরের জীবনে এটিই ছিল সবচে বর্ণিল দিন ।

এর পর ফেব্রুয়ারি ১৪ ঢাকা শহর আবার রঙে রঙে ছেয়ে গেল ।

ওরা আবার বেরুল। এবারও গন্তব্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আজ আবিদা শাড়ি পরল। শিউলিমালা ওকে শাড়ি পরা শিখিয়েছে। গত কদিন ধরে শাড়ি পরে হাঁটার তালিম দিয়েছে। শাড়িও শিউলিমালা উপহার দিয়েছে।

জামিলার মুখে ক’দিন ধরে টেনশন-এর ছাপ । জামিলার আব্বা ৩৫ বছরের জোয়ানের সঙ্গে ওর বিয়ে ঠিক করেছেন। হাবিব বখত লোকটা কেমন কে জানে। জামিলা বয়স সতের। ভয় তো হবেই। শিউলিমালা জামিলাকে বুদ্ধি দিল। ফোন করে হাবিব বখত কে টি এস সি-র সামনে আসতে বলল। বিয়ের ব্যাপারে শিউলিমালা হাবিব বখত এর সঙ্গে কথা বলবে। তাতে জামিলার ভয় আর উদ্বেগ কেটে যেতে পারে।

টয়োটা হানড্রেড নিয়ে হাজির হল হাবিব বখত ।

বাংলা শিখেছে ভালোই। নীল রঙের পাঞ্জাবি পরেছে। শিউলিমালাকে আগেই থেকেই চেনে। ‘বহিন’, ‘বহিন’ করে।

শিউলি সরাসরি জিজ্ঞেস করল, শুনলাম আপনি নাকি জামিলাকে বিয়ে করতে চান?

হাবিব বখত মাথা নাড়ল । আবিদা মুখ টিপে হাসছে। হাবিব বখত দেখতে পাকিস্তানি ক্রিকেটার সালমান বাট-এর মতো। সুদর্শন। আবিদা ওর ভিতরে ঈর্ষা টের পায়। রাহাত আজও কালো পাঞ্জাবি পরেছে। আবিদা ওর দিকে তাকিয়ে একবার কেঁপে উঠল। এর আগেও একবার কেঁপে উঠেছিল। রাহাতের অবয়বে কি আছে। বড় ভালো লাগে।

শিউলিমালা বলল, বুঝলাম। আপনি জামিলাকে বিয়ে করতে চান। কিন্তু এখন বলেন আপনি জামিলাকে ভালোবাসবেন কিনা।

হাবিব বখত চুপ করে থাকেন। সম্ভবত লজ্জ্বা পেয়েছে।

সুমি, সাদিয়া, হৈমন্তী, রাজীব ও রাহাত একসঙ্গে চিৎকার করে বলে উঠল: বলেন! বলেন! বলেন!

শিউলিমালা বলল, ঠিক আছে। শুনেন বখত ভাই ... জামিলাকে বিয়ে করলে ওকে কিন্তু ভালোবাসতে হবে। বুঝলেন? ... এটা বাংলাদেশ।

হাবিব বখত মাথা নাড়ে।

দূর থেকে তখন ভেসে আসছিল রবীন্দ্রনাথের গান-



তোমার অশোকে কিংশুকে

অলক্ষ্য রঙ লাগল আমার অকারণের সুখে,

তোমার ঝাউয়ের দোলে

মর্মরিয়া ওঠে আমার দু:খরাতের গান।।

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ৮:২৩

মুখচোরা বলেছেন: খুব ভালো লাগলো!

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ৯:২৬

ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ৮:২৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ভালবাসার বাংলাদেশ

প্রেম বিরহের বাংলাদেশ

সূখ স্বপ্নের বাংলাদেশ.......

আহা কি সূখ .. মরি মরি
এমন করে কবে কে লিখেছে বাংলার মাহাত্ম, পাইনা স্মরি!

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ৯:২১

ইমন জুবায়ের বলেছেন: :)

৩| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ৮:৩২

তৌিহদ েহােসন বলেছেন: ভাই আপনারে আমার খব দরকার, mobile number দেন |

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ৯:৩৪

ইমন জুবায়ের বলেছেন: দুঃখিত। ব্লগে সরাসরি মোবাইল নম্বর না দেওয়াই ভালো। তবে আপনি আমাকে মেইল করতে পারেন।

[email protected]
ধন্যবাদ।

৪| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ৮:৩২

মর্তবাসী বলেছেন: ভাল লাগল :) :) :) :)

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ৯:৩০

ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।

৫| ০১ লা মার্চ, ২০১১ রাত ১২:৩৭

Neelpoddo বলেছেন: অনেক ভাল লাগল ভাইয়া।জাতিগতভাবে ধর্মান্ধ এক জাতি পাকিস্তান।আর আমরা হলাম উদার মানসিকতার।কিচু জামাতী ছাগু বাদ দিলে আমরা ভালই আছি কোন রকমে।

০১ লা মার্চ, ২০১১ ভোর ৫:৪০

ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।

৬| ০১ লা মার্চ, ২০১১ রাত ১২:৫৪

সাকিন উল আলম ইভান বলেছেন: ওক্কে মারব না যাও........ক্যাটবেরি দিব......:):):)

০১ লা মার্চ, ২০১১ ভোর ৫:৪১

ইমন জুবায়ের বলেছেন: !:#P !:#P

৭| ০১ লা মার্চ, ২০১১ দুপুর ২:৪৪

জুবেরী বলেছেন:
যদি প্রশ্ন করা হয় ১৯৭১ পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হয়ে লাভ কি হইছে

তা হলো সামাজিক,অর্থনৈতিক,রাজনৈতিক সকল বিষয়ে আমরা ওদের চেয়ে এগিয়েছি

০১ লা মার্চ, ২০১১ বিকাল ৩:৪১

ইমন জুবায়ের বলেছেন: দুটি বিষয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে। (১) নারী শিক্ষা। (২) সুশীল সমাজ।

৮| ০১ লা মার্চ, ২০১১ বিকাল ৩:৫৩

রেজোওয়ানা বলেছেন: গল্প লিখতে গেলেও কত কিছু জানতে হয়, কত ডিটেইলস দেখতে হয়!

খুব ভাল লাগলো পড়ে.........

০১ লা মার্চ, ২০১১ বিকাল ৪:৩১

ইমন জুবায়ের বলেছেন: এই সব রিসার্চ করতে কী যে আনন্দ তা বুঝিয়ে বলা সম্ভব না। মাথায় একটা আইডিয়া এল-পাকিস্তান। কোন্ শহর? লাহোর না করাচি? করাচি হলে কোথায়? করাচির সিটি ম্যাপ। সাদদার টাউন। হাজী ক্যাম্প। একটা গলি। মোটর সাইকেল। একটা নাম।
গুগলে পাকিস্তানি ফিমেইল নেমস ...আফ্রা ...আবিদা ...
হাজারি সম্প্রদায়ের ইতিহাস ...শিয়াসুন্নী দাঙ্গার ইতিহাস ...
রবীন্দ্রনাথের গান ...কোন্ গান ? একটা গল্প। কিছু চরিত্র।

ধন্যবাদ।

৯| ২৬ শে মার্চ, ২০১১ দুপুর ১:৩৪

সাধারণমানুষ বলেছেন: বাংলাদেশ ............ভালোবাসি

২৬ শে মার্চ, ২০১১ দুপুর ১:৫৫

ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।

১০| ২৯ শে মার্চ, ২০১১ দুপুর ১:২৯

আমের আটির ভেপু বলেছেন: গল্প মনে হলেও এরকম হচ্ছে।
আমার পরিচিত একজন পাকিস্তানি করাচি থেকে এখানে চলে আসছেন,উনার কসমেটিক্স এর ব্যাবসা ছিল ওখানে। নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন বলেই আসতে চাইছেন।

২৯ শে মার্চ, ২০১১ দুপুর ১:৪৭

ইমন জুবায়ের বলেছেন: আসলেই আমাদের দেশে নিরাপত্তা অনেক বেশি। আমার গল্পটাও বাস্তব ঘটনার ওপর লিখেছি। পাকিস্তান থেকে চলে এসেছে এমন অনেককেই চিনি। আরও অনেক সম্প্রদায় বাংলাদেশের ওপর ভীষণ সন্তুষ্ট।
ধন্যবাদ।

১১| ২৪ শে মার্চ, ২০১২ ভোর ৫:৫৯

তৌফিক জোয়ার্দার বলেছেন: অদ্ভুত আবেগে কেঁপে কেঁপে উঠেছি বারবার- "এই দেশের নাম বাংলাদেশ ...এই দেশই পৃথিবীতে স্বর্গের সবচে কাছে ..."

কিভাবে যে লেখেন এমন!

যাইহোক, হাজারাদের সম্পর্কে প্রথম জেনেছিলাম The Kite Runner ছবিটি দেখে। আমার দেখা শ্রেষ্ঠ ছবিগুলোর একটি। শুনেছি বইটি নাকি ছবির চাইতেও সুন্দর। আপনা হয়ত পড়া আছে; বা ছবিটি দেখা আছে। তা না হলে অবশ্যই পড়বেন; অন্তত: ছবিটি দেখে নেবেন।

বাংলাদেশে যে এখনও এভাবে অবাঙ্গালিরা এসে বসতি গড়ে জানা ছিলনা। আমার ধারণা ছিল ওরা পাকিস্তান আমলে এসে থেকে গিয়েছে।

পাটওয়ারীরা কি সব চাঁদপুরের নাকি? আমার বন্ধু নওজেশ হোসেন পাটওয়ারী- ওর বাড়িও চাঁদপুর। মতলবে গিয়েছিলাম- ওখানেও পাটওয়ারী বংশের মানুষজনের সাথে পরিচয় হয়েছিল।

২৪ শে মার্চ, ২০১২ সকাল ৭:০৯

ইমন জুবায়ের বলেছেন: The Kite Runner এর নাম এত শুনেছি যে কী বলব। অথচ পড়াও হয়নি দেখাও হয়নি :(
আসলে পাটওয়ারীরা ছিল মুঘল আমলের ট্যাক্স কালেক্টর। এরা চাঁদপুরে বেশি । তবে কেন বেশি, তার কারণ জানি না।
ধন্যবাদ পড়ার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.