নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অন্ত্যজ বাঙালী, আতরাফ মুসলমান ...

বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্‌উক, হে ভগবান।রবীন্দ্রনাথ

ইমন জুবায়ের

জীবন মানে শুধুই যদি প্রাণ রসায়ন/ জোছনা রাতে মুগ্ধ কেন আমার নয়ন। [email protected]

ইমন জুবায়ের › বিস্তারিত পোস্টঃ

একদিন সুলতান আলাউদ্দিন হুসেন শাহ

১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৩:১৯

১৫১৮ খ্রিস্টাব্দের বর্ষাকাল। গঙ্গা নদীর তীরে রামকেলী গ্রাম। সে গ্রামের এক আমবনে সুলতান আলাউদ্দিন হুসেন শাহ এর অস্থায়ী তাঁবুর ওপর অপরাহ্ণের আলো এসে পড়েছে। বাংলার এই সুলতানটি কিন্তু বেশ দাপুটে । কেননা ইনি বিগত ২৪ বছরে প্রাগজ্যোতিষপুর (আসাম)-এর কামরূপ এবং কামতা জয় করেছেন; ত্রিপুরারাজ ধ্যান মাণিক্যর কাছ থেকে ত্রিপুরার কিয়দংশ ছিনিয়ে নিয়ে বাংলার সঙ্গে যুক্ত করেছেন; কেবল তাইই নয়- আরাকানরাজ-এর আক্রমন প্রতিহত করে চট্টগ্রামও জয় করেছেন।

সময়টা বর্ষাকাল হলেও আমবন অপরাহ্নের সোনালি রোদ ছড়িয়ে আছে। আমবনের পাশে একটি অপরিসর গ্রাম্যসড়ক। সেই সড়কে দূর থেকে মানুষের দীর্ঘসারি চোখে পড়ে। একদল মানুষ ঢোল -করতাল, মৃদঙ্গ মন্দিরা বাজিয়ে নাচতে-নাচতে গাইতে-গাইতে এদিকেই আসছে। দলটির সামনে একজন দীর্ঘকায় গৌড়বর্ণের যুবক। যুবকটির মস্তক মুন্ডিত । ধ্যানমগ্ন গভীর আয়ত দুটি চোখ। খালি গা। গলায় মালা । গলায় একটি উড়নি। ধুতির রংটি ঘিয়ে । যুবকের হাতে একটি একতারা। একতারাটি উর্ধ্বে তুলে ধরে যুবক গাইছে-



কি লাগিয়া দন্ড ধরে অরুণ বসন পরে/

কি লাগিয়া মুড়াইল কেশ।





তার পিছনে দাঁড়ানো ভক্তেরা সমস্বরে গাইছে-



কি লাগিয়া মুখ-চান্দে রাধা রাধা বলি কান্দে/

কি লাগি ছাড়িল নিজ দেশ।





গ্রাম্য সড়কের দুপাশে উৎসুক গ্রামবাসীর ভিড়। তাদের কেউ কেউ খুশিতে মাথা নাড়ছে। কেননা বঙ্গবাসী সংগীতপ্রিয়। আনন্দে করতালি দিচ্ছে। আজ তাদের উত্তেজনার সীমা নেই। আজ ভোরে তাদের গ্রামে বাংলার সুলতান তাঁবু ফেলেছেন। আর এই বিকেলে নদীয়ার নিমাই এসেছেন।

ভিড়ের মধ্যে একজন তরুণ চন্ডাল দাঁড়িয়েছিল।

সে চোখের নিমিষে গানের দলে ভিড়ে গেল।

গানের দলে সম্ভবত কেউই অচ্ছুত নয় ...

সুলতান আলাউদ্দিন হুসেন শাহর রাজকীয় তাঁবুর ভিতরে গোলাপ পানির গন্ধ। মেঝের ওপরে নীল রঙের মখমলের জাজিম পাতা। তাকিয়ায় হেলান দিয়ে সামান্য কাত হয়ে বসে রয়েছেন সুলতান আলাউদ্দিন হুসেন শাহ । গৌড়বর্ণের বলিষ্ট গড়নের সুলতান বৃদ্ধ হয়েছেন। শুভ্র দাড়িতে তাঁকে দরবেশের মতো দেখায়। তবে সুলতানের ফরসা মুখে যেন উদ্বেগের ছাপ রয়েছে।

সুলতানের সামনে বসে আছেন জয়ানন্দ ভট্ট । জয়ানন্দ ভট্ট বাংলার বিখ্যাত জ্যোতিষী। এই রামকেলী গ্রামেই তাঁর নিবাস । এরই মধ্যে জ্যোতিষ হিসেবে জয়ানন্দ ভট্টর খ্যাতি দিল্লি তক পৌঁছে গেছে। জয়ানন্দ ভট্টর মাথায় মসৃণ টাক। টিকিখানা বেশ দীর্ঘই বলতে হয় । দীর্ঘ কোমল শরীরটি গৌড়বর্ণের। পরনে ধুতি ও ধবধবে সাদা ফতুয়া। ঈষৎ লম্বাটে মুখে তীক্ষ্ম মেধার ছাপ স্পষ্ট। মৈথীলির এক ব্রাহ্মণ পরিবারে এই বৃদ্ধ জ্যোতিষীর জন্ম । তবে অত্যন্ত উদার হৃদয়ের অধিকারী জয়ানন্দ ভট্ট মনুর বিধান কিংবা বর্ণবাদের ঘোর বিরোধী। তরুণ বয়েসে গীতগোবিন্দ কাব্যের রচয়িতা বাংলার কবি জয়দেবের প্রগাঢ় ভক্তে পরিনত হন জয়ানন্দ ভট্ট । কবি জয়দেব-এর প্রতি প্রবল আকর্ষণই জয়ানন্দ ভট্টর মিথিলা ত্যাগ করে পাকাপাকিভাবে বঙ্গে বাস করার পিছনে অন্যতম কারণ। বহুকাল বঙ্গে বাস করে নিখাদ বঙ্গবাসী বনে গিয়েছেন বৃদ্ধ জ্যোতিষী। চমৎকার বাংলা তো বলেনই- তার ওপর বাংলায় কাব্যও লিখেন।

জয়ানন্দ ভট্ট সুলতানের কোষ্ঠী পরীক্ষা করছেন। কোষ্ঠীতে বৃহস্পতির গতি বক্রী বিধায় বৃদ্ধ জ্যোতিষীর মুখে উদ্বেগের ছাপ ফুটে উঠেছে। জ্যোতিষ জয়ানন্দ ভট্ট সুলতানের পূর্বপরিচিত। সুলতান আজ ভোরে রামকেলী গ্রামে পৌঁছেই তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছেন। সুলতান আজকাল ঘুমের ভিতরে ভয়ানক দুঃস্বপ্ন দেখছেন। রাত্তিরে ভালো ঘুম হচ্ছে না তাঁর। এক প্রচ্ছন্ন আতঙ্ক সুলতানকে গ্রাস করেছে। তার অবশ্য কারণও আছে। সুলতান হওয়ার পূর্বে হাবসী সুলতান শামসুদ্দিন মুজ্জাফর শাহর উজির ছিলেন আলাউদ্দিন হুসেন শাহ। হাবসী সুলতান শামসুদ্দিন মুজ্জাফর শাহকে হত্যা করে বাংলায় হুসেন শাহী রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন সুলতান আলাউদ্দিন হুসেন শাহ । বাংলার অভিজাতগণ তাঁকে ১৪৯৪ সালে সুলতান নির্বাচিত করে। হাবসী সুলতান শামসুদ্দিন মুজ্জাফর শাহকে হত্যার জন্য সুলতান আজকাল অনুশোচনা বোধ করছেন। ২৪ বছর ধরে বাংলার ক্ষমতায় আছেন তিনি। কখন মৃত্যু হয় কে জানে। পুত্র নুসরাত ক্ষমতার জন্য অস্থির হয়ে আছে। ক্ষমতা মানে জীবনের নিরাপত্তা। ক্ষমতা মানে নারী ও নেশার বিস্তর উপকরণ। ... হাবসী সুলতান শামসুদ্দিন মুজ্জাফর শাহ তাঁর উজিরকে গভীর বিশ্বাস করতেন। সেই মহানুভব মালিকের বুকে নিজ হাতে খঞ্জর চালিয়েছেন আলাউদ্দিন হুসেন শাহ। তার আগে শামসুদ্দিন মুজ্জাফর শাহর চোখ দুটি অন্ধ করে দিয়েছেন। সেসব স্মরণ করে আজকাল তীব্র গ্লানি বোধ হয়। গ্লানিবোধের কারণেই কি আমি ভয়ঙ্কর সব দুঃস্বপ্ন দেখছি? জ্যোতিষী জয়ানন্দ ভট্ট ডেকে আনার এই কারণ। যদি জয়ানন্দ ভট্ট নিশ্চিন্ত করে কিছু বলতে পারেন। যদি যথার্থ রত্ন ধারণ করে মনে দুদন্ড শান্তি পাওয়া যায় ...

সুলতান আলাউদ্দিন হুসেন শাহ ক্ষীণ উদ্বেগ বোধ করেন। এই সময়ে তিনি ঢোল -করতাল, মৃদঙ্গ মন্দিরার আওয়াজ শুনতে পেলেন। সেই সঙ্গে গান:





হরি হরি আর কি এমন দশা হব/

এ ভব সংসার তেজি পরম আনন্দে মজি/

আর কবে ব্রজভূমে যাব/

সুখময় বৃন্দাবন কবে পাব দরশন/

সে ধূলি লাগিবে কবে গায়।




গান শুনে সুলতানের বিস্মিত হলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, জয়ানন্দ, কারা গান করছে?

জয়ানন্দ ভট্ট কোষ্ঠী থেকে মুখ তুললেন। দু মুহূর্ত গান শুনলেন। তারপর বললেন, গান কীর্তনিয়ারা করছে সুলতান।

কীর্তনিয়া?

হ্যাঁ। কীর্তনিয়া। তারা দল বেঁধে কীর্তন গায়। গানে গানে কৃষ্ণের গুণ কীর্তন করে। রাধার বিরহীভাবের কথা বলে।

বেশ।

হ্যাঁ। কীর্তনিয়াদের গুরু হলেন নবদ্বীপের নিমাই। ভক্তেরা ভালোবেসে তাঁকে বলে শ্রীচৈতন্যদেব।

হুমম। তা কীর্তনিয়াদের এই গুরুর বয়স কত হবে?

৩৪ বছর। শ্রীচৈতন্যদেব-এর পুর্বপুরুষের নিবাস ছেল পূর্ববঙ্গের শ্রীহট্টে। মানে আপনি এখন যেখান থেকে এই রামকেলী গ্রামে এলেন আর কী। শ্রীচৈতন্যদেব অত্যন্ত মেধাবী, এবং যশস্বী তার্কিক। এই বয়েসেই নবদ্বীপের বহু শাস্ত্রজ্ঞ পন্ডিতকে তর্কে পরাজিত করেছেন। চৈতন্যদেব মহান কুম্ভরাশির জাতক। জানেন তো ভারতীয় জ্যোতিষশাস্ত্রে কুম্ভের জাতকগণকে সর্বপ্রেক্ষা মেধাবী বলে গন্য করা হয় ।

সুলতান মাথা নাড়েন।

জয়ানন্দ ভট্ট বললেন, শ্রীচৈতন্যদেব কীর্তন গেয়ে প্রেমের বাণী প্রচার করেন। প্রেমের মাধ্যমে ভগবানকে পাওয়াই তাঁর জীবনের লক্ষ্য। শ্রীচৈতন্যদেব তাঁর অনুগত কীর্তনিয়াদের সঙ্গে নিয়ে পথে পথে ঢোল -করতাল, মৃদঙ্গ মন্দিরা বাজায় নেচে নেচে গান করেন । এভাবে নবদ্বীপ থেকে মথুরা চলে যান। আবার মথুরা থেকে চলে যান উষিড়্যার নীলাচল। বেশ ক’বার অবশ্য আমার জন্মভূমি মিথিলা গিয়েছিলেন। দলবদ্ধভাবে গান গেয়ে এভাবে নগর পরিভ্রমন করাকে নগর সংকীর্তন বলে।

বেশ তো। ভালো কথা। সুলতান কৌতূহল বোধ করেন। তাঁর মুখে এক ধরণের প্রসন্নতা ছড়ায়। পূর্বেকার উদ্বেগ কাটতে শুরু করেছে। মনের ভিতরে এক ধরনের শক্তি পান তিনি । যেন আর তিনি অহেতুক দুঃস্বপ্নে ভীত হবেন না।

জয়ানন্দ ভট্ট বললেন, কিন্তু সুলতান শ্রীচৈতন্যদের বিরুদ্ধবাদীও কম নয়।

যেমন? সুলতানের কন্ঠস্বর কেমন গম্ভীর শোনাল।

জয়ানন্দ ভট্ট বললেন, দীর্ঘকাল ধরে শ্রীচৈতন্যদেবের জন্মভূমি নবদ্বীপে বৈদিক বেদজ্ঞ পন্ডিতদের কেন্দ্র। বৈদিক শাস্ত্রকারেরা জ্ঞানবাদী আর কর্মবাদী -এই দুটি ধারায় বিভক্ত। জ্ঞানবাদীরা মনে করেন ঈশ্বর লাভের উপায় হল তত্ত্ব আলোচনা ও বিশ্লেষন।

আর কর্মবাদীরা?

কর্মবাদীরা আপনাদের শরিয়তপন্থীদের মতো সুলতান । কর্মবাদীরা আনুষ্ঠানিক পূজাঅর্চনার মধ্যে অভীষ্টে পৌঁছতে চায়।

আচ্ছা। বুঝেছি।

এই দু-দলের বিরুদ্ধেই রুখে দাঁড়িয়েছেন শ্রীচৈতন্যদেব। তিনি বলেন, জ্ঞানবাদ কিংবা আর কর্মবাদ নয়-ঈশ্বরকে পেতে হলে চাই প্রেমের পথ। আমি আপনাকে আগেই বলেছি, শ্রীচৈতন্যদেব মহান কুম্ভরাশির জাতক। কুম্ভরা অত্যন্ত আদর্শবাদী। এরা এদের আদর্শ বাস্তবায়নের পথে সহজে পিছপা হয় না।

হুমম।

আরও একটি কারণে চৈতন্যদেবের ওপর নবদ্বীপের জ্ঞানবাদী আর কর্মবাদী চটে আছে।

কি? শুনি?

নবদ্বীপের জ্ঞানবাদী আর কর্মবাদী আর্য পন্ডিতেরা ভক্তিবাদেও বিশ্বাসী। কিন্তু শ্রীচৈতন্যদেব বাঙালি বলেই বৈদিক ভক্তিবাদকে প্রেমবাদে পরিনত করেছেন। ভক্তিবাদকে প্রেমবাদে পরিনত করাই শ্রীচৈতন্যদেব প্রধান কৃতিত্ব। আর এটি তিনি করেছেন প্রেমমূলক কীর্তন রচনার মাধ্যমে।

সুলতান মাথা নাড়েন। তাঁর সুফিদের ‘হালকা’ জিকির এবং ‘সামা’ গান ভালো লাগে। গত বর্ষায় চট্টগ্রামে এক টিলার ওপর আস্তানায় আসরের নামাজের পর নকশাবন্দি তরিকার এক কামেল পিরের সামা গান শুনে সুলতান কেঁদেছিলেন । সুলতান অবশ্য শরিয়তবিরোধী নন, নিয়মিত নামাজ আদায় করেন। তবে সুরের মাধ্যমেও যে আল্লাহর স্মরণ (জিকির) সম্ভব সেটি গভীরভাবে বিশ্বাস করেন।

জয়ানন্দ ভট্ট বললেন, শ্রীচৈতন্যদেব প্রেরণা লাভ করেছেন মুসলিম পীরদের কাছ থেকে।

কি রকম?

শ্রীচৈতন্যদেব দেখেছেন ইসলামী সুফিসাধকদের আস্তানায় জাতিভেদ নেই, সবাই একসঙ্গে আহার করে। ওদিকে বর্ণহিন্দুরা জাতাপাত আঁকড়ে ধরায় সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আপন জাতধর্মকে, বাপদাদার ঐতিহ্য কে কে না টিকিয়ে রাখতে চায় বলুন? শ্রীচৈতন্যদেবও চান। কাজেই ইসলামী সুফিসাধকদের পথ অনুসরণ করে প্রেমবাদের প্রচার করছেন তিনি । তাঁর গানের দলে সবাই আসে। কোনও বর্ণভেদ নেই। নগর সংকীর্তনে অচ্ছুত চন্ডালও যোগ দেয় । মনুবাদী বর্ণবাদী হিন্দুরা এটিকে অবশ্য ভালো চোখে দেখছে না। অথচ এদেরই পূর্বপুরুষ প্রাচীনকালে বলেছিল, শাস্ত্রের ওপর শূদ্রের কোনও অধিকার নেই। আজ তারাই জাতপাতের বেড়া তৈরি করে হিন্দুসমাজে ঐক্যের বদলে বিভেদ তৈরি করেছেন। এদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে শ্রীচৈতন্যদেব বাংলার হিন্দুসমাজে বৃহত্তর ঐক্যের ডাক দিয়েছেন।

কি ভাবে?

একজন মুসলিম পির যেমন আল্লাহর মাঝে বিলীন হওয়ার জন্য জীবনভর সাধনা করেন, তেমনি শ্রীচৈত্যদেব কীর্তন গানে রাধারূপে শ্রীকৃষ্ণের মধ্যে বিলীন হওয়ার কথা বলেন । তাঁর মানবিক ঐক্যের আহবানে নিঃস্ব ভূমিপুত্র কিংবা অবহেলিত পদদলিত এবং অচ্ছুতেরা এসে মিলেছে।



সুলতান আলাউদ্দিন হুসেন শাহ কিংবা জয়ানন্দ ভট্ট-এঁদের কারও জানার কথা না যে আজ থেকে ৩০০ বছর পর লালন নামে বাংলার একজন বাউল সাধক তাঁর ‘তিন পাগলের মেলা’ গানে শ্রীচৈত্যদেব কে তুলে ধরবেন এভাবে :



একটা পাগলামী করে/

জাত দেয় অজাতেরে দৌড়ে গিয়ে/

আবার হরি বলে পড়ছে ঢলে ধুলার মাঝে/ ...





সুলতান আলাউদ্দিন হুসেন শাহ কী যেন ভাবছেন। সুলতানের গৌড়বর্ণের মুখমন্ডলে শেষ বেলার রোদ এসে পড়েছে। তাঁকে আর বিষন্ন দেখায় না। ছোট শ্বাস ফেলে সুলতান বললেন, জয়ানন্দ।

বলুন সুলতান।

আমরা একদিন আল্লাহর হুকুমে এই দুনিয়া থেকে চলে যাব । কিন্তু বাংলায় দীর্ঘকাল সুফিদের সাম গান আর চৈতন্যদেবের কীর্তন গান থাকবে। কেননা, সুফিরা এবং চৈতন্যদেব সংগীতের মাধ্যমে প্রেমবাদ প্রচার করেন। জীবের মৃত্যু হয় । প্রেমের মৃত্যু হয় না। সংগীতের মৃত্যু হয় না। প্রেমমূলক সংগীতের ধারা চিরকাল অব্যাহত থাকবে। আল্লাহ তার বান্দাকে প্রেমের উপলব্দি করাবেন বলেই তো দ্বীনদুনিয়া সৃষ্টি করলেন।

জয়ানন্দ ভট্ট মাথা নাড়েন। তিনি জানেন শ্রীচৈতন্যদেবের জীবনে প্রেমের গভীর ভূমিকা রয়েছে। গত বৈশাখ মাসের গোড়ার দিকে নবদ্বীপের মায়াপুরে শ্রীচৈতন্যদেবের সঙ্গে জয়ানন্দ ভট্টর দেখা হয়েছিল । যুবক সাধকের প্রেমে পূর্ণ আয়ত নয়ন দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন জয়ানন্দ ভট্ট । গভীর পুলক বোধ করেছিলেন। শ্রীচৈতন্যদেবকে দেখে মনে হয়েছিল তিনি যেন জন্মবিরহী। ... তাঁর প্রথমা স্ত্রী লক্ষ্মীদেবী মারা গিয়েছেন সর্পদংশনে। স্ত্রীকে গভীরভাবে ভালোবাসতেন শ্রীচৈতন্যদেব । সাধকের ভালোবাসা যেমন গভীর হয়। কিশোর বয়েসে নিমাই গঙ্গার ঘাটে প্রথম দেখেছিল লক্ষ্মী কে। গঙ্গার ঘাটে বালিকা লক্ষ্মী সখীদের নিয়ে জল নিতে এসেছিল। শ্রীময়ী বালিকাকে দেখে কিশোর নিমাই কেঁপে উঠেছিল । নিমাইয়ের মা শচীদেবী। মায়ের কাছে লক্ষ্মীকে বিবাহ করার মনের বাসনা ব্যক্ত করে নিমাই। শচীদেবী কী কারণে যেন বিয়েতে রাজী ছিলেন না। তা সত্ত্বেও বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পর বন্ধুদের নিয়ে নৌকাযোগে পূর্ববঙ্গে গিয়েছিল নিমাই। পিতা জগন্নাথ মিশ্রের বসতভিটে পূর্ববঙ্গের শ্রীহট্টে। অতদূর অবশ্য যেতে পারেননি। তবে নাকি পূর্ববঙ্গবাসীর বাংলা উচ্চারণে কৌতূক বোধ করেছেন নিমাই। পদ্মা নদী দেখে নদীয়ায় ফিরে এলেন নিমাই। ফিরে শোকসংবাদ শুনলেন। লক্ষ্মী মারা গিয়েছেন। সর্পদংশনে। নিমাই ঘোর শোকে আচ্ছন্ন হলেন। উদভ্রান্তের মতো পথে পথে ঘুরলেন। গান করলেন। শচীদেবী আবার ছেলের বিয়ের আয়োজন করলেন । তবে নিমাইয়ের সেরকম ইচ্ছে নেই। অবশেষে নিমাই রাজি হলেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম বিষ্ণুপ্রিয়া। কি সুন্দর নাম! বিষ্ণুপ্রিয়া! কি যথার্থ নাম! মথুরার শ্রীকৃষ্ণকে মনে করা হয় বিষ্ণুর অবতার। নদীয়ার বৈষ্ণবরা শ্রীচৈতন্যকে মনে করে কৃষ্ণের অবতার। এ সবের মূলে রয়েছেন প্রাচীন বৈদিক দেবতা বিষ্ণু। সেই জন্যেই বিষ্ণুপ্রিয়া নামটি যথার্থ নাম! ... সে যাই হোক। শ্রীচৈতন্যদেবকে দেখে জয়ানন্দ ভট্টর মনে হয়েছিল শ্রীচৈতন্যদেব জন্মবিরহী। প্রথমা স্ত্রী লক্ষ্মীদেবী শোক কাটিয়ে উঠতে পারেন নি। স্ত্রীর শোক ভুলতে নিজেকে রাধারূপে কল্পনা করেন, শ্রীকৃষ্ণে বিলীন হয়ে যেতে চান ... হ্যাঁ। শ্রীচৈতন্যদেবের জীবনে প্রেমের গভীর ভূমিকা রয়েছে বৈ কী।

হাতে রূপার রেকাবি নিয়ে সুলতানের তাঁবুতে ঢুকল চাপরাশী নওশাদ বেগ । তার পাশে নগর কোতোয়াল সাঈদ জান মোহাম্মদ । দু-জনই সুলতানকে কুর্নিশ করল। নওশাদ বেগ-এর বয়স বিশ-বাইশ বছর হবে আর মধ্যবয়েসি কোতোয়ালটি গাট্টাগোট্টা গড়নের বলিষ্ট পাঠান। নওশাদের হাতের রেকাবিতে একটি রূপার পাত্র। পাত্রে কয়েকটি গুড়ের সন্দেশ। জয়ানন্দ ভট্ট জানেন সুলতান গুড়ের সন্দেশ খেতে ভালোবাসেন। রামকেলী গ্রামটি গুড়ের সন্দেশের জন্য বিখ্যাত। রামকেলী গ্রামের নবীর হাট থেকে সুলতানের জন্য আধা মন গুড়ের সন্দেশ নিয়ে এসেছেন জয়ানন্দ ভট্ট ।

গুড়ের সন্দেশ দেখে সুলতানের ভাবান্তর হল না। বরং সুলতান কোতোয়ালের দিকে তাকালেন। তারপর গম্ভীরকন্ঠে বললেন: আমি নির্দেশ দিচ্ছি শ্রীচৈতন্যদেব যেন বাংলায় নির্বিঘ্নে তাঁর ধর্মমত প্রচার করতে পারেন। কেউ যেন এই মহান সাধকের ধর্মপ্রচারে বাধা না দেয় ...

কোতোয়াল সাঈদ জান মোহাম্মদ মাথা নাড়ে ।

জয়ানন্দ ভট্ট ছোট্ট শ্বাস ফেললেন ।

আমবনে শেষবেলার যে রোদ ছড়িয়েছিল তাতে ম্লান রং ধরেছে। সেই ম্লান আলো জানালাপথে সুলতানের মুখে এসে পড়েছে। আমবনের পাখপাখালির কূজন। তারা একটি দিনকে বিদায় জানাচ্ছে। ওদিকে কীর্তনিয়াদের দলটি গান গাইতে -গাইতে অনেক দূরে মিলিয়ে গেছে। দলে শ্রীচৈতন্যদেব রয়েছেন কি না -এই প্রশ্নে সুলতান আলাউদ্দিন হুসেন শাহ আকূল বোধ করেন।



তথ্যসূত্র:





এ কে এম শাহনাওয়াজ- এর বাংলার সংস্কৃতি বাংলার সভ্যতা।

বৈষ্ণব পদাবলী দুটি নিয়েছি দেবনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় সঙ্কলিত ‘বৈষ্ণব পদসঙ্কলন’ থেকে।

মন্তব্য ২৯ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (২৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৩:৩২

স্মৃতির নদীগুলো এলোমেলো... বলেছেন: প্রথম ভালোলাগা অবশ্যই আমার। অসাধারন পোস্ট। আসলেই কি হুসেন শাহ মুজাফফর শাহকে নিজের হাতে মেরে অন্ধ করে দিয়েছিলেন? আমি তো মনে হয় পড়েছিলাম উনি খুব দয়ালু শাসক ছিলেন।

আসলে আগেরদিনের রাজা বাদশাহদের নিয়মই হয়তো এমন ছিলো। এদের দয়ালু হবার সাথে সাথে চরম নিষ্ঠুরও হতে হত।

চমৎকার পোস্ট, অনেক ভালোলাগা। :)

১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:১১

ইমন জুবায়ের বলেছেন: উইকিপিডিয়া লিখেছে:

Ala-ud-din Husain Shah (reign 1494-1519)[1] was an independent late medieval Sultan of Bengal, who founded the Hussain Shahi dynasty. He became the ruler of Bengal after assassinating the Abyssinian Sultan, Shams-ud-Din Muzaffar Shah, whom he had served under as wazir. After his death in 1519 his son Nusrat Shah succeeded him.

আর বাংলাপিডিয়া লিখেছে:

Husain Shah (1494-1519) the founder of the Husain Shahi dynasty, occupied the throne of Bengal by assassinating the Habshi Sultan Shamsuddin Muzaffar Shah, under whom he had served as wazir. He was elected sultan by the leading nobles in 1494 AD.

আসলেই কি হুসেন শাহ মুজাফফর শাহকে নিজের হাতে মেরে অন্ধ করে দিয়েছিলেন কি না ?
এ বিষয়ে সরাসরি কোনও তথ্য পাইনি বটে তবে এরকম অনুমান অসঙ্গত নয়। কেননা, সেকালে সেই অবিশ্বাসের যুগে মুজাফফর শাহকে হুসেন শাহ নিজের হাতে মেরে অন্ধ করে দেওয়াট অসম্ভব না।
ধন্যবাদ।

২| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৩:৩৯

ডাঃ মাহবুব গাউস বলেছেন: ++++++ :) :) :)

১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:১২

ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৩:৫৪

ক্রন্দসী বলেছেন: ধন্যবাদ।ভাইয়া লেখাটার পার্ট টু করেন।অনিণ্দ সুন্দর হয়েছে।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:১২

ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
কিন্তু পার্ট টু তে কি থাকবে? হাঃ হাঃ হাঃ ...

৪| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:০১

আত্তার প্রতিধ্বনি বলেছেন: অসাধারন পোস্ট :) ভাল লাগলো
-----------------------------
আমার একটি ব্লগ পড়ুন... :)

অপ্রাসঙ্গিক লিংক পোস্টের জন্য দুঃখিত

১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:১৩

ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ। দেখছি।

৫| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:২১

স্মৃতির নদীগুলো এলোমেলো... বলেছেন: হুম, আমি পড়েছিলাম হুসেন শাহ অনেক দয়ালু ছিলেন, উনার সময় বাংলার মানুষ অনেক শান্তিতে ছিল। আর নুসরাত শাহ নাকি লম্পট আর অত্যাচারী ছিল। হতে পারে যেকোনকিছুই। আমার মনে হয় বাংলার ইতিহাস সেভাবে রক্ষিত হয়নি যেভাবে উপমহাদেশের অন্য অংশগুলোর ইতিহাস সে অংশের মানুষ ধরে রেখেছে। এর কারন হয়তো এই অংশের মানুষ অল্পকিছুদুর গেলেই একজন আরেকজনের থেকে অন্যরকম। ভাষার টান আর স্বভাবেও।

তবে আমি বুঝিনা মেরেই যদি ফেলে তবে মারার আগে অন্ধ করতে হবে কেন? সরাসরি মেরে ফেললেই হয়। নাকি এমনটা এজন্য করা হত যে অন্যরা যাতে নৃশংসতা দেখে কোনরকম কিছুই করবার চেষ্টা না করে। তবে এগুলো করে আসলে কোন লাভ হয়না, ক্ষমতার লোভ মনে হয় মারাত্মক কোন নেশার মত, এর পেছনে মানুষ ছুটবেই।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:২৯

ইমন জুবায়ের বলেছেন: হুসেন শাহ অনেক দয়ালু ছিলেন, উনার সময় বাংলার মানুষ অনেক শান্তিতে ছিল। এ কথা তো ঠিকই আছে। তবে সেটি সুলতান হওয়ার পর। আর এ জন্য মুজাফফর শাহকে হত্যা না করে উপায় ছিল না।

মুগল আমলেও দেখা যায় রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের সময় চোখ অন্ধ করে ফেলা হত। এটি আসলে মধ্যযুগীয় রীতি। অবশ্যই জঘনা রীতি। আর ক্ষমতার লোভ মনে হয় মারাত্মক কোন নেশার মত, এর পেছনে মানুষ ছুটবেই। নির্ভোল সুফিসাধকদের আহবানে কোনও কাজ হয়নি। বারাক ওবাবা ২য়বারের জন্য ক্ষমতায় থাকার জন্য ইরান আক্রমনের কথা ভাবছে।
ধন্যবাদ।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:২৯

ইমন জুবায়ের বলেছেন: নির্ভোল শব্দটি নির্লোভ হবে।

৬| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:৩৫

স্মৃতির নদীগুলো এলোমেলো... বলেছেন: হুম, সেটাই। ইরান আক্রমন হবেনা শেষ পর্যন্ত। ইরাকে সার্থ আছে অনেক, কিন্তু ইরান এতো বিশাল আর ইরানে রাশিয়া আর চীনের স্বার্থ আছে, অনেক ইনভেস্টমেন্ট ওদের ইরানে। ভারতের তেলেরও পুরোটাই আসে ইরান থেকে। ইরানে ভারতীয়, চাইনিজ, রাশিয়ান আছে অন্তত ৫০ লাখের বেশি। এর বাইরেও আমেরিকার নিজেদের অন্তত ২-৩ বছরের জন্য হলেও বিশাল অর্থনৈতিক ঝামেলার মধ্যে পড়তে হবে আক্রমনের পরের যুদ্ধের ফলাফল হিসেবে, তাই তারা আক্রমনের ঝামেলায় যাবেনা অথবা যেতে সাহস পাচ্ছেনা। নাহলে এতোদিন বসে থাকতোনা।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৫:০১

ইমন জুবায়ের বলেছেন: ভালো বলেছেন। ইরান আক্রমন না-হলেই ভালো। ইতিহাসে অনেক রক্তমৃত্যু ...। আর কত?
অনেক ধন্যবাদ।

৭| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:৩৭

ক্রন্দসী বলেছেন: পার্ট টু তে আশা রাখছি বৈশ্নবি রা পরবর্তীতে কিভাবে সারা বাংলায় ছড়িয়ে পরলো,এবং লালন পর্যন্ত বিস্তার,হাহা,
ভাইয়া আপনার লেখা একটু ডান দিকে সরে আছে যার ফলে পড়তে অসুবিধা হচ্ছে ।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৫:০৪

ইমন জুবায়ের বলেছেন: ঠিক আছে। চেস্টা করব।ধন্যবাদ।
কিন্তু, লেখা বাঁ দিকে সরায় কেমন করে :| ?

৮| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:৫২

সানজিদা হোসেন বলেছেন: খুব সুন্দর।++++++

১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৫:০৪

ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ :)

৯| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৫:২৬

ক্রন্দসী বলেছেন: আমিও তাই ভাবছি।সটিং এ যেয়ে কোন কাইতালী করলে কাজ হবে?

১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৫:২৭

ইমন জুবায়ের বলেছেন: বলতে পারি না :(

১০| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ৯:৩৪

চাটিকিয়াং রুমান বলেছেন: ++++++

১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ৯:৫৬

ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।

১১| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:০১

নাজিম উদদীন বলেছেন: মুভিতে দেখছিলাম নিমাই যখন সিলেটে যায় তখন তার প্রথম বউকে তান্ত্রিকরা তুলে নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তার মা তার কাছে সেটা চেপে যান।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:৩৭

ইমন জুবায়ের বলেছেন: এই তথ্যটি আমার জানা নেই।
ধন্যবাদ।

১২| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৩:৩০

পদ্ম।পদ্ম বলেছেন: বাহ্ সুন্দর!

১৯ শে নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:০২

ইমন জুবায়ের বলেছেন: :) ধন্যবাদ।

১৩| ২০ শে নভেম্বর, ২০১১ দুপুর ১২:৩৪

তৌফিক জোয়ার্দার বলেছেন: আলাউদ্দীন হুসেন শাহ'র নিষ্ঠুর ক্ষমতা দখলের দিকটা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। সে যাই হোক; বাংলায় হাবশী শাসকদের সম্পর্কে কিছু বলতে পারেন? কয়জন হাবশী শাসক শাসন করেছিলেন এবং কতদিন, কোন সময়কাল জুড়ে? যতদূর জানি তারা বর্তমান ইথিওপিয়ার ছিলেন; ঠিক না? দুরান্তের কোন দেশের সাথে ঐতিহাসিক সম্পর্কের বিষয়টা আমাদের পররাষ্ট্রনীতির জন্য ফলপ্রসূ হয়ে উঠতে পারে; তাই জানা থাকা দরকার।

লেখা ভাল লেগেছে।

২০ শে নভেম্বর, ২০১১ দুপুর ১:৫৩

ইমন জুবায়ের বলেছেন: হাবশীদের সম্বন্ধে বিস্তারিত লিখতে হবে। ....দুরান্তের কোন দেশের সাথে ঐতিহাসিক সম্পর্কের বিষয়টা আমাদের পররাষ্ট্রনীতির জন্য ফলপ্রসূ হয়ে উঠতে পারে; তাই জানা থাকা দরকার।
ধন্যবাদ।

১৪| ১০ ই মার্চ, ২০১২ সকাল ১১:২৪

তারিফ ০০৭ বলেছেন: +++++++

১০ ই মার্চ, ২০১২ সকাল ১১:৫৪

ইমন জুবায়ের বলেছেন: : অনেক ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.